বেক্সিমকো ফার্মা গত বছরের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক অস্থিরতায় বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও স্থানীয় ও বৈশ্বিক বাজারে তাদের অবস্থান ঠিক স্বাভাবিক সময়ের মতো। যেখানে অস্তিত্ব সংকটে পড়ার কথা, সেখানে প্রবৃদ্ধি আগের চেয়ে সুসংহত হচ্ছে, এত কিছু কীভাবে সম্ভব হচ্ছে। সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মোহাম্মদ আলী নাওয়াজ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক রোকন উদ্দীন।
রোকন উদ্দীন, ঢাকা
আজকের পত্রিকা: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় এবং শ্রমিক ছাঁটাই হয়। সেই বাস্তবতায় বেক্সিমকো ফার্মার উৎপাদন ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড কীভাবে টিকে আছে?
আলী নাওয়াজ: সত্যি বলতে, বেক্সিমকো ফার্মার জন্য সময়টা ছিল ভয়াবহ। সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে সুনামের ওপর। নামের আগে ‘বেক্সিমকো’ থাকায় অনেক নেতিবাচক প্রচার হয়েছে। অফিস ও ডিপোতে হামলা হয়েছে, ৪-৫টি ডিপো ও প্রধান কার্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি আমাদের আরজেএসসিতে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার অ্যাকসেস বন্ধ রাখা হয়েছিল। ট্রেড লাইসেন্স নবায়নে ছয় সপ্তাহ লেগেছে। এসব নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও গত এক বছরে বেক্সিমকো ফার্মা আরও এগিয়েছে। কারণ, বেক্সিমকো ফার্মা মূলত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতিষ্ঠান। মালিকদের হাতে মাত্র ১৪ শতাংশ শেয়ার, বাকি ৮৬ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। আর কোম্পানির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থেকে আমরা চেষ্টা করেছি ফার্মার উৎপাদন, ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড এবং কর্মসংস্থান সব সময় সচল রাখার। এতে সরকারের প্রশাসনিক সহায়তাও আমরা পেয়েছি। ফলে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বেক্সিমকো ফার্মার প্রবৃদ্ধি হয়েছে। স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, এখন ধীরে ধীরে পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতেও বেক্সিমকো ফার্মা সচল রাখার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।
আজকের পত্রিকা: এত প্রতিকূল অবস্থায়ও কোম্পানি কীভাবে স্থিতিশীল থাকতে পেরেছে?
আলী নাওয়াজ: এর পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, বেক্সিমকো ফার্মার ম্যানেজমেন্ট সব সময় পেশাদারদের হাতেই থেকেছে। আমাদের বোর্ডের সঙ্গে সমঝোতা ছিল, তারা দৈনন্দিন কাজে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। দ্বিতীয়ত, ফার্মার মার্কেটিং টিম মাঠে এই প্রতিকূল সময়ে দ্বিগুণ পরিশ্রম করেছে এবং সবাইকে বুঝিয়েছে, বেক্সিমকো ফার্মা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতিষ্ঠান। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ায় ৮৬ শতাংশ শেয়ার ও বিনিয়োগই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। কোম্পানির উদ্যোক্তাদের হাতে মাত্র ১৪ শতাংশ শেয়ার। তৃতীয়ত, ফার্মার ওষুধের মান আন্তর্জাতিক মানের; তাই রোগী ও চিকিৎসকদের আস্থা সব সময় একটা বড় শক্তি হিসেবে কাজ করে। এর জন্য গত এক বছরে একজন কর্মীও চাকরি ছাড়েননি, ছাঁটাইয়ের প্রশ্নই ওঠেনি।
আজকের পত্রিকা: বেক্সিমকো গ্রুপের বিশাল ব্যাংকঋণ নিয়ে নানা অভিযোগ আছে। বেক্সিমকো ফার্মার ঋণ পরিস্থিতি কেমন?
আলী নাওয়াজ: আমাদের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ আছে; কিন্তু বাস্তবে সর্বোচ্চ ৬০০ কোটি টাকার কার্যকরী মূলধন ঋণ নিয়েছিলাম; যার থেকে ব্যবহার হয়েছিল ১০০ কোটির কম। বর্তমানে ঋণ নেমে এসেছে ২৫০ থেকে ৩০০ কোটির মধ্যে। বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার বিক্রি হয়, তাই বেক্সিমকো ফার্মার কোনো ঋণের চাপ নেই।
আজকের পত্রিকা: বেক্সিমকো ফার্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ, অর্জিত মুনাফা থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের অন্য কোম্পানিকে অর্থ সরবরাহ করা হচ্ছে, এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সিএফও হিসেবে আপনার বক্তব্য কী?
আলী নাওয়াজ: অভিযোগটি আমরাও শুনেছি, যা সত্য নয়। কারণ, এটা সম্ভবও নয়। বেক্সিমকো ফার্মা গ্রুপের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তদুপরি বেক্সিমকো ফার্মা লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত, যেখানে কঠোরভাবে আর্থিক স্বচ্ছতা মনিটর করা হয়।
আজকের পত্রিকা: সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশের ওষুধশিল্প কীভাবে বেড়েছে বলে মনে করেন?
আলী নাওয়াজ: ২০১০ সালের পর থেকে ওষুধশিল্প ধারাবাহিকভাবে ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। শুধু কোভিড-১৯ সময়টা ব্যতিক্রম। দেশের অর্থনীতি বেড়েছে, মানুষের আয় ও জীবনমান উন্নত হয়েছে, উপজেলা পর্যায়েও চিকিৎসাসেবা পৌঁছেছে। ফলে মানুষ ফুল কোর্সে ওষুধ কিনছে। প্রতিবছর বড় কোম্পানিগুলো ২০-৩০টি নতুন ওষুধ বাজারে আনছে। এখন বাজারের আকার প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার, যার ৯৮ শতাংশই স্থানীয় উৎপাদন।
আজকের পত্রিকা: রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান এখনো সীমিত। সমস্যাগুলো কোথায়?
আলী নাওয়াজ: ওষুধ রপ্তানি খুব জটিল প্রক্রিয়া। আফ্রিকার একটি দেশে যেতে হলেও এজেন্ট নিয়োগ, ডসিয়ার তৈরি, রেজিস্ট্রেশন, এমনকি ওষুধ কর্তৃপক্ষের কারখানা পরিদর্শন করতে হয়। অনুমোদন পেতে ছয় মাস থেকে এক বছর লেগে যায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ, প্রায় সাড়ে তিন বছর লেগে যায়। খরচও বিপুল; শুধু মার্কিন নিবন্ধনের ফি মাঝারি কোম্পানির জন্য এক মিলিয়ন ডলারের বেশি। বেক্সিমকো ফার্মা প্রতিবছর লাইসেন্স ও অডিট বজায় রাখতেই দেড় মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে।
আজকের পত্রিকা: বর্তমানে বেক্সিমকো ফার্মার রপ্তানির অবস্থা কী?
আলী নাওয়াজ: আমরা ৬০টির বেশি দেশে প্রায় ২৫০ ধরনের ওষুধ রপ্তানি করি। সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে ২০টি ওষুধের নিবন্ধন আছে এবং ৮টি আমরা রপ্তানি করছি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আয় প্রায় ১৬ মিলিয়ন ডলার। লাভজনক হতে হলে অন্তত ১০-১৫ মিলিয়নের ওপরে আয় করতে হয়; কারণ, খরচ বেশি। তবে একবার ইউএস এফডিএ সার্টিফিকেশন পাওয়া গেলে অন্য দেশে অনুমোদন পাওয়া সহজ হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পর অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও কেনিয়া আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বাজার।
আজকের পত্রিকা: এলডিসি থেকে উত্তরণের পর ওষুধ খাতের জন্য কী চ্যালেঞ্জ আসবে?
আলী নাওয়াজ: সবচেয়ে বড় সুবিধা, এখন আমরা পেটেন্ট ছাড় পাই। ফলে নতুন ওষুধ এলেই দ্রুত উৎপাদন করতে পারি। গ্র্যাজুয়েশনের পর সেটা থাকবে না, আবিষ্কারক কোম্পানির লাইসেন্স লাগবে। ইতিমধ্যে বাজারজাত করা পেটেন্টের ওষুধের জন্য রয়্যালটি দাবি করতে পারে। অনেক দেশ আমাদের জেনেরিক নিতে পারবে না, রপ্তানি কমে যাবে। দামও বাড়বে; কারণ, পেটেন্ট হোল্ডার কোম্পানিকে লাইসেন্স ফি ও রয়্যালটি দিতে হবে; অথবা তাদের নির্ধারিত দামে কাঁচামাল কিনতে হবে। আমরা সরকারকে এসব বিষয়ে জানাচ্ছি এবং শিল্প সমিতি থেকেও আলাপ চলছে। প্রস্তুতি এখনই নিতে হবে।
আজকের পত্রিকা: সামনে বেক্সিমকো ফার্মার প্রধান ফোকাস কী হবে?
আলী নাওয়াজ: বেক্সিমকো ফার্মার মূল দৃষ্টি এখন বায়োলজিকসের দিকে; বিশেষ করে অ্যান্টি ক্যানসার ও অ্যান্টি ডায়াবেটিস ওষুধে। বিশ্বজুড়ে এগুলোই অগ্রাধিকার পাচ্ছে। আমরা চাই, বাংলাদেশে প্রথমেই এসব পণ্য আনতে। পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব নতুন কিছু ওষুধ রেজিস্ট্রেশন করে রাখতে; যাতে বলা যায়, এগুলো এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের আগেই বাজারে এসেছে। এ ছাড়া নোভিস্তা ফার্মা ও সাইনোভিয়া ফার্মা নামক দুটি বহুজাতিক কোম্পানির বাংলাদেশের শেয়ার আমরা কিনে নিয়েছি; যাতে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সহজ হয়।
আরও খবর পড়ুন:
আজকের পত্রিকা: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় এবং শ্রমিক ছাঁটাই হয়। সেই বাস্তবতায় বেক্সিমকো ফার্মার উৎপাদন ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড কীভাবে টিকে আছে?
আলী নাওয়াজ: সত্যি বলতে, বেক্সিমকো ফার্মার জন্য সময়টা ছিল ভয়াবহ। সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে সুনামের ওপর। নামের আগে ‘বেক্সিমকো’ থাকায় অনেক নেতিবাচক প্রচার হয়েছে। অফিস ও ডিপোতে হামলা হয়েছে, ৪-৫টি ডিপো ও প্রধান কার্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি আমাদের আরজেএসসিতে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার অ্যাকসেস বন্ধ রাখা হয়েছিল। ট্রেড লাইসেন্স নবায়নে ছয় সপ্তাহ লেগেছে। এসব নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও গত এক বছরে বেক্সিমকো ফার্মা আরও এগিয়েছে। কারণ, বেক্সিমকো ফার্মা মূলত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতিষ্ঠান। মালিকদের হাতে মাত্র ১৪ শতাংশ শেয়ার, বাকি ৮৬ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। আর কোম্পানির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থেকে আমরা চেষ্টা করেছি ফার্মার উৎপাদন, ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড এবং কর্মসংস্থান সব সময় সচল রাখার। এতে সরকারের প্রশাসনিক সহায়তাও আমরা পেয়েছি। ফলে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বেক্সিমকো ফার্মার প্রবৃদ্ধি হয়েছে। স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, এখন ধীরে ধীরে পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতেও বেক্সিমকো ফার্মা সচল রাখার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।
আজকের পত্রিকা: এত প্রতিকূল অবস্থায়ও কোম্পানি কীভাবে স্থিতিশীল থাকতে পেরেছে?
আলী নাওয়াজ: এর পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, বেক্সিমকো ফার্মার ম্যানেজমেন্ট সব সময় পেশাদারদের হাতেই থেকেছে। আমাদের বোর্ডের সঙ্গে সমঝোতা ছিল, তারা দৈনন্দিন কাজে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। দ্বিতীয়ত, ফার্মার মার্কেটিং টিম মাঠে এই প্রতিকূল সময়ে দ্বিগুণ পরিশ্রম করেছে এবং সবাইকে বুঝিয়েছে, বেক্সিমকো ফার্মা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতিষ্ঠান। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ায় ৮৬ শতাংশ শেয়ার ও বিনিয়োগই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। কোম্পানির উদ্যোক্তাদের হাতে মাত্র ১৪ শতাংশ শেয়ার। তৃতীয়ত, ফার্মার ওষুধের মান আন্তর্জাতিক মানের; তাই রোগী ও চিকিৎসকদের আস্থা সব সময় একটা বড় শক্তি হিসেবে কাজ করে। এর জন্য গত এক বছরে একজন কর্মীও চাকরি ছাড়েননি, ছাঁটাইয়ের প্রশ্নই ওঠেনি।
আজকের পত্রিকা: বেক্সিমকো গ্রুপের বিশাল ব্যাংকঋণ নিয়ে নানা অভিযোগ আছে। বেক্সিমকো ফার্মার ঋণ পরিস্থিতি কেমন?
আলী নাওয়াজ: আমাদের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ আছে; কিন্তু বাস্তবে সর্বোচ্চ ৬০০ কোটি টাকার কার্যকরী মূলধন ঋণ নিয়েছিলাম; যার থেকে ব্যবহার হয়েছিল ১০০ কোটির কম। বর্তমানে ঋণ নেমে এসেছে ২৫০ থেকে ৩০০ কোটির মধ্যে। বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার বিক্রি হয়, তাই বেক্সিমকো ফার্মার কোনো ঋণের চাপ নেই।
আজকের পত্রিকা: বেক্সিমকো ফার্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ, অর্জিত মুনাফা থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের অন্য কোম্পানিকে অর্থ সরবরাহ করা হচ্ছে, এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সিএফও হিসেবে আপনার বক্তব্য কী?
আলী নাওয়াজ: অভিযোগটি আমরাও শুনেছি, যা সত্য নয়। কারণ, এটা সম্ভবও নয়। বেক্সিমকো ফার্মা গ্রুপের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তদুপরি বেক্সিমকো ফার্মা লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত, যেখানে কঠোরভাবে আর্থিক স্বচ্ছতা মনিটর করা হয়।
আজকের পত্রিকা: সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশের ওষুধশিল্প কীভাবে বেড়েছে বলে মনে করেন?
আলী নাওয়াজ: ২০১০ সালের পর থেকে ওষুধশিল্প ধারাবাহিকভাবে ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। শুধু কোভিড-১৯ সময়টা ব্যতিক্রম। দেশের অর্থনীতি বেড়েছে, মানুষের আয় ও জীবনমান উন্নত হয়েছে, উপজেলা পর্যায়েও চিকিৎসাসেবা পৌঁছেছে। ফলে মানুষ ফুল কোর্সে ওষুধ কিনছে। প্রতিবছর বড় কোম্পানিগুলো ২০-৩০টি নতুন ওষুধ বাজারে আনছে। এখন বাজারের আকার প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার, যার ৯৮ শতাংশই স্থানীয় উৎপাদন।
আজকের পত্রিকা: রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান এখনো সীমিত। সমস্যাগুলো কোথায়?
আলী নাওয়াজ: ওষুধ রপ্তানি খুব জটিল প্রক্রিয়া। আফ্রিকার একটি দেশে যেতে হলেও এজেন্ট নিয়োগ, ডসিয়ার তৈরি, রেজিস্ট্রেশন, এমনকি ওষুধ কর্তৃপক্ষের কারখানা পরিদর্শন করতে হয়। অনুমোদন পেতে ছয় মাস থেকে এক বছর লেগে যায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ, প্রায় সাড়ে তিন বছর লেগে যায়। খরচও বিপুল; শুধু মার্কিন নিবন্ধনের ফি মাঝারি কোম্পানির জন্য এক মিলিয়ন ডলারের বেশি। বেক্সিমকো ফার্মা প্রতিবছর লাইসেন্স ও অডিট বজায় রাখতেই দেড় মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে।
আজকের পত্রিকা: বর্তমানে বেক্সিমকো ফার্মার রপ্তানির অবস্থা কী?
আলী নাওয়াজ: আমরা ৬০টির বেশি দেশে প্রায় ২৫০ ধরনের ওষুধ রপ্তানি করি। সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে ২০টি ওষুধের নিবন্ধন আছে এবং ৮টি আমরা রপ্তানি করছি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আয় প্রায় ১৬ মিলিয়ন ডলার। লাভজনক হতে হলে অন্তত ১০-১৫ মিলিয়নের ওপরে আয় করতে হয়; কারণ, খরচ বেশি। তবে একবার ইউএস এফডিএ সার্টিফিকেশন পাওয়া গেলে অন্য দেশে অনুমোদন পাওয়া সহজ হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পর অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও কেনিয়া আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বাজার।
আজকের পত্রিকা: এলডিসি থেকে উত্তরণের পর ওষুধ খাতের জন্য কী চ্যালেঞ্জ আসবে?
আলী নাওয়াজ: সবচেয়ে বড় সুবিধা, এখন আমরা পেটেন্ট ছাড় পাই। ফলে নতুন ওষুধ এলেই দ্রুত উৎপাদন করতে পারি। গ্র্যাজুয়েশনের পর সেটা থাকবে না, আবিষ্কারক কোম্পানির লাইসেন্স লাগবে। ইতিমধ্যে বাজারজাত করা পেটেন্টের ওষুধের জন্য রয়্যালটি দাবি করতে পারে। অনেক দেশ আমাদের জেনেরিক নিতে পারবে না, রপ্তানি কমে যাবে। দামও বাড়বে; কারণ, পেটেন্ট হোল্ডার কোম্পানিকে লাইসেন্স ফি ও রয়্যালটি দিতে হবে; অথবা তাদের নির্ধারিত দামে কাঁচামাল কিনতে হবে। আমরা সরকারকে এসব বিষয়ে জানাচ্ছি এবং শিল্প সমিতি থেকেও আলাপ চলছে। প্রস্তুতি এখনই নিতে হবে।
আজকের পত্রিকা: সামনে বেক্সিমকো ফার্মার প্রধান ফোকাস কী হবে?
আলী নাওয়াজ: বেক্সিমকো ফার্মার মূল দৃষ্টি এখন বায়োলজিকসের দিকে; বিশেষ করে অ্যান্টি ক্যানসার ও অ্যান্টি ডায়াবেটিস ওষুধে। বিশ্বজুড়ে এগুলোই অগ্রাধিকার পাচ্ছে। আমরা চাই, বাংলাদেশে প্রথমেই এসব পণ্য আনতে। পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব নতুন কিছু ওষুধ রেজিস্ট্রেশন করে রাখতে; যাতে বলা যায়, এগুলো এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের আগেই বাজারে এসেছে। এ ছাড়া নোভিস্তা ফার্মা ও সাইনোভিয়া ফার্মা নামক দুটি বহুজাতিক কোম্পানির বাংলাদেশের শেয়ার আমরা কিনে নিয়েছি; যাতে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সহজ হয়।
আরও খবর পড়ুন:
আধুনিক ব্যাংকিং সেবা প্রদানের প্রত্যয় নিয়ে পূবালী ব্যাংক পিএলসির টঙ্গী শিল্প এলাকা উপশাখায় সিআরএম বুথ উদ্বোধন করা হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক আজিজুর রহমান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সিআরএম বুথটি উদ্বোধন করেন।
১৫ মিনিট আগেতথ্যপ্রযুক্তির বর্তমান সময়ে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের ভালো সম্ভাবনা থাকলেও নানা কারণে বাংলাদেশ এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এসব সমস্যার মধ্যে সহায়ক নীতিমালার অনুপস্থিতি, ব্যবহারকারীদের আস্থাহীনতা, অপ্রতুল অবকাঠামো, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সমন্বয়হীনতা এবং ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির দ্রুত মূল্য বৃদ্ধিই বড়।
২ ঘণ্টা আগেবেসরকারি খাতে নতুন বিনিয়োগ না বাড়ায় এবং ঋণের চাহিদা কমে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোয় অলস টাকার পরিমাণ দ্রুত বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৫ সালের জুন শেষে দেশের ৬১টি তফসিলি ব্যাংকে উদ্বৃত্ত টাকার পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৬৩৯ কোটি টাকা। এই সময়ে ব্যাংক খাতে মোট তারল্য...
২০ ঘণ্টা আগেদেশের শীর্ষস্থানীয় নিত্যব্যবহার্য ও ভোগ্যপণ্য (এফএমসিজি) উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের (ইউবিএল) নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে রুহুল কুদ্দুস খানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি আগামী ১ নভেম্বর থেকে এই দায়িত্ব নেবেন।
২০ ঘণ্টা আগে