সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন

উত্তরের পথে আমাদের অভিযান
‘জলদি ওঠো। দেরি করা যাবে না। কেউ যেন বলতে না পারে আমাদের জন্য দেরি হয়েছে।’ অ্যালার্ম বাজতেই ভুবন ওর চিরচেনা সংলাপ দিচ্ছিল! ‘চিরচেনা’ বললাম এ কারণে, সে কারও সঙ্গে কোথাও যাওয়ার আগে ঠিক এই কথাগুলোই বলে। ওর কথা হচ্ছে, প্রয়োজন হলে সময়ের আগে প্রস্তুত থাকতে হবে বা পৌঁছাতে হবে। কিন্তু দেরি হওয়া যাবে না। মাঝে মাঝে তাই ওকে ‘আর্মি পারসন’ বলি! যাই হোক, সেখানকার সময় ৬টায় উঠে গেলাম। আধা ঘণ্টার মধ্যে দুজনে তৈরি হয়ে রুম থেকে বেরিয়েছি। হঠাৎ বারান্দার একপাশ দিয়ে বাইরে চোখ যেতেই দেখি কী সুন্দর দৃশ্য! রাতে পাহাড়ের গায়ে যে তারা দেখেছিলাম জ্বলজ্বল করছে, সেগুলো দিনের আলোয় স্পষ্ট ঘরবাড়ি। ছবিতে দেখলে হয়তো মনে হবে বস্তি। সামনে থেকে না দেখলে এর সৌন্দর্য অনুভব করা যাবে না। ঝটপট সেই দৃশ্যের ছবি তুলে নিল ভুবন।
হোটেল থেকে বের হলাম নাশতা খাব বলে। রাতে তো নিয়নের আলোয় খুব একটা বুঝিনি, সকালে বের হয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। মল রোডটা যে কত পরিষ্কার, স্বচ্ছ! রাস্তার ওপরেই যেন নির্দ্বিধায় গড়াগড়ি করা যাবে। রাস্তার একপাশ ‘ওয়ান ওয়ে’, অন্য পাশ দিয়ে কোনো যানবাহন প্রবেশ করানো যায় না। এপাশ দিয়ে সবাই আরাম করে হাঁটাহাঁটি করে। আর একধারে কিছু দূর পর পর বেঞ্চি আছে। হাঁটতে হাঁটতে একটু জিরিয়ে নেওয়া যায়। ওই পথ ধরে হেঁটে একটা রেস্তোরাঁয় ঢুকলাম। খেলাম সবজি আর লুচি। সবজি বলতে গাঢ় ঝোলের মধ্যে আলু! আলুর দম বলা চলে। কিন্তু তারা এটাকে সবজিই নাম দিয়েছে। ভুবন অবশ্য লুচি না খেয়ে রুটি খেয়েছিল। মিষ্টির চেহারাগুলো দেখে এত লোভ লাগছিল! কিন্তু যেই খেতে গিয়েছি, আর ভালো লাগল না। নাশতা পর্ব শেষ করে আবার ছুটলাম হোটেলের দিকে। হাঁটার মাঝে থেমে থেমে কিছু ছবিও তুলে নিলাম। মোড়ে একটা বিশাল লাল পান্ডার ভাস্কর্য আছে। সেটার সঙ্গে ছবি তুলতে ভুললাম না। সময় পেলে সত্যিকারের লাল পান্ডা দেখতে যেতাম গ্যাংটকের চিড়িয়াখানায়, কিন্তু সময় হয়নি।
আমরা ঠিক ৭টার সময় হোটেলের নিচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। সবাই প্রস্তুত। কিন্তু গাড়ি আসেনি। ৮টার পর গাড়ি পেয়ে রওনা হলাম বজরা ট্যাক্সিস্ট্যান্ডের উদ্দেশে। মোটামুটি পনেরো-বিশ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে। সেখানে হলো মহাবিলম্ব! কতক্ষণ যে দাঁড়িয়ে, পায়চারি করে সময় পার করেছি, আল্লাহ জানেন। কথা ছিল আগের দিন রাতেই অমরদা সব গাড়ি ঠিক করে রাখবেন, কিন্তু পারেননি।
প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর আমরা গাড়ি পেলাম। একটা বড় জিপ পেয়ে আমরা নয়জন চড়ে বসলাম সেটাতে। আমাদের দুজনকে সবাই জিজ্ঞেস করছিল কোথায় বসতে চাই। আমি বললাম, ‘আপনাদের সুবিধামতো আমাদের একটু জায়গা দিলেই হবে।’ আকাশ ভাই দুষ্টুমি করে বললেন, ‘তাহলে ছাদে বসে যান। আমরা আরাম করে যাই।’ আমি বললাম, ‘কোনো সমস্যা নাই। সেটা তো ভীষণ মজার ব্যাপার হবে!’ সবাই হো হো করে হেসে দিয়ে দুজনকে চালকের সঙ্গে সামনের সিটে বসতে দিলেন। সামনে দুইটা সিটই বলা চলে। চালকেরটা ছাড়া। আরামসে আমি আর ভুবন এঁটে যাই। সবাই গাড়িতে উঠে অপেক্ষা করছি। বাকিদের বসা হলে একসঙ্গে রওনা দেব। বড় দলটা আরও দুইটা জিপে ভাগ হয়ে উঠল। তবে ঝামেলা লেগেছিল ওই দলের দুজন ‘জেঠুমশাই’কে নিয়ে। তাঁরা দুজনে একই জায়গায় বসতে চান। অর্থাৎ, একই সিটে। এ নিয়ে তুমুল লঙ্কাকাণ্ড! গাল ফুলিয়ে, চোখ রাঙিয়ে যাঁর যাঁর পরিচয় দিচ্ছিলেন। মাঝখান দিয়ে বেচারা অমরদা হলেন তুলাধুনা। আমরা জিপের ভেতরে বসে থেকে দর্শকের মতো ওই নাটক-সিনেমা দেখছিলাম। পেছন থেকে কে যেন বলে উঠল, ‘আরে ওনারা এত বড় মানুষ হয়ে বাচ্চাদের মতো করছেন, অথচ আমাদের মিস্টার অ্যান্ড মিসেস এজাজের গাড়ির ছাদে বা পেছনে ঝুলে যেতেও আপত্তি নাই।’ সত্যিই যদি এমন পরিস্থিতি হতো, তাহলেও আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না। গাড়ির ছাদে বা পেছনে ঝুলে ঝুলেই যেতাম। যাই হোক, সিনেমাটা আধা ঘণ্টার মতো চলল। অবশেষে অমরদা গালি হজম করে হাসিমুখে সবাইকে নিয়ে রওনা দিলেন। প্রায় ১২টা বেজে গিয়েছিল তখন।
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ। ধীরে ধীরে ওপরের দিকে উঠছি, বুঝতে পারছিলাম। আর সে কী যে পাগল করা অপরূপ সৌন্দর্য! এই পথে যেতে যেতে ‘মাশাআল্লাহ’, ‘সুবহানআল্লাহ’, ‘ওয়াও’, ‘অ্যামেজিং’ শব্দগুলো আপনা-আপনি মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়। সবাই মিলে এক এক করে গান ধরলাম। আকাশ ভাইয়ের গলা ভালো। তিনি অনেক গান গাইলেন। পুরোটা পথ এই গানের আসর সঙ্গী ছিল। ভুবনের গান শুনে তো সবাই মুগ্ধ। আকাশ ভাই আমাকে বলছিলেন, ‘বাহ, আপনার স্বামীর গানের গলা তো বেশ!’ মুচকি হেসে বললাম, ‘এমনি এমনি কি আর প্রেমে পড়েছি!’ এ কথা শুনে সবাই হেসে দিলেন। এরপর এল আমাদের প্রেমকাহিনির গল্পের অনুরোধ। গানের ফাঁকে ফাঁকে সেটাও হয়ে গেল। আমার গানের গলা ভালো না। ছেড়ে গাইতে পারি না। অনেকটা নাকি সুরে গাই। তবু সবার জোর অনুরোধে গাইতে হলো। একটার বেশি গাইলাম না। কারণ আমি ওই একটা গানই একটু ছেড়ে দিয়ে গাইতে পারি, ‘তোমার ঘরে বাস করে কারা...’।
আমাদের সামনে বসার খুব ভালো একটা সুফল পাওয়া গেছে। যতটা স্পষ্ট আমরা দুজন দেখতে পাচ্ছিলাম বাইরের দৃশ্য, পেছনের লোকজন হয়তো সেটার অর্ধেক দেখেছে। তবু যা দেখেছে, তাতে চোখ ছানাবড়া না হয়ে পারেই না। পথে থেমে থেমে পাহাড়ি ঝরনা দেখাচ্ছিলেন আমাদের চালক। তাঁর নাম রবিন। নামটা শুনে তাঁকে রবিন হুড ডাকতে ইচ্ছা হলো। রবিন হুড থেকে মনে পড়ল সালমান খানের ‘চুলবুল পান্ডে ওরফে রবিন হুড পান্ডে’ চরিত্রের কথা। আমি তাই তাঁকে ‘পান্ডেজি’ বলে ডাকা শুরু করলাম। পান্ডেজি নরম মানুষ। আস্তে-ধীরে কথা বলেন। নেপালি। মানে, সিকিমের বাসিন্দা আরকি। তিনি সবগুলো ঝরনার নাম ও বর্ণনা দিলেন। সব ঝরনার নামের সাইনবোর্ড নেই আবার। সেখানে নাম লেখা থাকে সাধারণত। আবার কোনো কোনো ঝরনার নাম নেই। সেগুলো ছোটখাটো। অনেক ঝরনার নাম পান্ডেজি নিজেও জানেন না। কারণ সেগুলো নতুন। সেভেন সিস্টার্স, নাগা, ভিম নালাসহ আরও ছোট-বড় কিছু ঝরনা দেখলাম। ভিম নালা ঝরনাটার আরেকটা নাম আছে। ‘অমিতাভ বচ্চন ফলস’। এমন নাম কেন, জিজ্ঞেস করতেই পান্ডেজি বললেন, ‘উ বহুত লম্বা হ্যায়। উ অ্যাক্টর হ্যায় না, অমিতাভ বচ্চন, উসকি তারাহ।’ লম্বায় এটা ২৭৫ ফুট। এর আরেক নাম ভিমা ফলস। স্থানীয় ভাষায় ভিমা বা ভিম নালা মানে ‘রেড স্নেক’ বা লাল সাপ। তাই এর আরেক নাম ‘রেড স্নেক’। বিগত কয়েক বছর ধরে পর্যটকেরা এই ঝরনাকে আবার ‘লাচুং নর্থ সিকিম ফলস’ নামেও ডাকছে। ঝরনার পাশাপাশি মেঘের কথা না বললেই নয়। পাহাড়ের চূড়ায় তুলার মতো লেগে থাকা মেঘ দেখা যায় দূর থেকে। আর পাহাড়ের নিচে স্বচ্ছ সবুজ তিস্তার পানি বয়ে চলে। ওপরের দিকে উঠতে উঠতে মেঘের ভেতর দিয়ে গিয়েছি আমরা। গাড়ি থেকে নেমেও ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা করেছি। আসলে মেঘ নিজেই তো আমাদের জাপটে ধরে।
দুপুর থেকে পেটে উৎপাত শুরু হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু পথে টং দোকানের চা-বিস্কুট ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। শেষে বিকালের দিকে এক মুসলিম হোটেল পেলাম। পাহাড়ি রাস্তার একপাশে বেড়ার হোটেল। নিচের দিকে নেমে গেলে গ্রাম। সেখানে বেশির ভাগ মুসলমানরাই বাস করে। অনেকটা লুকিয়ে তারা গোমাংস রান্না করে খাওয়ায়। অমরদা আগে থেকে বলে রেখেছিলেন। তাই আমরা গরুর মাংস দিয়ে গরম ভাত-ডাল খেতে পারলাম। মনে হচ্ছিল অমৃত। রান্নাটাও বেশ। জম্পেশ খাওয়া দিয়ে আবার রওনা দিলাম। লাচুংয়ে পৌঁছাতে হবে। ততক্ষণে শুরু হয়ে গিয়েছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। আলবৎ মাথায় বৃষ্টির ফোঁটা পড়েছিল। এরপর বাকিটা ইতিহাস। তবে পরদিন থেকে।
সন্ধ্যা নেমে এলে গাড়ির হেডলাইটের আলো ছাড়া গতি ছিল না। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, যাচ্ছি আবার মেঘের ভেতর দিয়ে। পথ একেবারে পিচ্ছিল। ভয় পাচ্ছিলাম না একটুও। কেননা, পান্ডেজি যেভাবে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তাতে ভরসা না করে পারা যায় না। তিনি মুখে তো অভয় দিচ্ছিলেনই, কাজ দিয়েও প্রমাণ করেছেন। সিকিমের এই পাহাড়ি পথ এমনভাবে তৈরি করা যে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা খুব কম। জায়গায় জায়গায় সতর্কবার্তা লেখা আছে। আর চালকদের এতটাই মুখস্থ রাস্তা যে তারা চোখ বুজে পাড়ি দিতে পারেন।
লাচুংয়ে ঢোকার আগেও অনুমতি লাগল। সেখানে এক বিজ্ঞপ্তিতে লেখা দেখলাম উত্তরের কোথায় কোথায় যাওয়া যাবে আর কোথায় কোথায় যাওয়া যাবে না। অবশ্যই লাচুংয়ে টিক চিহ্ন দেওয়া ছিল। সেটা দেখে মনে মনে খুশি হয়ে গেলাম। যাক বাবা, আটকে দিল না তাহলে। অনুমতি নিয়ে চলতে শুরু করলাম আবার। সাড়ে ৭টার পরপর পৌঁছে গেলাম গন্তব্যে। আর্মি চেকপোস্টের কাছাকাছি ‘লাচুং রিজেন্সি’তে গিয়ে উঠলাম। এখানে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আগে থেকে করে রেখেছিলেন অমরদা। এই হোটেলে লোক মাত্র দুজন। যিনি ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন, তিনি নিজেই রান্না করেন। তাঁর সঙ্গে একজন আছেন, যিনি অতিথিদের ফরমাশ খাটেন। তাঁকে সাহায্যও করেন। আমরা যার যার রুম বেছে নিয়ে হাতমুখ ধুয়ে কাপড় বদলে নিলাম। ভাগ্যিস এখানে খাওয়া না পাওয়া যাওয়ার ভয় ছিল না।
ধীরে-সুস্থেই খাবারঘরে গেলাম। বুফে সিস্টেম করে রেখেছিলেন আমাদের রাঁধুনি। ভাত, ডাল, সবজি, রুটি, মটর পনির, সালাদ। এখানে আমিষজাতীয় কোনো রান্না হয় না। বেশ ভালোই লাগল খেতে। ভাত ছাড়া সব খেলাম অল্প করে। বড় দলটাকে আমার ভালো লাগছিল না। তারা সবকিছুতে একটা লোকদেখানো ভাব করছিল। সে যাক গে, খেয়েদেয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে অনেকে গল্প করছিলাম। এর মধ্যে হেঁশেল থেকে খবর এল, কেউ গরুর দুধ খেতে চায় কি না। তবে কিনে খেতে হবে। ভুবন খুব আগ্রহ নিয়ে দুধ আনতে গেল রান্নাঘরে। ফিরে এল একটা দুঃখ ভাব নিয়ে। ব্যাপার কী? এক গ্লাস দুধের দাম ৫০ রুপি! যদিও সে কিনে এনেছে এবং খুব কষ্ট করে গিলেছে। মনে হচ্ছিল টাকা গিলছে! সবার এক কথা, আমাদের দেশে ৭০ টাকায় লিটার আর এখানে মাত্র এক গ্লাস ৫০ রুপি! একটু বেশি হয়ে যায় না? এক গ্লাসের দাম পড়ছে তাহলে পঁয়ষট্টি টাকার মতো। গল্প-গুজব শেষ করে রুমে গেলাম ঘুমাতে। এমন সময় বাইরে হন্তদন্ত শুনলাম। পরদিন কে কোথায় যাবে সেটা নিয়ে বিস্তর ক্যাচাল লেগে গেল অমরদার সঙ্গে। কে আর লাগাবে। সেই বড় দলের পণ্ডিতেরা। অমরদার ভাষ্যমতে, জিরো পয়েন্টে গিয়ে কোনো লাভ নেই।
সময় নষ্ট না করে শুধু ইয়ামথাং ভ্যালি ঘুরে এলেই হবে। জিরো পয়েন্টে যেতে আর্মিরা ঝামেলা করতে পারে। তখন আবহাওয়াও সুবিধার ছিল না। আমাদের কোনো সমস্যা ছিল না। আমরা সব জেনে-বুঝে, অন্তর্জাল ঘেঁটে অমরদার কথায় রাজি ছিলাম। কিন্তু নাছোড়বান্দা বড় দলের লোকজন। কেউ যেতে চান, কেউ চান না। যাঁরা যেতে চান, তাঁদের কথা হলো, ‘টাকা দিচ্ছি আপনাকে, নেবেন না কেন? যাবই!’ অথচ অমরদা আগেই বলে রেখেছিলেন যে যদি অনুমতি না পাই, আবহাওয়া দখলে না থাকে কিংবা পরিস্থিতি ভিন্ন হয়, তবে আমাদের পরিকল্পনার পরিবর্তন হতে পারে। সে কথাটা আমাদের দলকে না বললেও আমরা জানতাম। সিকিম ঘুরতে গেলে এই কথাগুলো মাথায় রাখতে হয়। শেষমেশ সিদ্ধান্ত হলো যাঁরা জিরো পয়েন্টে যেতে চান, তাঁরা আলাদা যাবেন সকাল ৭টায়। আর বাকিরা নাশতা সেরে ৮টায় রওনা হবেন ইয়ামথাং ভ্যালির জন্য। জিরো পয়েন্ট ঘুরে বাকিরা সরাসরি ইয়ামথাং ভ্যালিতে চলে যাবেন। জিরো পয়েন্টে না যাওয়ার কারণ ছিল, সেখানে যা আছে তার চেয়ে কয়েক গুণ সুন্দর দৃশ্য ইয়ামথাং ভ্যালিতে আছে। শরীরের ওপর দিয়ে ধকল যাবে কি না, সে কথাও মাথা থেকে ফেলে দিলাম না। ওহ্, আরেকটা ব্যাপার, অমরদার কিন্তু জিরো পয়েন্টে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল না। কথা ছিল সাঙ্গুতে নিয়ে যাবেন। কিন্তু অনুমতি পাননি। সেখানে আমরা সবাই যেতে চেয়েছিলাম। অনুমতি পাননি বিধায় কয়েকজন জেঁকে ধরেছিলেন জিরো পয়েন্টে নিয়ে যেতে। আমাদের সাঙ্গুতে নিতে না পারায় কিন্তু তিনি পরে তাঁর সম্মানীটাও কম রেখেছিলেন।
বিতর্কের সিদ্ধান্ত জানার পর ঘুমাতে গেলাম। কিন্তু কী মুশকিল! ঘুম যে আসে না! এক ফোঁটাও না। না আমার, না ভুবনের। রাত যত বাড়ে, ঠান্ডা তার চেয়ে দ্বিগুণ হারে বাড়ে। ঘুম কী করে আসে এমন অবস্থায়! রুমে হিটার আনালাম। সেখানে আবার রুম হিটারের জন্য আলাদা খরচ করতে হয়। কিন্তু সারা রাতেও হিটার ঘরটাকে গরম করতে পারল না। এদিকে বাইরে হচ্ছে তুষারপাত। তাপমাত্রা সম্ভবত মাইনাস ৯ ছিল। একাত-ওকাত করে করে রাত পার করলাম। সব মিলিয়ে বড়জোর ঘণ্টা দেড়েক ঘুমিয়েছি; ভোরের দিকে যখন ঘরটা গরম হলো।

উত্তরের পথে আমাদের অভিযান
‘জলদি ওঠো। দেরি করা যাবে না। কেউ যেন বলতে না পারে আমাদের জন্য দেরি হয়েছে।’ অ্যালার্ম বাজতেই ভুবন ওর চিরচেনা সংলাপ দিচ্ছিল! ‘চিরচেনা’ বললাম এ কারণে, সে কারও সঙ্গে কোথাও যাওয়ার আগে ঠিক এই কথাগুলোই বলে। ওর কথা হচ্ছে, প্রয়োজন হলে সময়ের আগে প্রস্তুত থাকতে হবে বা পৌঁছাতে হবে। কিন্তু দেরি হওয়া যাবে না। মাঝে মাঝে তাই ওকে ‘আর্মি পারসন’ বলি! যাই হোক, সেখানকার সময় ৬টায় উঠে গেলাম। আধা ঘণ্টার মধ্যে দুজনে তৈরি হয়ে রুম থেকে বেরিয়েছি। হঠাৎ বারান্দার একপাশ দিয়ে বাইরে চোখ যেতেই দেখি কী সুন্দর দৃশ্য! রাতে পাহাড়ের গায়ে যে তারা দেখেছিলাম জ্বলজ্বল করছে, সেগুলো দিনের আলোয় স্পষ্ট ঘরবাড়ি। ছবিতে দেখলে হয়তো মনে হবে বস্তি। সামনে থেকে না দেখলে এর সৌন্দর্য অনুভব করা যাবে না। ঝটপট সেই দৃশ্যের ছবি তুলে নিল ভুবন।
হোটেল থেকে বের হলাম নাশতা খাব বলে। রাতে তো নিয়নের আলোয় খুব একটা বুঝিনি, সকালে বের হয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। মল রোডটা যে কত পরিষ্কার, স্বচ্ছ! রাস্তার ওপরেই যেন নির্দ্বিধায় গড়াগড়ি করা যাবে। রাস্তার একপাশ ‘ওয়ান ওয়ে’, অন্য পাশ দিয়ে কোনো যানবাহন প্রবেশ করানো যায় না। এপাশ দিয়ে সবাই আরাম করে হাঁটাহাঁটি করে। আর একধারে কিছু দূর পর পর বেঞ্চি আছে। হাঁটতে হাঁটতে একটু জিরিয়ে নেওয়া যায়। ওই পথ ধরে হেঁটে একটা রেস্তোরাঁয় ঢুকলাম। খেলাম সবজি আর লুচি। সবজি বলতে গাঢ় ঝোলের মধ্যে আলু! আলুর দম বলা চলে। কিন্তু তারা এটাকে সবজিই নাম দিয়েছে। ভুবন অবশ্য লুচি না খেয়ে রুটি খেয়েছিল। মিষ্টির চেহারাগুলো দেখে এত লোভ লাগছিল! কিন্তু যেই খেতে গিয়েছি, আর ভালো লাগল না। নাশতা পর্ব শেষ করে আবার ছুটলাম হোটেলের দিকে। হাঁটার মাঝে থেমে থেমে কিছু ছবিও তুলে নিলাম। মোড়ে একটা বিশাল লাল পান্ডার ভাস্কর্য আছে। সেটার সঙ্গে ছবি তুলতে ভুললাম না। সময় পেলে সত্যিকারের লাল পান্ডা দেখতে যেতাম গ্যাংটকের চিড়িয়াখানায়, কিন্তু সময় হয়নি।
আমরা ঠিক ৭টার সময় হোটেলের নিচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। সবাই প্রস্তুত। কিন্তু গাড়ি আসেনি। ৮টার পর গাড়ি পেয়ে রওনা হলাম বজরা ট্যাক্সিস্ট্যান্ডের উদ্দেশে। মোটামুটি পনেরো-বিশ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে। সেখানে হলো মহাবিলম্ব! কতক্ষণ যে দাঁড়িয়ে, পায়চারি করে সময় পার করেছি, আল্লাহ জানেন। কথা ছিল আগের দিন রাতেই অমরদা সব গাড়ি ঠিক করে রাখবেন, কিন্তু পারেননি।
প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর আমরা গাড়ি পেলাম। একটা বড় জিপ পেয়ে আমরা নয়জন চড়ে বসলাম সেটাতে। আমাদের দুজনকে সবাই জিজ্ঞেস করছিল কোথায় বসতে চাই। আমি বললাম, ‘আপনাদের সুবিধামতো আমাদের একটু জায়গা দিলেই হবে।’ আকাশ ভাই দুষ্টুমি করে বললেন, ‘তাহলে ছাদে বসে যান। আমরা আরাম করে যাই।’ আমি বললাম, ‘কোনো সমস্যা নাই। সেটা তো ভীষণ মজার ব্যাপার হবে!’ সবাই হো হো করে হেসে দিয়ে দুজনকে চালকের সঙ্গে সামনের সিটে বসতে দিলেন। সামনে দুইটা সিটই বলা চলে। চালকেরটা ছাড়া। আরামসে আমি আর ভুবন এঁটে যাই। সবাই গাড়িতে উঠে অপেক্ষা করছি। বাকিদের বসা হলে একসঙ্গে রওনা দেব। বড় দলটা আরও দুইটা জিপে ভাগ হয়ে উঠল। তবে ঝামেলা লেগেছিল ওই দলের দুজন ‘জেঠুমশাই’কে নিয়ে। তাঁরা দুজনে একই জায়গায় বসতে চান। অর্থাৎ, একই সিটে। এ নিয়ে তুমুল লঙ্কাকাণ্ড! গাল ফুলিয়ে, চোখ রাঙিয়ে যাঁর যাঁর পরিচয় দিচ্ছিলেন। মাঝখান দিয়ে বেচারা অমরদা হলেন তুলাধুনা। আমরা জিপের ভেতরে বসে থেকে দর্শকের মতো ওই নাটক-সিনেমা দেখছিলাম। পেছন থেকে কে যেন বলে উঠল, ‘আরে ওনারা এত বড় মানুষ হয়ে বাচ্চাদের মতো করছেন, অথচ আমাদের মিস্টার অ্যান্ড মিসেস এজাজের গাড়ির ছাদে বা পেছনে ঝুলে যেতেও আপত্তি নাই।’ সত্যিই যদি এমন পরিস্থিতি হতো, তাহলেও আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না। গাড়ির ছাদে বা পেছনে ঝুলে ঝুলেই যেতাম। যাই হোক, সিনেমাটা আধা ঘণ্টার মতো চলল। অবশেষে অমরদা গালি হজম করে হাসিমুখে সবাইকে নিয়ে রওনা দিলেন। প্রায় ১২টা বেজে গিয়েছিল তখন।
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ। ধীরে ধীরে ওপরের দিকে উঠছি, বুঝতে পারছিলাম। আর সে কী যে পাগল করা অপরূপ সৌন্দর্য! এই পথে যেতে যেতে ‘মাশাআল্লাহ’, ‘সুবহানআল্লাহ’, ‘ওয়াও’, ‘অ্যামেজিং’ শব্দগুলো আপনা-আপনি মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়। সবাই মিলে এক এক করে গান ধরলাম। আকাশ ভাইয়ের গলা ভালো। তিনি অনেক গান গাইলেন। পুরোটা পথ এই গানের আসর সঙ্গী ছিল। ভুবনের গান শুনে তো সবাই মুগ্ধ। আকাশ ভাই আমাকে বলছিলেন, ‘বাহ, আপনার স্বামীর গানের গলা তো বেশ!’ মুচকি হেসে বললাম, ‘এমনি এমনি কি আর প্রেমে পড়েছি!’ এ কথা শুনে সবাই হেসে দিলেন। এরপর এল আমাদের প্রেমকাহিনির গল্পের অনুরোধ। গানের ফাঁকে ফাঁকে সেটাও হয়ে গেল। আমার গানের গলা ভালো না। ছেড়ে গাইতে পারি না। অনেকটা নাকি সুরে গাই। তবু সবার জোর অনুরোধে গাইতে হলো। একটার বেশি গাইলাম না। কারণ আমি ওই একটা গানই একটু ছেড়ে দিয়ে গাইতে পারি, ‘তোমার ঘরে বাস করে কারা...’।
আমাদের সামনে বসার খুব ভালো একটা সুফল পাওয়া গেছে। যতটা স্পষ্ট আমরা দুজন দেখতে পাচ্ছিলাম বাইরের দৃশ্য, পেছনের লোকজন হয়তো সেটার অর্ধেক দেখেছে। তবু যা দেখেছে, তাতে চোখ ছানাবড়া না হয়ে পারেই না। পথে থেমে থেমে পাহাড়ি ঝরনা দেখাচ্ছিলেন আমাদের চালক। তাঁর নাম রবিন। নামটা শুনে তাঁকে রবিন হুড ডাকতে ইচ্ছা হলো। রবিন হুড থেকে মনে পড়ল সালমান খানের ‘চুলবুল পান্ডে ওরফে রবিন হুড পান্ডে’ চরিত্রের কথা। আমি তাই তাঁকে ‘পান্ডেজি’ বলে ডাকা শুরু করলাম। পান্ডেজি নরম মানুষ। আস্তে-ধীরে কথা বলেন। নেপালি। মানে, সিকিমের বাসিন্দা আরকি। তিনি সবগুলো ঝরনার নাম ও বর্ণনা দিলেন। সব ঝরনার নামের সাইনবোর্ড নেই আবার। সেখানে নাম লেখা থাকে সাধারণত। আবার কোনো কোনো ঝরনার নাম নেই। সেগুলো ছোটখাটো। অনেক ঝরনার নাম পান্ডেজি নিজেও জানেন না। কারণ সেগুলো নতুন। সেভেন সিস্টার্স, নাগা, ভিম নালাসহ আরও ছোট-বড় কিছু ঝরনা দেখলাম। ভিম নালা ঝরনাটার আরেকটা নাম আছে। ‘অমিতাভ বচ্চন ফলস’। এমন নাম কেন, জিজ্ঞেস করতেই পান্ডেজি বললেন, ‘উ বহুত লম্বা হ্যায়। উ অ্যাক্টর হ্যায় না, অমিতাভ বচ্চন, উসকি তারাহ।’ লম্বায় এটা ২৭৫ ফুট। এর আরেক নাম ভিমা ফলস। স্থানীয় ভাষায় ভিমা বা ভিম নালা মানে ‘রেড স্নেক’ বা লাল সাপ। তাই এর আরেক নাম ‘রেড স্নেক’। বিগত কয়েক বছর ধরে পর্যটকেরা এই ঝরনাকে আবার ‘লাচুং নর্থ সিকিম ফলস’ নামেও ডাকছে। ঝরনার পাশাপাশি মেঘের কথা না বললেই নয়। পাহাড়ের চূড়ায় তুলার মতো লেগে থাকা মেঘ দেখা যায় দূর থেকে। আর পাহাড়ের নিচে স্বচ্ছ সবুজ তিস্তার পানি বয়ে চলে। ওপরের দিকে উঠতে উঠতে মেঘের ভেতর দিয়ে গিয়েছি আমরা। গাড়ি থেকে নেমেও ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা করেছি। আসলে মেঘ নিজেই তো আমাদের জাপটে ধরে।
দুপুর থেকে পেটে উৎপাত শুরু হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু পথে টং দোকানের চা-বিস্কুট ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। শেষে বিকালের দিকে এক মুসলিম হোটেল পেলাম। পাহাড়ি রাস্তার একপাশে বেড়ার হোটেল। নিচের দিকে নেমে গেলে গ্রাম। সেখানে বেশির ভাগ মুসলমানরাই বাস করে। অনেকটা লুকিয়ে তারা গোমাংস রান্না করে খাওয়ায়। অমরদা আগে থেকে বলে রেখেছিলেন। তাই আমরা গরুর মাংস দিয়ে গরম ভাত-ডাল খেতে পারলাম। মনে হচ্ছিল অমৃত। রান্নাটাও বেশ। জম্পেশ খাওয়া দিয়ে আবার রওনা দিলাম। লাচুংয়ে পৌঁছাতে হবে। ততক্ষণে শুরু হয়ে গিয়েছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। আলবৎ মাথায় বৃষ্টির ফোঁটা পড়েছিল। এরপর বাকিটা ইতিহাস। তবে পরদিন থেকে।
সন্ধ্যা নেমে এলে গাড়ির হেডলাইটের আলো ছাড়া গতি ছিল না। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, যাচ্ছি আবার মেঘের ভেতর দিয়ে। পথ একেবারে পিচ্ছিল। ভয় পাচ্ছিলাম না একটুও। কেননা, পান্ডেজি যেভাবে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তাতে ভরসা না করে পারা যায় না। তিনি মুখে তো অভয় দিচ্ছিলেনই, কাজ দিয়েও প্রমাণ করেছেন। সিকিমের এই পাহাড়ি পথ এমনভাবে তৈরি করা যে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা খুব কম। জায়গায় জায়গায় সতর্কবার্তা লেখা আছে। আর চালকদের এতটাই মুখস্থ রাস্তা যে তারা চোখ বুজে পাড়ি দিতে পারেন।
লাচুংয়ে ঢোকার আগেও অনুমতি লাগল। সেখানে এক বিজ্ঞপ্তিতে লেখা দেখলাম উত্তরের কোথায় কোথায় যাওয়া যাবে আর কোথায় কোথায় যাওয়া যাবে না। অবশ্যই লাচুংয়ে টিক চিহ্ন দেওয়া ছিল। সেটা দেখে মনে মনে খুশি হয়ে গেলাম। যাক বাবা, আটকে দিল না তাহলে। অনুমতি নিয়ে চলতে শুরু করলাম আবার। সাড়ে ৭টার পরপর পৌঁছে গেলাম গন্তব্যে। আর্মি চেকপোস্টের কাছাকাছি ‘লাচুং রিজেন্সি’তে গিয়ে উঠলাম। এখানে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আগে থেকে করে রেখেছিলেন অমরদা। এই হোটেলে লোক মাত্র দুজন। যিনি ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন, তিনি নিজেই রান্না করেন। তাঁর সঙ্গে একজন আছেন, যিনি অতিথিদের ফরমাশ খাটেন। তাঁকে সাহায্যও করেন। আমরা যার যার রুম বেছে নিয়ে হাতমুখ ধুয়ে কাপড় বদলে নিলাম। ভাগ্যিস এখানে খাওয়া না পাওয়া যাওয়ার ভয় ছিল না।
ধীরে-সুস্থেই খাবারঘরে গেলাম। বুফে সিস্টেম করে রেখেছিলেন আমাদের রাঁধুনি। ভাত, ডাল, সবজি, রুটি, মটর পনির, সালাদ। এখানে আমিষজাতীয় কোনো রান্না হয় না। বেশ ভালোই লাগল খেতে। ভাত ছাড়া সব খেলাম অল্প করে। বড় দলটাকে আমার ভালো লাগছিল না। তারা সবকিছুতে একটা লোকদেখানো ভাব করছিল। সে যাক গে, খেয়েদেয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে অনেকে গল্প করছিলাম। এর মধ্যে হেঁশেল থেকে খবর এল, কেউ গরুর দুধ খেতে চায় কি না। তবে কিনে খেতে হবে। ভুবন খুব আগ্রহ নিয়ে দুধ আনতে গেল রান্নাঘরে। ফিরে এল একটা দুঃখ ভাব নিয়ে। ব্যাপার কী? এক গ্লাস দুধের দাম ৫০ রুপি! যদিও সে কিনে এনেছে এবং খুব কষ্ট করে গিলেছে। মনে হচ্ছিল টাকা গিলছে! সবার এক কথা, আমাদের দেশে ৭০ টাকায় লিটার আর এখানে মাত্র এক গ্লাস ৫০ রুপি! একটু বেশি হয়ে যায় না? এক গ্লাসের দাম পড়ছে তাহলে পঁয়ষট্টি টাকার মতো। গল্প-গুজব শেষ করে রুমে গেলাম ঘুমাতে। এমন সময় বাইরে হন্তদন্ত শুনলাম। পরদিন কে কোথায় যাবে সেটা নিয়ে বিস্তর ক্যাচাল লেগে গেল অমরদার সঙ্গে। কে আর লাগাবে। সেই বড় দলের পণ্ডিতেরা। অমরদার ভাষ্যমতে, জিরো পয়েন্টে গিয়ে কোনো লাভ নেই।
সময় নষ্ট না করে শুধু ইয়ামথাং ভ্যালি ঘুরে এলেই হবে। জিরো পয়েন্টে যেতে আর্মিরা ঝামেলা করতে পারে। তখন আবহাওয়াও সুবিধার ছিল না। আমাদের কোনো সমস্যা ছিল না। আমরা সব জেনে-বুঝে, অন্তর্জাল ঘেঁটে অমরদার কথায় রাজি ছিলাম। কিন্তু নাছোড়বান্দা বড় দলের লোকজন। কেউ যেতে চান, কেউ চান না। যাঁরা যেতে চান, তাঁদের কথা হলো, ‘টাকা দিচ্ছি আপনাকে, নেবেন না কেন? যাবই!’ অথচ অমরদা আগেই বলে রেখেছিলেন যে যদি অনুমতি না পাই, আবহাওয়া দখলে না থাকে কিংবা পরিস্থিতি ভিন্ন হয়, তবে আমাদের পরিকল্পনার পরিবর্তন হতে পারে। সে কথাটা আমাদের দলকে না বললেও আমরা জানতাম। সিকিম ঘুরতে গেলে এই কথাগুলো মাথায় রাখতে হয়। শেষমেশ সিদ্ধান্ত হলো যাঁরা জিরো পয়েন্টে যেতে চান, তাঁরা আলাদা যাবেন সকাল ৭টায়। আর বাকিরা নাশতা সেরে ৮টায় রওনা হবেন ইয়ামথাং ভ্যালির জন্য। জিরো পয়েন্ট ঘুরে বাকিরা সরাসরি ইয়ামথাং ভ্যালিতে চলে যাবেন। জিরো পয়েন্টে না যাওয়ার কারণ ছিল, সেখানে যা আছে তার চেয়ে কয়েক গুণ সুন্দর দৃশ্য ইয়ামথাং ভ্যালিতে আছে। শরীরের ওপর দিয়ে ধকল যাবে কি না, সে কথাও মাথা থেকে ফেলে দিলাম না। ওহ্, আরেকটা ব্যাপার, অমরদার কিন্তু জিরো পয়েন্টে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল না। কথা ছিল সাঙ্গুতে নিয়ে যাবেন। কিন্তু অনুমতি পাননি। সেখানে আমরা সবাই যেতে চেয়েছিলাম। অনুমতি পাননি বিধায় কয়েকজন জেঁকে ধরেছিলেন জিরো পয়েন্টে নিয়ে যেতে। আমাদের সাঙ্গুতে নিতে না পারায় কিন্তু তিনি পরে তাঁর সম্মানীটাও কম রেখেছিলেন।
বিতর্কের সিদ্ধান্ত জানার পর ঘুমাতে গেলাম। কিন্তু কী মুশকিল! ঘুম যে আসে না! এক ফোঁটাও না। না আমার, না ভুবনের। রাত যত বাড়ে, ঠান্ডা তার চেয়ে দ্বিগুণ হারে বাড়ে। ঘুম কী করে আসে এমন অবস্থায়! রুমে হিটার আনালাম। সেখানে আবার রুম হিটারের জন্য আলাদা খরচ করতে হয়। কিন্তু সারা রাতেও হিটার ঘরটাকে গরম করতে পারল না। এদিকে বাইরে হচ্ছে তুষারপাত। তাপমাত্রা সম্ভবত মাইনাস ৯ ছিল। একাত-ওকাত করে করে রাত পার করলাম। সব মিলিয়ে বড়জোর ঘণ্টা দেড়েক ঘুমিয়েছি; ভোরের দিকে যখন ঘরটা গরম হলো।
সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন

উত্তরের পথে আমাদের অভিযান
‘জলদি ওঠো। দেরি করা যাবে না। কেউ যেন বলতে না পারে আমাদের জন্য দেরি হয়েছে।’ অ্যালার্ম বাজতেই ভুবন ওর চিরচেনা সংলাপ দিচ্ছিল! ‘চিরচেনা’ বললাম এ কারণে, সে কারও সঙ্গে কোথাও যাওয়ার আগে ঠিক এই কথাগুলোই বলে। ওর কথা হচ্ছে, প্রয়োজন হলে সময়ের আগে প্রস্তুত থাকতে হবে বা পৌঁছাতে হবে। কিন্তু দেরি হওয়া যাবে না। মাঝে মাঝে তাই ওকে ‘আর্মি পারসন’ বলি! যাই হোক, সেখানকার সময় ৬টায় উঠে গেলাম। আধা ঘণ্টার মধ্যে দুজনে তৈরি হয়ে রুম থেকে বেরিয়েছি। হঠাৎ বারান্দার একপাশ দিয়ে বাইরে চোখ যেতেই দেখি কী সুন্দর দৃশ্য! রাতে পাহাড়ের গায়ে যে তারা দেখেছিলাম জ্বলজ্বল করছে, সেগুলো দিনের আলোয় স্পষ্ট ঘরবাড়ি। ছবিতে দেখলে হয়তো মনে হবে বস্তি। সামনে থেকে না দেখলে এর সৌন্দর্য অনুভব করা যাবে না। ঝটপট সেই দৃশ্যের ছবি তুলে নিল ভুবন।
হোটেল থেকে বের হলাম নাশতা খাব বলে। রাতে তো নিয়নের আলোয় খুব একটা বুঝিনি, সকালে বের হয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। মল রোডটা যে কত পরিষ্কার, স্বচ্ছ! রাস্তার ওপরেই যেন নির্দ্বিধায় গড়াগড়ি করা যাবে। রাস্তার একপাশ ‘ওয়ান ওয়ে’, অন্য পাশ দিয়ে কোনো যানবাহন প্রবেশ করানো যায় না। এপাশ দিয়ে সবাই আরাম করে হাঁটাহাঁটি করে। আর একধারে কিছু দূর পর পর বেঞ্চি আছে। হাঁটতে হাঁটতে একটু জিরিয়ে নেওয়া যায়। ওই পথ ধরে হেঁটে একটা রেস্তোরাঁয় ঢুকলাম। খেলাম সবজি আর লুচি। সবজি বলতে গাঢ় ঝোলের মধ্যে আলু! আলুর দম বলা চলে। কিন্তু তারা এটাকে সবজিই নাম দিয়েছে। ভুবন অবশ্য লুচি না খেয়ে রুটি খেয়েছিল। মিষ্টির চেহারাগুলো দেখে এত লোভ লাগছিল! কিন্তু যেই খেতে গিয়েছি, আর ভালো লাগল না। নাশতা পর্ব শেষ করে আবার ছুটলাম হোটেলের দিকে। হাঁটার মাঝে থেমে থেমে কিছু ছবিও তুলে নিলাম। মোড়ে একটা বিশাল লাল পান্ডার ভাস্কর্য আছে। সেটার সঙ্গে ছবি তুলতে ভুললাম না। সময় পেলে সত্যিকারের লাল পান্ডা দেখতে যেতাম গ্যাংটকের চিড়িয়াখানায়, কিন্তু সময় হয়নি।
আমরা ঠিক ৭টার সময় হোটেলের নিচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। সবাই প্রস্তুত। কিন্তু গাড়ি আসেনি। ৮টার পর গাড়ি পেয়ে রওনা হলাম বজরা ট্যাক্সিস্ট্যান্ডের উদ্দেশে। মোটামুটি পনেরো-বিশ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে। সেখানে হলো মহাবিলম্ব! কতক্ষণ যে দাঁড়িয়ে, পায়চারি করে সময় পার করেছি, আল্লাহ জানেন। কথা ছিল আগের দিন রাতেই অমরদা সব গাড়ি ঠিক করে রাখবেন, কিন্তু পারেননি।
প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর আমরা গাড়ি পেলাম। একটা বড় জিপ পেয়ে আমরা নয়জন চড়ে বসলাম সেটাতে। আমাদের দুজনকে সবাই জিজ্ঞেস করছিল কোথায় বসতে চাই। আমি বললাম, ‘আপনাদের সুবিধামতো আমাদের একটু জায়গা দিলেই হবে।’ আকাশ ভাই দুষ্টুমি করে বললেন, ‘তাহলে ছাদে বসে যান। আমরা আরাম করে যাই।’ আমি বললাম, ‘কোনো সমস্যা নাই। সেটা তো ভীষণ মজার ব্যাপার হবে!’ সবাই হো হো করে হেসে দিয়ে দুজনকে চালকের সঙ্গে সামনের সিটে বসতে দিলেন। সামনে দুইটা সিটই বলা চলে। চালকেরটা ছাড়া। আরামসে আমি আর ভুবন এঁটে যাই। সবাই গাড়িতে উঠে অপেক্ষা করছি। বাকিদের বসা হলে একসঙ্গে রওনা দেব। বড় দলটা আরও দুইটা জিপে ভাগ হয়ে উঠল। তবে ঝামেলা লেগেছিল ওই দলের দুজন ‘জেঠুমশাই’কে নিয়ে। তাঁরা দুজনে একই জায়গায় বসতে চান। অর্থাৎ, একই সিটে। এ নিয়ে তুমুল লঙ্কাকাণ্ড! গাল ফুলিয়ে, চোখ রাঙিয়ে যাঁর যাঁর পরিচয় দিচ্ছিলেন। মাঝখান দিয়ে বেচারা অমরদা হলেন তুলাধুনা। আমরা জিপের ভেতরে বসে থেকে দর্শকের মতো ওই নাটক-সিনেমা দেখছিলাম। পেছন থেকে কে যেন বলে উঠল, ‘আরে ওনারা এত বড় মানুষ হয়ে বাচ্চাদের মতো করছেন, অথচ আমাদের মিস্টার অ্যান্ড মিসেস এজাজের গাড়ির ছাদে বা পেছনে ঝুলে যেতেও আপত্তি নাই।’ সত্যিই যদি এমন পরিস্থিতি হতো, তাহলেও আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না। গাড়ির ছাদে বা পেছনে ঝুলে ঝুলেই যেতাম। যাই হোক, সিনেমাটা আধা ঘণ্টার মতো চলল। অবশেষে অমরদা গালি হজম করে হাসিমুখে সবাইকে নিয়ে রওনা দিলেন। প্রায় ১২টা বেজে গিয়েছিল তখন।
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ। ধীরে ধীরে ওপরের দিকে উঠছি, বুঝতে পারছিলাম। আর সে কী যে পাগল করা অপরূপ সৌন্দর্য! এই পথে যেতে যেতে ‘মাশাআল্লাহ’, ‘সুবহানআল্লাহ’, ‘ওয়াও’, ‘অ্যামেজিং’ শব্দগুলো আপনা-আপনি মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়। সবাই মিলে এক এক করে গান ধরলাম। আকাশ ভাইয়ের গলা ভালো। তিনি অনেক গান গাইলেন। পুরোটা পথ এই গানের আসর সঙ্গী ছিল। ভুবনের গান শুনে তো সবাই মুগ্ধ। আকাশ ভাই আমাকে বলছিলেন, ‘বাহ, আপনার স্বামীর গানের গলা তো বেশ!’ মুচকি হেসে বললাম, ‘এমনি এমনি কি আর প্রেমে পড়েছি!’ এ কথা শুনে সবাই হেসে দিলেন। এরপর এল আমাদের প্রেমকাহিনির গল্পের অনুরোধ। গানের ফাঁকে ফাঁকে সেটাও হয়ে গেল। আমার গানের গলা ভালো না। ছেড়ে গাইতে পারি না। অনেকটা নাকি সুরে গাই। তবু সবার জোর অনুরোধে গাইতে হলো। একটার বেশি গাইলাম না। কারণ আমি ওই একটা গানই একটু ছেড়ে দিয়ে গাইতে পারি, ‘তোমার ঘরে বাস করে কারা...’।
আমাদের সামনে বসার খুব ভালো একটা সুফল পাওয়া গেছে। যতটা স্পষ্ট আমরা দুজন দেখতে পাচ্ছিলাম বাইরের দৃশ্য, পেছনের লোকজন হয়তো সেটার অর্ধেক দেখেছে। তবু যা দেখেছে, তাতে চোখ ছানাবড়া না হয়ে পারেই না। পথে থেমে থেমে পাহাড়ি ঝরনা দেখাচ্ছিলেন আমাদের চালক। তাঁর নাম রবিন। নামটা শুনে তাঁকে রবিন হুড ডাকতে ইচ্ছা হলো। রবিন হুড থেকে মনে পড়ল সালমান খানের ‘চুলবুল পান্ডে ওরফে রবিন হুড পান্ডে’ চরিত্রের কথা। আমি তাই তাঁকে ‘পান্ডেজি’ বলে ডাকা শুরু করলাম। পান্ডেজি নরম মানুষ। আস্তে-ধীরে কথা বলেন। নেপালি। মানে, সিকিমের বাসিন্দা আরকি। তিনি সবগুলো ঝরনার নাম ও বর্ণনা দিলেন। সব ঝরনার নামের সাইনবোর্ড নেই আবার। সেখানে নাম লেখা থাকে সাধারণত। আবার কোনো কোনো ঝরনার নাম নেই। সেগুলো ছোটখাটো। অনেক ঝরনার নাম পান্ডেজি নিজেও জানেন না। কারণ সেগুলো নতুন। সেভেন সিস্টার্স, নাগা, ভিম নালাসহ আরও ছোট-বড় কিছু ঝরনা দেখলাম। ভিম নালা ঝরনাটার আরেকটা নাম আছে। ‘অমিতাভ বচ্চন ফলস’। এমন নাম কেন, জিজ্ঞেস করতেই পান্ডেজি বললেন, ‘উ বহুত লম্বা হ্যায়। উ অ্যাক্টর হ্যায় না, অমিতাভ বচ্চন, উসকি তারাহ।’ লম্বায় এটা ২৭৫ ফুট। এর আরেক নাম ভিমা ফলস। স্থানীয় ভাষায় ভিমা বা ভিম নালা মানে ‘রেড স্নেক’ বা লাল সাপ। তাই এর আরেক নাম ‘রেড স্নেক’। বিগত কয়েক বছর ধরে পর্যটকেরা এই ঝরনাকে আবার ‘লাচুং নর্থ সিকিম ফলস’ নামেও ডাকছে। ঝরনার পাশাপাশি মেঘের কথা না বললেই নয়। পাহাড়ের চূড়ায় তুলার মতো লেগে থাকা মেঘ দেখা যায় দূর থেকে। আর পাহাড়ের নিচে স্বচ্ছ সবুজ তিস্তার পানি বয়ে চলে। ওপরের দিকে উঠতে উঠতে মেঘের ভেতর দিয়ে গিয়েছি আমরা। গাড়ি থেকে নেমেও ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা করেছি। আসলে মেঘ নিজেই তো আমাদের জাপটে ধরে।
দুপুর থেকে পেটে উৎপাত শুরু হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু পথে টং দোকানের চা-বিস্কুট ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। শেষে বিকালের দিকে এক মুসলিম হোটেল পেলাম। পাহাড়ি রাস্তার একপাশে বেড়ার হোটেল। নিচের দিকে নেমে গেলে গ্রাম। সেখানে বেশির ভাগ মুসলমানরাই বাস করে। অনেকটা লুকিয়ে তারা গোমাংস রান্না করে খাওয়ায়। অমরদা আগে থেকে বলে রেখেছিলেন। তাই আমরা গরুর মাংস দিয়ে গরম ভাত-ডাল খেতে পারলাম। মনে হচ্ছিল অমৃত। রান্নাটাও বেশ। জম্পেশ খাওয়া দিয়ে আবার রওনা দিলাম। লাচুংয়ে পৌঁছাতে হবে। ততক্ষণে শুরু হয়ে গিয়েছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। আলবৎ মাথায় বৃষ্টির ফোঁটা পড়েছিল। এরপর বাকিটা ইতিহাস। তবে পরদিন থেকে।
সন্ধ্যা নেমে এলে গাড়ির হেডলাইটের আলো ছাড়া গতি ছিল না। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, যাচ্ছি আবার মেঘের ভেতর দিয়ে। পথ একেবারে পিচ্ছিল। ভয় পাচ্ছিলাম না একটুও। কেননা, পান্ডেজি যেভাবে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তাতে ভরসা না করে পারা যায় না। তিনি মুখে তো অভয় দিচ্ছিলেনই, কাজ দিয়েও প্রমাণ করেছেন। সিকিমের এই পাহাড়ি পথ এমনভাবে তৈরি করা যে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা খুব কম। জায়গায় জায়গায় সতর্কবার্তা লেখা আছে। আর চালকদের এতটাই মুখস্থ রাস্তা যে তারা চোখ বুজে পাড়ি দিতে পারেন।
লাচুংয়ে ঢোকার আগেও অনুমতি লাগল। সেখানে এক বিজ্ঞপ্তিতে লেখা দেখলাম উত্তরের কোথায় কোথায় যাওয়া যাবে আর কোথায় কোথায় যাওয়া যাবে না। অবশ্যই লাচুংয়ে টিক চিহ্ন দেওয়া ছিল। সেটা দেখে মনে মনে খুশি হয়ে গেলাম। যাক বাবা, আটকে দিল না তাহলে। অনুমতি নিয়ে চলতে শুরু করলাম আবার। সাড়ে ৭টার পরপর পৌঁছে গেলাম গন্তব্যে। আর্মি চেকপোস্টের কাছাকাছি ‘লাচুং রিজেন্সি’তে গিয়ে উঠলাম। এখানে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আগে থেকে করে রেখেছিলেন অমরদা। এই হোটেলে লোক মাত্র দুজন। যিনি ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন, তিনি নিজেই রান্না করেন। তাঁর সঙ্গে একজন আছেন, যিনি অতিথিদের ফরমাশ খাটেন। তাঁকে সাহায্যও করেন। আমরা যার যার রুম বেছে নিয়ে হাতমুখ ধুয়ে কাপড় বদলে নিলাম। ভাগ্যিস এখানে খাওয়া না পাওয়া যাওয়ার ভয় ছিল না।
ধীরে-সুস্থেই খাবারঘরে গেলাম। বুফে সিস্টেম করে রেখেছিলেন আমাদের রাঁধুনি। ভাত, ডাল, সবজি, রুটি, মটর পনির, সালাদ। এখানে আমিষজাতীয় কোনো রান্না হয় না। বেশ ভালোই লাগল খেতে। ভাত ছাড়া সব খেলাম অল্প করে। বড় দলটাকে আমার ভালো লাগছিল না। তারা সবকিছুতে একটা লোকদেখানো ভাব করছিল। সে যাক গে, খেয়েদেয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে অনেকে গল্প করছিলাম। এর মধ্যে হেঁশেল থেকে খবর এল, কেউ গরুর দুধ খেতে চায় কি না। তবে কিনে খেতে হবে। ভুবন খুব আগ্রহ নিয়ে দুধ আনতে গেল রান্নাঘরে। ফিরে এল একটা দুঃখ ভাব নিয়ে। ব্যাপার কী? এক গ্লাস দুধের দাম ৫০ রুপি! যদিও সে কিনে এনেছে এবং খুব কষ্ট করে গিলেছে। মনে হচ্ছিল টাকা গিলছে! সবার এক কথা, আমাদের দেশে ৭০ টাকায় লিটার আর এখানে মাত্র এক গ্লাস ৫০ রুপি! একটু বেশি হয়ে যায় না? এক গ্লাসের দাম পড়ছে তাহলে পঁয়ষট্টি টাকার মতো। গল্প-গুজব শেষ করে রুমে গেলাম ঘুমাতে। এমন সময় বাইরে হন্তদন্ত শুনলাম। পরদিন কে কোথায় যাবে সেটা নিয়ে বিস্তর ক্যাচাল লেগে গেল অমরদার সঙ্গে। কে আর লাগাবে। সেই বড় দলের পণ্ডিতেরা। অমরদার ভাষ্যমতে, জিরো পয়েন্টে গিয়ে কোনো লাভ নেই।
সময় নষ্ট না করে শুধু ইয়ামথাং ভ্যালি ঘুরে এলেই হবে। জিরো পয়েন্টে যেতে আর্মিরা ঝামেলা করতে পারে। তখন আবহাওয়াও সুবিধার ছিল না। আমাদের কোনো সমস্যা ছিল না। আমরা সব জেনে-বুঝে, অন্তর্জাল ঘেঁটে অমরদার কথায় রাজি ছিলাম। কিন্তু নাছোড়বান্দা বড় দলের লোকজন। কেউ যেতে চান, কেউ চান না। যাঁরা যেতে চান, তাঁদের কথা হলো, ‘টাকা দিচ্ছি আপনাকে, নেবেন না কেন? যাবই!’ অথচ অমরদা আগেই বলে রেখেছিলেন যে যদি অনুমতি না পাই, আবহাওয়া দখলে না থাকে কিংবা পরিস্থিতি ভিন্ন হয়, তবে আমাদের পরিকল্পনার পরিবর্তন হতে পারে। সে কথাটা আমাদের দলকে না বললেও আমরা জানতাম। সিকিম ঘুরতে গেলে এই কথাগুলো মাথায় রাখতে হয়। শেষমেশ সিদ্ধান্ত হলো যাঁরা জিরো পয়েন্টে যেতে চান, তাঁরা আলাদা যাবেন সকাল ৭টায়। আর বাকিরা নাশতা সেরে ৮টায় রওনা হবেন ইয়ামথাং ভ্যালির জন্য। জিরো পয়েন্ট ঘুরে বাকিরা সরাসরি ইয়ামথাং ভ্যালিতে চলে যাবেন। জিরো পয়েন্টে না যাওয়ার কারণ ছিল, সেখানে যা আছে তার চেয়ে কয়েক গুণ সুন্দর দৃশ্য ইয়ামথাং ভ্যালিতে আছে। শরীরের ওপর দিয়ে ধকল যাবে কি না, সে কথাও মাথা থেকে ফেলে দিলাম না। ওহ্, আরেকটা ব্যাপার, অমরদার কিন্তু জিরো পয়েন্টে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল না। কথা ছিল সাঙ্গুতে নিয়ে যাবেন। কিন্তু অনুমতি পাননি। সেখানে আমরা সবাই যেতে চেয়েছিলাম। অনুমতি পাননি বিধায় কয়েকজন জেঁকে ধরেছিলেন জিরো পয়েন্টে নিয়ে যেতে। আমাদের সাঙ্গুতে নিতে না পারায় কিন্তু তিনি পরে তাঁর সম্মানীটাও কম রেখেছিলেন।
বিতর্কের সিদ্ধান্ত জানার পর ঘুমাতে গেলাম। কিন্তু কী মুশকিল! ঘুম যে আসে না! এক ফোঁটাও না। না আমার, না ভুবনের। রাত যত বাড়ে, ঠান্ডা তার চেয়ে দ্বিগুণ হারে বাড়ে। ঘুম কী করে আসে এমন অবস্থায়! রুমে হিটার আনালাম। সেখানে আবার রুম হিটারের জন্য আলাদা খরচ করতে হয়। কিন্তু সারা রাতেও হিটার ঘরটাকে গরম করতে পারল না। এদিকে বাইরে হচ্ছে তুষারপাত। তাপমাত্রা সম্ভবত মাইনাস ৯ ছিল। একাত-ওকাত করে করে রাত পার করলাম। সব মিলিয়ে বড়জোর ঘণ্টা দেড়েক ঘুমিয়েছি; ভোরের দিকে যখন ঘরটা গরম হলো।

উত্তরের পথে আমাদের অভিযান
‘জলদি ওঠো। দেরি করা যাবে না। কেউ যেন বলতে না পারে আমাদের জন্য দেরি হয়েছে।’ অ্যালার্ম বাজতেই ভুবন ওর চিরচেনা সংলাপ দিচ্ছিল! ‘চিরচেনা’ বললাম এ কারণে, সে কারও সঙ্গে কোথাও যাওয়ার আগে ঠিক এই কথাগুলোই বলে। ওর কথা হচ্ছে, প্রয়োজন হলে সময়ের আগে প্রস্তুত থাকতে হবে বা পৌঁছাতে হবে। কিন্তু দেরি হওয়া যাবে না। মাঝে মাঝে তাই ওকে ‘আর্মি পারসন’ বলি! যাই হোক, সেখানকার সময় ৬টায় উঠে গেলাম। আধা ঘণ্টার মধ্যে দুজনে তৈরি হয়ে রুম থেকে বেরিয়েছি। হঠাৎ বারান্দার একপাশ দিয়ে বাইরে চোখ যেতেই দেখি কী সুন্দর দৃশ্য! রাতে পাহাড়ের গায়ে যে তারা দেখেছিলাম জ্বলজ্বল করছে, সেগুলো দিনের আলোয় স্পষ্ট ঘরবাড়ি। ছবিতে দেখলে হয়তো মনে হবে বস্তি। সামনে থেকে না দেখলে এর সৌন্দর্য অনুভব করা যাবে না। ঝটপট সেই দৃশ্যের ছবি তুলে নিল ভুবন।
হোটেল থেকে বের হলাম নাশতা খাব বলে। রাতে তো নিয়নের আলোয় খুব একটা বুঝিনি, সকালে বের হয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। মল রোডটা যে কত পরিষ্কার, স্বচ্ছ! রাস্তার ওপরেই যেন নির্দ্বিধায় গড়াগড়ি করা যাবে। রাস্তার একপাশ ‘ওয়ান ওয়ে’, অন্য পাশ দিয়ে কোনো যানবাহন প্রবেশ করানো যায় না। এপাশ দিয়ে সবাই আরাম করে হাঁটাহাঁটি করে। আর একধারে কিছু দূর পর পর বেঞ্চি আছে। হাঁটতে হাঁটতে একটু জিরিয়ে নেওয়া যায়। ওই পথ ধরে হেঁটে একটা রেস্তোরাঁয় ঢুকলাম। খেলাম সবজি আর লুচি। সবজি বলতে গাঢ় ঝোলের মধ্যে আলু! আলুর দম বলা চলে। কিন্তু তারা এটাকে সবজিই নাম দিয়েছে। ভুবন অবশ্য লুচি না খেয়ে রুটি খেয়েছিল। মিষ্টির চেহারাগুলো দেখে এত লোভ লাগছিল! কিন্তু যেই খেতে গিয়েছি, আর ভালো লাগল না। নাশতা পর্ব শেষ করে আবার ছুটলাম হোটেলের দিকে। হাঁটার মাঝে থেমে থেমে কিছু ছবিও তুলে নিলাম। মোড়ে একটা বিশাল লাল পান্ডার ভাস্কর্য আছে। সেটার সঙ্গে ছবি তুলতে ভুললাম না। সময় পেলে সত্যিকারের লাল পান্ডা দেখতে যেতাম গ্যাংটকের চিড়িয়াখানায়, কিন্তু সময় হয়নি।
আমরা ঠিক ৭টার সময় হোটেলের নিচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। সবাই প্রস্তুত। কিন্তু গাড়ি আসেনি। ৮টার পর গাড়ি পেয়ে রওনা হলাম বজরা ট্যাক্সিস্ট্যান্ডের উদ্দেশে। মোটামুটি পনেরো-বিশ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে। সেখানে হলো মহাবিলম্ব! কতক্ষণ যে দাঁড়িয়ে, পায়চারি করে সময় পার করেছি, আল্লাহ জানেন। কথা ছিল আগের দিন রাতেই অমরদা সব গাড়ি ঠিক করে রাখবেন, কিন্তু পারেননি।
প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর আমরা গাড়ি পেলাম। একটা বড় জিপ পেয়ে আমরা নয়জন চড়ে বসলাম সেটাতে। আমাদের দুজনকে সবাই জিজ্ঞেস করছিল কোথায় বসতে চাই। আমি বললাম, ‘আপনাদের সুবিধামতো আমাদের একটু জায়গা দিলেই হবে।’ আকাশ ভাই দুষ্টুমি করে বললেন, ‘তাহলে ছাদে বসে যান। আমরা আরাম করে যাই।’ আমি বললাম, ‘কোনো সমস্যা নাই। সেটা তো ভীষণ মজার ব্যাপার হবে!’ সবাই হো হো করে হেসে দিয়ে দুজনকে চালকের সঙ্গে সামনের সিটে বসতে দিলেন। সামনে দুইটা সিটই বলা চলে। চালকেরটা ছাড়া। আরামসে আমি আর ভুবন এঁটে যাই। সবাই গাড়িতে উঠে অপেক্ষা করছি। বাকিদের বসা হলে একসঙ্গে রওনা দেব। বড় দলটা আরও দুইটা জিপে ভাগ হয়ে উঠল। তবে ঝামেলা লেগেছিল ওই দলের দুজন ‘জেঠুমশাই’কে নিয়ে। তাঁরা দুজনে একই জায়গায় বসতে চান। অর্থাৎ, একই সিটে। এ নিয়ে তুমুল লঙ্কাকাণ্ড! গাল ফুলিয়ে, চোখ রাঙিয়ে যাঁর যাঁর পরিচয় দিচ্ছিলেন। মাঝখান দিয়ে বেচারা অমরদা হলেন তুলাধুনা। আমরা জিপের ভেতরে বসে থেকে দর্শকের মতো ওই নাটক-সিনেমা দেখছিলাম। পেছন থেকে কে যেন বলে উঠল, ‘আরে ওনারা এত বড় মানুষ হয়ে বাচ্চাদের মতো করছেন, অথচ আমাদের মিস্টার অ্যান্ড মিসেস এজাজের গাড়ির ছাদে বা পেছনে ঝুলে যেতেও আপত্তি নাই।’ সত্যিই যদি এমন পরিস্থিতি হতো, তাহলেও আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না। গাড়ির ছাদে বা পেছনে ঝুলে ঝুলেই যেতাম। যাই হোক, সিনেমাটা আধা ঘণ্টার মতো চলল। অবশেষে অমরদা গালি হজম করে হাসিমুখে সবাইকে নিয়ে রওনা দিলেন। প্রায় ১২টা বেজে গিয়েছিল তখন।
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ। ধীরে ধীরে ওপরের দিকে উঠছি, বুঝতে পারছিলাম। আর সে কী যে পাগল করা অপরূপ সৌন্দর্য! এই পথে যেতে যেতে ‘মাশাআল্লাহ’, ‘সুবহানআল্লাহ’, ‘ওয়াও’, ‘অ্যামেজিং’ শব্দগুলো আপনা-আপনি মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়। সবাই মিলে এক এক করে গান ধরলাম। আকাশ ভাইয়ের গলা ভালো। তিনি অনেক গান গাইলেন। পুরোটা পথ এই গানের আসর সঙ্গী ছিল। ভুবনের গান শুনে তো সবাই মুগ্ধ। আকাশ ভাই আমাকে বলছিলেন, ‘বাহ, আপনার স্বামীর গানের গলা তো বেশ!’ মুচকি হেসে বললাম, ‘এমনি এমনি কি আর প্রেমে পড়েছি!’ এ কথা শুনে সবাই হেসে দিলেন। এরপর এল আমাদের প্রেমকাহিনির গল্পের অনুরোধ। গানের ফাঁকে ফাঁকে সেটাও হয়ে গেল। আমার গানের গলা ভালো না। ছেড়ে গাইতে পারি না। অনেকটা নাকি সুরে গাই। তবু সবার জোর অনুরোধে গাইতে হলো। একটার বেশি গাইলাম না। কারণ আমি ওই একটা গানই একটু ছেড়ে দিয়ে গাইতে পারি, ‘তোমার ঘরে বাস করে কারা...’।
আমাদের সামনে বসার খুব ভালো একটা সুফল পাওয়া গেছে। যতটা স্পষ্ট আমরা দুজন দেখতে পাচ্ছিলাম বাইরের দৃশ্য, পেছনের লোকজন হয়তো সেটার অর্ধেক দেখেছে। তবু যা দেখেছে, তাতে চোখ ছানাবড়া না হয়ে পারেই না। পথে থেমে থেমে পাহাড়ি ঝরনা দেখাচ্ছিলেন আমাদের চালক। তাঁর নাম রবিন। নামটা শুনে তাঁকে রবিন হুড ডাকতে ইচ্ছা হলো। রবিন হুড থেকে মনে পড়ল সালমান খানের ‘চুলবুল পান্ডে ওরফে রবিন হুড পান্ডে’ চরিত্রের কথা। আমি তাই তাঁকে ‘পান্ডেজি’ বলে ডাকা শুরু করলাম। পান্ডেজি নরম মানুষ। আস্তে-ধীরে কথা বলেন। নেপালি। মানে, সিকিমের বাসিন্দা আরকি। তিনি সবগুলো ঝরনার নাম ও বর্ণনা দিলেন। সব ঝরনার নামের সাইনবোর্ড নেই আবার। সেখানে নাম লেখা থাকে সাধারণত। আবার কোনো কোনো ঝরনার নাম নেই। সেগুলো ছোটখাটো। অনেক ঝরনার নাম পান্ডেজি নিজেও জানেন না। কারণ সেগুলো নতুন। সেভেন সিস্টার্স, নাগা, ভিম নালাসহ আরও ছোট-বড় কিছু ঝরনা দেখলাম। ভিম নালা ঝরনাটার আরেকটা নাম আছে। ‘অমিতাভ বচ্চন ফলস’। এমন নাম কেন, জিজ্ঞেস করতেই পান্ডেজি বললেন, ‘উ বহুত লম্বা হ্যায়। উ অ্যাক্টর হ্যায় না, অমিতাভ বচ্চন, উসকি তারাহ।’ লম্বায় এটা ২৭৫ ফুট। এর আরেক নাম ভিমা ফলস। স্থানীয় ভাষায় ভিমা বা ভিম নালা মানে ‘রেড স্নেক’ বা লাল সাপ। তাই এর আরেক নাম ‘রেড স্নেক’। বিগত কয়েক বছর ধরে পর্যটকেরা এই ঝরনাকে আবার ‘লাচুং নর্থ সিকিম ফলস’ নামেও ডাকছে। ঝরনার পাশাপাশি মেঘের কথা না বললেই নয়। পাহাড়ের চূড়ায় তুলার মতো লেগে থাকা মেঘ দেখা যায় দূর থেকে। আর পাহাড়ের নিচে স্বচ্ছ সবুজ তিস্তার পানি বয়ে চলে। ওপরের দিকে উঠতে উঠতে মেঘের ভেতর দিয়ে গিয়েছি আমরা। গাড়ি থেকে নেমেও ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা করেছি। আসলে মেঘ নিজেই তো আমাদের জাপটে ধরে।
দুপুর থেকে পেটে উৎপাত শুরু হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু পথে টং দোকানের চা-বিস্কুট ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। শেষে বিকালের দিকে এক মুসলিম হোটেল পেলাম। পাহাড়ি রাস্তার একপাশে বেড়ার হোটেল। নিচের দিকে নেমে গেলে গ্রাম। সেখানে বেশির ভাগ মুসলমানরাই বাস করে। অনেকটা লুকিয়ে তারা গোমাংস রান্না করে খাওয়ায়। অমরদা আগে থেকে বলে রেখেছিলেন। তাই আমরা গরুর মাংস দিয়ে গরম ভাত-ডাল খেতে পারলাম। মনে হচ্ছিল অমৃত। রান্নাটাও বেশ। জম্পেশ খাওয়া দিয়ে আবার রওনা দিলাম। লাচুংয়ে পৌঁছাতে হবে। ততক্ষণে শুরু হয়ে গিয়েছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। আলবৎ মাথায় বৃষ্টির ফোঁটা পড়েছিল। এরপর বাকিটা ইতিহাস। তবে পরদিন থেকে।
সন্ধ্যা নেমে এলে গাড়ির হেডলাইটের আলো ছাড়া গতি ছিল না। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, যাচ্ছি আবার মেঘের ভেতর দিয়ে। পথ একেবারে পিচ্ছিল। ভয় পাচ্ছিলাম না একটুও। কেননা, পান্ডেজি যেভাবে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তাতে ভরসা না করে পারা যায় না। তিনি মুখে তো অভয় দিচ্ছিলেনই, কাজ দিয়েও প্রমাণ করেছেন। সিকিমের এই পাহাড়ি পথ এমনভাবে তৈরি করা যে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা খুব কম। জায়গায় জায়গায় সতর্কবার্তা লেখা আছে। আর চালকদের এতটাই মুখস্থ রাস্তা যে তারা চোখ বুজে পাড়ি দিতে পারেন।
লাচুংয়ে ঢোকার আগেও অনুমতি লাগল। সেখানে এক বিজ্ঞপ্তিতে লেখা দেখলাম উত্তরের কোথায় কোথায় যাওয়া যাবে আর কোথায় কোথায় যাওয়া যাবে না। অবশ্যই লাচুংয়ে টিক চিহ্ন দেওয়া ছিল। সেটা দেখে মনে মনে খুশি হয়ে গেলাম। যাক বাবা, আটকে দিল না তাহলে। অনুমতি নিয়ে চলতে শুরু করলাম আবার। সাড়ে ৭টার পরপর পৌঁছে গেলাম গন্তব্যে। আর্মি চেকপোস্টের কাছাকাছি ‘লাচুং রিজেন্সি’তে গিয়ে উঠলাম। এখানে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আগে থেকে করে রেখেছিলেন অমরদা। এই হোটেলে লোক মাত্র দুজন। যিনি ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন, তিনি নিজেই রান্না করেন। তাঁর সঙ্গে একজন আছেন, যিনি অতিথিদের ফরমাশ খাটেন। তাঁকে সাহায্যও করেন। আমরা যার যার রুম বেছে নিয়ে হাতমুখ ধুয়ে কাপড় বদলে নিলাম। ভাগ্যিস এখানে খাওয়া না পাওয়া যাওয়ার ভয় ছিল না।
ধীরে-সুস্থেই খাবারঘরে গেলাম। বুফে সিস্টেম করে রেখেছিলেন আমাদের রাঁধুনি। ভাত, ডাল, সবজি, রুটি, মটর পনির, সালাদ। এখানে আমিষজাতীয় কোনো রান্না হয় না। বেশ ভালোই লাগল খেতে। ভাত ছাড়া সব খেলাম অল্প করে। বড় দলটাকে আমার ভালো লাগছিল না। তারা সবকিছুতে একটা লোকদেখানো ভাব করছিল। সে যাক গে, খেয়েদেয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে অনেকে গল্প করছিলাম। এর মধ্যে হেঁশেল থেকে খবর এল, কেউ গরুর দুধ খেতে চায় কি না। তবে কিনে খেতে হবে। ভুবন খুব আগ্রহ নিয়ে দুধ আনতে গেল রান্নাঘরে। ফিরে এল একটা দুঃখ ভাব নিয়ে। ব্যাপার কী? এক গ্লাস দুধের দাম ৫০ রুপি! যদিও সে কিনে এনেছে এবং খুব কষ্ট করে গিলেছে। মনে হচ্ছিল টাকা গিলছে! সবার এক কথা, আমাদের দেশে ৭০ টাকায় লিটার আর এখানে মাত্র এক গ্লাস ৫০ রুপি! একটু বেশি হয়ে যায় না? এক গ্লাসের দাম পড়ছে তাহলে পঁয়ষট্টি টাকার মতো। গল্প-গুজব শেষ করে রুমে গেলাম ঘুমাতে। এমন সময় বাইরে হন্তদন্ত শুনলাম। পরদিন কে কোথায় যাবে সেটা নিয়ে বিস্তর ক্যাচাল লেগে গেল অমরদার সঙ্গে। কে আর লাগাবে। সেই বড় দলের পণ্ডিতেরা। অমরদার ভাষ্যমতে, জিরো পয়েন্টে গিয়ে কোনো লাভ নেই।
সময় নষ্ট না করে শুধু ইয়ামথাং ভ্যালি ঘুরে এলেই হবে। জিরো পয়েন্টে যেতে আর্মিরা ঝামেলা করতে পারে। তখন আবহাওয়াও সুবিধার ছিল না। আমাদের কোনো সমস্যা ছিল না। আমরা সব জেনে-বুঝে, অন্তর্জাল ঘেঁটে অমরদার কথায় রাজি ছিলাম। কিন্তু নাছোড়বান্দা বড় দলের লোকজন। কেউ যেতে চান, কেউ চান না। যাঁরা যেতে চান, তাঁদের কথা হলো, ‘টাকা দিচ্ছি আপনাকে, নেবেন না কেন? যাবই!’ অথচ অমরদা আগেই বলে রেখেছিলেন যে যদি অনুমতি না পাই, আবহাওয়া দখলে না থাকে কিংবা পরিস্থিতি ভিন্ন হয়, তবে আমাদের পরিকল্পনার পরিবর্তন হতে পারে। সে কথাটা আমাদের দলকে না বললেও আমরা জানতাম। সিকিম ঘুরতে গেলে এই কথাগুলো মাথায় রাখতে হয়। শেষমেশ সিদ্ধান্ত হলো যাঁরা জিরো পয়েন্টে যেতে চান, তাঁরা আলাদা যাবেন সকাল ৭টায়। আর বাকিরা নাশতা সেরে ৮টায় রওনা হবেন ইয়ামথাং ভ্যালির জন্য। জিরো পয়েন্ট ঘুরে বাকিরা সরাসরি ইয়ামথাং ভ্যালিতে চলে যাবেন। জিরো পয়েন্টে না যাওয়ার কারণ ছিল, সেখানে যা আছে তার চেয়ে কয়েক গুণ সুন্দর দৃশ্য ইয়ামথাং ভ্যালিতে আছে। শরীরের ওপর দিয়ে ধকল যাবে কি না, সে কথাও মাথা থেকে ফেলে দিলাম না। ওহ্, আরেকটা ব্যাপার, অমরদার কিন্তু জিরো পয়েন্টে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল না। কথা ছিল সাঙ্গুতে নিয়ে যাবেন। কিন্তু অনুমতি পাননি। সেখানে আমরা সবাই যেতে চেয়েছিলাম। অনুমতি পাননি বিধায় কয়েকজন জেঁকে ধরেছিলেন জিরো পয়েন্টে নিয়ে যেতে। আমাদের সাঙ্গুতে নিতে না পারায় কিন্তু তিনি পরে তাঁর সম্মানীটাও কম রেখেছিলেন।
বিতর্কের সিদ্ধান্ত জানার পর ঘুমাতে গেলাম। কিন্তু কী মুশকিল! ঘুম যে আসে না! এক ফোঁটাও না। না আমার, না ভুবনের। রাত যত বাড়ে, ঠান্ডা তার চেয়ে দ্বিগুণ হারে বাড়ে। ঘুম কী করে আসে এমন অবস্থায়! রুমে হিটার আনালাম। সেখানে আবার রুম হিটারের জন্য আলাদা খরচ করতে হয়। কিন্তু সারা রাতেও হিটার ঘরটাকে গরম করতে পারল না। এদিকে বাইরে হচ্ছে তুষারপাত। তাপমাত্রা সম্ভবত মাইনাস ৯ ছিল। একাত-ওকাত করে করে রাত পার করলাম। সব মিলিয়ে বড়জোর ঘণ্টা দেড়েক ঘুমিয়েছি; ভোরের দিকে যখন ঘরটা গরম হলো।

ডিসেম্বর মানেই অন্য রকম অনুভূতি। একদিকে বছর শেষের সব হিসাবনিকাশ, নতুন বছরের আগমনী বার্তা; অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দ আর পিঠা-পার্বণের আমেজ। সব মিলিয়ে এই মাসটি যেন সত্যিই বিশেষ। ডিসেম্বরে, বছরের শেষ সময়গুলো কীভাবে একটু অর্থবহ করা যায়, তা জেনে নিন।
৪ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে পাতলা ত্বকের মানুষদের ত্বক দ্রুত পুড়ে যায়। ফলে গায়ের রং তামাটে হয়ে যায়। তাই এ সময় নিয়মিত যাঁরা রোদ পোহাচ্ছেন, তাঁদের ত্বক যদি এ রকম রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে যায়, তাঁরা গোসলের সময় কিছু ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তাতে সুবিধা পাবেন।...
৬ ঘণ্টা আগে
আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা...
৮ ঘণ্টা আগেফারিয়া রহমান খান

ডিসেম্বর মানেই অন্য রকম অনুভূতি। একদিকে বছর শেষের সব হিসাবনিকাশ, নতুন বছরের আগমনী বার্তা; অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দ আর পিঠা-পার্বণের আমেজ। সব মিলিয়ে এই মাসটি যেন সত্যিই বিশেষ। ডিসেম্বরে, বছরের শেষ সময়গুলো কীভাবে একটু অর্থবহ করা যায়, তা জেনে নিন।
নতুন বছরে আপনি কী কী করতে চান, তা এখনই ভেবে ফেলুন। একটু স্থির হয়ে বসে খাতা-কলমে লিখে আপনার নতুন বছরের উদ্দেশ্য স্থির করে নিন। লিখে রাখলে তা বিভিন্নভাবে উদ্দেশ্য পূরণে সহায়তা করবে।
পুরোনো বছরকে সুন্দর করে বিদায় দিতেই হোক বা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে—ঘর সাজান সুন্দর করে। কিছু ওয়ার্ম লাইট ও জানালা বা টেবিলে কিছু গাছ রেখে ঘরে দিন একটু উষ্ণতার ছোঁয়া। সঙ্গে পুরোনো অপ্রয়োজনীয় জিনিস অন্য কাউকে দিয়ে দিন। দেখবেন বাসায় একটা শান্ত ও পরিচ্ছন্ন ভাব আসবে।
পিঠা সংস্কৃতির অংশ। তাই ঐতিহ্য ধরে রাখাতে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে সময় করে একদিন বিভিন্ন রকম পিঠা বানাতে পারেন। বড় আয়োজন নয়, বরং চা-বিস্কুট আর পিঠা নিয়ে একটি ঘরোয়া আড্ডা জমান। পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করুন। দেখবেন, মন থেকে অনেকখানি ভার নেমে গেছে।
ডিসেম্বরের আবহাওয়া বই পড়ার জন্য উপযুক্ত। ছুটির দিনে দুপুরগুলো কাজে লাগান। গায়ে হালকা কাঁথা জড়িয়ে একটা অলস দুপুর বই পড়ে দেখুন। অথবা একটা ভালো উপন্যাস নিয়ে শীতের মিষ্টি রোদে বসে পড়ুন। সঙ্গে রাখুন এক কাপ চা। দেখবেন, খুব ভালো লাগবে।
বছরের এই শেষ সময় এসেও নিজের জন্য সময় বের করুন। নিজের যত্ন নিন, নিজেকে নিজেই কিছু উপহার দিন। দেখবেন নিজেকে মূল্যবান ও যোগ্য মনে হবে। তা ছাড়া কাউকে কিছু উপহার দিতে চাইলেও দিতে পারেন। সেটাও কিন্তু নিজেকে সময় দেওয়ার কাজ করবে।

শীতকালে অনেক জায়গায় পিঠা মেলা বা হস্তশিল্প মেলা বসে। এই মেলাগুলোতে ঘুরে বেড়ান। উৎসবের কেনাকাটায় বড় শপিং মল এড়িয়ে স্থানীয় কারিগরদের কাছ থেকে কিছু কিনুন এবং শীতের খাবার চেখে দেখুন। এতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা উপকৃত হবেন। মনে রাখবেন, উদ্যোক্তাদের সহায়তা না করলে তারা বড় হতে পারবে না। তাদের বড় করতে সহায়তা করাও একটা উদ্যোগ বটে।
শীতকালে অসহায় মানুষদের কষ্ট কমাতে গরম কাপড় ও কম্বল দান করুন। ছোট ছোট কাজ করে অন্যের মুখে হাসি ফোটান; যেমন কাউকে চা বা কফি খাওয়ান, বাসে বয়স্ক কারও জন্য আসন ছেড়ে দিন, কাউকে রাস্তা পার করিয়ে দিন। ছোট একটি মানবিক কাজ আপনার জীবনকে অর্থবহ করে তুলবে।

পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বসে অথবা একা বসে এই বছর কী কী ভালো ও খারাপ হয়েছে, তা নিয়ে ভাবুন। কী কী ভুল করেছেন, সেগুলো ভেবে দেখুন। সামনের বছরগুলোতে এসব ভুল যেন না হয়, সে জন্য সতর্ক হোন। এই বছর যা কিছু ইতিবাচক হয়েছে, সেগুলো একটি ডায়েরিতে লিখে সৃষ্টিকর্তাকে কৃতজ্ঞতা জানান। কারও সঙ্গে মনোমালিন্য হয়ে থাকলে তা মিটিয়ে নিন। অযথা মনে রাগ পুষে রেখে নিজেকে কষ্ট দেবেন না।
পুরোনো বন্ধুরা আসলে মানুষের ব্রিদিং স্পেস বা নিশ্বাস ফেলার জায়গা। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সবার সঙ্গে সম্ভব না হলেও যাঁদের বা যাঁর সঙ্গে সম্ভব, তাঁদের বা তাঁর সঙ্গে দেখা করে কিছু সময় কাটিয়ে আসুন। মন খুলে হাসুন। স্মৃতিচারণা করুন। অন্তত এক বেলা একসঙ্গে বসে খেয়ে ফেলুন মনের মতো কোনো খাবার। দেখবেন নতুন বছর অন্য রকমভাবে শুরু হবে।
সূত্র: ক্যামিলিস্টাইল ও অন্যান্য

ডিসেম্বর মানেই অন্য রকম অনুভূতি। একদিকে বছর শেষের সব হিসাবনিকাশ, নতুন বছরের আগমনী বার্তা; অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দ আর পিঠা-পার্বণের আমেজ। সব মিলিয়ে এই মাসটি যেন সত্যিই বিশেষ। ডিসেম্বরে, বছরের শেষ সময়গুলো কীভাবে একটু অর্থবহ করা যায়, তা জেনে নিন।
নতুন বছরে আপনি কী কী করতে চান, তা এখনই ভেবে ফেলুন। একটু স্থির হয়ে বসে খাতা-কলমে লিখে আপনার নতুন বছরের উদ্দেশ্য স্থির করে নিন। লিখে রাখলে তা বিভিন্নভাবে উদ্দেশ্য পূরণে সহায়তা করবে।
পুরোনো বছরকে সুন্দর করে বিদায় দিতেই হোক বা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে—ঘর সাজান সুন্দর করে। কিছু ওয়ার্ম লাইট ও জানালা বা টেবিলে কিছু গাছ রেখে ঘরে দিন একটু উষ্ণতার ছোঁয়া। সঙ্গে পুরোনো অপ্রয়োজনীয় জিনিস অন্য কাউকে দিয়ে দিন। দেখবেন বাসায় একটা শান্ত ও পরিচ্ছন্ন ভাব আসবে।
পিঠা সংস্কৃতির অংশ। তাই ঐতিহ্য ধরে রাখাতে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে সময় করে একদিন বিভিন্ন রকম পিঠা বানাতে পারেন। বড় আয়োজন নয়, বরং চা-বিস্কুট আর পিঠা নিয়ে একটি ঘরোয়া আড্ডা জমান। পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করুন। দেখবেন, মন থেকে অনেকখানি ভার নেমে গেছে।
ডিসেম্বরের আবহাওয়া বই পড়ার জন্য উপযুক্ত। ছুটির দিনে দুপুরগুলো কাজে লাগান। গায়ে হালকা কাঁথা জড়িয়ে একটা অলস দুপুর বই পড়ে দেখুন। অথবা একটা ভালো উপন্যাস নিয়ে শীতের মিষ্টি রোদে বসে পড়ুন। সঙ্গে রাখুন এক কাপ চা। দেখবেন, খুব ভালো লাগবে।
বছরের এই শেষ সময় এসেও নিজের জন্য সময় বের করুন। নিজের যত্ন নিন, নিজেকে নিজেই কিছু উপহার দিন। দেখবেন নিজেকে মূল্যবান ও যোগ্য মনে হবে। তা ছাড়া কাউকে কিছু উপহার দিতে চাইলেও দিতে পারেন। সেটাও কিন্তু নিজেকে সময় দেওয়ার কাজ করবে।

শীতকালে অনেক জায়গায় পিঠা মেলা বা হস্তশিল্প মেলা বসে। এই মেলাগুলোতে ঘুরে বেড়ান। উৎসবের কেনাকাটায় বড় শপিং মল এড়িয়ে স্থানীয় কারিগরদের কাছ থেকে কিছু কিনুন এবং শীতের খাবার চেখে দেখুন। এতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা উপকৃত হবেন। মনে রাখবেন, উদ্যোক্তাদের সহায়তা না করলে তারা বড় হতে পারবে না। তাদের বড় করতে সহায়তা করাও একটা উদ্যোগ বটে।
শীতকালে অসহায় মানুষদের কষ্ট কমাতে গরম কাপড় ও কম্বল দান করুন। ছোট ছোট কাজ করে অন্যের মুখে হাসি ফোটান; যেমন কাউকে চা বা কফি খাওয়ান, বাসে বয়স্ক কারও জন্য আসন ছেড়ে দিন, কাউকে রাস্তা পার করিয়ে দিন। ছোট একটি মানবিক কাজ আপনার জীবনকে অর্থবহ করে তুলবে।

পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বসে অথবা একা বসে এই বছর কী কী ভালো ও খারাপ হয়েছে, তা নিয়ে ভাবুন। কী কী ভুল করেছেন, সেগুলো ভেবে দেখুন। সামনের বছরগুলোতে এসব ভুল যেন না হয়, সে জন্য সতর্ক হোন। এই বছর যা কিছু ইতিবাচক হয়েছে, সেগুলো একটি ডায়েরিতে লিখে সৃষ্টিকর্তাকে কৃতজ্ঞতা জানান। কারও সঙ্গে মনোমালিন্য হয়ে থাকলে তা মিটিয়ে নিন। অযথা মনে রাগ পুষে রেখে নিজেকে কষ্ট দেবেন না।
পুরোনো বন্ধুরা আসলে মানুষের ব্রিদিং স্পেস বা নিশ্বাস ফেলার জায়গা। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সবার সঙ্গে সম্ভব না হলেও যাঁদের বা যাঁর সঙ্গে সম্ভব, তাঁদের বা তাঁর সঙ্গে দেখা করে কিছু সময় কাটিয়ে আসুন। মন খুলে হাসুন। স্মৃতিচারণা করুন। অন্তত এক বেলা একসঙ্গে বসে খেয়ে ফেলুন মনের মতো কোনো খাবার। দেখবেন নতুন বছর অন্য রকমভাবে শুরু হবে।
সূত্র: ক্যামিলিস্টাইল ও অন্যান্য

‘জলদি ওঠো। দেরি করা যাবে না। কেউ যেন বলতে না পারে আমাদের জন্য দেরি হয়েছে।’ অ্যালার্ম বাজতেই ভুবন ওর চিরচেনা সংলাপ দিচ্ছিল! ‘চিরচেনা’ বললাম এ কারণে, সে কারও সঙ্গে কোথাও যাওয়ার আগে ঠিক এই কথাগুলোই বলে। ওর কথা হচ্ছে...
২৫ অক্টোবর ২০২২
দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে পাতলা ত্বকের মানুষদের ত্বক দ্রুত পুড়ে যায়। ফলে গায়ের রং তামাটে হয়ে যায়। তাই এ সময় নিয়মিত যাঁরা রোদ পোহাচ্ছেন, তাঁদের ত্বক যদি এ রকম রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে যায়, তাঁরা গোসলের সময় কিছু ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তাতে সুবিধা পাবেন।...
৬ ঘণ্টা আগে
আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা...
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

বলতে দ্বিধা নেই, গরমের দিনে রোদ গায়ে লাগিয়ে ভিটামিন ডি নেওয়ার কথা ভুলে গেলেও শীতে যেন তা বেশি বেশি মনে পড়ে। হিম সকালে রোদ গায়ে মাখতে কারো মন্দ লাগে না। ফলে এই মৌসুমে গায়ে রোদ লাগানোও হয় বেশি। আর এতে অতিরিক্ত পাতলা ত্বকের মানুষেরা একটু ঝামেলায় পড়েন। দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে পাতলা ত্বকের মানুষদের ত্বক দ্রুত পুড়ে যায়। ফলে গায়ের রং তামাটে হয়ে যায়। তাই এ সময় নিয়মিত যাঁরা রোদ পোহাচ্ছেন, তাঁদের ত্বক যদি এ রকম রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে যায়, তাঁরা গোসলের সময় কিছু ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তাতে সুবিধা পাবেন।
লেবুর রস, মধু ও গোলাপজলের ফেসপ্যাক
লেবুর রস প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে মধু ত্বক আর্দ্র রাখে, যা শীতকালের রুক্ষ আবহাওয়ায় জরুরি। ১ চা-চামচ করে লেবুর রস, শসার রস, মধুর সঙ্গে আধা চা-চামচ গোলাপজল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি মুখে লাগিয়ে রাখুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। তবে এই প্যাক ব্যবহার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরাসরি রোদে না বের হওয়াই ভালো। বের হলেও ছাতা ব্যবহার করুন।
দই, বেসন ও হলুদের ফেসপ্যাক
এই প্যাক একই সঙ্গে ট্যান দূর করতে, মৃত কোষ ঝরাতে এবং ত্বক উজ্জ্বল করতে খুব ভালো কাজ করে। ২ চা-চামচ টক দই, ১ চা-চামচ বেসন, এক চিমটি হলুদবাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই প্যাক মুখে ও গলায় ভালো করে লাগিয়ে নিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। প্রয়োজনে এই প্যাক শরীরের অন্য অংশের রোদে পোড়া দাগের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে।
লেবুর রস ও চিনির মিশ্রণ
ঘরে বসে ট্যান অপসারণের জন্য ফেসপ্যাকে যোগ করতে পারেন লেবুর রস। প্রাকৃতিক ব্লিচিং ক্ষমতার কারণে এটি ত্বকের যেকোনো দাগ দূর করতে খুব ভালো কাজ করে। এ ছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ত্বকের দূষণ দূরে সহায়ক। সানট্যান দূর করতে লেবুর রস মধু বা চিনির সঙ্গে মিশিয়ে আক্রান্ত জায়গাগুলোয় স্ক্র্যাব করুন। ১৫ মিনিট আলতো করে ঘষে ধুয়ে নিন। তবে লেবু মিশ্রিত প্যাক বা স্ক্র্যাব ত্বকে ব্যবহার করলে ধোয়ার পর অবশ্যই ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। নয়তো ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে উঠতে পারে।
আলুর রস ও মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক
আলুর রসে মৃদু ব্লিচিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা সানট্যান হালকা করতে পারে। অন্যদিকে মুলতানি মাটি ত্বক পরিষ্কার করে। ২ চা-চামচ আলুর রস, ১ চা-চামচ মুলতানি মাটি, অল্প পরিমাণে গোলাপজল বা পানি মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই প্যাক মুখে লাগান এবং ২০ মিনিট বা পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে পানি ও স্ক্র্যাবার দিয়ে ম্যাসাজ করে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
নারকেলের দুধেও মিলবে উপকার
ট্যান দূর করার পাশাপাশি নারকেল দুধ ত্বকের অন্যান্য উপকারও করে। মুখ ও হাতে ট্যান পড়ে থাকলে নারকেলের দুধকেই সমাধান হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। রোদে পোড়া ত্বকে তাজা নারকেল দুধ লাগিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। এরপর ধুয়ে নিন। ত্বক ধীরে ধীরে উজ্জ্বলতা ছড়াবে।
শসা ও লেবুর রসের মিশ্রণ
শসা ত্বক আর্দ্র রাখে এবং পোড়া ত্বকে আরাম দেয়। অন্যদিকে লেবুর রস ত্বকের রং হালকা করতে সহায়ক। শসা দিয়ে মুখ, ঘাড় ও হাতের ট্যান দূর করার ভালো উপায় হলো, খোসা ছাড়িয়ে থেঁতো করে রস বের করে নিয়ে তাতে সমপরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে তুলার বল দিয়ে সেই রস আক্রান্ত জায়গায় লাগানো। এরপর সেই রস ত্বকে পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
সূত্র: ফেমিনা ও অন্যান্য

বলতে দ্বিধা নেই, গরমের দিনে রোদ গায়ে লাগিয়ে ভিটামিন ডি নেওয়ার কথা ভুলে গেলেও শীতে যেন তা বেশি বেশি মনে পড়ে। হিম সকালে রোদ গায়ে মাখতে কারো মন্দ লাগে না। ফলে এই মৌসুমে গায়ে রোদ লাগানোও হয় বেশি। আর এতে অতিরিক্ত পাতলা ত্বকের মানুষেরা একটু ঝামেলায় পড়েন। দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে পাতলা ত্বকের মানুষদের ত্বক দ্রুত পুড়ে যায়। ফলে গায়ের রং তামাটে হয়ে যায়। তাই এ সময় নিয়মিত যাঁরা রোদ পোহাচ্ছেন, তাঁদের ত্বক যদি এ রকম রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে যায়, তাঁরা গোসলের সময় কিছু ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তাতে সুবিধা পাবেন।
লেবুর রস, মধু ও গোলাপজলের ফেসপ্যাক
লেবুর রস প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে মধু ত্বক আর্দ্র রাখে, যা শীতকালের রুক্ষ আবহাওয়ায় জরুরি। ১ চা-চামচ করে লেবুর রস, শসার রস, মধুর সঙ্গে আধা চা-চামচ গোলাপজল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি মুখে লাগিয়ে রাখুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। তবে এই প্যাক ব্যবহার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরাসরি রোদে না বের হওয়াই ভালো। বের হলেও ছাতা ব্যবহার করুন।
দই, বেসন ও হলুদের ফেসপ্যাক
এই প্যাক একই সঙ্গে ট্যান দূর করতে, মৃত কোষ ঝরাতে এবং ত্বক উজ্জ্বল করতে খুব ভালো কাজ করে। ২ চা-চামচ টক দই, ১ চা-চামচ বেসন, এক চিমটি হলুদবাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই প্যাক মুখে ও গলায় ভালো করে লাগিয়ে নিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। প্রয়োজনে এই প্যাক শরীরের অন্য অংশের রোদে পোড়া দাগের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে।
লেবুর রস ও চিনির মিশ্রণ
ঘরে বসে ট্যান অপসারণের জন্য ফেসপ্যাকে যোগ করতে পারেন লেবুর রস। প্রাকৃতিক ব্লিচিং ক্ষমতার কারণে এটি ত্বকের যেকোনো দাগ দূর করতে খুব ভালো কাজ করে। এ ছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ত্বকের দূষণ দূরে সহায়ক। সানট্যান দূর করতে লেবুর রস মধু বা চিনির সঙ্গে মিশিয়ে আক্রান্ত জায়গাগুলোয় স্ক্র্যাব করুন। ১৫ মিনিট আলতো করে ঘষে ধুয়ে নিন। তবে লেবু মিশ্রিত প্যাক বা স্ক্র্যাব ত্বকে ব্যবহার করলে ধোয়ার পর অবশ্যই ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। নয়তো ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে উঠতে পারে।
আলুর রস ও মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক
আলুর রসে মৃদু ব্লিচিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা সানট্যান হালকা করতে পারে। অন্যদিকে মুলতানি মাটি ত্বক পরিষ্কার করে। ২ চা-চামচ আলুর রস, ১ চা-চামচ মুলতানি মাটি, অল্প পরিমাণে গোলাপজল বা পানি মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই প্যাক মুখে লাগান এবং ২০ মিনিট বা পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে পানি ও স্ক্র্যাবার দিয়ে ম্যাসাজ করে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
নারকেলের দুধেও মিলবে উপকার
ট্যান দূর করার পাশাপাশি নারকেল দুধ ত্বকের অন্যান্য উপকারও করে। মুখ ও হাতে ট্যান পড়ে থাকলে নারকেলের দুধকেই সমাধান হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। রোদে পোড়া ত্বকে তাজা নারকেল দুধ লাগিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। এরপর ধুয়ে নিন। ত্বক ধীরে ধীরে উজ্জ্বলতা ছড়াবে।
শসা ও লেবুর রসের মিশ্রণ
শসা ত্বক আর্দ্র রাখে এবং পোড়া ত্বকে আরাম দেয়। অন্যদিকে লেবুর রস ত্বকের রং হালকা করতে সহায়ক। শসা দিয়ে মুখ, ঘাড় ও হাতের ট্যান দূর করার ভালো উপায় হলো, খোসা ছাড়িয়ে থেঁতো করে রস বের করে নিয়ে তাতে সমপরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে তুলার বল দিয়ে সেই রস আক্রান্ত জায়গায় লাগানো। এরপর সেই রস ত্বকে পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
সূত্র: ফেমিনা ও অন্যান্য

‘জলদি ওঠো। দেরি করা যাবে না। কেউ যেন বলতে না পারে আমাদের জন্য দেরি হয়েছে।’ অ্যালার্ম বাজতেই ভুবন ওর চিরচেনা সংলাপ দিচ্ছিল! ‘চিরচেনা’ বললাম এ কারণে, সে কারও সঙ্গে কোথাও যাওয়ার আগে ঠিক এই কথাগুলোই বলে। ওর কথা হচ্ছে...
২৫ অক্টোবর ২০২২
ডিসেম্বর মানেই অন্য রকম অনুভূতি। একদিকে বছর শেষের সব হিসাবনিকাশ, নতুন বছরের আগমনী বার্তা; অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দ আর পিঠা-পার্বণের আমেজ। সব মিলিয়ে এই মাসটি যেন সত্যিই বিশেষ। ডিসেম্বরে, বছরের শেষ সময়গুলো কীভাবে একটু অর্থবহ করা যায়, তা জেনে নিন।
৪ ঘণ্টা আগে
আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা...
৮ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন। সাবধান; পুরোনো প্রেমিকার হঠাৎ ফোন আসতে পারে। ফোনটা ধরবেন নাকি বলবেন ‘নেটওয়ার্কের বাইরে আছি’, সেটা আপনার কর্মফল! প্রেমের ক্ষেত্রে বিরক্তি বা অনাগ্রহ না দেখানোই ভালো।
বৃষ
আজ আপনার ব্যাংক ব্যালেন্সের দিকে নজর দিতে হবে। না, অর্থ আসবে না; বরং অর্থ যাওয়ার পথ তৈরি হবে! বিশেষত অনলাইন শপিংয়ের দিকে মন ঝুঁকতে পারে। এমন কিছু অর্ডার করে ফেলবেন, যেটা হাতে আসার পর মনে হবে—‘এটার আসল প্রয়োজন কী ছিল?’ স্ত্রীর কাছ থেকে উপহার চেয়ে বসলে এমন কিছু পাবেন, যা দেখে হাসবেন নাকি কাঁদবেন, তা ঠিক করতে পারবেন না। ফাস্ট ফুডের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিন। একটু কম তেল-ঝাল খান, নইলে গ্যাসের চোটে মহাকাশে যাত্রা শুরু করতে পারেন।
মিথুন
মিথুন রাশির দ্বৈত সত্তা আজ দ্বিগুণ সক্রিয়। এক মন বলবে, ‘কাজটা করে ফেলি,’ আর অন্য মন বলবে, ‘আরে বাবা! নেটফ্লিক্সের সিরিজটা আগে শেষ করা যাক!’ এই দোটানার জন্য দিনের শেষে আপনার কাজও হবে না, আবার সিরিজটাও শেষও হবে না। কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী আজ আপনার সাফল্যের গল্পে এত বেশি রং মেশাবেন যে আসল গল্পের চেয়ে সেটা শুনেই বসের বেশি হাসি পাবে। সন্ধ্যায় পরিচিত কাউকে এমন একটি উপদেশ দেবেন, যা আপনি নিজে জীবনে কখনো মেনে চলেননি।
কর্কট
কর্কট রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত ঘরকুনো হন। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে ঘরের বাইরে ঠেলে দেবে। অপ্রত্যাশিতভাবে বন্ধু বা আত্মীয়ের দল বাড়িতে এসে আপনার শান্তি ভঙ্গ করতে পারে। তাদের আপ্যায়ন করতে গিয়ে পকেটের দফারফা হবে। তবে চিন্তা নেই, এই বিড়ম্বনার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের কোনো শুভ ইঙ্গিত। প্রেমিক/প্রেমিকা আজ আপনাকে ‘ডায়েট কন্ট্রোল’ করতে বলবে। আপনি গোপনে লুকিয়ে ফ্রিজের দিকে এগোনোর সময় ধরা পড়তে পারেন।
সিংহ
সিংহ রাশি, আজ আপনার ব্যক্তিত্বের তেজ এতটা বেশি থাকবে যে ঘরে ঢুকে লাইট না জ্বাললেও চলবে। সবাই আজ আপনার কথা শুনতে চাইবে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো—আপনার বলার মতো বিশেষ কোনো কথা আজ থাকবে না। বসের চোখে পড়তে চাচ্ছেন? যান, একটু উল্টাপাল্টা কিছু করুন। আপনার ভুল করার স্টাইল দেখেও তারা মুগ্ধ হতে পারে। অপ্রয়োজনীয় জিনিসে প্রচুর টাকা খরচ হতে পারে, যেমন চতুর্থ কফির কাপ অথবা একটি লাল রঙের ক্যাপ যা আপনার মোটেই প্রয়োজন নেই।
কন্যা
আজ আপনার ভেতরের ‘পারফেকশনিস্ট’ সত্তাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে। সহকর্মীর ফাইলে সামান্য একটি বানান ভুল পেলেও এমন রিঅ্যাক্ট করবেন যেন তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপরাধটি করে ফেলেছেন। এই বাড়তি খুঁতখুঁতে স্বভাবের জন্য কিছু মানুষ আপনাকে এড়িয়ে যেতে পারে। নিজেকে নিয়ে একটু হাসিঠাট্টা করুন। সবকিছু সিরিয়াসলি নেবেন না। যদি দেখেন জুতা উল্টো পরে ফেলেছেন, তা নিয়ে একটা সেলফি তুলে পোস্ট করে দিন! দেখবেন দিনটি হালকা হয়ে গেছে।
তুলা
গ্রহদের মতে, আজ আপনার ‘ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট’ সফল হবে। তবে এই ব্যালেন্স কর্মক্ষেত্র বা ব্যক্তিগত জীবনে নয়, হবে আপনার ফ্রিজের খাবার আর আপনার ডায়েটের মধ্যে! আপনি দুই দিকেই সামঞ্জস্য রক্ষা করবেন; অর্থাৎ ডায়েটও ভাঙবেন, আবার রাতে আফসোসও করবেন। আজ আপনার সঙ্গী এমন একটি অদ্ভুত প্রশ্ন করতে পারে, যার উত্তর দিতে গিয়ে আপনার মাথা পুরোপুরি ঘুরে যাবে; যেমন ‘বিয়ে না হলে আমাদের জীবনটা কেমন হতো?’ শান্ত থাকুন এবং হাসতে শিখুন।
বৃশ্চিক
বৃশ্চিক, আপনার রহস্যময় স্বভাব আজ কারও কাছে ধরা পড়বে না। কারণ, নিজেই আজ আপনার রহস্য ভুলে যাবেন! পুরোনো একটি ভুলে যাওয়া ঋণ বা পাওনা টাকা আজ হুট করে মনে পড়তে পারে। তবে যখন সেটি দাবি করতে যাবেন, তখন অন্য পক্ষ এমন এক গল্প শোনাবে যে আপনি উল্টো তাকেই সহানুভূতি দেখিয়ে টাকা দিয়ে আসতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে আজ এমন একজনের সঙ্গে দেখা হবে, যিনি আপনার চেয়েও বেশি গম্ভীর। দুজন মিলে এমন একটি হাসির মুহূর্ত তৈরি করবেন, যা কেউ কল্পনাও করেনি।
ধনু
ধনু রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন। কিন্তু আজকের অ্যাডভেঞ্চারটি হবে আলমারি গোছানো! ভাবতেও পারেননি, আপনার আলমারির ভেতরে এত অদ্ভুত জিনিস লুকিয়ে ছিল। পুরোনো প্রেমের চিঠি থেকে শুরু করে ছেঁড়া মোজা পর্যন্ত সবই পেয়ে যাবেন। যদি আজ কোথাও যাওয়ার প্ল্যান থাকে, তবে সাবধানে যান। মানিব্যাগটি ভুল করে রান্নাঘরে রেখে আসতে পারেন। এই ভুলে যাওয়াটাই আজ আপনার সবচেয়ে বড় কৌতুক হতে চলেছে।
মকর
মকর, আপনি সাধারণত খুব শৃঙ্খলাপরায়ণ। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে একটু ডিসকোয়ালিফাই করবে। দিনের শুরুতেই গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের আগে মোবাইল ফোন খুঁজে পাবেন না। পরে দেখবেন, ফোনটি প্যান্টের পকেটেই ছিল। আপনার কঠোর পরিশ্রমের ফল আজ মিষ্টি হবে, তবে মিষ্টির সঙ্গে সামান্য তেতো অভিজ্ঞতাও আসতে পারে। বিনিয়োগের আগে দুবার চিন্তা করুন। এমন কাউকে বিশ্বাস করবেন না, যিনি আপনাকে ‘এক মাসে দ্বিগুণ লাভ’ করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন।
কুম্ভ
কুম্ভ, আজ আপনার বুদ্ধি আকাশ ছুঁয়ে যাবে। এমন একটি সমস্যার সমাধান করবেন, যা কেউ ভাবতেও পারেনি। কিন্তু আফসোস! সেই সমস্যাটি হয়তো একেবারেই গুরুত্বহীন ছিল, যেমন ‘কে আগে রিমোট নেবে’ বা ‘চায়ের কাপের দাগটা কীভাবে তোলা যায়।’ বন্ধুদের মধ্যে কেউ আজ এমন একটি বড় দাবি করবে, যা শুনে আপনি প্রথমে অবাক হবেন, পরে হো হো করে হেসে উঠবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করলে তাতে অপ্রত্যাশিতভাবে প্রচুর লাইক ও কমেন্ট পাবেন।
মীন
মীন রাশির জাতক-জাতিকারা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। আজ সেই স্বপ্নময় জগৎটি আপনার কর্মক্ষেত্রে এসে পড়তে পারে। কাজের মধ্যে হঠাৎ কল্পনায় ডুবে যাবেন এবং বসকে ভুল করে অন্য কারও নাম ধরে ডেকে ফেলতে পারেন। প্রেমের ক্ষেত্রে আবেগপ্রবণতা আজ অতিরিক্ত বাড়বে। নিজের হাতে লেখা একটি কবিতা বা চিঠি প্রিয়জনকে দিলে তারা হয়তো হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়বে। কারণ, আবেগ দেখানোর জন্য আপনার শব্দচয়ন হয়তো আজ খুব একটা সিরিয়াস হবে না। তবে মনে রাখবেন, হাসিই সম্পর্কের সেরা মসলা।

মেষ
আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন। সাবধান; পুরোনো প্রেমিকার হঠাৎ ফোন আসতে পারে। ফোনটা ধরবেন নাকি বলবেন ‘নেটওয়ার্কের বাইরে আছি’, সেটা আপনার কর্মফল! প্রেমের ক্ষেত্রে বিরক্তি বা অনাগ্রহ না দেখানোই ভালো।
বৃষ
আজ আপনার ব্যাংক ব্যালেন্সের দিকে নজর দিতে হবে। না, অর্থ আসবে না; বরং অর্থ যাওয়ার পথ তৈরি হবে! বিশেষত অনলাইন শপিংয়ের দিকে মন ঝুঁকতে পারে। এমন কিছু অর্ডার করে ফেলবেন, যেটা হাতে আসার পর মনে হবে—‘এটার আসল প্রয়োজন কী ছিল?’ স্ত্রীর কাছ থেকে উপহার চেয়ে বসলে এমন কিছু পাবেন, যা দেখে হাসবেন নাকি কাঁদবেন, তা ঠিক করতে পারবেন না। ফাস্ট ফুডের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিন। একটু কম তেল-ঝাল খান, নইলে গ্যাসের চোটে মহাকাশে যাত্রা শুরু করতে পারেন।
মিথুন
মিথুন রাশির দ্বৈত সত্তা আজ দ্বিগুণ সক্রিয়। এক মন বলবে, ‘কাজটা করে ফেলি,’ আর অন্য মন বলবে, ‘আরে বাবা! নেটফ্লিক্সের সিরিজটা আগে শেষ করা যাক!’ এই দোটানার জন্য দিনের শেষে আপনার কাজও হবে না, আবার সিরিজটাও শেষও হবে না। কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী আজ আপনার সাফল্যের গল্পে এত বেশি রং মেশাবেন যে আসল গল্পের চেয়ে সেটা শুনেই বসের বেশি হাসি পাবে। সন্ধ্যায় পরিচিত কাউকে এমন একটি উপদেশ দেবেন, যা আপনি নিজে জীবনে কখনো মেনে চলেননি।
কর্কট
কর্কট রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত ঘরকুনো হন। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে ঘরের বাইরে ঠেলে দেবে। অপ্রত্যাশিতভাবে বন্ধু বা আত্মীয়ের দল বাড়িতে এসে আপনার শান্তি ভঙ্গ করতে পারে। তাদের আপ্যায়ন করতে গিয়ে পকেটের দফারফা হবে। তবে চিন্তা নেই, এই বিড়ম্বনার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের কোনো শুভ ইঙ্গিত। প্রেমিক/প্রেমিকা আজ আপনাকে ‘ডায়েট কন্ট্রোল’ করতে বলবে। আপনি গোপনে লুকিয়ে ফ্রিজের দিকে এগোনোর সময় ধরা পড়তে পারেন।
সিংহ
সিংহ রাশি, আজ আপনার ব্যক্তিত্বের তেজ এতটা বেশি থাকবে যে ঘরে ঢুকে লাইট না জ্বাললেও চলবে। সবাই আজ আপনার কথা শুনতে চাইবে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো—আপনার বলার মতো বিশেষ কোনো কথা আজ থাকবে না। বসের চোখে পড়তে চাচ্ছেন? যান, একটু উল্টাপাল্টা কিছু করুন। আপনার ভুল করার স্টাইল দেখেও তারা মুগ্ধ হতে পারে। অপ্রয়োজনীয় জিনিসে প্রচুর টাকা খরচ হতে পারে, যেমন চতুর্থ কফির কাপ অথবা একটি লাল রঙের ক্যাপ যা আপনার মোটেই প্রয়োজন নেই।
কন্যা
আজ আপনার ভেতরের ‘পারফেকশনিস্ট’ সত্তাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে। সহকর্মীর ফাইলে সামান্য একটি বানান ভুল পেলেও এমন রিঅ্যাক্ট করবেন যেন তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপরাধটি করে ফেলেছেন। এই বাড়তি খুঁতখুঁতে স্বভাবের জন্য কিছু মানুষ আপনাকে এড়িয়ে যেতে পারে। নিজেকে নিয়ে একটু হাসিঠাট্টা করুন। সবকিছু সিরিয়াসলি নেবেন না। যদি দেখেন জুতা উল্টো পরে ফেলেছেন, তা নিয়ে একটা সেলফি তুলে পোস্ট করে দিন! দেখবেন দিনটি হালকা হয়ে গেছে।
তুলা
গ্রহদের মতে, আজ আপনার ‘ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট’ সফল হবে। তবে এই ব্যালেন্স কর্মক্ষেত্র বা ব্যক্তিগত জীবনে নয়, হবে আপনার ফ্রিজের খাবার আর আপনার ডায়েটের মধ্যে! আপনি দুই দিকেই সামঞ্জস্য রক্ষা করবেন; অর্থাৎ ডায়েটও ভাঙবেন, আবার রাতে আফসোসও করবেন। আজ আপনার সঙ্গী এমন একটি অদ্ভুত প্রশ্ন করতে পারে, যার উত্তর দিতে গিয়ে আপনার মাথা পুরোপুরি ঘুরে যাবে; যেমন ‘বিয়ে না হলে আমাদের জীবনটা কেমন হতো?’ শান্ত থাকুন এবং হাসতে শিখুন।
বৃশ্চিক
বৃশ্চিক, আপনার রহস্যময় স্বভাব আজ কারও কাছে ধরা পড়বে না। কারণ, নিজেই আজ আপনার রহস্য ভুলে যাবেন! পুরোনো একটি ভুলে যাওয়া ঋণ বা পাওনা টাকা আজ হুট করে মনে পড়তে পারে। তবে যখন সেটি দাবি করতে যাবেন, তখন অন্য পক্ষ এমন এক গল্প শোনাবে যে আপনি উল্টো তাকেই সহানুভূতি দেখিয়ে টাকা দিয়ে আসতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে আজ এমন একজনের সঙ্গে দেখা হবে, যিনি আপনার চেয়েও বেশি গম্ভীর। দুজন মিলে এমন একটি হাসির মুহূর্ত তৈরি করবেন, যা কেউ কল্পনাও করেনি।
ধনু
ধনু রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন। কিন্তু আজকের অ্যাডভেঞ্চারটি হবে আলমারি গোছানো! ভাবতেও পারেননি, আপনার আলমারির ভেতরে এত অদ্ভুত জিনিস লুকিয়ে ছিল। পুরোনো প্রেমের চিঠি থেকে শুরু করে ছেঁড়া মোজা পর্যন্ত সবই পেয়ে যাবেন। যদি আজ কোথাও যাওয়ার প্ল্যান থাকে, তবে সাবধানে যান। মানিব্যাগটি ভুল করে রান্নাঘরে রেখে আসতে পারেন। এই ভুলে যাওয়াটাই আজ আপনার সবচেয়ে বড় কৌতুক হতে চলেছে।
মকর
মকর, আপনি সাধারণত খুব শৃঙ্খলাপরায়ণ। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে একটু ডিসকোয়ালিফাই করবে। দিনের শুরুতেই গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের আগে মোবাইল ফোন খুঁজে পাবেন না। পরে দেখবেন, ফোনটি প্যান্টের পকেটেই ছিল। আপনার কঠোর পরিশ্রমের ফল আজ মিষ্টি হবে, তবে মিষ্টির সঙ্গে সামান্য তেতো অভিজ্ঞতাও আসতে পারে। বিনিয়োগের আগে দুবার চিন্তা করুন। এমন কাউকে বিশ্বাস করবেন না, যিনি আপনাকে ‘এক মাসে দ্বিগুণ লাভ’ করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন।
কুম্ভ
কুম্ভ, আজ আপনার বুদ্ধি আকাশ ছুঁয়ে যাবে। এমন একটি সমস্যার সমাধান করবেন, যা কেউ ভাবতেও পারেনি। কিন্তু আফসোস! সেই সমস্যাটি হয়তো একেবারেই গুরুত্বহীন ছিল, যেমন ‘কে আগে রিমোট নেবে’ বা ‘চায়ের কাপের দাগটা কীভাবে তোলা যায়।’ বন্ধুদের মধ্যে কেউ আজ এমন একটি বড় দাবি করবে, যা শুনে আপনি প্রথমে অবাক হবেন, পরে হো হো করে হেসে উঠবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করলে তাতে অপ্রত্যাশিতভাবে প্রচুর লাইক ও কমেন্ট পাবেন।
মীন
মীন রাশির জাতক-জাতিকারা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। আজ সেই স্বপ্নময় জগৎটি আপনার কর্মক্ষেত্রে এসে পড়তে পারে। কাজের মধ্যে হঠাৎ কল্পনায় ডুবে যাবেন এবং বসকে ভুল করে অন্য কারও নাম ধরে ডেকে ফেলতে পারেন। প্রেমের ক্ষেত্রে আবেগপ্রবণতা আজ অতিরিক্ত বাড়বে। নিজের হাতে লেখা একটি কবিতা বা চিঠি প্রিয়জনকে দিলে তারা হয়তো হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়বে। কারণ, আবেগ দেখানোর জন্য আপনার শব্দচয়ন হয়তো আজ খুব একটা সিরিয়াস হবে না। তবে মনে রাখবেন, হাসিই সম্পর্কের সেরা মসলা।

‘জলদি ওঠো। দেরি করা যাবে না। কেউ যেন বলতে না পারে আমাদের জন্য দেরি হয়েছে।’ অ্যালার্ম বাজতেই ভুবন ওর চিরচেনা সংলাপ দিচ্ছিল! ‘চিরচেনা’ বললাম এ কারণে, সে কারও সঙ্গে কোথাও যাওয়ার আগে ঠিক এই কথাগুলোই বলে। ওর কথা হচ্ছে...
২৫ অক্টোবর ২০২২
ডিসেম্বর মানেই অন্য রকম অনুভূতি। একদিকে বছর শেষের সব হিসাবনিকাশ, নতুন বছরের আগমনী বার্তা; অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দ আর পিঠা-পার্বণের আমেজ। সব মিলিয়ে এই মাসটি যেন সত্যিই বিশেষ। ডিসেম্বরে, বছরের শেষ সময়গুলো কীভাবে একটু অর্থবহ করা যায়, তা জেনে নিন।
৪ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে পাতলা ত্বকের মানুষদের ত্বক দ্রুত পুড়ে যায়। ফলে গায়ের রং তামাটে হয়ে যায়। তাই এ সময় নিয়মিত যাঁরা রোদ পোহাচ্ছেন, তাঁদের ত্বক যদি এ রকম রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে যায়, তাঁরা গোসলের সময় কিছু ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তাতে সুবিধা পাবেন।...
৬ ঘণ্টা আগে
শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা...
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। সেগুলোতে শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তাই বলাই যায়, শীতকালে কলা খাওয়া নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, খাবার খাওয়া এবং তা থেকে শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে ব্যক্তিগত সংবেদনশীলতা থেকে। যেসব খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেসব খাবার না খাওয়া ভালো। তাতে শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ কলাকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সব ঋতুতে খাওয়ার সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিনে কলাসহ ৪০০ গ্রাম ফল ও সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা এবং তার সঠিক বৈজ্ঞানিক তথ্য জেনে নিন।
এ ধারণা ঠিক নয়। কলার পুষ্টিগুণ অর্থাৎ পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, আঁশ ইত্যাদি ঋতুভেদে একই থাকে। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন কলাকে একটি পুষ্টিকর স্ন্যাক্স বা হালকা নাশতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

আমাদের দেশেই শুধু নয়, পৃথিবীতে এমন বহু মানুষ আছেন যাঁরা বিশ্বাস করেন, কলা ঠান্ডা প্রকৃতির বলে শীতকালে খেলে সর্দি-কাশি বা হজমে সমস্যা করতে পারে। এটি আজ পর্যন্ত বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। স্বাভাবিকভাবে যেকোনো ব্যক্তি শীতকালে কলা খেতে পারেন। বরং কলা দ্রুত শক্তি দেয় বলে শীতকালে এটি শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে। তবে কলায় কারও অ্যালার্জি থাকলে খাওয়া ঠিক হবে না।
আয়ুর্বেদের মতো কিছু প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি কলাকে ‘শীতল’ প্রকৃতির বলে বিবেচনা করে। সে জন্য রাতে বা শীতে বেশি পরিমাণে না খাওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে এ পরামর্শ সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
অ্যালার্জি ও কফ: যাঁদের কলায় অ্যালার্জি আছে এবং যাঁদের শীতকালে কফ জমে থাকা বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কলায় কোনো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া নেই। তবে যাঁদের আগে থেকে অ্যালার্জি বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের অত্যধিক মিউকাস উৎপাদনে এটি কিছু ভূমিকা রাখতে পারে। সে জন্য যাঁদের আগে থেকে এসব সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
ডায়াবেটিস: কলায় প্রাকৃতিক শর্করা থাকে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের এটি পরিমিত খাওয়া উচিত।

কলা প্রাকৃতিক এনার্জি বার: কলায় থাকে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজের মতো প্রাকৃতিক চিনি। এটি দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে, যা শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ইমিউনিটি বুস্টার: ভিটামিন ‘সি’ এবং ‘বি৬’ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় কলা। এতে শীতকালীন সর্দি-কাশি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
সেরোটোনিন উৎপাদন: কলায় ট্রিপটোফ্যান নামে একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, যা মস্তিষ্কে সেরোটোনিন (মুড-রেগুলেটর) উৎপাদনে সাহায্য করে, শীতকালীন বিষণ্নতা মোকাবিলায় সহায়ক।
রাতের বদলে সকাল বা দুপুরে খাওয়া ভালো। এ ছাড়া কলা বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। যেমন ওটমিল ও দারুচিনির সঙ্গে কলা মিশিয়ে খেলে উষ্ণতা বাড়বে। কলার স্মুদির সঙ্গে আদা ও কাঁচা হলুদ যোগ করে খাওয়া যেতে পারে। সম্পূর্ণ পাকা কলায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে। এ ধরনের কলা দিনে ১ থেকে ২টি খান।
শীতকালে কলা খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর, যদি ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অবস্থা ও পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। তাই নিয়মিত কলা খেতে কোনো বৈজ্ঞানিক নিষেধ নেই। তবে অ্যাজমা, দীর্ঘস্থায়ী কফ, কিডনি রোগী ইত্যাদি সংবেদনশীল গ্রুপের মানুষেরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কলা খাবেন। এ ছাড়া কলাকে শীতের খাদ্যতালিকার একটি উপাদান হিসেবে দেখুন, একমাত্র উৎস হিসেবে নয়। অন্যান্য শীতকালীন ফলের সঙ্গে এর ভারসাম্য বজায় রাখুন।

শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। সেগুলোতে শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তাই বলাই যায়, শীতকালে কলা খাওয়া নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, খাবার খাওয়া এবং তা থেকে শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে ব্যক্তিগত সংবেদনশীলতা থেকে। যেসব খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেসব খাবার না খাওয়া ভালো। তাতে শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ কলাকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সব ঋতুতে খাওয়ার সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিনে কলাসহ ৪০০ গ্রাম ফল ও সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা এবং তার সঠিক বৈজ্ঞানিক তথ্য জেনে নিন।
এ ধারণা ঠিক নয়। কলার পুষ্টিগুণ অর্থাৎ পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, আঁশ ইত্যাদি ঋতুভেদে একই থাকে। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন কলাকে একটি পুষ্টিকর স্ন্যাক্স বা হালকা নাশতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

আমাদের দেশেই শুধু নয়, পৃথিবীতে এমন বহু মানুষ আছেন যাঁরা বিশ্বাস করেন, কলা ঠান্ডা প্রকৃতির বলে শীতকালে খেলে সর্দি-কাশি বা হজমে সমস্যা করতে পারে। এটি আজ পর্যন্ত বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। স্বাভাবিকভাবে যেকোনো ব্যক্তি শীতকালে কলা খেতে পারেন। বরং কলা দ্রুত শক্তি দেয় বলে শীতকালে এটি শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে। তবে কলায় কারও অ্যালার্জি থাকলে খাওয়া ঠিক হবে না।
আয়ুর্বেদের মতো কিছু প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি কলাকে ‘শীতল’ প্রকৃতির বলে বিবেচনা করে। সে জন্য রাতে বা শীতে বেশি পরিমাণে না খাওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে এ পরামর্শ সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
অ্যালার্জি ও কফ: যাঁদের কলায় অ্যালার্জি আছে এবং যাঁদের শীতকালে কফ জমে থাকা বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কলায় কোনো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া নেই। তবে যাঁদের আগে থেকে অ্যালার্জি বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের অত্যধিক মিউকাস উৎপাদনে এটি কিছু ভূমিকা রাখতে পারে। সে জন্য যাঁদের আগে থেকে এসব সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
ডায়াবেটিস: কলায় প্রাকৃতিক শর্করা থাকে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের এটি পরিমিত খাওয়া উচিত।

কলা প্রাকৃতিক এনার্জি বার: কলায় থাকে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজের মতো প্রাকৃতিক চিনি। এটি দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে, যা শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ইমিউনিটি বুস্টার: ভিটামিন ‘সি’ এবং ‘বি৬’ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় কলা। এতে শীতকালীন সর্দি-কাশি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
সেরোটোনিন উৎপাদন: কলায় ট্রিপটোফ্যান নামে একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, যা মস্তিষ্কে সেরোটোনিন (মুড-রেগুলেটর) উৎপাদনে সাহায্য করে, শীতকালীন বিষণ্নতা মোকাবিলায় সহায়ক।
রাতের বদলে সকাল বা দুপুরে খাওয়া ভালো। এ ছাড়া কলা বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। যেমন ওটমিল ও দারুচিনির সঙ্গে কলা মিশিয়ে খেলে উষ্ণতা বাড়বে। কলার স্মুদির সঙ্গে আদা ও কাঁচা হলুদ যোগ করে খাওয়া যেতে পারে। সম্পূর্ণ পাকা কলায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে। এ ধরনের কলা দিনে ১ থেকে ২টি খান।
শীতকালে কলা খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর, যদি ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অবস্থা ও পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। তাই নিয়মিত কলা খেতে কোনো বৈজ্ঞানিক নিষেধ নেই। তবে অ্যাজমা, দীর্ঘস্থায়ী কফ, কিডনি রোগী ইত্যাদি সংবেদনশীল গ্রুপের মানুষেরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কলা খাবেন। এ ছাড়া কলাকে শীতের খাদ্যতালিকার একটি উপাদান হিসেবে দেখুন, একমাত্র উৎস হিসেবে নয়। অন্যান্য শীতকালীন ফলের সঙ্গে এর ভারসাম্য বজায় রাখুন।

‘জলদি ওঠো। দেরি করা যাবে না। কেউ যেন বলতে না পারে আমাদের জন্য দেরি হয়েছে।’ অ্যালার্ম বাজতেই ভুবন ওর চিরচেনা সংলাপ দিচ্ছিল! ‘চিরচেনা’ বললাম এ কারণে, সে কারও সঙ্গে কোথাও যাওয়ার আগে ঠিক এই কথাগুলোই বলে। ওর কথা হচ্ছে...
২৫ অক্টোবর ২০২২
ডিসেম্বর মানেই অন্য রকম অনুভূতি। একদিকে বছর শেষের সব হিসাবনিকাশ, নতুন বছরের আগমনী বার্তা; অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দ আর পিঠা-পার্বণের আমেজ। সব মিলিয়ে এই মাসটি যেন সত্যিই বিশেষ। ডিসেম্বরে, বছরের শেষ সময়গুলো কীভাবে একটু অর্থবহ করা যায়, তা জেনে নিন।
৪ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে পাতলা ত্বকের মানুষদের ত্বক দ্রুত পুড়ে যায়। ফলে গায়ের রং তামাটে হয়ে যায়। তাই এ সময় নিয়মিত যাঁরা রোদ পোহাচ্ছেন, তাঁদের ত্বক যদি এ রকম রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে যায়, তাঁরা গোসলের সময় কিছু ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তাতে সুবিধা পাবেন।...
৬ ঘণ্টা আগে
আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন।
৭ ঘণ্টা আগে