Ajker Patrika

বেদনাকে সঙ্গী করে উদ্‌যাপন

  • যুদ্ধবিরতির খবরে গাজা উপত্যকায় উল্লাস
  • এ খবরে তেল আবিবে রাস্তায় নেমে আসেন অনেকে
  • আমার কোনো বাড়ি নেই। আমি দেড় বছর ধরে রাস্তায় আছি’: ডেনিয়েল আবু তাবিখ
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আনন্দ উদ্‌যাপনের মধ্যেই বিষাদ নিয়ে ঘরে ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা। গতকাল গাজার নুসাইরাত এলাকায়। ছবি: এএফপি
আনন্দ উদ্‌যাপনের মধ্যেই বিষাদ নিয়ে ঘরে ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা। গতকাল গাজার নুসাইরাত এলাকায়। ছবি: এএফপি

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস বন্দিবিনিমিয় এবং যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পর থেকে উদ্‌যাপন শুরু হয়েছে। ইসরায়েলিরা বন্দী ফিরে পাবে এই আনন্দে উদ্‌যাপন করছে। অন্যদিকে হামলা বন্ধের আনন্দ উদ্‌যাপন করছে গাজাবাসী। তবে তাঁদের এই উদ্‌যাপনের মধ্যে ছড়িয়ে রয়েছে বিষাদ।

গাজা যুদ্ধে দুই বছরে স্বজন হারিয়েছেন অনেকেই। বিষাদ ছুঁয়েছে তাঁদের। এমনই একজন ১৬ বছরের সন্তান হারানো বাবা উম্ম হাসান। তিনি বলেন, ‘আজ সকালে যখন আমরা হামাস ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি হওয়ার খবর শুনি, এটা একই সঙ্গে আনন্দ এবং বেদনার অনুভূতি বয়ে আনে। এই আনন্দে তরুণ-বৃদ্ধ সবাই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিল। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন তাঁরা নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ করছিলেন। অনেকেই এটা ভেবে মূর্ছা যাচ্ছিলেন, হারানো স্বজনকে ছাড়া কীভাবে বাড়ি ফিরবেন।’ তিনি আরও বলেন, যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন তাঁরা ব্যাপকভাবে বেদনাহত হয়েছেন এবং এটা ভেবে হতবিহ্বল হচ্ছিলেন, কীভাবে তাঁরা বাড়ি ফিরবেন।

গত বুধবার গাজা শান্তিচুক্তি ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটি এর অনুমোদনও দিয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী, জীবিত ২০ ইসরায়েলি জিম্মকে মুক্তি দেবে হামাস। এ ছাড়া জিম্মিদের মধ্যে যারা মারা গেছে, তাদের লাশ ফেরত দেবে হামাস। এর বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে যাবজ্জীবন জেল খাটতে থাকা ২৫০ ফিলিস্তিনিকে ফেরত দেওয়া হবে। এ ছাড়া যুদ্ধ চলাকালে আটক ১ হাজার ৭০০ জনকে ফেরত দেবে ইসরায়েল। গাজা যুদ্ধের ইতিটানতে ট্রাম্প যে ২০টি ধাপ তুলে ধরেছেন, এর প্রথমে বন্দিবিনিময় হবে। এর পরের ধাপগুলো বাস্তবায়নে আবারও আলোচনা হবে।

এদিকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর, অনেক স্থানে সাংবাদিকদের সে খবর পৌঁছে দিতে দেখা যায়। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার অনেক স্থানে ইন্টারনেট না থাকায় এভাবেই খবর পৌঁছে দেন সাংবাদিকেরা। এ সময় সাংবাদিকদের নিয়ে আনন্দে মেতে উঠতে দেখা যায় অনেককে।

এই দুই বছরের যুদ্ধ সম্পর্কে গাজার জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরের ডেনিয়েল আবু তাবিখ বলেন, ‘আমরা যাঁরা সাধারণ মানুষ কষ্ট পেয়েছি, তাঁরা ভয়ংকর ভোগান্তির মধ্য দিয়ে গেছি। যাঁরা এসব চুক্তি করছেন, তাঁরা এ বেদনা বুঝতে পারবেন না। যে নেতারা বিদেশে আরামে বসে কথা বলছেন, তাঁরা বুঝতে পারবেন না গাজায় আমরা কেমন কষ্টের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার কোনো বাড়ি নেই। আমি দেড় বছর ধরে রাস্তায় আছি।’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে হঠাৎই ইসরায়েলে হামলা করে হামাস। ওই হামলায় অন্তত ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি মারা যায়। এ ছাড়া ২৫১ জন ইসরায়েলিকে বন্দী করে হামাস। সেই হামলার জবাব ও জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে গাজায় ৭ অক্টোবরই হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর থেকে সেই আগ্রাসন চলছেই। গত দুই বছরে গাজায় প্রায় ৬৮ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের অধিকাংশ নারী ও শিশু।

এদিকে হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতিতে গাজাবাসীর মতো আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠেছেন ইসরায়েলিরা। যুদ্ধবিরতির চুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তেল আবিবে রাস্তায় নেমে আসেন অনেকে। ফিলিস্তিনিদের মতো তাঁদেরও নাচতে দেখা যায়। তবে অনেক ইসরায়েলির মধ্যেও বাজছে বিষাদের সুর। কারণ অনেকেই স্বজন হারিয়েছেন। তাই এ যুদ্ধের অবসান তাঁরাও চাইছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিসিএসে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর নিয়ে প্রশ্ন, নেই মুক্তিযুদ্ধ

যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত ও নিখোঁজ বহু

‘কারা লুঙ্গি তুলে চেক করে মানুষ মেরেছে, তা সবারই জানা’

স্বামীকে হত্যার পর ইয়াবা সেবন করে লাশ টুকরো করেন স্ত্রী ও প্রেমিক

শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম মারা গেছেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত