আজকের পত্রিকার মতামত বিভাগের সহসম্পাদক। এর আগে কাজ করেছেন দৈনিক প্রথম আলোর ফিচার বিভাগে এবং কিছুদিন শিক্ষকতাও করেছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগে। মূলধারার সংবাদ লেখার চেয়ে মূলত তিনি ফিচার লিখতেই আরামবোধ করেন।
আমি খুবই সম্মানিত হয়েছি। কারণ, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা একজন নোবেল লরিয়েট, বিশ্বব্যাপী স্বনামধন্য ব্যক্তি। তিনি যে এত অমায়িকভাবে আমাকে ফোন দেবেন, আমি এতে খুবই আশ্চর্য হয়েছি, খুবই মুগ্ধ হয়েছি।
আমার জন্মের ঠিক দুই বছর আগের গল্পগুলো শুনেছিলাম বড়দের কাছে। সময়টা ১৯৮৮ সাল। সেবার নাকি স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যাগুলোর একটি দেখেছিল এ দেশের মানুষ।
একজন সাংবাদিকের কাজ কী? সারাদিন এদিক-সেদিক দৌড়ে এটা-ওটা সংবাদ সংগ্রহ করে অফিসে জমা দেওয়া? হ্যাঁ, যেসব সাংবাদিক শুধু মাঠে কাজ করেন, তাঁদের বেলায় এটা সত্যি।
সেদিন সহকর্মীর সঙ্গে আলাপ হচ্ছিল একটি কোমল পানীয়র বিজ্ঞাপন নিয়ে। কোরবানির ঈদ এলেই এই বিজ্ঞাপনের কথা সবার মনে পড়ে যায়—‘এক বোতলে দুই-এক খুশি আমরা মুসলমান/ একখান হইল রমজানের ঈদ, আরেকখান কুরবান...’। তো আমাদের আলোচনা ছিল এই বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত জিঙ্গেলের লিরিক নিয়ে। ছোটকাল থেকে আমরা শুনে এসেছি এর প্রথম লাইন
অলস সময়ে আগে আমরা বই পড়তাম, টিভি দেখতাম, রেডিও শুনতাম, বাড়ির ছাদে কিংবা ফটকে দাঁড়িয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম। আর এখন আমরা ‘ফেসবুকিং’ করি! ‘জেনারেশন জেড’ বা ‘জেন জি’ নামে যারা পরিচিত, তারা আবার ফেসবুক-টেসবুক বেশি চালায় না।
উকিলবাবুর বাড়ির আলমারি ঠাসা বইপত্তর, নামকরা সব সাহিত্য পত্রিকায়। কম বয়সেই সেসব পড়তে শুরু করেছিলেন উকিলবাবুর ছেলে। প্রথম দিকে ইংরেজি বইটই পড়তেন। ওই বয়সে বাংলা চলতি উপন্যাস পড়া নিষেধ ছিল তাঁর। তবু লুকিয়েটুকিয়ে কিছু পড়ে ফেলেছিলেন, কিন্তু ভালো লাগেনি। প্রথম মুগ্ধ হয়েছিলেন রমেশচন্দ্র দত্ত পড়ে। পনেরো বছর
মাইকেল জ্যাকসনের কথা বলব। তার আগে শহরের কথা বলি। পরিবেশটা এখন আর আগের মতো নেই। কেমন যেন দমবন্ধ লাগে। চারদিকে কলের যানের কালো ধোঁয়া আপনাকে-আমাকে এই শহরে নিশ্বাস নিতে দেয় না ঠিকমতো।
উসমানীয় সাম্রাজ্য হঠাৎ রুশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেনি। ক্রিমিয়ার যুদ্ধ নামে পরিচিত লড়াইটা চলেছিল ১৮৫৩ সাল থেকে ১৮৫৬ পর্যন্ত। তবে আক্রমণটা আগে রাশিয়া করেছিল তুর্কি এলাকায়। কারণ ছিল তুরস্কের অধীনে থাকা দারদানেলিস প্রণালি দিয়ে যুদ্ধজাহাজ চলাচলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং তুরস্কের খ্রিষ্টানদের রক্ষা করা
রাইফেলের বাঁটের আঘাতে লুটিয়ে পড়লে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তোলা হয় তাঁকে। পথে যেতে যেতে গুলি করে নিশ্চিত করা হয় মৃত্যু। লাশ ছুড়ে ফেলা হয় বার্লিন শহরের ল্যান্ডবোয়্যার খালে। এটিই ছিল ‘রোজা লুক্সেমবার্গ’ সিনেমার শেষ দৃশ্য।
সেদিন ভারতে আমাদের শেষ দিন। শিলিগুড়ি থেকে চেংড়াবান্ধা সীমান্ত পেরিয়ে পৌঁছে যাব নিজ দেশে। এ কথা ভাবতেই খুব আনন্দ লাগছিল। সকাল থেকে ভুবনকে বেশ ফুরফুরে লাগছিল। ডাক্তারের কথা তাহলে ঠিক ছিল। ওষুধ কাজ করেছে...
সকালের নাশতা খাওয়ার সময়ও মুখে রুচি ফিরল না। বরাবরের মতো আমি জোর করে খাওয়ার চেষ্টা করলাম আর ভুবন পারল না। সারা দিন ধরে ওঁকে বলতে লাগলাম পিয়ালকে ফোন দিতে। সমবয়সী কেউ এসে দেখা করলে অন্তত মনটা একটু ভালো হয়। পিয়াল সাহা আমাদের ব্যাচমেট। বারো-চৌদ্দ বছরে
সকালে ঘুম থেকে উঠে খানিকটা ভালো লাগছিল। পুরোপুরি না। অসুস্থ শরীর নিয়ে কোথাও গিয়ে নাশতা করতে ইচ্ছা করছিল না। এদিন থেকে আমার চেয়ে ভুবনের অবস্থা খারাপ হতে লাগল। আমরা নাশতা করিনি। ভাবলাম যাত্রাপথে খেয়ে নেব...
অনেকেই এই প্রবাদটার অনেক উদাহরণ পেয়ে থাকবেন— গোবরে পদ্মফুল ফোটে। গোবর বলতে নিশ্চয়ই সমাজের কোনো অসম্মানীত ব্যক্তিকে বোঝানো হয়। ওই অসম্মানীত ব্যক্তির কোনো বংশধর যদি কোনো কারণে...
আমরা আবারও আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ ধরে যাচ্ছি। এবার তুলনামূলক নিচের দিকে, গ্যাংটকের উদ্দেশে। আবারও সবার গানের সুরে আনন্দ করতে করতে। আগের মতো আকাশ ভাই আর ভুবন গান গেয়ে মাতিয়ে রাখলেও এদিন সৌরভ ভাইয়ের প্রতিভাটা ছেয়ে ছিল সবার মনে।
ভোরের দিকে ঘরটা এতই গরম হয়ে গিয়েছিল যে গোসল না করার মুড থেকে ধাপ করে গোসল করার মুডে চলে আসলাম। সাড়ে ছয়টার দিকে গরমে ঘুম ভেঙে গেল। দুজনেরই। খুব অস্থির লাগছিল বলে গোসল সেরে নিলাম। অতি অবশ্যই গরম
‘জলদি ওঠো। দেরি করা যাবে না। কেউ যেন বলতে না পারে আমাদের জন্য দেরি হয়েছে।’ অ্যালার্ম বাজতেই ভুবন ওর চিরচেনা সংলাপ দিচ্ছিল! ‘চিরচেনা’ বললাম এ কারণে, সে কারও সঙ্গে কোথাও যাওয়ার আগে ঠিক এই কথাগুলোই বলে। ওর কথা হচ্ছে...
শিলিগুড়িতে শ্যামলীর কাউন্টারে নামতে নামতে সেখানকার সময় বেলা দুটো কি আড়াইটা তখন। পেটে ছুঁচো লাফাচ্ছে দুজনেরই। সঙ্গে মাথাব্যথা বোনাস হিসেবে হাজির। মিলন ভাই কথা বলিয়ে দিলেন অমরদার সঙ্গে। অমরদা বললেন, ‘কোনো সমস্যা হবে না। আমি আপনাদের একটা ছোট গ্রুপে ঢুকিয়ে দিচ্ছি।’
দুজনেরই প্রথম বিদেশভ্রমণ; যার ফলে আমাদের মধ্যে কাজ করছিল একটা আনন্দবোধ ও উত্তেজনা, তা কি অল্প কথায় বোঝানো যাবে? আমাদের ডেস্টিনেশন ছিল ভ্রমণপিয়াসীদের অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গায়। এটাকে অনেকে বলে ‘ড্রিম প্লেস টু ভিজিট’। পেটের ভেতর থেকে প্রজাপতি সুড়সুড়ি দেওয়ার অনুভূতিটা নিশ্চয়ই অনেকের হয়? সত্যি কথা, তা আমার
একবার খামোখা গেলাম স্কুলে। খামোখা বলছি এই কারণে, আমি তখন স্কুলের শিক্ষার্থী নই। ঢের বড় হয়েছি, হাতে-পায়ে, মননে-মগজে, বয়সে। পড়ালেখা শেষ করে মনোযোগ দিয়েছি ক্যারিয়ারে। যা-ই হোক...
একটা সংগৃহীত লেখা ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ‘ইডেন একটাই, তবে মানুষভেদে ইডেন ভিন্ন’। এরপর যা লেখা আছে, এর মর্মকথা হলো, আপনি ইডেনকে যে নজরে দেখবেন, ইডেনও ঠিক সেভাবেই আপনার কাছে ধরা দেবে...
আচ্ছা, ফার্মের মুরগি আপনি কত টাকা দিয়ে কেনেন? একেক বাজারে তো দেখলাম একেক রকম দাম। আমার এক সহকর্মী শেষ কিনেছেন ১৮০ টাকা কেজি দরে। দামের হেরফের হয়।
মার্চের শেষের দিকে। হ্যাঁ, আপনার সঙ্গে একমত, তখন মোটেও সাজেক ভ্রমণের উপযুক্ত সময় ছিল না। মানে, যে পেজা তুলোর মতো মেঘ দেখতে চান, সেটা হয়তো পাওয়া যায় না। তবু এই উপত্যকার সৌন্দর্য এতটুকু ম্লান হয় না বছরের ওই সময়টাতেও। সেই মৌসুমে এক ভিন্ন সাজে শোভিত হয় সাজেক। তাই অপেক্ষা না করে তল্পিতল্পা গুছিয়ে চলে গ
১৯৩৩ সালে ক্লারা জেটকিনের মৃত্যুর পর তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে ম্যানচেস্টার গার্ডিয়ান লিখেছিল, ‘গ্র্যান্ডমাদার অব জার্মান কমিউনিজম’, অর্থাৎ ‘জার্মান সাম্যবাদের মাতামহ’! তাঁকে নারী দিবসের জননী বললে কি খুব ভুল হবে?
সেদিন সকালে ভেজা প্রকৃতির রূপ দেখতে দেখতে উপস্থিত হয়েছিলাম কাজী রোজীর ধানমন্ডির বাসায়। দেখে চিনতে পারলেন না। না চেনারই কথা। আগে কোনো দিন পরিচয় হয়নি তো! পরিচয় দিতেই খুশি হয়ে বললেন, ‘জানো, তোমাদের বয়সী ছেলেমেয়েদের সঙ্গে গল্প করতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মনে হয় আমিও সেই তরুণ বয়সে আছি।’
তখন ধূসর চোখের রুমানা উঠতি মডেল। অ্যারোমেটিক সাবানের একটা বিজ্ঞাপনে দেখা যেত তাঁকে। সমুদ্র তীরে আঙুল দিয়ে ‘ভালোবাসা’ লিখছেন তিনি—বিজ্ঞাপনে এমন একটা দৃশ্য আছে। আমি তত দিনে বানান করে পড়তে শিখে গেছি। চোখের সামনে যা পাই, তা-ই পড়ি। স্বভাবতই ওই বিজ্ঞাপন দেখে ‘ভালোবাসা’ শব্দটা পড়ে নিয়েছি। আমার শিশুমনে এতটু
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন হঠাৎ সকালবেলা এক বন্ধুর খুদেবার্তায় ফোনটা কেঁপে উঠল। একটি গণমাধ্যমের অনলাইন ভার্সনের ছবি, অর্থাৎ স্ক্রিনশট ভেসে উঠেছে ফেসবুক মেসেঞ্জারের ইনবক্সে। সহজেই বোঝা গেল....
পত্রিকা হাতে নিয়েই মনটা ভালো হয়ে গেল, প্রধানমন্ত্রী ওদের বকে দিয়েছেন। ওরা কারা? ওরা হলো তাঁর আদরের ছাত্রলীগের কর্মীরা! বেশ করেছেন। মাস্ক ছাড়া কেন কোনো ‘গ্যাদারিং’-এ যাবে এখন? সময়টা করোনার। তার ওপর ওমিক্রন-আতঙ্ক।
আমরা এই প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ চোখে দেখিনি। দেখিনি বাংলাদেশের বিজয়। তাই বলে কি মুক্তিযুদ্ধকে জানব না? বিজয়কে জানব না? বিস্তর বই-পুস্তক ঘাঁটাঘাঁটির পরও কেমন যেন করতে থাকে মন।
ইদানীং একটা ধারাবাহিক নাটক দেখছি। ‘সিরিজ’ বা ‘সিরিয়াল’ বলার চেয়ে ধারাবাহিক নাটক বলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। ভাববেন না, বাংলা নাটক। ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করলে হয়তো বুঝে ফেলতেন একটা ইংরেজি ধারাবাহিকের কথা বলছি।
আমি বাল্যবন্ধুর মুখের দিকে তাকিয়েই বুঝলাম এই মন খারাপ তার মা-বাবার জন্য। বন্ধুর মতো আগলে রাখা ভাই-বোনের জন্য। পরিবারের আদুরে ছোট্ট সদস্যটার জন্য। তাঁদের ছেড়ে একদম অপরিচিত একটা পরিবারে অজানা আশঙ্কায় মন বেঁধেই তাকে যেতে হবে। আমার বন্ধুর যে ভালোলাগা-মন্দলাগার এক মিশ্র অনুভূতি হচ্ছিল, সেটা বুঝতে পারছিলা
বাসের জানালা দিয়ে মাথা বের করে কিছুক্ষণ চিৎকার করেও লাভ হলো না কোনো। একটা চ্যাংড়া ছেলে আমার হাত থেকে হ্যাঁচকা টান দিয়ে মোবাইলটা নিয়ে জ্যামে বসে থাকা যানবাহনগুলোর ফাঁকফোকর দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেল। পেছনে পেছনে তার সহযোগী চ্যাংড়াটাও দৌড় দিল।