Ajker Patrika

রাজশাহীতে খাদ্য বিভাগের গুদামে নিম্নমানের চাল, মিলছে না সরবরাহকারী

  • এসব লালচে চাল বাজারে বিক্রি হয় গোখাদ্য হিসেবে।
  • ২০-২৫ টাকায় এসব চাল কিনে ৪৯ টাকা দরে সরকারি গুদামে সরবরাহ।
 রিমন রহমান, রাজশাহী
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীতে খাদ্য বিভাগের বিভিন্ন গুদামে পচা ও নিম্নমানের চাল সরবরাহ করা হয়েছে। গত জুন ও জুলাই মাসে চালগুলো গুদামে ঢোকানো হয়েছে। এর মধ্যে সম্প্রতি দুটি গুদামে নিম্নমানের চাল থাকার বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে তদন্তও শুরু হয়েছে। তদন্তের সময় গুদামগুলোয় সরবরাহের রেজিস্টার ও পরিদর্শন বহি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে খাওয়ার অনুপযোগী এসব চাল সরবরাহকারীদের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে না।

খাদ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী সদর, নওহাটা, তানোর, কামারগাঁও, ভবানীগঞ্জ, মোহনপুর, দুর্গাপুর, পুঠিয়া, বাঘা, চারঘাট, গোদাগাড়ীর রেলবাজার ও খেতুরে খাদ্য বিভাগের ১২টি গুদাম বা এলএসডি রয়েছে। এসব গুদাম থেকে খাদ্য বিক্রি ও বিতরণ কর্মসূচির আওতায় প্রতি মাসে ৯৮ হাজার ১৬৬ জন উপকারভোগীকে চাল সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে বাগমারার ভবানীগঞ্জ ও দুর্গাপুর খাদ্যগুদামে নিম্নমানের চাল পাওয়া গেছে।

খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ আগস্ট জেলার দুর্গাপুর খাদ্যগুদামে অভিযান চালান ইউএনও সাবরিনা শারমিন। এ সময় তিনি খাওয়ার অনুপযোগী ১৩২ বস্তা চাল জব্দ করেন। পরে ৪ সেপ্টেম্বর ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামেও অভিযান চালান বাগমারার ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম। তখন তিনি পচা চাল পান। গুদামে থাকা ২ হাজার ৭০০ টন চালের ৮০ শতাংশই খাওয়ার অনুপযোগী।

খাদ্য বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, রাজনৈতিক প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি বিভিন্ন এলাকা থেকে ২০-২৫ টাকায় এসব নিম্নমানের চাল কিনেছেন। এরপর এসব চাল তাঁরা সরকারি গুদামে ৪৯ টাকা দরে সরবরাহ করেছেন। এই চাল লালচে; বাজারে এগুলো গোখাদ্য হিসেবে বিক্রি করা হয়। সেই চাল সরবরাহ করা হয়েছে গুদামে। এই কাজে খাদ্যগুদামের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশ রয়েছে। এর মাধ্যমে তাঁরা বিপুল টাকা মুনাফা করেছেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে ৫ সেপ্টেম্বর ভবানীগঞ্জ গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক। তবে দুর্গাপুর গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। রাজশাহী জেলা প্রশাসন ও খাদ্য বিভাগ আলাদা তদন্ত কমিটি করেছে।

জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি গুদামে নথিপত্র পাচ্ছে না। ফলে সরবরাহকারীদের পরিচয় জানা যাচ্ছে না। বিষয়টি স্বীকার করে বাগমারার ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘গুদামে চাল সরবরাহের রেজিস্টার বা চালের মান যাচাই-বাছাইয়ের পরিদর্শন বহি নেই। ফলে সরবরাহকারীদের নাম-ঠিকানা জানা যাচ্ছে না। সেগুলো জানার চেষ্টা চলছে।’

দুই গুদামে চালের মান পরীক্ষাসহ সার্বিক তদন্তে খাদ্য বিভাগ যে তদন্ত কমিটি করেছে, তার আহ্বায়ক পবার নওহাটা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুন্নবী। তিনি বলেন, ‘দুই গুদামের জন্য তদন্ত কমিটি আলাদা। তবে দুটিতেই আমি আহ্বায়ক। আমরা কাজ করছি।’

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওমর ফারুক বলেন, ‘সিলগালা করা গুদামগুলো খাদ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হলে নিম্নমানের চাল আলাদা করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডাকসুতে শিবিরের জয়ে উদ্বেগ শশী থারুরের, জবাব দিলেন মেঘমল্লার

শুক্রবার দুপুরের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা সম্ভব: জাকসু নির্বাচন কমিশন

‘বেয়াদবি ছুটায় দেব’: সরি বলতে অসুবিধা নেই, বললেন সেই জামায়াত নেতা

স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির হোতা মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু গ্রেপ্তার

নতুন ট্রেন্ড ন্যানো ব্যানানা, নিজের থ্রিডি ফিগারিন বানাবেন যেভাবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত