Ajker Patrika

উত্তরের বিভিন্ন এলাকা

অন্ধকারে মোমবাতির আলোয় হলো এসএসসি পরীক্ষা

আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭: ০৮
মোমবাতির আলোতে পরীক্ষা দিচ্ছে ঠাকুরগাঁও সদরের গড়েয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোমবাতির আলোতে পরীক্ষা দিচ্ছে ঠাকুরগাঁও সদরের গড়েয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রথম দিনেই ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষার্থীরা ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে ভোগান্তির শিকার হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় কয়েকটি কেন্দ্রে মোমবাতির আলোয় পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে পঞ্চগড়ের দেবিগঞ্জ উপজেলায়। এদিকে রংপুরের গঙ্গাচড়ায়ও সকাল থেকে আবহওয়া খারাপ থাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগান্তির শিকার হয়েছে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে বিদ্যুৎ না থাকা ও খারাপ আবহাওয়া থাকায় অন্ধকারের মধ্যে পরীক্ষা দেয় অনেক শিক্ষার্থী। অনেকে বেশি অন্ধকারের কারণে পরীক্ষাকেন্দ্রে খাতা নিয়ে বসে ছিল বলে জানা গেছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁওয়ে আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছানোর পথে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ছিল পরিবহন সংকটও।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে সরেজমিনে দেখা যায়, পরীক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে কেন্দ্রে প্রবেশ করছে। পরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় মোমবাতির আলোয় পরীক্ষা দেয় তারা। কেন্দ্রের সচিব জিয়াউর রহমান জানান, ২২৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে একজন অনুপস্থিত ছিল।

পাশের গড়েয়া হাইস্কুল পরীক্ষাকেন্দ্রে ৪৩৬ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে, সেখানে সাতজন অনুপস্থিত ছিল। এখানেও বিদ্যুৎ না থাকায় স্বল্প আলোতে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী লামিয়া অভিযোগ করে বলে, ‘হলে কোনো আলোর ব্যবস্থা ছিল না, তাই সঠিকভাবে লিখতে পারিনি। অনেক পরীক্ষার্থী অন্ধকারে পরীক্ষা দিতে গিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।’

সালান্দর আলিয়া মাদ্রাসা, উত্তর হরিহরপুর আলিম মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে একই অবস্থা দেখা গেছে। শিক্ষকেরা জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় ও অন্ধকার পরিবেশে পরীক্ষা চলায় শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহীন আকতার বলেন, শহরের একটি ট্রান্সফর্মার বিকল হওয়ায় প্রথমে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল, তবে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় বিকল্প ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ এখনো স্থিতিশীল হয়নি, তাই আমরা পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোতে মোমবাতির আলোতে পরীক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।’

ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম লুৎফুল হাসান সরকার জানান, প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির কারণে বিদ্যুতের কিছু লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু থাকলেও অনেক জায়গায় তা বন্ধ।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁওয়ে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৭ হাজার ৯৭৭ জন, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ হাজার ৮০৮ জন ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ হাজার ৯৩৯ জন শিক্ষার্থী চলমান এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

দেবিগঞ্জ

বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে পঞ্চগড়ের দেবিগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ এম পি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কালীগঞ্জ সুকাতু প্রধান উচ্চবিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা ভোগান্তির শিকার হয়েছে। পরীক্ষার হলে পর্যাপ্ত আলো না থাকায় মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষা দিতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।

জানা গেছে, উপজেলায় সকাল থেকে বৃষ্টি ও ঝড়ের সঙ্গে লোডশেডিং শুরু হয়। পরে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোতে অন্ধকার কক্ষে শিক্ষার্থীদের মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষা দিতে হয়।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ সুকাতু প্রধান উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন রায় বলেন, ‘সকাল থেকে প্রচুর বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে লোডশেডিং শুরু হয়। তখন শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসা মোমবাতি জ্বালিয়েছে তারা। তবে আমরা দ্রুত জেনারেটরের ব্যবস্থা করেছি। পরীক্ষায় কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। এ কেন্দ্রে ৯টি বিদ্যালয়ের মোট ৫২১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এবং শিক্ষার্থীরা খুব সুন্দরভাবেই তাদের প্রথম পরীক্ষা সম্পন্ন করে।’

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) পঞ্চগড় সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, আজ সকাল থেকে বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো বাতাসে এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। এতে পরীক্ষাকেন্দ্রেও কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ ছিল না। ফলে কেন্দ্র অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকায় মোমবাতি জ্বালানো হয়েছিল। অল্প সময়ের মধ্যে জেনারেটর ব্যবস্থা করে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এবারের পঞ্চগড় জেলায় এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পর্যায়ের মোট পরীক্ষার্থী ১৫ হাজার ৭৬১ জন।

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারের মধ্যে পরীক্ষা দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারের মধ্যে পরীক্ষা দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গঙ্গাচড়া

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার হাজী দেলওয়ার বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও গঙ্গাচড়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুৎ নেই, অন্ধকারের মধ্যে পরীক্ষা দিচ্ছে পরীক্ষার্থীরা। অনেকে আবার অন্ধকারের কারণে পরীক্ষার খাতা হাতে নিয়ে বসে আছে, প্রায় ৪৫ মিনিট পর আসে বিদ্যুৎ।

কেন্দ্রের সামনে থাকা উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ কোলকোন্দ থেকে আসা মিজানুর রহমান নামের এক অভিভাবক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ভাগনে পরীক্ষা দিচ্ছে। আজ বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা। বিদ্যুৎ ছিল না ৪০-৫০ মিনিট। আকাশ খারাপ থাকায় অন্ধকার হয়েছিল। সেন্টারে আলাদা করে বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই। তাই অন্ধকারে পরীক্ষা দিচ্ছে তারা। আমরা চাই এটা বিবেচনায় সময় বাড়িয়ে দেওয়া হোক।’

গঙ্গাচড়া মধ্যপাড়ার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমার মেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা হয়। কেন্দ্রগুলোতে আগে থেকে বিকল্প ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। তাহলে এ সমস্যা হতো না।’

হাজী দেলওয়ার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের কেন্দ্রসচিব সাইয়েদুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় আমরা তাৎক্ষণিকভাবে বিকল্প ব্যবস্থা করেছি।’

রংপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতি-২-এর আওতাধীন গঙ্গাচড়া জোনাল অফিসের ডিজিএম আইয়ুব আলী বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে ৩৩ কেভি লাইন ফল্ট করে। আমরা তা তাৎক্ষণিক ঠিক করেছি। সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, ‘কেন্দ্রগুলোতে বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিছু কেন্দ্রে আগে থেকে বিকল্প ব্যবস্থা ছিল। আশা করি, পরে আর কোনো সমস্যা হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। ছবি: সংগৃহীত
বাসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বাড্ডায় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট কাজ করছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ৮টা ৩৫ মিনিটের দিকে অছিম পরিবহনের মিরপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়ার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার মো. শাজাহান শিকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শী শামীম জানান, উত্তর বাড্ডার এএমজেড হাসপাতালের সামনের সড়কে বাসটিতে আগুন দেওয়া হয়।

বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিরুল ইসলাম বলেন, কারা বাসে আগুন দিয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাচ্ছে এবং বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

এর আগে, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৮টার দিকে বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকায় একটি চলন্ত যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সে সময় ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘চিকিৎসা না পেয়ে’ গর্ভের সন্তানের মৃত্যু: চট্টগ্রামে ৪ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় এক নারীর গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগে চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা সাত্তারের আদালতে ভুক্তভোগী নারী নাসরিন আক্তার মামলার আরজি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সিরাজুন নূর, হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) মো. নুরুল হক, পরিচালক (মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স) এ এফ এম আশরাফুল করিম এবং ডেপুটি ডিরেক্টর (অ্যাডমিন-আইসিইউ) মো. আবু সাইদ চৌধুরী।

বাদীপক্ষের আইনজীবী রিগ্যান আচার্য্য জানান, মামলার আবেদনের পর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং মামলাটি তদন্তের জন্য ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদেশ দেন। আদালত আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন।

মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকালে প্রসবব্যথা নিয়ে নাসরিন আক্তারকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন তাঁর গর্ভকাল ছিল ৩৭ সপ্তাহ। আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্ট অনুযায়ী গর্ভস্থ সন্তান সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। ভর্তির পর রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা তাৎক্ষণিক জরুরি চিকিৎসা দেননি বলে অভিযোগ করা হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে রেখে দেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা। রোগীর স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলেও আলট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়, এমন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, দীর্ঘ সময় লেবার রুমে ফেলে রাখার কারণে রোগীর রক্তক্ষরণ বেড়ে যায় এবং অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। পরে একজন সিনিয়র কনসালট্যান্ট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে জরুরি অস্ত্রোপচারের নির্দেশ দেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই নারী মৃত সন্তান প্রসব করেন। পরে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে মায়ের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়।

বাদীপক্ষের দাবি, সময়মতো সঠিক ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হলে গর্ভস্থ শিশুটিকে বাঁচানো যেত। ঘটনার পর দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি; বরং বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয় এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে দীর্ঘদিন অপেক্ষায় রাখা হয়।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক মো. নুরুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার বিষয়টি জানলাম। তবে ওই রোগীর কাগজপত্র না দেখে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি বাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, এটা রীতিমতো অবান্তর: চবির উপ-উপাচার্য

চবি প্রতিনিধি 
চবিতে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চবিতে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাকিস্তানি বাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, এটি অবান্তর বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ রোববার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য দপ্তরে ‘মুক্তচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের দিন নির্ধারিত ছিল। পাকিস্তানি বাহিনী দেশ থেকে পালানোর জন্য চেষ্টা করছিল, সে সময় তারা জীবিত থাকবে—না মৃত থাকবে, সে বিষয়ে কোনো ফয়সালা হয়নি, সে সময় পাকিস্তানি যোদ্ধারা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, এটি আমি মনে করি রীতিমতো অবান্তর।’

এ সময় তিনি ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর কী হয়েছিল, তা জানতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে স্বাধীন নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করার অনুরোধ করেন।

মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এ দেশকে আরেকটা দেশের করদরাজ্যে পরিণত করার জন্য বুদ্ধিজীবীদের ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা করা হয়েছে। আমরা আজ পর্যন্ত জহির রায়হানকে খুঁজে পাইনি। যদি জহির রায়হানকে খুঁজে পাওয়া যেত, সত্যিকার ইতিহাস আমরা পেতাম।’

মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান আরও বলেন, ‘গতকাল টিভিতে দেখলাম, মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান (সদ্য জামায়াতে যোগ দেওয়া সাবেক এমপি মেজর অব. আখতারুজ্জামান) বক্তব্য দিচ্ছেন। তাঁকে যখন প্রশ্ন করা হলো যে আপনি তো বলতেন, ১৯৭১ সালে লাখ লাখ লোক শাহাদাত বরণ করেছে। এখন আপনি এর বিপরীত রাজনীতিতে যুক্ত হলেন, এটি কেন?

মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান বললেন, ‘এগুলো হচ্ছে রেটরিক (আলংকারিক) বক্তব্য। এগুলো তো সত্য নয়। রেটরিক বক্তব্য আমরা জাতির সামনে শুনতে চাই না। আমরা রিয়েলিটি চাই। আমরা সত্যিকারভাবে বাংলাদেশে কী ঘটেছিল ১৯৭১ সালে, সেই ঘটনায় কারা কারা শহীদ হয়েছে, সেই তথ্য আমরা জানতে চাই। কারা কারা হত্যা করেছে, সেই তথ্য এখন পর্যন্ত আমাদের জানা হয়নি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার। সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও চবি জাদুঘরের পরিচালক ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান।

বক্তব্য দেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ছাত্র উপদেষ্টা, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, চাকসুর সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী।

এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে একটি র‍্যালি শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।

এ দিকে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নিয়ে উপ-উপাচার্যের (একাডেমিক) মন্তব্য নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এ বিষয়ে কথা বলতে অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪২
আনিস আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
আনিস আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

সিনিয়র সাংবাদিক ও টক শোর আলোচিত মুখ আনিস আলমগীরকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবির প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম।

এর আগে রাত ৮টার দিকে ধানমন্ডির একটি জিম থেকে আনিস আলমগীরকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত ৯টা) তিনি ডিবি কার্যালয়ে ছিলেন।

আনিস আলমগীরকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ডিবির প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁর সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে আমরা বিস্তারিত জানাব। তাঁর সঙ্গে এখনো কথা বলিনি, আমি ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলব, তারপর বিস্তারিত বলতে পারব।’

সাংবাদিক আনিস আলমগীর দৈনিক আজকের কাগজসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে টেলিভিশন টক শোতে নানা বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় ছিলেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত