সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন

সকালে ঘুম থেকে উঠে খানিকটা ভালো লাগছিল। পুরোপুরি না। অসুস্থ শরীর নিয়ে কোথাও গিয়ে নাশতা করতে ইচ্ছা করছিল না। এদিন থেকে আমার চেয়ে ভুবনের অবস্থা খারাপ হতে লাগল। আমরা নাশতা করিনি। ভাবলাম যাত্রাপথে খেয়ে নেব। গলা দিয়ে কিছু নামার অবস্থায় নেই। আমরা প্রস্তুত হয়ে নিচে নেমে গিয়েছিলাম। কিন্তু অপেক্ষা করতে হলো অনেকক্ষণ। তখনো গাড়ির ব্যবস্থা হয়নি। অমরদা বলেছিলেন সকাল ৭টার মধ্যে রওনা দিতে পারব। কিন্তু সেখানে ৮টার ওপরে বেজে গিয়েছিল। বড় দলটাও চলে যাবে শিলিগুড়ি। এদিকে দেরি দেখে আকাশ ভাইয়ারা ক্ষেপে যাচ্ছিলেন। কেননা, তাঁদের সময়মতো পৌঁছে বাস ধরতে হবে। অমরদা এদিক-সেদিক ফোন ঘুরিয়ে অবশেষে একটা গাড়ি নিশ্চিত করলেন।
আসলে হয়েছিল কী, যে চালক আসার কথা ছিল, তিনি শেষ মুহূর্তে আর আসেননি। আমাদের অবস্থা তখন কিছুটা উন্নতির দিকে। হোটেলের লবিতে বসে থাকার চেয়ে বাইরে মল রোডের বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করাটা ভালো লাগছিল। অবশেষে একটা জিপ গাড়ি এসে উপস্থিত হলো আমাদের জন্য। হুড়োহুড়ি করে উঠে গেলাম গাড়িতে। জিপ চালু করার আগে অমরদা বিদায় নিতে এলেন। তিনি আরেকটা দলকে গাইড করার জন্য থেকে যাচ্ছিলেন। খুব করে বলে দিলেন গাড়ির চালককে পরিচয় করিয়ে, ‘ও কিন্তু আমার নিজের লোক। আমার বন্ধু। আপনারা নিশ্চিন্তে যান। কোনো অসুবিধা হবে না।’ কিন্তু চালককে দেখে খুব একটা সুবিধার মনে হচ্ছিল না। তিনি প্রথমেই বাদ সাধলেন আমাদের দুজনের সামনে বসা নিয়ে। তবু আমরা বসেছিলাম। কারণ পেছনে গাদাগাদি করে বসা সম্ভব নয়। তিনি যতই মুড দেখিয়ে রেগে যাচ্ছিলেন, ততই আমরা বিনয়ী হয়ে তাকে বোঝাচ্ছিলাম।
যাত্রাপথে র্যাংপোতে আবার থামতে হয়েছিল। আমাদের অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। কিছু নাশতাপানি খাওয়া দরকার ছিল। ভুবন নেমে দোকান থেকে ব্রিটানিয়ার কেক, পানি আর সেখানকার কোনো একটা প্যারাসিটামল কিনে আনল। বাকিরা কোথা থেকে যেন নাশতা খেয়ে এলেন। আমি একবিন্দুও নামলাম না গাড়ি থেকে। ভীষণ খারাপ লাগছিল। যখন কেউ ছিল না, তখন চালকের সে কী হম্বিতম্বি! একে তো আমাদের দুজনের একসঙ্গে সামনে বসা নিয়ে তার সমস্যা, তার ওপর কেউ কেন জলদি ফিরে আসছে না, সেটা নিয়েও সমস্যা। অথচ সবার নাশতা সারতে যতক্ষণ সময় লাগার কথা, ততক্ষণেই সবাই ফিরে এসেছিলেন। আবার চালকের অনুপস্থিতেও সবাই যার যার রাগ ঝেড়ে নিয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই চালকের সঙ্গে আমাদের মতের বনিবনা হচ্ছিল না বলে এই অবস্থা। আমি আর ভুবন একটু কেক খেয়ে ওষুধ খেয়ে নিলাম। ভুবন পেয়ারা ফ্লেভারের একটা পানির বোতল এনেছিল। বোতলটা সুন্দর। এখনো বাসায় রেখে দিয়েছি। পানিও খেতে ভালো। সবাই গাড়িতে উঠে পড়লে আবার যাত্রা শুরু হলো।
এবার মনে হয় আগের চেয়ে বেশি বিনয় দেখাচ্ছিলেন সবাই। শুধু চালককে ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ করার জন্য। ভাবের চোটে তো চালক কথা তেমন বলছিলেন না, কিন্তু যখন শুরু করলেন, তখন মনে হলো লোকটা বেশ মিশুক। সেদিনের যাত্রাটা গানের বদলে রানাদার জীবনের গল্প শুনে কেটে গিয়েছিল। চালকের নাম রানা। বয়স চল্লিশের কাছাকাছি হবে। এর চেয়ে কমও হতে পারে। জানা হয়নি। জিপটা তাঁর নিজের। এ রকম আরও ৮-৯টা জিপের মালিক তিনি। বাকিগুলোর জন্য চালক রেখেছেন। ভগবানের কৃপায় নাকি এখন তার যথেষ্ট উপার্জন হয়। অন্যদিকে তাঁর স্ত্রী সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মাসে ৪০ হাজার রুপি বেতন। বেশ চলে যায় সংসার খরচ। মেয়ে আছে, পড়ে ক্লাস এইটে। এই বয়সেই ধনী বন্ধুদের দেখে নাকি অনেক দামি জিনিস বায়না ধরে। কিন্তু মেয়েকে সত্যিকারের মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিতে চান রানা দম্পতি। মেয়ের সব আবদার পূরণ করেন না। বুঝেশুনে করেন। মেয়ে থাকে হোস্টেলে। ছুটিতে বাড়িতে আসে। মেয়ের কথা থেকে চলে গেলেন তাঁর প্রেমের গল্পে। খুব মজা নিয়ে শুনছিলাম আমরা।
ফোনে পরিচয় হয় নেপালি, মানে সিকিমের মেয়ের সঙ্গে। ভুল নম্বরে কথা বলে মেয়ের কণ্ঠটা খুব ভালো লেগেছিল রানাদার। বলছিলেন, ‘পাহাড়ি মেয়ে পটানো খুব সোজা। কণ্ঠটা ভালো লেগে গেল, তাই পটিয়ে ফেললাম।’ হো হো করে হেসে উঠলাম সবাই। এরপর বললেন লোভনীয় কথা, ‘নেপালিরা মেয়ে বিয়ে দিলে বরকে সম্পত্তি উপহার দেয়। সেই লোভেও তো এই মেয়েকে বিয়ে করা চাই!’ আরও একটু হেসে নিলাম আমরা। রানাদার প্রেমের কাহিনি শুনতে শুনতে অনেকটুকু পথ পাড়ি দিয়েছিলাম। মাঝপথে কারও কারও প্রকৃতির ডাক এসেছিল। রানাদা বললেন, ‘এই একটু সামনে ভালো জায়গা আছে। যেখানে-সেখানে তো নামা যাবে না। আমি যেখানে নিয়ে যাব, সেখানে নামতে পারবেন। মেয়েছেলেরাও নামে ওখানে।’ আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তুমিও নামতে পারবে।’ আমার নামার কোনো দরকার পড়েনি। অযথা নেমে আর কী করব। যাই হোক, রানাদার ‘আরেকটু সামনে’ এল অনেকক্ষণ সময় পর। আধা ঘণ্টার ওপরে হবে সবাইকে অপেক্ষা করতে হয়েছে। অবশেষে যথাস্থানে গাড়ি থামালে ‘ভালো জায়গা’ পেলাম না। বরং উদ্যানের মতো খোলা জায়গা! সেখানে বানরের ছড়াছড়ি। মনের আনন্দে খেলছে, লাফাচ্ছে, খাচ্ছে, উকুন বেছে দিচ্ছে। সবাই নামলেন। আমি আর ভুবন বসেই রইলাম। রানাদা দেখিয়ে দিলেন, কাজ সারতে এক পাশে পাহাড়ের চিপায় জংলার মধ্যে যেতে। আমাকে বললে আমি মানা করে দিলাম। কারণ আমার দরকার নাই। কিন্তু তিনি অভয় দিচ্ছিলেন, ‘দেখো, কত মহিলা মানুষ যাচ্ছে।’ আমি বোঝালাম, ‘আমার তো প্রয়োজন নেই দাদা।’ আমি বসে বানরের কীর্তি দেখছিলাম। আমাদের খাওয়ার পর বাকি থাকা কেক সৌরভ ভাই বানরদের খেতে দিলেন। তখন আমার কিছুটা সুস্থ লাগছিল।
সবাই কাজ সেরে গাড়িতে উঠে এলে রানাদা এবার শুরু করলেন তার প্রেমিকার কাহিনি। না না, যাঁকে বিয়ে করেছেন তাঁর কথা বলছি না। বিয়ের পর পরকীয়া করছেন, সেই গল্প করলেন। ভয়ানক কাহিনি শুনে আমাদের মুখের চোয়াল নিচে ঝুলে গেল! এতক্ষণ কী আসলেই এই লোকটার কাহিনি শুনছিলাম? যিনি স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের প্রতি এত দায়িত্বশীল আর শ্রদ্ধেয়? কান খাড়া করে রইলাম আবার জিজ্ঞেস করে। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না প্রথমে। আকাশ ভাই মশকরা করে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বউদি জানে আপনার প্রেমিকার কথা?’ অবলীলায় রানাদা বলে গেলেন, ‘অবশ্যই। আমি আমার স্ত্রীকে না জানিয়ে কিছু করি না।’ আমাদের চোয়াল ঝুলতে ঝুলতে ব্যথা হয়ে যাওয়ার অবস্থা! রানাদা বলতে লাগলেন, ‘আমার স্ত্রী কিছুই মনে করে না। ও জানে আমি যখন শিলিগুড়ি যাই, এক রাত হোটেলে আমার গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে কাটাই। গল্পগুজব করে আমার মন ভালো হয়ে গেলে আমি গ্যাংটকে ফিরে যাই। এমনকি আমার গার্লফ্রেন্ডের বাসায়ও জানে। ওর বর জানে যে আমার সঙ্গে সময় কাটায়। কিচ্ছু বলে না।’ আমরা স্তব্ধ হয়ে গেলাম। কিছু বলার খুঁজে পাচ্ছিলাম না কেউ। আকাশ ভাই শুধু বললেন, ‘বেশ বেশ। খুব ভালো!’ মনে মনে একচোট হেসে নিলাম। কিছুক্ষণ পর রানাদাকে দেখলাম হাতের মধ্যে কিছু একটা নিয়ে পিষে পিষে মুখে ভরছে। এটা কী জানতে চাইলাম। বললেন, ‘গুল। আমার আবার বাজে কোনো নেশা নাই। চা-বিড়ি কিছুই না। একটু গুল খাই। এটা ভালো।’ মনে মনে ভাবলাম, ভাইরে, নেশা তো নেশাই! ভালো আর মন্দ কী!
কথায় কথায় সময়ের আগে পৌঁছাতে পারলাম শিলিগুড়িতে। রানাদা তার একটা কার্ড দিলেন, নম্বরসহ। বললেন, ‘ইন্ডিয়ায় আবার এলে আমাকে ফোন করবেন। বললেই হবে, রানাদা, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। যেকোনো দরকারে ফোন করতে পারেন। আমার নেটওয়ার্ক ভালো। আমার নাম রানা। এখানে রানাদাকে সবাই চেনে।’ কার্ডটা সম্ভবত আকাশ ভাই রেখেছিলেন। আমরা নেমে বিদায় দিয়ে দিলাম রানাদাকে। তাঁকে ফিরতে হবে গ্যাংটকে। জরুরি কাজ আছে। ভুবনের ধারণা, রানাদার এসব গল্প পুরোটাই চাপা! হোক, তা-ও তো নতুন গল্প শুনলাম।
আকাশ ভাইয়ারা বেশিক্ষণ অপেক্ষা করেননি। বাস কাউন্টারে বিশ্রাম নেওয়ার সময় ছিল না। বাস চলে এসেছিল। এই বাস দিয়ে ফিরবেন চেংড়াবান্ধা সীমানায়। তারা বিদায় নিয়ে বাসে উঠে গেলেন। রইলাম বাকি আমি, ভুবন, সৌরভ ভাই আর ইমরান ভাই। বাবা বলেছিলেন, বাস কাউন্টারের পেছনে কম দামের হোটেল আছে, ভালো। আমাকে কাউন্টারে অপেক্ষা করতে বলে ভুবন ঘুরে এসে জানাল, ওই হোটেলগুলোর পরিবেশ পছন্দ হয়নি। কাউন্টারের ঠিক পাশের হোটেল সেন্ট্রাল প্লাজায় দরদাম করে একটা কক্ষে উঠে গেলাম। সৌরভ ভাইদের কাছাকাছি রুম পেলাম। তাঁদেরটা আগে থেকেই বুকিং দেওয়া ছিল শ্যামলী পরিবহনের মাধ্যমে। অমরদা ডিসকাউন্টে ঠিক করে দিয়েছিলেন। আমদের জন্যও অমরদা ডিসকাউন্টের কথা বলে দিলেন। আমাদের রুম গুছিয়ে দিতে সময় নিচ্ছিল। কিছুক্ষণ সৌরভ ভাইদের রুমে বিশ্রাম নিলাম। আমাদের রুমটা পেলে সবাই ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেতে বের হলাম। কোথায় খাওয়া যায়? খুব গরুর মাংসের বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছা করছিল। আমার একার না, সবার। তখন সুস্থ লাগছিল।
ভেবেছিলাম দুপুরের খাবারের পর মার্কেটে যাব। ব্যাটারির একটা রিকশা ভাড়া করে চালককে বললাম মুসলিম কোনো রেস্তোরাঁয় নিয়ে যেতে, যেখানে গরুর মাংস পাওয়া যায়। চালক আমাদের নামিয়ে দিলেন মুসলিম একটা রেস্তোরাঁয়। কিন্তু হায়, সেখানে গরুর মাংসের কিছুই নেই। আশপাশে খোঁজ নিয়ে জানলাম, ওইটাই একমাত্র মুসলিম হোটেল এদিকের। তেমন কিছু চিনি-জানি না বলে সেখানেই খেতে ঢুকলাম। নিলাম খাসির কাচ্চি বিরিয়ানি, বাসমতি চালের। সৌরভ ভাই মাংস খাবেন না। তাই নিলেন ডিম বিরিয়ানি। আমি এক লোকমা মুখে দিয়েই বিস্বাদ অনুভূতি পেলাম। লবণের ছড়াছড়ি। অন্যরা কষ্ট করে খেতে পারলেও আমি আর ভুবন পারছিলাম না একদম। ভুবন তা-ও আমার চেয়ে বেশি খেতে পেরেছিল। আমি অর্ধেকের বেশি নষ্ট করলাম আর মনে মনে নিজেকে গাল দিলাম! খাবার নষ্ট করা আমার একেবারেই পছন্দ না। অবাক করে দিয়ে চেটেপুটে খেলেন সৌরভ ভাই। তারও এক কথা, ‘খাবার নষ্ট করা ঠিক না।’ ওয়েটারকে বিল দিতে বলা হলো। বিল নিয়ে এলে আমি ঠাট্টার ছলে জিজ্ঞেস করলাম, ‘দাদা, আপনাদের এখানে কি লবণের দাম কম? না মানে আমি নিয়ে যেতে চাই তো, তাই জিজ্ঞেস করলাম আরকি।’
লোকটা খুব খুশি হয়ে জবাব দিলেন, ‘দিদি, শুধু লবণ কেন! আমাদের যেকোনো মুদি দোকানে যান। কম দামে আরও ভালো ভালো জিনিস পাবেন।’ আমি ধন্যবাদ দিয়ে মনে মনে বললাম, আহা বেচারা, আমার ঠাট্টাটাই বুঝল না! বিল চুকিয়ে আমরা বের হয়ে গেলাম সেখান থেকে। শরীর আবার অসুস্থ লাগা শুরু হয়ে গেল। রাস্তার ধারে জুসের দোকান দেখে ভাবলাম খেয়ে নিই, হয়তো জ্বরের মুখে ভালো লাগবে। সবাই মিলেই খেলাম। কেউ আনারস, কেউ মাল্টা, কেউ লেবু। তাজা ফল কেটে সামনেই বানিয়ে দেয়। ভালোই লাগল। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম আর শরীর চলবে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হোটেলে ফিরে গেলাম। ভাবলাম, একটু জিরিয়ে নিলে ঠিক হয়ে যাবে হয়তো। সন্ধ্যায় বিধান মার্কেটে যাব, এরপর বাইরে কোথাও খেয়ে ফিরব। তাই দুজনেই ওষুধ খেয়ে নিলাম। কিন্তু অবস্থার অবনতি ছাড়া উন্নতি হলো না। আমার এক সহকর্মী থাকেন মুম্বাইতে, দেবারতি নাম। বাঙালি। কলকাতার মেয়ে। তাঁকে জানিয়েই আমি ভারতে গিয়েছিলাম। তিনি তাঁর বড় ভাইয়ের ফোন নম্বর দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘যেকোনো সমস্যায় দাদাকে ফোন দিও।
দাদা শিলিগুড়িতেই থাকেন।’ জ্বরের ঘোরেও দাদাকে জানাতে ভুললাম না আমাদের অসুস্থতার কথা। এর আগেও ভারতে পৌঁছে দাদার সঙ্গে যোগাযোগ করে রেখেছিলাম। যাই হোক, দাদা শুনে খুব দুঃখ পেলেন। জানালেন, তিনি কাজের জন্য কলকাতা গিয়েছেন। পরদিন ফিরবেন। ফিরে দেখা করবেন। এদিকে আমাদের অবস্থা খুব খারাপ হচ্ছে। ভুবন তো একদম বাসি লিকলিকে বরবটির মতো নেতিয়ে পড়ছিল। আমার শরীরের তাপমাত্রা কমে গেলেও দুর্বলতা বাড়ছিল। আর ভুবনের জ্বর ১০৩ ডিগ্রিতে উঠে বসে ছিল। নামার কোনো খবরই নেই! হোটেল থেকেই থার্মোমিটার দিয়েছিল মাপতে। বিকেলে সৌরভ ভাইয়ারা মার্কেটে যাওয়ার আগে আমাদের জানিয়ে গেলেন।
আমরা পড়ে রইলাম হোটেল রুমেই, জ্বরে কাতর। টিভিতে খুব অল্প চ্যানেল দেখা যায়। তা-ও বেশির ভাগ চ্যানেলে অপরিচিত ভাষায় সব অনুষ্ঠান। ঘুরেফিরে দু-একটা হিন্দি চ্যানেল পেয়ে সেগুলোই দেখছিলাম এই ভেবে, যেন শরীর খারাপ লাগাটা ভুলে থাকতে পারি। কিন্তু ভুবনের অবস্থা দেখে দুশ্চিন্তা বাড়তে লাগল। সন্ধ্যার দিকে হোটেলের এক কর্মচারীকে ডেকে জানতে চাইলাম আশপাশে কোনো হাসপাতালে নেওয়া যাবে কি না। বললেন, ‘দিদি, এখন যদি কোনো ক্লিনিকে নিয়ে যান, তবে সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি করিয়ে দেবে। খামোখা খরচা হবে। আর এমন সময় ডাক্তারও পাবেন না সেখানে। আমি ওষুধ এনে দিচ্ছি। সেটা খাইয়ে দিন। ঠিক হয়ে যাবে।’ ভরসা করে তাঁর দেওয়া ওষুধ খাওয়লাম ভুবনকে। কিন্তু নাহ, অবস্থার কোনো উন্নতি নেই। সৌরভ ভাইয়ারা ফিরে এসে দেখালেন তাঁদের কেনাকাটা। ভুবন শুধু আফসোস করছিল, ‘ইশ্ ভাই। রিজনেবল দামে এত জুতা এনেছেন। আমরা সুস্থ থাকলে যেতাম। শ্রীলেদার থেকে কয়েক জোড়া জুতা কেনার ইচ্ছা ছিল।’ সৌরভ ভাই তো পরিবারের সবার জন্য ৮-১০ জোড়া জুতা কিনে নিয়েছিলেন।
রাতে স্যুপ ফরমাশ করলাম। কোথাও যাওয়ার তো অবস্থা ছিল না। এত জঘন্য লাগছিল খাবার, পারছিলাম না খেতে। তবু জোর করে কিছুটা খেয়ে নিলাম। কারণ, শক্তি দরকার। ওষুধও খাওয়া দরকার। ভুবন যে নিজে উঠে খাবে, সেই অবস্থায় ছিল না। আমি জোর করে অল্প একটু খাইয়ে দিলাম ওকে। জোর করে খাইয়ে যা হয় আরকি, বমি করে ফেলে দিল সব! দুজনে ওষুধপত্র খেয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম।
চলবে...

সকালে ঘুম থেকে উঠে খানিকটা ভালো লাগছিল। পুরোপুরি না। অসুস্থ শরীর নিয়ে কোথাও গিয়ে নাশতা করতে ইচ্ছা করছিল না। এদিন থেকে আমার চেয়ে ভুবনের অবস্থা খারাপ হতে লাগল। আমরা নাশতা করিনি। ভাবলাম যাত্রাপথে খেয়ে নেব। গলা দিয়ে কিছু নামার অবস্থায় নেই। আমরা প্রস্তুত হয়ে নিচে নেমে গিয়েছিলাম। কিন্তু অপেক্ষা করতে হলো অনেকক্ষণ। তখনো গাড়ির ব্যবস্থা হয়নি। অমরদা বলেছিলেন সকাল ৭টার মধ্যে রওনা দিতে পারব। কিন্তু সেখানে ৮টার ওপরে বেজে গিয়েছিল। বড় দলটাও চলে যাবে শিলিগুড়ি। এদিকে দেরি দেখে আকাশ ভাইয়ারা ক্ষেপে যাচ্ছিলেন। কেননা, তাঁদের সময়মতো পৌঁছে বাস ধরতে হবে। অমরদা এদিক-সেদিক ফোন ঘুরিয়ে অবশেষে একটা গাড়ি নিশ্চিত করলেন।
আসলে হয়েছিল কী, যে চালক আসার কথা ছিল, তিনি শেষ মুহূর্তে আর আসেননি। আমাদের অবস্থা তখন কিছুটা উন্নতির দিকে। হোটেলের লবিতে বসে থাকার চেয়ে বাইরে মল রোডের বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করাটা ভালো লাগছিল। অবশেষে একটা জিপ গাড়ি এসে উপস্থিত হলো আমাদের জন্য। হুড়োহুড়ি করে উঠে গেলাম গাড়িতে। জিপ চালু করার আগে অমরদা বিদায় নিতে এলেন। তিনি আরেকটা দলকে গাইড করার জন্য থেকে যাচ্ছিলেন। খুব করে বলে দিলেন গাড়ির চালককে পরিচয় করিয়ে, ‘ও কিন্তু আমার নিজের লোক। আমার বন্ধু। আপনারা নিশ্চিন্তে যান। কোনো অসুবিধা হবে না।’ কিন্তু চালককে দেখে খুব একটা সুবিধার মনে হচ্ছিল না। তিনি প্রথমেই বাদ সাধলেন আমাদের দুজনের সামনে বসা নিয়ে। তবু আমরা বসেছিলাম। কারণ পেছনে গাদাগাদি করে বসা সম্ভব নয়। তিনি যতই মুড দেখিয়ে রেগে যাচ্ছিলেন, ততই আমরা বিনয়ী হয়ে তাকে বোঝাচ্ছিলাম।
যাত্রাপথে র্যাংপোতে আবার থামতে হয়েছিল। আমাদের অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। কিছু নাশতাপানি খাওয়া দরকার ছিল। ভুবন নেমে দোকান থেকে ব্রিটানিয়ার কেক, পানি আর সেখানকার কোনো একটা প্যারাসিটামল কিনে আনল। বাকিরা কোথা থেকে যেন নাশতা খেয়ে এলেন। আমি একবিন্দুও নামলাম না গাড়ি থেকে। ভীষণ খারাপ লাগছিল। যখন কেউ ছিল না, তখন চালকের সে কী হম্বিতম্বি! একে তো আমাদের দুজনের একসঙ্গে সামনে বসা নিয়ে তার সমস্যা, তার ওপর কেউ কেন জলদি ফিরে আসছে না, সেটা নিয়েও সমস্যা। অথচ সবার নাশতা সারতে যতক্ষণ সময় লাগার কথা, ততক্ষণেই সবাই ফিরে এসেছিলেন। আবার চালকের অনুপস্থিতেও সবাই যার যার রাগ ঝেড়ে নিয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই চালকের সঙ্গে আমাদের মতের বনিবনা হচ্ছিল না বলে এই অবস্থা। আমি আর ভুবন একটু কেক খেয়ে ওষুধ খেয়ে নিলাম। ভুবন পেয়ারা ফ্লেভারের একটা পানির বোতল এনেছিল। বোতলটা সুন্দর। এখনো বাসায় রেখে দিয়েছি। পানিও খেতে ভালো। সবাই গাড়িতে উঠে পড়লে আবার যাত্রা শুরু হলো।
এবার মনে হয় আগের চেয়ে বেশি বিনয় দেখাচ্ছিলেন সবাই। শুধু চালককে ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ করার জন্য। ভাবের চোটে তো চালক কথা তেমন বলছিলেন না, কিন্তু যখন শুরু করলেন, তখন মনে হলো লোকটা বেশ মিশুক। সেদিনের যাত্রাটা গানের বদলে রানাদার জীবনের গল্প শুনে কেটে গিয়েছিল। চালকের নাম রানা। বয়স চল্লিশের কাছাকাছি হবে। এর চেয়ে কমও হতে পারে। জানা হয়নি। জিপটা তাঁর নিজের। এ রকম আরও ৮-৯টা জিপের মালিক তিনি। বাকিগুলোর জন্য চালক রেখেছেন। ভগবানের কৃপায় নাকি এখন তার যথেষ্ট উপার্জন হয়। অন্যদিকে তাঁর স্ত্রী সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মাসে ৪০ হাজার রুপি বেতন। বেশ চলে যায় সংসার খরচ। মেয়ে আছে, পড়ে ক্লাস এইটে। এই বয়সেই ধনী বন্ধুদের দেখে নাকি অনেক দামি জিনিস বায়না ধরে। কিন্তু মেয়েকে সত্যিকারের মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিতে চান রানা দম্পতি। মেয়ের সব আবদার পূরণ করেন না। বুঝেশুনে করেন। মেয়ে থাকে হোস্টেলে। ছুটিতে বাড়িতে আসে। মেয়ের কথা থেকে চলে গেলেন তাঁর প্রেমের গল্পে। খুব মজা নিয়ে শুনছিলাম আমরা।
ফোনে পরিচয় হয় নেপালি, মানে সিকিমের মেয়ের সঙ্গে। ভুল নম্বরে কথা বলে মেয়ের কণ্ঠটা খুব ভালো লেগেছিল রানাদার। বলছিলেন, ‘পাহাড়ি মেয়ে পটানো খুব সোজা। কণ্ঠটা ভালো লেগে গেল, তাই পটিয়ে ফেললাম।’ হো হো করে হেসে উঠলাম সবাই। এরপর বললেন লোভনীয় কথা, ‘নেপালিরা মেয়ে বিয়ে দিলে বরকে সম্পত্তি উপহার দেয়। সেই লোভেও তো এই মেয়েকে বিয়ে করা চাই!’ আরও একটু হেসে নিলাম আমরা। রানাদার প্রেমের কাহিনি শুনতে শুনতে অনেকটুকু পথ পাড়ি দিয়েছিলাম। মাঝপথে কারও কারও প্রকৃতির ডাক এসেছিল। রানাদা বললেন, ‘এই একটু সামনে ভালো জায়গা আছে। যেখানে-সেখানে তো নামা যাবে না। আমি যেখানে নিয়ে যাব, সেখানে নামতে পারবেন। মেয়েছেলেরাও নামে ওখানে।’ আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তুমিও নামতে পারবে।’ আমার নামার কোনো দরকার পড়েনি। অযথা নেমে আর কী করব। যাই হোক, রানাদার ‘আরেকটু সামনে’ এল অনেকক্ষণ সময় পর। আধা ঘণ্টার ওপরে হবে সবাইকে অপেক্ষা করতে হয়েছে। অবশেষে যথাস্থানে গাড়ি থামালে ‘ভালো জায়গা’ পেলাম না। বরং উদ্যানের মতো খোলা জায়গা! সেখানে বানরের ছড়াছড়ি। মনের আনন্দে খেলছে, লাফাচ্ছে, খাচ্ছে, উকুন বেছে দিচ্ছে। সবাই নামলেন। আমি আর ভুবন বসেই রইলাম। রানাদা দেখিয়ে দিলেন, কাজ সারতে এক পাশে পাহাড়ের চিপায় জংলার মধ্যে যেতে। আমাকে বললে আমি মানা করে দিলাম। কারণ আমার দরকার নাই। কিন্তু তিনি অভয় দিচ্ছিলেন, ‘দেখো, কত মহিলা মানুষ যাচ্ছে।’ আমি বোঝালাম, ‘আমার তো প্রয়োজন নেই দাদা।’ আমি বসে বানরের কীর্তি দেখছিলাম। আমাদের খাওয়ার পর বাকি থাকা কেক সৌরভ ভাই বানরদের খেতে দিলেন। তখন আমার কিছুটা সুস্থ লাগছিল।
সবাই কাজ সেরে গাড়িতে উঠে এলে রানাদা এবার শুরু করলেন তার প্রেমিকার কাহিনি। না না, যাঁকে বিয়ে করেছেন তাঁর কথা বলছি না। বিয়ের পর পরকীয়া করছেন, সেই গল্প করলেন। ভয়ানক কাহিনি শুনে আমাদের মুখের চোয়াল নিচে ঝুলে গেল! এতক্ষণ কী আসলেই এই লোকটার কাহিনি শুনছিলাম? যিনি স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের প্রতি এত দায়িত্বশীল আর শ্রদ্ধেয়? কান খাড়া করে রইলাম আবার জিজ্ঞেস করে। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না প্রথমে। আকাশ ভাই মশকরা করে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বউদি জানে আপনার প্রেমিকার কথা?’ অবলীলায় রানাদা বলে গেলেন, ‘অবশ্যই। আমি আমার স্ত্রীকে না জানিয়ে কিছু করি না।’ আমাদের চোয়াল ঝুলতে ঝুলতে ব্যথা হয়ে যাওয়ার অবস্থা! রানাদা বলতে লাগলেন, ‘আমার স্ত্রী কিছুই মনে করে না। ও জানে আমি যখন শিলিগুড়ি যাই, এক রাত হোটেলে আমার গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে কাটাই। গল্পগুজব করে আমার মন ভালো হয়ে গেলে আমি গ্যাংটকে ফিরে যাই। এমনকি আমার গার্লফ্রেন্ডের বাসায়ও জানে। ওর বর জানে যে আমার সঙ্গে সময় কাটায়। কিচ্ছু বলে না।’ আমরা স্তব্ধ হয়ে গেলাম। কিছু বলার খুঁজে পাচ্ছিলাম না কেউ। আকাশ ভাই শুধু বললেন, ‘বেশ বেশ। খুব ভালো!’ মনে মনে একচোট হেসে নিলাম। কিছুক্ষণ পর রানাদাকে দেখলাম হাতের মধ্যে কিছু একটা নিয়ে পিষে পিষে মুখে ভরছে। এটা কী জানতে চাইলাম। বললেন, ‘গুল। আমার আবার বাজে কোনো নেশা নাই। চা-বিড়ি কিছুই না। একটু গুল খাই। এটা ভালো।’ মনে মনে ভাবলাম, ভাইরে, নেশা তো নেশাই! ভালো আর মন্দ কী!
কথায় কথায় সময়ের আগে পৌঁছাতে পারলাম শিলিগুড়িতে। রানাদা তার একটা কার্ড দিলেন, নম্বরসহ। বললেন, ‘ইন্ডিয়ায় আবার এলে আমাকে ফোন করবেন। বললেই হবে, রানাদা, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। যেকোনো দরকারে ফোন করতে পারেন। আমার নেটওয়ার্ক ভালো। আমার নাম রানা। এখানে রানাদাকে সবাই চেনে।’ কার্ডটা সম্ভবত আকাশ ভাই রেখেছিলেন। আমরা নেমে বিদায় দিয়ে দিলাম রানাদাকে। তাঁকে ফিরতে হবে গ্যাংটকে। জরুরি কাজ আছে। ভুবনের ধারণা, রানাদার এসব গল্প পুরোটাই চাপা! হোক, তা-ও তো নতুন গল্প শুনলাম।
আকাশ ভাইয়ারা বেশিক্ষণ অপেক্ষা করেননি। বাস কাউন্টারে বিশ্রাম নেওয়ার সময় ছিল না। বাস চলে এসেছিল। এই বাস দিয়ে ফিরবেন চেংড়াবান্ধা সীমানায়। তারা বিদায় নিয়ে বাসে উঠে গেলেন। রইলাম বাকি আমি, ভুবন, সৌরভ ভাই আর ইমরান ভাই। বাবা বলেছিলেন, বাস কাউন্টারের পেছনে কম দামের হোটেল আছে, ভালো। আমাকে কাউন্টারে অপেক্ষা করতে বলে ভুবন ঘুরে এসে জানাল, ওই হোটেলগুলোর পরিবেশ পছন্দ হয়নি। কাউন্টারের ঠিক পাশের হোটেল সেন্ট্রাল প্লাজায় দরদাম করে একটা কক্ষে উঠে গেলাম। সৌরভ ভাইদের কাছাকাছি রুম পেলাম। তাঁদেরটা আগে থেকেই বুকিং দেওয়া ছিল শ্যামলী পরিবহনের মাধ্যমে। অমরদা ডিসকাউন্টে ঠিক করে দিয়েছিলেন। আমদের জন্যও অমরদা ডিসকাউন্টের কথা বলে দিলেন। আমাদের রুম গুছিয়ে দিতে সময় নিচ্ছিল। কিছুক্ষণ সৌরভ ভাইদের রুমে বিশ্রাম নিলাম। আমাদের রুমটা পেলে সবাই ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেতে বের হলাম। কোথায় খাওয়া যায়? খুব গরুর মাংসের বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছা করছিল। আমার একার না, সবার। তখন সুস্থ লাগছিল।
ভেবেছিলাম দুপুরের খাবারের পর মার্কেটে যাব। ব্যাটারির একটা রিকশা ভাড়া করে চালককে বললাম মুসলিম কোনো রেস্তোরাঁয় নিয়ে যেতে, যেখানে গরুর মাংস পাওয়া যায়। চালক আমাদের নামিয়ে দিলেন মুসলিম একটা রেস্তোরাঁয়। কিন্তু হায়, সেখানে গরুর মাংসের কিছুই নেই। আশপাশে খোঁজ নিয়ে জানলাম, ওইটাই একমাত্র মুসলিম হোটেল এদিকের। তেমন কিছু চিনি-জানি না বলে সেখানেই খেতে ঢুকলাম। নিলাম খাসির কাচ্চি বিরিয়ানি, বাসমতি চালের। সৌরভ ভাই মাংস খাবেন না। তাই নিলেন ডিম বিরিয়ানি। আমি এক লোকমা মুখে দিয়েই বিস্বাদ অনুভূতি পেলাম। লবণের ছড়াছড়ি। অন্যরা কষ্ট করে খেতে পারলেও আমি আর ভুবন পারছিলাম না একদম। ভুবন তা-ও আমার চেয়ে বেশি খেতে পেরেছিল। আমি অর্ধেকের বেশি নষ্ট করলাম আর মনে মনে নিজেকে গাল দিলাম! খাবার নষ্ট করা আমার একেবারেই পছন্দ না। অবাক করে দিয়ে চেটেপুটে খেলেন সৌরভ ভাই। তারও এক কথা, ‘খাবার নষ্ট করা ঠিক না।’ ওয়েটারকে বিল দিতে বলা হলো। বিল নিয়ে এলে আমি ঠাট্টার ছলে জিজ্ঞেস করলাম, ‘দাদা, আপনাদের এখানে কি লবণের দাম কম? না মানে আমি নিয়ে যেতে চাই তো, তাই জিজ্ঞেস করলাম আরকি।’
লোকটা খুব খুশি হয়ে জবাব দিলেন, ‘দিদি, শুধু লবণ কেন! আমাদের যেকোনো মুদি দোকানে যান। কম দামে আরও ভালো ভালো জিনিস পাবেন।’ আমি ধন্যবাদ দিয়ে মনে মনে বললাম, আহা বেচারা, আমার ঠাট্টাটাই বুঝল না! বিল চুকিয়ে আমরা বের হয়ে গেলাম সেখান থেকে। শরীর আবার অসুস্থ লাগা শুরু হয়ে গেল। রাস্তার ধারে জুসের দোকান দেখে ভাবলাম খেয়ে নিই, হয়তো জ্বরের মুখে ভালো লাগবে। সবাই মিলেই খেলাম। কেউ আনারস, কেউ মাল্টা, কেউ লেবু। তাজা ফল কেটে সামনেই বানিয়ে দেয়। ভালোই লাগল। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম আর শরীর চলবে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হোটেলে ফিরে গেলাম। ভাবলাম, একটু জিরিয়ে নিলে ঠিক হয়ে যাবে হয়তো। সন্ধ্যায় বিধান মার্কেটে যাব, এরপর বাইরে কোথাও খেয়ে ফিরব। তাই দুজনেই ওষুধ খেয়ে নিলাম। কিন্তু অবস্থার অবনতি ছাড়া উন্নতি হলো না। আমার এক সহকর্মী থাকেন মুম্বাইতে, দেবারতি নাম। বাঙালি। কলকাতার মেয়ে। তাঁকে জানিয়েই আমি ভারতে গিয়েছিলাম। তিনি তাঁর বড় ভাইয়ের ফোন নম্বর দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘যেকোনো সমস্যায় দাদাকে ফোন দিও।
দাদা শিলিগুড়িতেই থাকেন।’ জ্বরের ঘোরেও দাদাকে জানাতে ভুললাম না আমাদের অসুস্থতার কথা। এর আগেও ভারতে পৌঁছে দাদার সঙ্গে যোগাযোগ করে রেখেছিলাম। যাই হোক, দাদা শুনে খুব দুঃখ পেলেন। জানালেন, তিনি কাজের জন্য কলকাতা গিয়েছেন। পরদিন ফিরবেন। ফিরে দেখা করবেন। এদিকে আমাদের অবস্থা খুব খারাপ হচ্ছে। ভুবন তো একদম বাসি লিকলিকে বরবটির মতো নেতিয়ে পড়ছিল। আমার শরীরের তাপমাত্রা কমে গেলেও দুর্বলতা বাড়ছিল। আর ভুবনের জ্বর ১০৩ ডিগ্রিতে উঠে বসে ছিল। নামার কোনো খবরই নেই! হোটেল থেকেই থার্মোমিটার দিয়েছিল মাপতে। বিকেলে সৌরভ ভাইয়ারা মার্কেটে যাওয়ার আগে আমাদের জানিয়ে গেলেন।
আমরা পড়ে রইলাম হোটেল রুমেই, জ্বরে কাতর। টিভিতে খুব অল্প চ্যানেল দেখা যায়। তা-ও বেশির ভাগ চ্যানেলে অপরিচিত ভাষায় সব অনুষ্ঠান। ঘুরেফিরে দু-একটা হিন্দি চ্যানেল পেয়ে সেগুলোই দেখছিলাম এই ভেবে, যেন শরীর খারাপ লাগাটা ভুলে থাকতে পারি। কিন্তু ভুবনের অবস্থা দেখে দুশ্চিন্তা বাড়তে লাগল। সন্ধ্যার দিকে হোটেলের এক কর্মচারীকে ডেকে জানতে চাইলাম আশপাশে কোনো হাসপাতালে নেওয়া যাবে কি না। বললেন, ‘দিদি, এখন যদি কোনো ক্লিনিকে নিয়ে যান, তবে সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি করিয়ে দেবে। খামোখা খরচা হবে। আর এমন সময় ডাক্তারও পাবেন না সেখানে। আমি ওষুধ এনে দিচ্ছি। সেটা খাইয়ে দিন। ঠিক হয়ে যাবে।’ ভরসা করে তাঁর দেওয়া ওষুধ খাওয়লাম ভুবনকে। কিন্তু নাহ, অবস্থার কোনো উন্নতি নেই। সৌরভ ভাইয়ারা ফিরে এসে দেখালেন তাঁদের কেনাকাটা। ভুবন শুধু আফসোস করছিল, ‘ইশ্ ভাই। রিজনেবল দামে এত জুতা এনেছেন। আমরা সুস্থ থাকলে যেতাম। শ্রীলেদার থেকে কয়েক জোড়া জুতা কেনার ইচ্ছা ছিল।’ সৌরভ ভাই তো পরিবারের সবার জন্য ৮-১০ জোড়া জুতা কিনে নিয়েছিলেন।
রাতে স্যুপ ফরমাশ করলাম। কোথাও যাওয়ার তো অবস্থা ছিল না। এত জঘন্য লাগছিল খাবার, পারছিলাম না খেতে। তবু জোর করে কিছুটা খেয়ে নিলাম। কারণ, শক্তি দরকার। ওষুধও খাওয়া দরকার। ভুবন যে নিজে উঠে খাবে, সেই অবস্থায় ছিল না। আমি জোর করে অল্প একটু খাইয়ে দিলাম ওকে। জোর করে খাইয়ে যা হয় আরকি, বমি করে ফেলে দিল সব! দুজনে ওষুধপত্র খেয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম।
চলবে...

হংকং শহরের ব্যস্ত বিকেলে ছোট্ট এক সুশি রেস্তোরাঁর রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে জাপানি শেফ কেনইচি ফুজিমোতো হাতে নিলেন একটি কালো বাক্স। তার ওপর সোনালি অক্ষরে লেখা ‘ওয়ার্ল্ডস বেস্ট রাইস’, কেজি ১০৯ ডলার!...
১ ঘণ্টা আগে
রান্নাঘরে থালাবাটি পরিষ্কার করার জন্য এখন স্পঞ্জের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়; বিশেষ করে শহরের বেশির ভাগ বাসাবাড়িতে খাবারের নোংরা এই স্পঞ্জের মাধ্যমে পরিষ্কার করা হয়। এগুলোতে আপনার ধারণার চেয়ে বেশি ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া লুকিয়ে থাকে। শক্তপোক্ত স্পঞ্জও একসময় পরিষ্কার করার ক্ষমতা হারায়। এর চেয়ে খারাপ...
৩ ঘণ্টা আগে
আজকের দিনটি আপনার জন্য পুরোপুরি অ্যাকশন-প্যাকড, তবে অ্যাকশন মানে মারপিট নয়, স্রেফ জটিলতা! কর্মক্ষেত্রে পরিস্থিতি একটু ‘জট পাকানো সুতার মতো’, মানে আপনি যা করতে যাবেন, সেটাই ডবল কাজ হয়ে যাবে। ‘শত্রুরা’ আজ ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, তবে সম্ভবত তারা আপনার অফিসের প্রিন্টার।
৪ ঘণ্টা আগে
তাজা উপকরণে তৈরি দারুণ স্বাদের জন্য থাই খাবার বিশ্বজুড়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এর প্রাণবন্ত স্বাদ ও পুষ্টিগুণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে। পুষ্টিবিদ কেরি বিসনের মতে, মসলা, ভেষজ ও তাজা উপাদানের এক প্রাণবন্ত মিশ্রণে তৈরি হয় থাই খাবার। কিন্তু এই খাবারের প্রেমে পড়া নুডলস অনুরাগীদের জন্য কিছুটা খারাপ খবর আছে...
৫ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

হংকং শহরের ব্যস্ত বিকেলে ছোট্ট এক সুশি রেস্তোরাঁর রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে জাপানি শেফ কেনইচি ফুজিমোতো হাতে নিলেন একটি কালো বাক্স। তার ওপর সোনালি অক্ষরে লেখা ‘ওয়ার্ল্ডস বেস্ট রাইস’, কেজি ১০৯ ডলার!
ফুজিমোতো ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ‘মিশেলিন তারকা’ পাওয়া সুশি মাস্টারদের অধীনে কাজ করেছেন। অসংখ্য জাতের জাপানি চাল তাঁর হাতে রান্না হয়েছে। তবু আজকের বাক্সটি তাঁর কাছে নতুন। বাক্সের ভেতর রয়েছে ২০১৬ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস স্বীকৃত বিশ্বের সবচেয়ে দামি চাল—কিনমেমাই প্রিমিয়াম।
কিন্তু দাম বেশি হলেই কি স্বাদে শ্রেষ্ঠ হওয়া যায়? ফুজিমোতো সেই উত্তর খুঁজতে হাঁড়িতে চাল চড়ালেন। তিনি হাতে পেয়েছিলেন মাত্র ৪২০ গ্রাম চাল। পরীক্ষা করার সুযোগ কম। তিনি দ্রুত চাল ধুয়ে, অল্প সময় ভিজিয়ে রেখে হাঁড়িতে চাপালেন। ঢাকনা খোলার পর রান্না করা দানাগুলো ঝিনুকের মুক্তার মতো চকচক করছিল। আকার নিখুঁত, হালকা ঘ্রাণ, পরিষ্কার ঝিলিক! তবে রেস্তোরাঁয় এই চাল যে চলবে না, সেটি বুঝতে পারলেন। দাম এত বেশি যে অতিথিদের বাজেট তিন গুণ হয়ে যাবে। এত দামে কে খাবে!
জাপানের চাল
জাপানে চাল দিয়ে তৈরি খাবারের ইতিহাস অনেক পুরোনো। সুশির স্বাদের ৮০ শতাংশ নির্ভর করে চালের ওপর। এমনটাই বলেন জাপানের শীর্ষস্থানীয় শেফরা। তিন হাজার বছর ধরে জাপানে চালকে পবিত্র খাবার হিসেবে মনে করা হয়। আজ দেশটিতে তিন শর বেশি জাতের ধান উৎপন্ন হয়। বৈচিত্র্য, স্বাদ, ঘ্রাণ—সব মিলিয়েই জাপানি চালের নিজস্বতা তৈরি হয়েছে। সুশি, সাকে, মোচি ইত্যাদি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়লেও জাপানি চালের রপ্তানি তেমন সফলতা পায়নি। এই হতাশাই একজন মানুষকে নতুন পথে চিন্তা করতে বাধ্য করে।

এক স্বপ্নবাজ বৃদ্ধের উদ্যোগ
ওয়াকায়ামা প্রিফেকচারের টয়ো রাইস করপোরেশনের চেয়ারম্যান কেইজি সাইকা। এখন তাঁর বয়স ৯১ বছর। তাঁর এই অভিনব উদ্যোগের গল্পটা শুরু হয় ২০১৬ সালে। সাইকার স্বপ্ন ছিল, বিজ্ঞাপনে টাকা খরচ না করে জাপানি চালকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরা। তখনই তাঁর মনে হলো গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের কথা। তিনি ভাবলেন, এমন কিছু তৈরি করতে হবে, যা আগে কেউ করেনি। এটি বেশ সাহসী উদ্যোগ ছিল। তিনি তৈরি করলেন কিনমেমাই প্রিমিয়াম, যার দাম রাখা হলো প্রকৃত মূল্যের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি, প্রতি কেজি ১০৯ ডলার। বিক্রি হবে কি? এ নিয়ে সন্দেহ ছিল।
শুধু দাম বাড়িয়ে নয়, গুণেও বিশ্বের সেরা
কিনমেমাই প্রিমিয়াম আসলে শুধু দামি চাল নয়; এটি তৈরির প্রতিটি ধাপে রয়েছে ভীষণ যত্ন ও বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া।

বাছাই: প্রতিবছর প্রায় ৫ হাজার জাতের চাল থেকে ৪ থেকে ৬টি সেরা জাত বেছে নেওয়া হয়। স্বাদের পাশাপাশি দানার এনজাইম কার্যকারিতা পর্যন্ত পরীক্ষা করেন সাইকা।
মজুত করা: চালের দানা কয়েক মাস রেখে দেওয়া হয়। এতে চালের মধ্যে মিষ্টতা, ঘ্রাণ ও পুষ্টিগুণ বাড়ে।
সীমিত উৎপাদন: কিনমেমাই প্রিমিয়াম খুব সীমিত পরিমাণে উৎপন্ন হয়। প্রতিবছর মাত্র কয়েক শ বাক্স। এর বিশেষত্ব হলো, প্রতিবছর এই চালের মিশ্রণ বদলে যায়। যে বছর যেসব জাতের চাল সবচেয়ে মানসম্পন্ন হয়, সেগুলো বেছে নতুন বার্ষিক ব্লেন্ড তৈরি করা হয়। এই চাল সাধারণত দামি উপহার বা বিশেষ উৎসবে দেওয়া হয়। নির্বাচিত কৃষকদের টোকিওতে ডেকে সম্মান জানানো হয়।
যুদ্ধোত্তর দুর্ভিক্ষ থেকে চালের প্রতি প্রেম
সাইকাকে চালের প্রতি গভীর আগ্রহী করে তুলেছিল শৈশবের এক ঘটনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। সেই সময় ঘূর্ণিঝড় টাইফুন মাকুরাজাকির কারণে চারদিকের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বীজ, মাছ, পাখি ইত্যাদি যে যা সংগ্রহ করতে পারতেন, সেগুলো দিয়ে কোনোভাবে দিন পার করতেন। সেই দুর্ভিক্ষের অভিজ্ঞতা চালের প্রতি তাঁর আবেগ তৈরি করে দেয়। খাবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং বাঁচার তাগিদ থেকে জন্ম নেয় তাঁর আজীবনের লক্ষ্য—জাপানি চালকে আরও উন্নত করা।
৯১ বছর বয়সেও প্রতিদিন কারখানায়
৯১ বছর বয়সেও সাইকা আজও প্রতিদিন কাজ করেন। বয়স বাড়লেও তাঁর গতি কমেনি। জীবনের অভিজ্ঞতা তাঁকে আরও দৃঢ় করেছে। তাই এখনো একই উদ্যমে তিনি কর্মক্ষেত্রে হাজির হন, নিজের কাজ শেষ করেন এবং আশপাশের মানুষকে অনুপ্রাণিত করে যান।
কিনমেমাই প্রিমিয়াম শুধু দামি চাল নয়, এটি একজন মানুষের জীবনের গল্প, বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন, কৃষকের পরিশ্রম এবং জাপানের চাল-সংস্কৃতির ঐতিহ্যের প্রতীক।

হংকং শহরের ব্যস্ত বিকেলে ছোট্ট এক সুশি রেস্তোরাঁর রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে জাপানি শেফ কেনইচি ফুজিমোতো হাতে নিলেন একটি কালো বাক্স। তার ওপর সোনালি অক্ষরে লেখা ‘ওয়ার্ল্ডস বেস্ট রাইস’, কেজি ১০৯ ডলার!
ফুজিমোতো ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ‘মিশেলিন তারকা’ পাওয়া সুশি মাস্টারদের অধীনে কাজ করেছেন। অসংখ্য জাতের জাপানি চাল তাঁর হাতে রান্না হয়েছে। তবু আজকের বাক্সটি তাঁর কাছে নতুন। বাক্সের ভেতর রয়েছে ২০১৬ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস স্বীকৃত বিশ্বের সবচেয়ে দামি চাল—কিনমেমাই প্রিমিয়াম।
কিন্তু দাম বেশি হলেই কি স্বাদে শ্রেষ্ঠ হওয়া যায়? ফুজিমোতো সেই উত্তর খুঁজতে হাঁড়িতে চাল চড়ালেন। তিনি হাতে পেয়েছিলেন মাত্র ৪২০ গ্রাম চাল। পরীক্ষা করার সুযোগ কম। তিনি দ্রুত চাল ধুয়ে, অল্প সময় ভিজিয়ে রেখে হাঁড়িতে চাপালেন। ঢাকনা খোলার পর রান্না করা দানাগুলো ঝিনুকের মুক্তার মতো চকচক করছিল। আকার নিখুঁত, হালকা ঘ্রাণ, পরিষ্কার ঝিলিক! তবে রেস্তোরাঁয় এই চাল যে চলবে না, সেটি বুঝতে পারলেন। দাম এত বেশি যে অতিথিদের বাজেট তিন গুণ হয়ে যাবে। এত দামে কে খাবে!
জাপানের চাল
জাপানে চাল দিয়ে তৈরি খাবারের ইতিহাস অনেক পুরোনো। সুশির স্বাদের ৮০ শতাংশ নির্ভর করে চালের ওপর। এমনটাই বলেন জাপানের শীর্ষস্থানীয় শেফরা। তিন হাজার বছর ধরে জাপানে চালকে পবিত্র খাবার হিসেবে মনে করা হয়। আজ দেশটিতে তিন শর বেশি জাতের ধান উৎপন্ন হয়। বৈচিত্র্য, স্বাদ, ঘ্রাণ—সব মিলিয়েই জাপানি চালের নিজস্বতা তৈরি হয়েছে। সুশি, সাকে, মোচি ইত্যাদি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়লেও জাপানি চালের রপ্তানি তেমন সফলতা পায়নি। এই হতাশাই একজন মানুষকে নতুন পথে চিন্তা করতে বাধ্য করে।

এক স্বপ্নবাজ বৃদ্ধের উদ্যোগ
ওয়াকায়ামা প্রিফেকচারের টয়ো রাইস করপোরেশনের চেয়ারম্যান কেইজি সাইকা। এখন তাঁর বয়স ৯১ বছর। তাঁর এই অভিনব উদ্যোগের গল্পটা শুরু হয় ২০১৬ সালে। সাইকার স্বপ্ন ছিল, বিজ্ঞাপনে টাকা খরচ না করে জাপানি চালকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরা। তখনই তাঁর মনে হলো গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের কথা। তিনি ভাবলেন, এমন কিছু তৈরি করতে হবে, যা আগে কেউ করেনি। এটি বেশ সাহসী উদ্যোগ ছিল। তিনি তৈরি করলেন কিনমেমাই প্রিমিয়াম, যার দাম রাখা হলো প্রকৃত মূল্যের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি, প্রতি কেজি ১০৯ ডলার। বিক্রি হবে কি? এ নিয়ে সন্দেহ ছিল।
শুধু দাম বাড়িয়ে নয়, গুণেও বিশ্বের সেরা
কিনমেমাই প্রিমিয়াম আসলে শুধু দামি চাল নয়; এটি তৈরির প্রতিটি ধাপে রয়েছে ভীষণ যত্ন ও বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া।

বাছাই: প্রতিবছর প্রায় ৫ হাজার জাতের চাল থেকে ৪ থেকে ৬টি সেরা জাত বেছে নেওয়া হয়। স্বাদের পাশাপাশি দানার এনজাইম কার্যকারিতা পর্যন্ত পরীক্ষা করেন সাইকা।
মজুত করা: চালের দানা কয়েক মাস রেখে দেওয়া হয়। এতে চালের মধ্যে মিষ্টতা, ঘ্রাণ ও পুষ্টিগুণ বাড়ে।
সীমিত উৎপাদন: কিনমেমাই প্রিমিয়াম খুব সীমিত পরিমাণে উৎপন্ন হয়। প্রতিবছর মাত্র কয়েক শ বাক্স। এর বিশেষত্ব হলো, প্রতিবছর এই চালের মিশ্রণ বদলে যায়। যে বছর যেসব জাতের চাল সবচেয়ে মানসম্পন্ন হয়, সেগুলো বেছে নতুন বার্ষিক ব্লেন্ড তৈরি করা হয়। এই চাল সাধারণত দামি উপহার বা বিশেষ উৎসবে দেওয়া হয়। নির্বাচিত কৃষকদের টোকিওতে ডেকে সম্মান জানানো হয়।
যুদ্ধোত্তর দুর্ভিক্ষ থেকে চালের প্রতি প্রেম
সাইকাকে চালের প্রতি গভীর আগ্রহী করে তুলেছিল শৈশবের এক ঘটনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। সেই সময় ঘূর্ণিঝড় টাইফুন মাকুরাজাকির কারণে চারদিকের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বীজ, মাছ, পাখি ইত্যাদি যে যা সংগ্রহ করতে পারতেন, সেগুলো দিয়ে কোনোভাবে দিন পার করতেন। সেই দুর্ভিক্ষের অভিজ্ঞতা চালের প্রতি তাঁর আবেগ তৈরি করে দেয়। খাবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং বাঁচার তাগিদ থেকে জন্ম নেয় তাঁর আজীবনের লক্ষ্য—জাপানি চালকে আরও উন্নত করা।
৯১ বছর বয়সেও প্রতিদিন কারখানায়
৯১ বছর বয়সেও সাইকা আজও প্রতিদিন কাজ করেন। বয়স বাড়লেও তাঁর গতি কমেনি। জীবনের অভিজ্ঞতা তাঁকে আরও দৃঢ় করেছে। তাই এখনো একই উদ্যমে তিনি কর্মক্ষেত্রে হাজির হন, নিজের কাজ শেষ করেন এবং আশপাশের মানুষকে অনুপ্রাণিত করে যান।
কিনমেমাই প্রিমিয়াম শুধু দামি চাল নয়, এটি একজন মানুষের জীবনের গল্প, বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন, কৃষকের পরিশ্রম এবং জাপানের চাল-সংস্কৃতির ঐতিহ্যের প্রতীক।

সকালে ঘুম থেকে উঠে খানিকটা ভালো লাগছিল। পুরোপুরি না। অসুস্থ শরীর নিয়ে কোথাও গিয়ে নাশতা করতে ইচ্ছা করছিল না। এদিন থেকে আমার চেয়ে ভুবনের অবস্থা খারাপ হতে লাগল। আমরা নাশতা করিনি। ভাবলাম যাত্রাপথে খেয়ে নেব...
১৬ নভেম্বর ২০২২
রান্নাঘরে থালাবাটি পরিষ্কার করার জন্য এখন স্পঞ্জের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়; বিশেষ করে শহরের বেশির ভাগ বাসাবাড়িতে খাবারের নোংরা এই স্পঞ্জের মাধ্যমে পরিষ্কার করা হয়। এগুলোতে আপনার ধারণার চেয়ে বেশি ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া লুকিয়ে থাকে। শক্তপোক্ত স্পঞ্জও একসময় পরিষ্কার করার ক্ষমতা হারায়। এর চেয়ে খারাপ...
৩ ঘণ্টা আগে
আজকের দিনটি আপনার জন্য পুরোপুরি অ্যাকশন-প্যাকড, তবে অ্যাকশন মানে মারপিট নয়, স্রেফ জটিলতা! কর্মক্ষেত্রে পরিস্থিতি একটু ‘জট পাকানো সুতার মতো’, মানে আপনি যা করতে যাবেন, সেটাই ডবল কাজ হয়ে যাবে। ‘শত্রুরা’ আজ ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, তবে সম্ভবত তারা আপনার অফিসের প্রিন্টার।
৪ ঘণ্টা আগে
তাজা উপকরণে তৈরি দারুণ স্বাদের জন্য থাই খাবার বিশ্বজুড়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এর প্রাণবন্ত স্বাদ ও পুষ্টিগুণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে। পুষ্টিবিদ কেরি বিসনের মতে, মসলা, ভেষজ ও তাজা উপাদানের এক প্রাণবন্ত মিশ্রণে তৈরি হয় থাই খাবার। কিন্তু এই খাবারের প্রেমে পড়া নুডলস অনুরাগীদের জন্য কিছুটা খারাপ খবর আছে...
৫ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

রান্নাঘরে থালাবাটি পরিষ্কার করার জন্য এখন স্পঞ্জের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়; বিশেষ করে শহরের বেশির ভাগ বাসাবাড়িতে খাবারের নোংরা এই স্পঞ্জের মাধ্যমে পরিষ্কার করা হয়। এগুলোতে আপনার ধারণার চেয়ে বেশি ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া লুকিয়ে থাকে। শক্তপোক্ত স্পঞ্জও একসময় পরিষ্কার করার ক্ষমতা হারায়। এর চেয়ে খারাপ বিষয়টি হলো, অপরিষ্কার স্পঞ্জগুলো জীবাণু ছড়াতে শুরু করে। বাসনপত্র ধোয়ার জন্য যদি আপনি স্পঞ্জের ওপরই ভরসা রাখেন, তবে জেনে রাখুন, কখন এটি পাল্টানো জরুরি। কারণ, বদলানোর এই কাজ সঠিক সময়ে না করলে আপনি এবং আপনার পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হতে পারেন।
যেসব লক্ষণ দেখলে স্পঞ্জ বদলাতে হবে—
দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে কি না
যদি আপনার রান্নাঘরে স্পঞ্জটির কারণে বাজে গন্ধ হয়, তবে বুঝবেন একে বদলানোর সময় এসেছে। এটিই সম্ভবত স্পঞ্জ বদলানোর প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। জার্মস্মার্ট কমার্শিয়াল ক্লিনিংয়ের বিশেষজ্ঞ টেইলর রাইলি বলেন, ‘যদি আপনি ঘন ঘন স্পঞ্জ না পাল্টান, তবে এটি ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক (মোল্ড) এবং ইস্টের আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে। সেগুলো আপনার বাসন, কাউন্টার টপ, এমনকি হাতেও ছড়িয়ে যেতে পারে।’

স্পঞ্জ দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. শানিনা সি. নাইটন কিছু পরামর্শ দেন। সেগুলো হলো—
স্পঞ্জটি দৃশ্যমান দাগযুক্ত হলে
বাসন ধোয়ার পরেও যদি স্পঞ্জে দাগ থেকে যায়, তবে একে বাদ দেওয়াই ভালো। এলপিন মেইডসের প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস উইলাট বলেছেন, ‘যে বস্তু পরিষ্কার করছেন, তার ময়লা যদি স্পঞ্জে আটকে যায়, তবে সেই ময়লা পরেরবার পরিষ্কার করা পৃষ্ঠেও আটকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।’ এই সমস্যা সমাধানের জন্য স্পঞ্জ ব্যবহার করার আগে একটি ডিশ স্ক্রাবিং ব্রাশ ব্যবহার করে প্লেট ও প্যান থেকে বেশির ভাগ খাদ্যকণা সরিয়ে নিলে স্পঞ্জে দাগ লাগা এবং ময়লা জমে থাকা কিছুটা কমানো যেতে পারে।
স্পঞ্জটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বা ছিঁড়ছে কি না
স্পঞ্জের বড় অসুবিধা হলো, এটি একসময় ভেঙে যেতে শুরু করে, ছিঁড়ে যায় বা আকার হারায়। ফ্রেশ স্পেস ক্লিনিংয়ের কোয়ালিটি লিড ক্লিনার রুন্ডা উইলসন বলেন, ‘যদি এটি ভেঙে যেতে শুরু করে, রং বদলায় বা তার আকৃতি হারায়, তবে বুঝতে হবে, এর আয়ু শেষ।’ একটি জীর্ণ স্পঞ্জ ঠিকমতো পরিষ্কার করতে পারে না।
স্পঞ্জটি পিচ্ছিল বা চটচটে অনুভূত হলে
স্পঞ্জ যদি শামুকের মতো চটচটে বা পিচ্ছিল লাগে, তবে তা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। ফ্যান্টাস্টিক সার্ভিসেসের পেটিয়া হোলেভিচ সতর্ক করেন, যদি এটি পিচ্ছিল বা চটচটে মনে হয়, তবে সম্ভবত এর ভেতরে এক স্তরের ময়লা জমে আছে, যা পরিষ্কার করা যাচ্ছে না। আপনি যদি এটি খুব বেশি দিন ব্যবহার করেন, তবে দাগযুক্ত কাউন্টার টপের চেয়ে বেশি ঝুঁকি নিচ্ছেন। পুরোনো স্পঞ্জ ই. কোলাই ও সালমোনেলার মতো ব্যাকটেরিয়া বহন করতে পারে।

কাঁচা মাংস বা ছত্রাকের সংস্পর্শে এসেছে কি না
জীবাণুমুক্ত করার গুরুত্বপূর্ণ নিয়মগুলো অনুসরণ করতে হলে, কাঁচা মাংস বা ছত্রাকের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো কিছু পরিষ্কার করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার স্পঞ্জ বদলে ফেলা উচিত। ক্রিস উইলাট সতর্ক করে বলেন, ‘কাঁচা মাংস বা ছত্রাকযুক্ত জিনিসপত্র থেকে ব্যাকটেরিয়া সহজে আপনার স্পঞ্জে স্থানান্তরিত হয়। সেই ব্যাকটেরিয়া নিশ্চয় আপনি আপনার অন্য প্লেট বা পাত্রে পেতে চান না!’ এই ধরনের নোংরা পরিষ্কার করার সময় একাধিক জিনিসপত্রের দূষণ রোধ করতে স্পঞ্জের পরিবর্তে একবার পেপার টাওয়েল ব্যবহার করুন।
ঘষে পরিষ্কার করার ক্ষমতা নেই
স্পঞ্জ যদি ঘষে পরিষ্কার করতে না পারে, তবে তার কার্যকারিতা কী? ড. শানিনা নাইটন পরামর্শ দেন, এর টেক্সচার নরম হয়ে গেলে সেটি বাসনপত্র ঘষে পরিষ্কার করার অবস্থায় থাকে না। এর রুক্ষ দিকটি মসৃণ হয়ে গেলে বা স্পঞ্জটি আঁশ, গুঁড়া বা ময়লা দিয়ে ভরে গেলে আপনার রান্নাঘরের স্পঞ্জটি বদলে ফেলার সময় এসেছে।
চেষ্টা করুন সপ্তাহে পাল্টানোর
আপনার স্পঞ্জ এক সপ্তাহ ব্যবহারের পর দেখতে যেমনই লাগুক, এটিকে বদলানো জরুরি। ক্রিস উইলাট বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমি প্রতি সপ্তাহের শেষে একটি স্পঞ্জ ফেলে দিয়ে নতুন স্পঞ্জ নিতে পরামর্শ দিই। এক সপ্তাহের ময়লা, ব্যাকটেরিয়া এবং নোংরা পরিষ্কার করার পরে একটি নতুন স্পঞ্জ ব্যবহার করা দরকার। এমনকি যদি এটি পরিষ্কারও দেখায়, তবু এক সপ্তাহ পরে এটি ফেলে দেওয়া উচিত।’
সূত্র: হোমস অ্যান্ড গার্ডেনস

রান্নাঘরে থালাবাটি পরিষ্কার করার জন্য এখন স্পঞ্জের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়; বিশেষ করে শহরের বেশির ভাগ বাসাবাড়িতে খাবারের নোংরা এই স্পঞ্জের মাধ্যমে পরিষ্কার করা হয়। এগুলোতে আপনার ধারণার চেয়ে বেশি ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া লুকিয়ে থাকে। শক্তপোক্ত স্পঞ্জও একসময় পরিষ্কার করার ক্ষমতা হারায়। এর চেয়ে খারাপ বিষয়টি হলো, অপরিষ্কার স্পঞ্জগুলো জীবাণু ছড়াতে শুরু করে। বাসনপত্র ধোয়ার জন্য যদি আপনি স্পঞ্জের ওপরই ভরসা রাখেন, তবে জেনে রাখুন, কখন এটি পাল্টানো জরুরি। কারণ, বদলানোর এই কাজ সঠিক সময়ে না করলে আপনি এবং আপনার পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হতে পারেন।
যেসব লক্ষণ দেখলে স্পঞ্জ বদলাতে হবে—
দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে কি না
যদি আপনার রান্নাঘরে স্পঞ্জটির কারণে বাজে গন্ধ হয়, তবে বুঝবেন একে বদলানোর সময় এসেছে। এটিই সম্ভবত স্পঞ্জ বদলানোর প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। জার্মস্মার্ট কমার্শিয়াল ক্লিনিংয়ের বিশেষজ্ঞ টেইলর রাইলি বলেন, ‘যদি আপনি ঘন ঘন স্পঞ্জ না পাল্টান, তবে এটি ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক (মোল্ড) এবং ইস্টের আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে। সেগুলো আপনার বাসন, কাউন্টার টপ, এমনকি হাতেও ছড়িয়ে যেতে পারে।’

স্পঞ্জ দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. শানিনা সি. নাইটন কিছু পরামর্শ দেন। সেগুলো হলো—
স্পঞ্জটি দৃশ্যমান দাগযুক্ত হলে
বাসন ধোয়ার পরেও যদি স্পঞ্জে দাগ থেকে যায়, তবে একে বাদ দেওয়াই ভালো। এলপিন মেইডসের প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস উইলাট বলেছেন, ‘যে বস্তু পরিষ্কার করছেন, তার ময়লা যদি স্পঞ্জে আটকে যায়, তবে সেই ময়লা পরেরবার পরিষ্কার করা পৃষ্ঠেও আটকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।’ এই সমস্যা সমাধানের জন্য স্পঞ্জ ব্যবহার করার আগে একটি ডিশ স্ক্রাবিং ব্রাশ ব্যবহার করে প্লেট ও প্যান থেকে বেশির ভাগ খাদ্যকণা সরিয়ে নিলে স্পঞ্জে দাগ লাগা এবং ময়লা জমে থাকা কিছুটা কমানো যেতে পারে।
স্পঞ্জটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বা ছিঁড়ছে কি না
স্পঞ্জের বড় অসুবিধা হলো, এটি একসময় ভেঙে যেতে শুরু করে, ছিঁড়ে যায় বা আকার হারায়। ফ্রেশ স্পেস ক্লিনিংয়ের কোয়ালিটি লিড ক্লিনার রুন্ডা উইলসন বলেন, ‘যদি এটি ভেঙে যেতে শুরু করে, রং বদলায় বা তার আকৃতি হারায়, তবে বুঝতে হবে, এর আয়ু শেষ।’ একটি জীর্ণ স্পঞ্জ ঠিকমতো পরিষ্কার করতে পারে না।
স্পঞ্জটি পিচ্ছিল বা চটচটে অনুভূত হলে
স্পঞ্জ যদি শামুকের মতো চটচটে বা পিচ্ছিল লাগে, তবে তা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। ফ্যান্টাস্টিক সার্ভিসেসের পেটিয়া হোলেভিচ সতর্ক করেন, যদি এটি পিচ্ছিল বা চটচটে মনে হয়, তবে সম্ভবত এর ভেতরে এক স্তরের ময়লা জমে আছে, যা পরিষ্কার করা যাচ্ছে না। আপনি যদি এটি খুব বেশি দিন ব্যবহার করেন, তবে দাগযুক্ত কাউন্টার টপের চেয়ে বেশি ঝুঁকি নিচ্ছেন। পুরোনো স্পঞ্জ ই. কোলাই ও সালমোনেলার মতো ব্যাকটেরিয়া বহন করতে পারে।

কাঁচা মাংস বা ছত্রাকের সংস্পর্শে এসেছে কি না
জীবাণুমুক্ত করার গুরুত্বপূর্ণ নিয়মগুলো অনুসরণ করতে হলে, কাঁচা মাংস বা ছত্রাকের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো কিছু পরিষ্কার করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার স্পঞ্জ বদলে ফেলা উচিত। ক্রিস উইলাট সতর্ক করে বলেন, ‘কাঁচা মাংস বা ছত্রাকযুক্ত জিনিসপত্র থেকে ব্যাকটেরিয়া সহজে আপনার স্পঞ্জে স্থানান্তরিত হয়। সেই ব্যাকটেরিয়া নিশ্চয় আপনি আপনার অন্য প্লেট বা পাত্রে পেতে চান না!’ এই ধরনের নোংরা পরিষ্কার করার সময় একাধিক জিনিসপত্রের দূষণ রোধ করতে স্পঞ্জের পরিবর্তে একবার পেপার টাওয়েল ব্যবহার করুন।
ঘষে পরিষ্কার করার ক্ষমতা নেই
স্পঞ্জ যদি ঘষে পরিষ্কার করতে না পারে, তবে তার কার্যকারিতা কী? ড. শানিনা নাইটন পরামর্শ দেন, এর টেক্সচার নরম হয়ে গেলে সেটি বাসনপত্র ঘষে পরিষ্কার করার অবস্থায় থাকে না। এর রুক্ষ দিকটি মসৃণ হয়ে গেলে বা স্পঞ্জটি আঁশ, গুঁড়া বা ময়লা দিয়ে ভরে গেলে আপনার রান্নাঘরের স্পঞ্জটি বদলে ফেলার সময় এসেছে।
চেষ্টা করুন সপ্তাহে পাল্টানোর
আপনার স্পঞ্জ এক সপ্তাহ ব্যবহারের পর দেখতে যেমনই লাগুক, এটিকে বদলানো জরুরি। ক্রিস উইলাট বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমি প্রতি সপ্তাহের শেষে একটি স্পঞ্জ ফেলে দিয়ে নতুন স্পঞ্জ নিতে পরামর্শ দিই। এক সপ্তাহের ময়লা, ব্যাকটেরিয়া এবং নোংরা পরিষ্কার করার পরে একটি নতুন স্পঞ্জ ব্যবহার করা দরকার। এমনকি যদি এটি পরিষ্কারও দেখায়, তবু এক সপ্তাহ পরে এটি ফেলে দেওয়া উচিত।’
সূত্র: হোমস অ্যান্ড গার্ডেনস

সকালে ঘুম থেকে উঠে খানিকটা ভালো লাগছিল। পুরোপুরি না। অসুস্থ শরীর নিয়ে কোথাও গিয়ে নাশতা করতে ইচ্ছা করছিল না। এদিন থেকে আমার চেয়ে ভুবনের অবস্থা খারাপ হতে লাগল। আমরা নাশতা করিনি। ভাবলাম যাত্রাপথে খেয়ে নেব...
১৬ নভেম্বর ২০২২
হংকং শহরের ব্যস্ত বিকেলে ছোট্ট এক সুশি রেস্তোরাঁর রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে জাপানি শেফ কেনইচি ফুজিমোতো হাতে নিলেন একটি কালো বাক্স। তার ওপর সোনালি অক্ষরে লেখা ‘ওয়ার্ল্ডস বেস্ট রাইস’, কেজি ১০৯ ডলার!...
১ ঘণ্টা আগে
আজকের দিনটি আপনার জন্য পুরোপুরি অ্যাকশন-প্যাকড, তবে অ্যাকশন মানে মারপিট নয়, স্রেফ জটিলতা! কর্মক্ষেত্রে পরিস্থিতি একটু ‘জট পাকানো সুতার মতো’, মানে আপনি যা করতে যাবেন, সেটাই ডবল কাজ হয়ে যাবে। ‘শত্রুরা’ আজ ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, তবে সম্ভবত তারা আপনার অফিসের প্রিন্টার।
৪ ঘণ্টা আগে
তাজা উপকরণে তৈরি দারুণ স্বাদের জন্য থাই খাবার বিশ্বজুড়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এর প্রাণবন্ত স্বাদ ও পুষ্টিগুণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে। পুষ্টিবিদ কেরি বিসনের মতে, মসলা, ভেষজ ও তাজা উপাদানের এক প্রাণবন্ত মিশ্রণে তৈরি হয় থাই খাবার। কিন্তু এই খাবারের প্রেমে পড়া নুডলস অনুরাগীদের জন্য কিছুটা খারাপ খবর আছে...
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
আজকের দিনটি আপনার জন্য পুরোপুরি অ্যাকশন-প্যাকড, তবে অ্যাকশন মানে মারপিট নয়, স্রেফ জটিলতা! কর্মক্ষেত্রে পরিস্থিতি একটু ‘জট পাকানো সুতার মতো’, মানে আপনি যা করতে যাবেন, সেটাই ডবল কাজ হয়ে যাবে। ‘শত্রুরা’ আজ ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, তবে সম্ভবত তারা আপনার অফিসের প্রিন্টার। মানসিক উদ্বেগ বাড়বে, কিন্তু টেনশন নেবেন না—এত টেনশন নিলে ওজন বাড়ে না, এটা অন্তত ভালো খবর। পুরোনো কোনো অসুখের প্রকোপ বাড়তে পারে, তাই আজ রাতে তেল-মসলাদার খাবার থেকে দূরে থাকুন। ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত আজ নয়, কালকের জন্য ফেলে রাখুন। কারণ, আজকের প্ল্যানিংয়ে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আপনি স্বভাবগতভাবেই নেতা, কিন্তু আজ বসের সামনে মাথা গরম না করে একটা ‘কুল’ ভাব ধরে থাকুন।
বৃষ
বৃষ রাশির জাতকদের জন্য সুখবর! পৈতৃক ব্যবসায় উন্নতি হবে, আর পারিবারিক যে দ্বন্দ্ব চলছিল, তা মিটে যাওয়ার একটা দারুণ সুযোগ আসছে। তার মানে হয়তো খালা-ফুফুদের ঝগড়া বন্ধ হবে, যা সত্যিই একটা অলৌকিক ঘটনা! সামাজিক প্রতিপত্তি বাড়বে, তাই আজ ফেসবুকে আপনার স্ট্যাটাসগুলো বেশি লাইক পেতে পারে। তবে সাবধান, অতিরিক্ত ব্যয় সঞ্চয়ে বাধা! মানিব্যাগ আজ চিৎকার করে কাঁদবে। কারণ, সম্ভবত একটা অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে ফেলবেন। চাকরির খোঁজ যাঁরা করছেন, তাঁদের কপালে নতুন চাকরির যোগ আছে, তবে বেতন কত, সেটা আগে ভালো করে বুঝে নেবেন। আজ ধার দেওয়া টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেই টাকাটা হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লুকিয়ে ফেলুন, নয়তো খরচ হয়ে যাবে!
মিথুন
আজ মনটা বেশ হালকা থাকবে এবং উপভোগ করার সঠিক মেজাজে থাকবেন। হয়তো বহুদিন পর আবিষ্কার করবেন যে মাথায় চুল এখনো আছে! সাংসারিক সমস্যাগুলো আজ মিটে যাবে। অবিবাহিতদের জন্য বিয়ের সম্বন্ধ আসতে পারে, কিন্তু সম্বন্ধ ঠিক করার আগে পাত্র/পাত্রীর সেন্স অব হিউমার আছে কি না, সেটা যাচাই করে নিন। পাওনা টাকা ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, অর্থাৎ বহু বছর আগে যে বন্ধুকে ১০০ টাকা ধার দিয়েছিলেন, সে অবশেষে মনে করতে পারে! নিজের কাজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়বে। আপনার চঞ্চলতা আজ একটু কমবে। পুরোনো কোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলে নিজেদের পুরোনো কৌতুকগুলো আওড়াতে ভুলবেন না।
কর্কট
কর্কট রাশির সংবেদনশীল মানুষেরা, আজ একটু সতর্ক থাকুন। সরলতার সুযোগ নিয়ে কেউ আপনাকে ঠকাতে পারে। সম্ভবত কেউ আপনাকে দিয়ে তার সব কাজ করিয়ে নেবে, আর আপনি ‘না’ বলতে না পেরে অসহায়ের মতো হাসবেন। উচ্চশিক্ষায় সাফল্য পাওয়ার সুযোগ থাকলেও তার জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। গুরুজনদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন—তাঁরা হয়তো শুধু আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাচ্ছেন। গলা বা মুখ-সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগতে পারেন, তাই আজ একটু কম কথা বলুন। কারও কাছে ‘না’ বলতে শেখাটা আজ আপনার সবচেয়ে বড় অর্জন হতে পারে। রাতে ঘুমের আগে মেডিটেশন করুন, টেনশন কমে যাবে।
সিংহ
সিংহ রাশির জাতক, আপনার রাশির নাম ‘সিংহ’, তাই গর্জন করাটা আপনার স্বভাব। কিন্তু আজ গ্রহরা বলছে, ‘থামো!’ কথাবার্তায় অসংযমের কারণে শত্রু বাড়তে পারে। তাই বসের সামনে নিজের মতামতটি আজ একটু নরম সুরে প্রকাশ করুন। হঠকারিতায় বিয়ের সম্বন্ধ পাকা করলে তা ভুল সিদ্ধান্ত হতে পারে—প্রথমে ভালো করে জেরা করুন। ক্রনিক রোগের সমস্যা বাড়তে পারে, বিশেষত অহংজনিত সমস্যা। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মতভেদ বাড়তে পারে। সবকিছুতে ‘প্রাইড’ বা অহংকার দেখানোর প্রয়োজন নেই। একটু নম্র হন, দেখবেন পরিস্থিতি আপনা-আপনি নিয়ন্ত্রণে চলে আসছে।
কন্যা
পরিবারে আজ সুখবর আসতে পারে। হয়তো পুরোনো জামাকাপড়ের মধ্যে থেকে একটা নতুন ৫০০ টাকার নোট খুঁজে পাবেন। লটারি থেকে অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাবনা আছে, তবে তার মানে এই নয় যে আজই কোটিপতি হচ্ছেন—একটা ১০ টাকার লটারি হলেও তো প্রাপ্তি! নতুন চাকরি পেতে পারেন বা কর্মস্থল পরিবর্তন হতে পারে। আজ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের (বা আপনার ফেসবুকের বন্ধুদের) অহেতুক মন্তব্য এড়িয়ে চলুন। দূরদেশে ভ্রমণের যোগ আছে, মানে হয়তো কাজের চাপে আপনাকে অন্য জেলায় যেতে হতে পারে! অতিরিক্ত বিশ্লেষণ করার স্বভাব আজ একটু কমাতে হবে। কম ভাবুন, বেশি হাসুন।
তুলা
স্বাস্থ্য আজ সুন্দর থাকবে, কিন্তু কিছু মানসিক চাপ থাকবেই। আপনি তো চিরকালই সবকিছুতে ভারসাম্য খুঁজছেন, তাই মন ও শরীরকে ব্যালেন্স করতে গিয়েই এই চাপ। বিদেশের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো কাজে সুবিধা পেতে পারেন। প্রেমের সম্পর্কে নম্রতা বজায় রাখুন। আজ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন, যেমন ফ্রিজ থেকে কী বের করে খাবেন, সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারাই আজকের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ধৈর্য ও বোঝাপড়া দিয়ে সব সামলে নিতে পারবেন। আপনি খুব ভালোভাবে বিতর্ক করতে পারেন, কিন্তু আজ প্রিয়জনের সঙ্গে তর্কে না গিয়ে বরং তাকে একটা কোল্ড ড্রিংকস কিনে দিন।
বৃশ্চিক
আজ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয়ে খুবই আগ্রহী হবেন। আজ আপনার রহস্যময় স্বভাব একটু কম কাজ করবে। কারণ, মন কেবল টাকা গুনতে ব্যস্ত। প্রিয়জনের সঙ্গে খুব ভালো সময় কাটাবেন এবং আন্তরিক চিন্তাগুলো তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাইবেন। বৃশ্চিকদের আবার আন্তরিক চিন্তা? সেটা নিশ্চয়ই পরের মাসে কত টাকা জমাবেন সেই প্ল্যান! কাছের মানুষের প্রতি আস্থা বজায় থাকবে এবং বন্ধুদের থেকে উপকার পাবেন। ব্যক্তিগত বিষয়ে ফোকাস রাখুন। আপনি খুব সাহসী এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আজ সেই শক্তি কাজে লাগান; কিন্তু কোনো বন্ধুর গোপন কথা ফাঁস করে দেবেন না!
ধনু
আজ আরাম করার দিন। পেশিগুলোকে আরাম দিতে তেল ম্যাসাজ করতে পারেন। দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত কাজগুলো আজ সময়মতো শেষ করার চেষ্টা করুন; যেমন ফ্রিজের ময়লা পরিষ্কার করা। অবিবাহিতরা সঙ্গীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তবে ভ্রমণের গল্প দিয়ে তাদের বিরক্ত করবেন না। বসের পরামর্শ উপেক্ষা করা এড়িয়ে চলুন, নয়তো বস আপনাকে দিয়ে আবার সব কাজ করিয়ে নিতে পারে। সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো মানসিক শান্তি বজায় রাখবে। আপনার অ্যাডভেঞ্চারের নেশা আজ একটু নিয়ন্ত্রণে রাখুন। আজ আরাম করুন, কাল আবার নতুন অ্যাডভেঞ্চার খুঁজবেন।
মকর
আপনার কাঁধে আজ অনেক কিছু নির্ভর করবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আপনার জন্য আজ বড় পরীক্ষা। আপনি জন্মগতভাবেই দায়িত্ব নিতে ভালোবাসেন, তাই এই চাপের মধ্যেও বেশ আরাম বোধ করবেন। চাকরি বা ব্যবসায় লাভের লক্ষণ দেখা যায়। সন্তানদের সম্পর্কিত কিছু সুসংবাদ পেতে পারেন—হয়তো তারা আপনাকে বিরক্ত করা একটু কমিয়ে দিয়েছে। আর্থিক অবস্থা শক্তিশালী হবে। একটি স্থগিত প্রকল্প আবার শুরু হতে পারে; যেমন আপনার পুরোনো জিমের সদস্যপদ! কাজের প্রতি আপনার মনোযোগ দারুণ, কিন্তু দিনে একবারের জন্য হলেও ফোন বন্ধ করে একটু চায়ে চুমুক দিন।
কুম্ভ
অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সমর্থন আজ আপনার সাহসকে বড় উৎসাহ দেবে। এই প্রভাবশালী ব্যক্তিটি হয়তো আপনার প্রতিবেশী, যার কাছে ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড আছে। আর্থিক অবস্থা শক্তিশালী হবে। প্রেম জীবনে সুখ থাকবে, পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হতে পারে। তবে সেই পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর যেন পকেট খালি না হয়ে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। নিজেকে শান্ত রাখতে এবং পরিবারের সঙ্গে কাটানোর জন্য সন্ধ্যাটি ভালো হবে। বৈপ্লবিক আইডিয়াগুলো আজ আপাতত কাগজে লিখে রাখুন। স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, তাই আজ দৌড়াতে যান বা অন্তত একটু হাঁটুন।
মীন
মীন রাশির জাতক, আজ আপনি হালকা বোধ করবেন এবং উপভোগ করার সঠিক মেজাজে থাকবেন। কল্পনা আজ আপনাকে নিয়ে যেতে পারে এক নতুন জগতে, যেখানে কোনো ইউটিলিটি বিল নেই, আছে শুধু মিষ্টি মিষ্টি স্বপ্ন। অর্থের গুরুত্বের দিকে মনোনিবেশ করবেন, যা আপনার জন্য খুবই দরকারি। আজ যা আপনাকে নিজের সম্বন্ধে ভালো বোধ করায়, এমন কিছু করার পক্ষে এটি চমৎকার দিন; যেমন পুরোনো সব দুঃখ ভুলে একটা চকলেট আইসক্রিম খেয়ে নিন! স্বপ্ন দেখুন, কিন্তু বাস্তবের পৃথিবীতে কে আপনাকে ঠকাচ্ছে, সেদিকেও নজর রাখুন।

মেষ
আজকের দিনটি আপনার জন্য পুরোপুরি অ্যাকশন-প্যাকড, তবে অ্যাকশন মানে মারপিট নয়, স্রেফ জটিলতা! কর্মক্ষেত্রে পরিস্থিতি একটু ‘জট পাকানো সুতার মতো’, মানে আপনি যা করতে যাবেন, সেটাই ডবল কাজ হয়ে যাবে। ‘শত্রুরা’ আজ ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, তবে সম্ভবত তারা আপনার অফিসের প্রিন্টার। মানসিক উদ্বেগ বাড়বে, কিন্তু টেনশন নেবেন না—এত টেনশন নিলে ওজন বাড়ে না, এটা অন্তত ভালো খবর। পুরোনো কোনো অসুখের প্রকোপ বাড়তে পারে, তাই আজ রাতে তেল-মসলাদার খাবার থেকে দূরে থাকুন। ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত আজ নয়, কালকের জন্য ফেলে রাখুন। কারণ, আজকের প্ল্যানিংয়ে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আপনি স্বভাবগতভাবেই নেতা, কিন্তু আজ বসের সামনে মাথা গরম না করে একটা ‘কুল’ ভাব ধরে থাকুন।
বৃষ
বৃষ রাশির জাতকদের জন্য সুখবর! পৈতৃক ব্যবসায় উন্নতি হবে, আর পারিবারিক যে দ্বন্দ্ব চলছিল, তা মিটে যাওয়ার একটা দারুণ সুযোগ আসছে। তার মানে হয়তো খালা-ফুফুদের ঝগড়া বন্ধ হবে, যা সত্যিই একটা অলৌকিক ঘটনা! সামাজিক প্রতিপত্তি বাড়বে, তাই আজ ফেসবুকে আপনার স্ট্যাটাসগুলো বেশি লাইক পেতে পারে। তবে সাবধান, অতিরিক্ত ব্যয় সঞ্চয়ে বাধা! মানিব্যাগ আজ চিৎকার করে কাঁদবে। কারণ, সম্ভবত একটা অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে ফেলবেন। চাকরির খোঁজ যাঁরা করছেন, তাঁদের কপালে নতুন চাকরির যোগ আছে, তবে বেতন কত, সেটা আগে ভালো করে বুঝে নেবেন। আজ ধার দেওয়া টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেই টাকাটা হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লুকিয়ে ফেলুন, নয়তো খরচ হয়ে যাবে!
মিথুন
আজ মনটা বেশ হালকা থাকবে এবং উপভোগ করার সঠিক মেজাজে থাকবেন। হয়তো বহুদিন পর আবিষ্কার করবেন যে মাথায় চুল এখনো আছে! সাংসারিক সমস্যাগুলো আজ মিটে যাবে। অবিবাহিতদের জন্য বিয়ের সম্বন্ধ আসতে পারে, কিন্তু সম্বন্ধ ঠিক করার আগে পাত্র/পাত্রীর সেন্স অব হিউমার আছে কি না, সেটা যাচাই করে নিন। পাওনা টাকা ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, অর্থাৎ বহু বছর আগে যে বন্ধুকে ১০০ টাকা ধার দিয়েছিলেন, সে অবশেষে মনে করতে পারে! নিজের কাজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়বে। আপনার চঞ্চলতা আজ একটু কমবে। পুরোনো কোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলে নিজেদের পুরোনো কৌতুকগুলো আওড়াতে ভুলবেন না।
কর্কট
কর্কট রাশির সংবেদনশীল মানুষেরা, আজ একটু সতর্ক থাকুন। সরলতার সুযোগ নিয়ে কেউ আপনাকে ঠকাতে পারে। সম্ভবত কেউ আপনাকে দিয়ে তার সব কাজ করিয়ে নেবে, আর আপনি ‘না’ বলতে না পেরে অসহায়ের মতো হাসবেন। উচ্চশিক্ষায় সাফল্য পাওয়ার সুযোগ থাকলেও তার জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। গুরুজনদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন—তাঁরা হয়তো শুধু আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাচ্ছেন। গলা বা মুখ-সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগতে পারেন, তাই আজ একটু কম কথা বলুন। কারও কাছে ‘না’ বলতে শেখাটা আজ আপনার সবচেয়ে বড় অর্জন হতে পারে। রাতে ঘুমের আগে মেডিটেশন করুন, টেনশন কমে যাবে।
সিংহ
সিংহ রাশির জাতক, আপনার রাশির নাম ‘সিংহ’, তাই গর্জন করাটা আপনার স্বভাব। কিন্তু আজ গ্রহরা বলছে, ‘থামো!’ কথাবার্তায় অসংযমের কারণে শত্রু বাড়তে পারে। তাই বসের সামনে নিজের মতামতটি আজ একটু নরম সুরে প্রকাশ করুন। হঠকারিতায় বিয়ের সম্বন্ধ পাকা করলে তা ভুল সিদ্ধান্ত হতে পারে—প্রথমে ভালো করে জেরা করুন। ক্রনিক রোগের সমস্যা বাড়তে পারে, বিশেষত অহংজনিত সমস্যা। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মতভেদ বাড়তে পারে। সবকিছুতে ‘প্রাইড’ বা অহংকার দেখানোর প্রয়োজন নেই। একটু নম্র হন, দেখবেন পরিস্থিতি আপনা-আপনি নিয়ন্ত্রণে চলে আসছে।
কন্যা
পরিবারে আজ সুখবর আসতে পারে। হয়তো পুরোনো জামাকাপড়ের মধ্যে থেকে একটা নতুন ৫০০ টাকার নোট খুঁজে পাবেন। লটারি থেকে অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাবনা আছে, তবে তার মানে এই নয় যে আজই কোটিপতি হচ্ছেন—একটা ১০ টাকার লটারি হলেও তো প্রাপ্তি! নতুন চাকরি পেতে পারেন বা কর্মস্থল পরিবর্তন হতে পারে। আজ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের (বা আপনার ফেসবুকের বন্ধুদের) অহেতুক মন্তব্য এড়িয়ে চলুন। দূরদেশে ভ্রমণের যোগ আছে, মানে হয়তো কাজের চাপে আপনাকে অন্য জেলায় যেতে হতে পারে! অতিরিক্ত বিশ্লেষণ করার স্বভাব আজ একটু কমাতে হবে। কম ভাবুন, বেশি হাসুন।
তুলা
স্বাস্থ্য আজ সুন্দর থাকবে, কিন্তু কিছু মানসিক চাপ থাকবেই। আপনি তো চিরকালই সবকিছুতে ভারসাম্য খুঁজছেন, তাই মন ও শরীরকে ব্যালেন্স করতে গিয়েই এই চাপ। বিদেশের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো কাজে সুবিধা পেতে পারেন। প্রেমের সম্পর্কে নম্রতা বজায় রাখুন। আজ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন, যেমন ফ্রিজ থেকে কী বের করে খাবেন, সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারাই আজকের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ধৈর্য ও বোঝাপড়া দিয়ে সব সামলে নিতে পারবেন। আপনি খুব ভালোভাবে বিতর্ক করতে পারেন, কিন্তু আজ প্রিয়জনের সঙ্গে তর্কে না গিয়ে বরং তাকে একটা কোল্ড ড্রিংকস কিনে দিন।
বৃশ্চিক
আজ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয়ে খুবই আগ্রহী হবেন। আজ আপনার রহস্যময় স্বভাব একটু কম কাজ করবে। কারণ, মন কেবল টাকা গুনতে ব্যস্ত। প্রিয়জনের সঙ্গে খুব ভালো সময় কাটাবেন এবং আন্তরিক চিন্তাগুলো তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাইবেন। বৃশ্চিকদের আবার আন্তরিক চিন্তা? সেটা নিশ্চয়ই পরের মাসে কত টাকা জমাবেন সেই প্ল্যান! কাছের মানুষের প্রতি আস্থা বজায় থাকবে এবং বন্ধুদের থেকে উপকার পাবেন। ব্যক্তিগত বিষয়ে ফোকাস রাখুন। আপনি খুব সাহসী এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আজ সেই শক্তি কাজে লাগান; কিন্তু কোনো বন্ধুর গোপন কথা ফাঁস করে দেবেন না!
ধনু
আজ আরাম করার দিন। পেশিগুলোকে আরাম দিতে তেল ম্যাসাজ করতে পারেন। দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত কাজগুলো আজ সময়মতো শেষ করার চেষ্টা করুন; যেমন ফ্রিজের ময়লা পরিষ্কার করা। অবিবাহিতরা সঙ্গীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তবে ভ্রমণের গল্প দিয়ে তাদের বিরক্ত করবেন না। বসের পরামর্শ উপেক্ষা করা এড়িয়ে চলুন, নয়তো বস আপনাকে দিয়ে আবার সব কাজ করিয়ে নিতে পারে। সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো মানসিক শান্তি বজায় রাখবে। আপনার অ্যাডভেঞ্চারের নেশা আজ একটু নিয়ন্ত্রণে রাখুন। আজ আরাম করুন, কাল আবার নতুন অ্যাডভেঞ্চার খুঁজবেন।
মকর
আপনার কাঁধে আজ অনেক কিছু নির্ভর করবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আপনার জন্য আজ বড় পরীক্ষা। আপনি জন্মগতভাবেই দায়িত্ব নিতে ভালোবাসেন, তাই এই চাপের মধ্যেও বেশ আরাম বোধ করবেন। চাকরি বা ব্যবসায় লাভের লক্ষণ দেখা যায়। সন্তানদের সম্পর্কিত কিছু সুসংবাদ পেতে পারেন—হয়তো তারা আপনাকে বিরক্ত করা একটু কমিয়ে দিয়েছে। আর্থিক অবস্থা শক্তিশালী হবে। একটি স্থগিত প্রকল্প আবার শুরু হতে পারে; যেমন আপনার পুরোনো জিমের সদস্যপদ! কাজের প্রতি আপনার মনোযোগ দারুণ, কিন্তু দিনে একবারের জন্য হলেও ফোন বন্ধ করে একটু চায়ে চুমুক দিন।
কুম্ভ
অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সমর্থন আজ আপনার সাহসকে বড় উৎসাহ দেবে। এই প্রভাবশালী ব্যক্তিটি হয়তো আপনার প্রতিবেশী, যার কাছে ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড আছে। আর্থিক অবস্থা শক্তিশালী হবে। প্রেম জীবনে সুখ থাকবে, পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হতে পারে। তবে সেই পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর যেন পকেট খালি না হয়ে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। নিজেকে শান্ত রাখতে এবং পরিবারের সঙ্গে কাটানোর জন্য সন্ধ্যাটি ভালো হবে। বৈপ্লবিক আইডিয়াগুলো আজ আপাতত কাগজে লিখে রাখুন। স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, তাই আজ দৌড়াতে যান বা অন্তত একটু হাঁটুন।
মীন
মীন রাশির জাতক, আজ আপনি হালকা বোধ করবেন এবং উপভোগ করার সঠিক মেজাজে থাকবেন। কল্পনা আজ আপনাকে নিয়ে যেতে পারে এক নতুন জগতে, যেখানে কোনো ইউটিলিটি বিল নেই, আছে শুধু মিষ্টি মিষ্টি স্বপ্ন। অর্থের গুরুত্বের দিকে মনোনিবেশ করবেন, যা আপনার জন্য খুবই দরকারি। আজ যা আপনাকে নিজের সম্বন্ধে ভালো বোধ করায়, এমন কিছু করার পক্ষে এটি চমৎকার দিন; যেমন পুরোনো সব দুঃখ ভুলে একটা চকলেট আইসক্রিম খেয়ে নিন! স্বপ্ন দেখুন, কিন্তু বাস্তবের পৃথিবীতে কে আপনাকে ঠকাচ্ছে, সেদিকেও নজর রাখুন।

সকালে ঘুম থেকে উঠে খানিকটা ভালো লাগছিল। পুরোপুরি না। অসুস্থ শরীর নিয়ে কোথাও গিয়ে নাশতা করতে ইচ্ছা করছিল না। এদিন থেকে আমার চেয়ে ভুবনের অবস্থা খারাপ হতে লাগল। আমরা নাশতা করিনি। ভাবলাম যাত্রাপথে খেয়ে নেব...
১৬ নভেম্বর ২০২২
হংকং শহরের ব্যস্ত বিকেলে ছোট্ট এক সুশি রেস্তোরাঁর রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে জাপানি শেফ কেনইচি ফুজিমোতো হাতে নিলেন একটি কালো বাক্স। তার ওপর সোনালি অক্ষরে লেখা ‘ওয়ার্ল্ডস বেস্ট রাইস’, কেজি ১০৯ ডলার!...
১ ঘণ্টা আগে
রান্নাঘরে থালাবাটি পরিষ্কার করার জন্য এখন স্পঞ্জের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়; বিশেষ করে শহরের বেশির ভাগ বাসাবাড়িতে খাবারের নোংরা এই স্পঞ্জের মাধ্যমে পরিষ্কার করা হয়। এগুলোতে আপনার ধারণার চেয়ে বেশি ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া লুকিয়ে থাকে। শক্তপোক্ত স্পঞ্জও একসময় পরিষ্কার করার ক্ষমতা হারায়। এর চেয়ে খারাপ...
৩ ঘণ্টা আগে
তাজা উপকরণে তৈরি দারুণ স্বাদের জন্য থাই খাবার বিশ্বজুড়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এর প্রাণবন্ত স্বাদ ও পুষ্টিগুণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে। পুষ্টিবিদ কেরি বিসনের মতে, মসলা, ভেষজ ও তাজা উপাদানের এক প্রাণবন্ত মিশ্রণে তৈরি হয় থাই খাবার। কিন্তু এই খাবারের প্রেমে পড়া নুডলস অনুরাগীদের জন্য কিছুটা খারাপ খবর আছে...
৫ ঘণ্টা আগেথাই খাবারের স্বাস্থ্য রহস্য
ফিচার ডেস্ক, ঢাকা

তাজা উপকরণে তৈরি দারুণ স্বাদের জন্য থাই খাবার বিশ্বজুড়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এর প্রাণবন্ত স্বাদ ও পুষ্টিগুণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে। পুষ্টিবিদ কেরি বিসনের মতে, মসলা, ভেষজ ও তাজা উপাদানের এক প্রাণবন্ত মিশ্রণে তৈরি হয় থাই খাবার। কিন্তু এই খাবারের প্রেমে পড়া নুডলস অনুরাগীদের জন্য কিছুটা খারাপ খবর আছে। কারণ, অনেক সুস্বাদু থাই পদই ক্যালরির দিক থেকে বেশ ভারী হতে পারে।
কেন থাই খাবার স্বাস্থ্যকর
থাই খাবারের স্বাস্থ্যকর দিকগুলো এটিকে বিশ্বজুড়ে অন্যান্য হিসেবে পরিচিত ফাস্ট ফুডের চেয়ে এগিয়ে রাখে। থাই খাবারে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ব্রকলি, সবুজ মটরশুঁটির মতো প্রচুর সবজি ব্যবহার করা হয়, যেগুলো দ্রুত ভাজা বা গ্রিল করা হয়। এতে পুষ্টিগুণ বজায় থাকে। এ ছাড়া থাই খাবারে ব্যবহৃত বেগুন আঁশ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামে ভরপুর। থাই রান্নায় ব্যবহৃত রসুন, আদা ও ধনেপাতা খাবারে স্বাস্থ্যকর উপাদান যোগ করে। যেমন রসুন প্রাকৃতিক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ও প্রিবায়োটিক, যা পেটের স্বাস্থ্যের জন্য চমৎকার। আদা প্রদাহ কমাতে এবং হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

মরিচে ক্যাপসাইসিন থাকে, যা রক্তসঞ্চালন ভালো রাখে। খাবারে ব্যবহৃত ধনেপাতা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান; যেমন টারপিনিন, কুয়ারসেটিন এবং টোকোফেরলে সমৃদ্ধ। থাই অনেক ক্রিমজাতীয় পদে নারকেলের দুধ ব্যবহৃত হয়, যা ভেগান ও দুধ বা দুধ থেকে তৈরি খাবারে যাদের অ্যালার্জি আছে, তাদের জন্য উপযুক্ত। এতে লরিক অ্যাসিডের মতো মাঝারি-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ধারণ করে।
থাই খাবার অর্ডারের সময় যা মনে রাখবেন
সুস্বাদু থাই খাবারের স্বাস্থ্যকর সুবিধা পেতে কিছু বিষয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন—
নারকেলের দুধের ক্যালরি: নারকেলের দুধ স্বাস্থ্যকর হলেও এটি স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ক্যালরিতে বেশ উচ্চ। এর প্রতি কাপে প্রায় ৪৪৫ ক্যালরি থাকে। তাই এটি অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়।
চাল ও নুডলস: অনেক থাই পদে পরিশোধিত সাদা চাল বা নুডলস ব্যবহার করা হয়। তাতে আঁশের উপস্থিতি কম, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে সম্ভব হলে সাদা চালের পরিবর্তে ব্রাউন রাইস বা ফুলকপির রাইস বেছে নিতে পারেন।

রান্নার পদ্ধতি ও সস: উচ্চ তাপমাত্রায় ডিপ-ফ্রাই করা খাবার তেল ও খাদ্যের পুষ্টিগুণ নষ্ট করে দিতে পারে। ঘন ও চর্বিযুক্ত সসগুলোতে প্রচুর চর্বি ও চিনি থাকতে পারে।
সোডিয়াম (লবণ): সয়া সস ও ফিশ সসের মতো সিজনিং থেকে থাই খাবার খুব বেশি লবণাক্ত হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্কদের দিনে ৬ গ্রামের বেশি লবণ না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বেশির ভাগ থাই খাবার তাজা তৈরি হয়। তাই আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী কম তেল, লবণ বা সস ছাড়া রান্না করতে অনুরোধ করতে পারেন।
থাইল্যান্ড ভ্রমণকারীদের জন্য সেরা ৫টি পদ

আপনি যদি থাইল্যান্ড ভ্রমণে যান এবং সুস্বাদু থাই খাবার চেখে দেখার পাশাপাশি সুস্থ থাকতে চান, তবে পুষ্টিবিদ কেরি বিসনের সুপারিশ অনুযায়ী এই ৫টি পদ আপনার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করতে পারেন।
সোম তাম: এটি মূলত সবুজ পেঁপের সালাদ। এর সঙ্গে থাকে কাঁচা বা হালকা রান্না করা ফল ও সবজি। এর স্বাদ খানিক টক। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি-তে ভরপুর। এতে চর্বি ও ক্যালরি কম। ২২০ গ্রাম সোম তামে মাত্র ১১১ ক্যালরি থাকে। তবে চিনি বেশি থাকতে পারে। তাই তৈরির সময় জানিয়ে দিন, কেমন মিষ্টি খাবেন।
টম ইয়াম গুং স্যুপ: এটি মূলত চিংড়ি স্যুপ। চিংড়ি, মরিচ, লেমন গ্রাস ও গ্যালানগ্যালযুক্ত টক ও ঝাল ঝোল থাকে এতে। এ খাবারের চর্বি ও ক্যালরি প্রাকৃতিকভাবে কম। আর এটি ভেষজ, ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ খাবার। ২৪০ গ্রাম স্যুপে মাত্র ৫০ ক্যালরি থাকে। তবে খাওয়ার আগে সতর্ক থাকবেন লবণের পরিমাণ নিয়ে। এতে সাধারণত লবণের পরিমাণ বেশি থাকে।
স্টিমড ফিশ: সি বাস বা অন্য মাছ আদা, লাইম জুস, রসুন ও মরিচ দিয়ে ম্যারিনেট করে ভাপানো হয়। খাবারটিতে চর্বি ও ক্যালরি কম। এটি লিন প্রোটিনের উৎস। এ ছাড়া এটি ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি১২ সমৃদ্ধ। এর ১০০ গ্রাম ফিলেতে থাকে প্রায় ১৩০ ক্যালরি। তবে চর্বি ৭ গ্রামের বেশি নয়।

গ্রিলড চিকেন: রসুন, ধনেপাতা ও লেমন গ্রাস দিয়ে ম্যারিনেট করা মুরগির মাংস বা চিংড়ি গ্রিল করা হয়। লিন প্রোটিন ও ভিটামিন বি এর উচ্চমাত্রা উপস্থিত থাকে এতে। তবে চর্বি ও শর্করার পরিমাণ কম। সস ছাড়া খেলে ক্যালরিও কম থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম গ্রিলড চিকেনে থাকে প্রায় ২৩০ ক্যালরি।
স্টার-ফ্রাইড ভেজিটেবলস: এই খাবারে থাকে তাজা সবজি, ভেষজ ও মসলা। সব মিশিয়ে একটু নাড়াচাড়া। এটি খাদ্যতালিকাগত আঁশ, ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস। ২৪০ গ্রাম খাবারে থাকে প্রায় ২০০ ক্যালরি। তবে সে ক্ষেত্রে কম তেল ও লবণ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
সূত্র: ডেইলি মেইল

তাজা উপকরণে তৈরি দারুণ স্বাদের জন্য থাই খাবার বিশ্বজুড়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এর প্রাণবন্ত স্বাদ ও পুষ্টিগুণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে। পুষ্টিবিদ কেরি বিসনের মতে, মসলা, ভেষজ ও তাজা উপাদানের এক প্রাণবন্ত মিশ্রণে তৈরি হয় থাই খাবার। কিন্তু এই খাবারের প্রেমে পড়া নুডলস অনুরাগীদের জন্য কিছুটা খারাপ খবর আছে। কারণ, অনেক সুস্বাদু থাই পদই ক্যালরির দিক থেকে বেশ ভারী হতে পারে।
কেন থাই খাবার স্বাস্থ্যকর
থাই খাবারের স্বাস্থ্যকর দিকগুলো এটিকে বিশ্বজুড়ে অন্যান্য হিসেবে পরিচিত ফাস্ট ফুডের চেয়ে এগিয়ে রাখে। থাই খাবারে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ব্রকলি, সবুজ মটরশুঁটির মতো প্রচুর সবজি ব্যবহার করা হয়, যেগুলো দ্রুত ভাজা বা গ্রিল করা হয়। এতে পুষ্টিগুণ বজায় থাকে। এ ছাড়া থাই খাবারে ব্যবহৃত বেগুন আঁশ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামে ভরপুর। থাই রান্নায় ব্যবহৃত রসুন, আদা ও ধনেপাতা খাবারে স্বাস্থ্যকর উপাদান যোগ করে। যেমন রসুন প্রাকৃতিক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ও প্রিবায়োটিক, যা পেটের স্বাস্থ্যের জন্য চমৎকার। আদা প্রদাহ কমাতে এবং হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

মরিচে ক্যাপসাইসিন থাকে, যা রক্তসঞ্চালন ভালো রাখে। খাবারে ব্যবহৃত ধনেপাতা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান; যেমন টারপিনিন, কুয়ারসেটিন এবং টোকোফেরলে সমৃদ্ধ। থাই অনেক ক্রিমজাতীয় পদে নারকেলের দুধ ব্যবহৃত হয়, যা ভেগান ও দুধ বা দুধ থেকে তৈরি খাবারে যাদের অ্যালার্জি আছে, তাদের জন্য উপযুক্ত। এতে লরিক অ্যাসিডের মতো মাঝারি-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ধারণ করে।
থাই খাবার অর্ডারের সময় যা মনে রাখবেন
সুস্বাদু থাই খাবারের স্বাস্থ্যকর সুবিধা পেতে কিছু বিষয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন—
নারকেলের দুধের ক্যালরি: নারকেলের দুধ স্বাস্থ্যকর হলেও এটি স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ক্যালরিতে বেশ উচ্চ। এর প্রতি কাপে প্রায় ৪৪৫ ক্যালরি থাকে। তাই এটি অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়।
চাল ও নুডলস: অনেক থাই পদে পরিশোধিত সাদা চাল বা নুডলস ব্যবহার করা হয়। তাতে আঁশের উপস্থিতি কম, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে সম্ভব হলে সাদা চালের পরিবর্তে ব্রাউন রাইস বা ফুলকপির রাইস বেছে নিতে পারেন।

রান্নার পদ্ধতি ও সস: উচ্চ তাপমাত্রায় ডিপ-ফ্রাই করা খাবার তেল ও খাদ্যের পুষ্টিগুণ নষ্ট করে দিতে পারে। ঘন ও চর্বিযুক্ত সসগুলোতে প্রচুর চর্বি ও চিনি থাকতে পারে।
সোডিয়াম (লবণ): সয়া সস ও ফিশ সসের মতো সিজনিং থেকে থাই খাবার খুব বেশি লবণাক্ত হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্কদের দিনে ৬ গ্রামের বেশি লবণ না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বেশির ভাগ থাই খাবার তাজা তৈরি হয়। তাই আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী কম তেল, লবণ বা সস ছাড়া রান্না করতে অনুরোধ করতে পারেন।
থাইল্যান্ড ভ্রমণকারীদের জন্য সেরা ৫টি পদ

আপনি যদি থাইল্যান্ড ভ্রমণে যান এবং সুস্বাদু থাই খাবার চেখে দেখার পাশাপাশি সুস্থ থাকতে চান, তবে পুষ্টিবিদ কেরি বিসনের সুপারিশ অনুযায়ী এই ৫টি পদ আপনার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করতে পারেন।
সোম তাম: এটি মূলত সবুজ পেঁপের সালাদ। এর সঙ্গে থাকে কাঁচা বা হালকা রান্না করা ফল ও সবজি। এর স্বাদ খানিক টক। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি-তে ভরপুর। এতে চর্বি ও ক্যালরি কম। ২২০ গ্রাম সোম তামে মাত্র ১১১ ক্যালরি থাকে। তবে চিনি বেশি থাকতে পারে। তাই তৈরির সময় জানিয়ে দিন, কেমন মিষ্টি খাবেন।
টম ইয়াম গুং স্যুপ: এটি মূলত চিংড়ি স্যুপ। চিংড়ি, মরিচ, লেমন গ্রাস ও গ্যালানগ্যালযুক্ত টক ও ঝাল ঝোল থাকে এতে। এ খাবারের চর্বি ও ক্যালরি প্রাকৃতিকভাবে কম। আর এটি ভেষজ, ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ খাবার। ২৪০ গ্রাম স্যুপে মাত্র ৫০ ক্যালরি থাকে। তবে খাওয়ার আগে সতর্ক থাকবেন লবণের পরিমাণ নিয়ে। এতে সাধারণত লবণের পরিমাণ বেশি থাকে।
স্টিমড ফিশ: সি বাস বা অন্য মাছ আদা, লাইম জুস, রসুন ও মরিচ দিয়ে ম্যারিনেট করে ভাপানো হয়। খাবারটিতে চর্বি ও ক্যালরি কম। এটি লিন প্রোটিনের উৎস। এ ছাড়া এটি ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি১২ সমৃদ্ধ। এর ১০০ গ্রাম ফিলেতে থাকে প্রায় ১৩০ ক্যালরি। তবে চর্বি ৭ গ্রামের বেশি নয়।

গ্রিলড চিকেন: রসুন, ধনেপাতা ও লেমন গ্রাস দিয়ে ম্যারিনেট করা মুরগির মাংস বা চিংড়ি গ্রিল করা হয়। লিন প্রোটিন ও ভিটামিন বি এর উচ্চমাত্রা উপস্থিত থাকে এতে। তবে চর্বি ও শর্করার পরিমাণ কম। সস ছাড়া খেলে ক্যালরিও কম থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম গ্রিলড চিকেনে থাকে প্রায় ২৩০ ক্যালরি।
স্টার-ফ্রাইড ভেজিটেবলস: এই খাবারে থাকে তাজা সবজি, ভেষজ ও মসলা। সব মিশিয়ে একটু নাড়াচাড়া। এটি খাদ্যতালিকাগত আঁশ, ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস। ২৪০ গ্রাম খাবারে থাকে প্রায় ২০০ ক্যালরি। তবে সে ক্ষেত্রে কম তেল ও লবণ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
সূত্র: ডেইলি মেইল

সকালে ঘুম থেকে উঠে খানিকটা ভালো লাগছিল। পুরোপুরি না। অসুস্থ শরীর নিয়ে কোথাও গিয়ে নাশতা করতে ইচ্ছা করছিল না। এদিন থেকে আমার চেয়ে ভুবনের অবস্থা খারাপ হতে লাগল। আমরা নাশতা করিনি। ভাবলাম যাত্রাপথে খেয়ে নেব...
১৬ নভেম্বর ২০২২
হংকং শহরের ব্যস্ত বিকেলে ছোট্ট এক সুশি রেস্তোরাঁর রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে জাপানি শেফ কেনইচি ফুজিমোতো হাতে নিলেন একটি কালো বাক্স। তার ওপর সোনালি অক্ষরে লেখা ‘ওয়ার্ল্ডস বেস্ট রাইস’, কেজি ১০৯ ডলার!...
১ ঘণ্টা আগে
রান্নাঘরে থালাবাটি পরিষ্কার করার জন্য এখন স্পঞ্জের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়; বিশেষ করে শহরের বেশির ভাগ বাসাবাড়িতে খাবারের নোংরা এই স্পঞ্জের মাধ্যমে পরিষ্কার করা হয়। এগুলোতে আপনার ধারণার চেয়ে বেশি ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া লুকিয়ে থাকে। শক্তপোক্ত স্পঞ্জও একসময় পরিষ্কার করার ক্ষমতা হারায়। এর চেয়ে খারাপ...
৩ ঘণ্টা আগে
আজকের দিনটি আপনার জন্য পুরোপুরি অ্যাকশন-প্যাকড, তবে অ্যাকশন মানে মারপিট নয়, স্রেফ জটিলতা! কর্মক্ষেত্রে পরিস্থিতি একটু ‘জট পাকানো সুতার মতো’, মানে আপনি যা করতে যাবেন, সেটাই ডবল কাজ হয়ে যাবে। ‘শত্রুরা’ আজ ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, তবে সম্ভবত তারা আপনার অফিসের প্রিন্টার।
৪ ঘণ্টা আগে