Ajker Patrika

নিষেধাজ্ঞার আগমুহূর্তে বরিশালে ইলিশ বেচাকেনার ধুম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বাজারে ইলিশ কেনাবেচা নিয়ে ব্যস্ততা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাজারে ইলিশ কেনাবেচা নিয়ে ব্যস্ততা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগমুহূর্তে বরিশাল নগরের পোর্ট রোডে ইলিশ বেচাকেনার ধুম পড়ে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন স্থানের ইলিশ আসে পোর্ট রোডে। খুচরা বাজারও জমে ওঠে। কিন্তু বেচাকেনা ব্যাপকভাবে চললেও দাম কমেনি ইলিশের।

জেলা মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদী ও বঙ্গোপসাগর থেকে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়, বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে। তাই বাজারের আড়তদারের মজুত করা মাছসহ নদী ও সাগরে শিকার করা ইলিশ গতকাল বিক্রি শুরু হয়।

নগরের পোর্ট রোডের আড়তদার নাসির উদ্দিন বলেন, শুক্রবার কেজি আকারের মাছ ২ হাজার ১০০ টাকা, এলসি সাইজের (৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) ইলিশ ১ হাজার ৮০০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিবছর নিষেধাজ্ঞার আগের দিন ইলিশের কেজি বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। কিন্তু এবার দাম কমেনি।

বরিশাল সদর মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল সিকদার বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার বাজারে মাছ কম। কারণ, গত কয়েক দিন আবহাওয়া খারাপ ছিল, দামও ছিল স্বাভাবিক। সামনে লক্ষ্মীপূজা। তাই মাছের চাহিদা একটু বেশি। তিনি বলেন, ‘আমরা নিষেধাজ্ঞা মানতে চাই। শুনেছি ড্রোন দিয়ে নজর রাখা হবে। কিন্তু তা কতটা কার্যকর হবে দেখার বিষয়।’

ইলিশ মোকাম পোর্ট রোডে গতকাল রাত ৮টায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে উপচে পড়া ক্রেতার ভিড়। নবগ্রাম এলাকা থেকে আসা মজিবর রহমান নামের এক স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘যেমনটি আশা করেছিলাম, ততটা কমেনি ইলিশের দাম।’ একই কথা জানান বাংলাবাজারের বাসিন্দা গৃহিণী রহিমা বেগম। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বছর শেষ দিন মাছের দাম কম থাকে। এবার তো দাম কমছেই না।’

খুচরা বিক্রেতা আব্দুল আলিম বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে শুক্রবার রাতভর বেচাকেনা হবে। শেষ দিনে এখানে বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারেরা আসেন। তাঁরা এখান থেকে মাছ কিনে বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যান। তবে দাম ততটা কমেনি।

এদিকে খুচারা বাজার চৌমাথা, নথুল্লাবাদেও শুক্রবার রাতে ইলিশ বেচাকেনা বেড়েছিল। সেখানকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরের চেয়ে মোকামে এবারে ইলিশ মাছ কম উঠেছে। তবে দাম গত কয়েক দিনের চেয়ে একটু কম ছিল।

এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় তাঁরা মৎস্যপল্লিগুলোয় প্রচারণা এবং মৎস্যজীবী, আড়তদার, বরফকলের মালিকদের নিয়ে সভা করেছেন। ৫৯টি ইলিশসমৃদ্ধ ইউনিয়নের টাস্কফোর্সের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ মেহেন্দীগঞ্জ ও হিজলায় মা ইলিশ রক্ষায় কোস্ট গার্ডসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযানে থাকবে। দুষ্কৃতকারীদের ঠেকাতে মেঘনা নদীতে নজর রাখার জন্য ড্রোন ব্যবহার করা হবে হিজলায়। নৌ পুলিশও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেসব স্থান থেকে জেলেরা নদীতে নামার চেষ্টা করবেন, সেখানে অভিযান চালাবে। তিনি বলেন, জেলায় ৪৮টি টিম কাজ করবে। মা ইলিশ নিধনকারীদের বিচারে ৩০ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বরিশাল জেলায় ৭৯ হাজার জেলে রয়েছেন। এর মধ্যে ৬৬ হাজার ৫২৪ জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত