সম্পাদকীয়
যশোর-খুলনা অঞ্চলের দুঃখ বলা হয় ভবদহকে। কারণ, প্রায় চার দশক ধরে এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ এক অভিশপ্ত জলাবদ্ধতার শিকার। বছরের অধিকাংশ সময়ই তারা পানির মধ্যে নিমজ্জিত থাকে।
বিভিন্ন সরকারের আমলে জলাবদ্ধতা নিরসনে নানা প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও কোনোটাই তাদের জীবনে স্বস্তি বয়ে আনেনি। সম্প্রতি জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল। এই এলাকার পানি ওঠানামা করে মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদ-নদী দিয়ে। এখানকার পানি নিষ্কাশনের জন্য ভবদহ স্লুইসগেট ১৯৬৩ সালে নির্মাণ করা হয়। কিন্তু আশপাশের নদী ও খালগুলোতে অতিরিক্ত পলি জমে আশির দশক থেকে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ফলে এ অঞ্চলের প্রায় ৩০০ গ্রাম প্রতিনিয়ত পানিবন্দী হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে অসংখ্য মানুষ ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।
ভবদহের জলাবদ্ধতার কারণ কোনো আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং এটি মানবসৃষ্ট ও অব্যবস্থাপনার কারণে হয়েছে। একসময় এখানকার নদীগুলো জোয়ার-ভাটার মাধ্যমে পলি নিষ্কাশন করে বিলগুলোকে সচল রাখত। কিন্তু স্লুইসগেট ও অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের কারণে সেই প্রাকৃতিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে পলি জমে নদীগুলোর তলদেশ উঁচু হয়ে গেছে, আর বর্ষার পানি নদী দিয়ে নামতে না পেরে প্লাবিত করছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
বছরের পর বছর ধরে ভবদহ অঞ্চলের এ সংকট দূর না হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে প্রাকৃতিক উপায়ে এর সমাধান না খোঁজা। কারণ, সেখানকার সাগরের সঙ্গে নদ-নদীর সংযোগ ও জোয়ার-ভাটার সম্পর্ক। বিভিন্ন সময়ে সরকার এ সমস্যা সমাধানে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই উদ্যোগগুলো ছিল অপরিকল্পিত। কখনো বাঁধ দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছে, কখনো নদী খননের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে, কিন্তু সমস্যার মূলে কোনো আঘাত করা হয়নি। স্লুইসগেটের ভুল ব্যবস্থাপনা, নদীগুলোর প্রাকৃতিক প্রবাহ ফিরিয়ে না আনা এবং বিলগুলোর সঠিক ইকোসিস্টেম না বোঝা—এসব কারণেই সব ধরনের উদ্যোগ ও প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে।
ভবদহের এ সমস্যা সমাধান করতে শুধু খনন নয়, নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে স্লুইসগেটের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। পলি অপসারণ ও নদীর তলদেশ গভীর করার কাজ বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে করতে হবে। এ ছাড়া শুধু প্রকৌশলগত সমাধান নয়, এর সঙ্গে পরিবেশগত ও সামাজিক দিকগুলোও বিবেচনা করতে হবে। বিল, নদী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার ভারসাম্য রক্ষা করে একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি দেশের মানুষের আস্থা আছে। এখন তাদের মাধ্যমে যদি কাজটি ভালোভাবে সমাধান হয়, তাহলেই ভবদহবাসী জলাবদ্ধতার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে। আমরা সেই আশায় আছি।
যশোর-খুলনা অঞ্চলের দুঃখ বলা হয় ভবদহকে। কারণ, প্রায় চার দশক ধরে এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ এক অভিশপ্ত জলাবদ্ধতার শিকার। বছরের অধিকাংশ সময়ই তারা পানির মধ্যে নিমজ্জিত থাকে।
বিভিন্ন সরকারের আমলে জলাবদ্ধতা নিরসনে নানা প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও কোনোটাই তাদের জীবনে স্বস্তি বয়ে আনেনি। সম্প্রতি জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল। এই এলাকার পানি ওঠানামা করে মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদ-নদী দিয়ে। এখানকার পানি নিষ্কাশনের জন্য ভবদহ স্লুইসগেট ১৯৬৩ সালে নির্মাণ করা হয়। কিন্তু আশপাশের নদী ও খালগুলোতে অতিরিক্ত পলি জমে আশির দশক থেকে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ফলে এ অঞ্চলের প্রায় ৩০০ গ্রাম প্রতিনিয়ত পানিবন্দী হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে অসংখ্য মানুষ ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।
ভবদহের জলাবদ্ধতার কারণ কোনো আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং এটি মানবসৃষ্ট ও অব্যবস্থাপনার কারণে হয়েছে। একসময় এখানকার নদীগুলো জোয়ার-ভাটার মাধ্যমে পলি নিষ্কাশন করে বিলগুলোকে সচল রাখত। কিন্তু স্লুইসগেট ও অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের কারণে সেই প্রাকৃতিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে পলি জমে নদীগুলোর তলদেশ উঁচু হয়ে গেছে, আর বর্ষার পানি নদী দিয়ে নামতে না পেরে প্লাবিত করছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
বছরের পর বছর ধরে ভবদহ অঞ্চলের এ সংকট দূর না হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে প্রাকৃতিক উপায়ে এর সমাধান না খোঁজা। কারণ, সেখানকার সাগরের সঙ্গে নদ-নদীর সংযোগ ও জোয়ার-ভাটার সম্পর্ক। বিভিন্ন সময়ে সরকার এ সমস্যা সমাধানে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই উদ্যোগগুলো ছিল অপরিকল্পিত। কখনো বাঁধ দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছে, কখনো নদী খননের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে, কিন্তু সমস্যার মূলে কোনো আঘাত করা হয়নি। স্লুইসগেটের ভুল ব্যবস্থাপনা, নদীগুলোর প্রাকৃতিক প্রবাহ ফিরিয়ে না আনা এবং বিলগুলোর সঠিক ইকোসিস্টেম না বোঝা—এসব কারণেই সব ধরনের উদ্যোগ ও প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে।
ভবদহের এ সমস্যা সমাধান করতে শুধু খনন নয়, নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে স্লুইসগেটের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। পলি অপসারণ ও নদীর তলদেশ গভীর করার কাজ বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে করতে হবে। এ ছাড়া শুধু প্রকৌশলগত সমাধান নয়, এর সঙ্গে পরিবেশগত ও সামাজিক দিকগুলোও বিবেচনা করতে হবে। বিল, নদী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার ভারসাম্য রক্ষা করে একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি দেশের মানুষের আস্থা আছে। এখন তাদের মাধ্যমে যদি কাজটি ভালোভাবে সমাধান হয়, তাহলেই ভবদহবাসী জলাবদ্ধতার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে। আমরা সেই আশায় আছি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্থানের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে অশালীন ভাষার ক্রমবর্ধমান ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে অনেকের বিস্ময়, অস্বস্তি ও অসন্তোষ দৃশ্যমান। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভুল ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা তথ্যের ছড়াছড়ি, মিথ্যা বয়ান। এর বিপরীতে ফ্যাক্টচেকারদের ক্যারিয়ারেরও উত্তরোত্তর উন্নতি ঘটছে।
১২ ঘণ্টা আগেকাতারের আকাশে সেই রাতের নীরবতা হঠাৎই ভেঙে গেল এক ভয়ংকর বিস্ফোরণের গর্জনে। দোহায় হামাসের এক শীর্ষ নেতাকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ যেন শুধু একটি বাড়ি নয়, ভেঙে দিল গোটা মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘদিনের নিরাপত্তা-সমীকরণের দেয়াল। কাতার—যে নগরী এত দিন কূটনৈতিক আলোচনার মঞ্চ ছিল...
১২ ঘণ্টা আগেগাজার বোমা আর ক্ষুধার ঘায়ে জর্জরিত ফিলিস্তিনিদের ক্ষতে ক্ষণিকের হলেও স্বস্তির পরশ দিচ্ছে তাদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে স্বীকৃতির ‘ঘনঘটা’। ইতিহাসের পরিহাস, স্বীকৃতিদাতা কিছু দেশেরই অস্ত্রশস্ত্র, কূটনৈতিক সমর্থনে পুষ্ট হয়ে ফিলিস্তিনিদের পীড়ন করে এসেছে ক্ষমতাদর্পী ইসরায়েল। ইসরায়েল গাজার সাধারণ বাসিন্দাদ
১ দিন আগেবাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আওয়ামী লীগের পরেই বড় দল হলো বিএনপি। ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে আওয়ামী লীগের পতনের পর এখন বিএনপিই বড় দল। এই দল স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। জুলাই আন্দোলনের পটপরিবর্তনের পর জামায়াতে ইসলামী এখন বিএনপির বড় প্রতিপক্ষ। একসময় এ দুটি দল জোটবদ্ধ
১ দিন আগে