Ajker Patrika

ভুয়া চিকিৎসক

সম্পাদকীয়
ভুয়া চিকিৎসক

একজন ভুয়া চিকিৎসককে এক মাসের কারাদণ্ড দিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। খবরটি হয়তো বেশির ভাগ মানুষের চোখ এড়িয়ে গেছে। নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা সেন্ট্রাল হাসপাতালে অভিযান চালানোর পর এই ভুয়া চিকিৎসকের সন্ধান পাওয়া যায়। দারুণ কর্মবীর তিনি। এক বছর ধরে ভদ্রলোক এই হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। ডাক্তারি-বিদ্যার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না থাকলেও একাধারে দাঁতের, গলার এবং পেটের চিকিৎসাসহ নানা ধরনের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছিলেন রোগীদের।

কয়েকটি প্রশ্ন এসে ভিড় করছে মাথায়। এ রকম অনৈতিক একটি কাজ করার পরও একজন মানুষের কেন মাত্র এক মাস কারাদণ্ড হবে, সেটা বোঝা গেল না। জেল থেকে বেরিয়ে তিনি এমবিবিএস ছাপিয়ে আরও বড় কোনো ডিগ্রি গলায় ঝুলিয়ে নতুন করে ডাক্তারি শুরু করে দেবেন কি না, তা কে জানে! বান্দুরার মানুষ নাহয় এখন জানবে এই লোক ভুয়া চিকিৎসক, কিন্তু দেশের অন্য কোনো এলাকায় গিয়ে যদি তিনি জাঁকিয়ে বসেন, তার দায় কে নেবে?

একটি হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবেই তিনি চিকিৎসা দিয়ে চলছিলেন। তার মানে ওই হাসপাতালে কোনো না কোনোভাবে তিনি নিয়োগ পেয়েছিলেন। তাঁকে যখন নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তখন কি তাঁর সম্পর্কে কোনো খবর নেওয়া হয়নি? নিবন্ধন না থাকা সত্ত্বেও কী করে হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসা করে যান তিনি? যাঁরা তাঁকে নিয়োগ দিয়েছিলেন, তাঁদের কি জবাবদিহি করতে বলা হয়েছে?

অসুস্থ হলেই মানুষ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়। একজন ভালো চিকিৎসক তাঁর পড়াশোনা ও অভিজ্ঞতার আলোকে রোগীর চিকিৎসা করেন। চিকিৎসাবিজ্ঞান খুবই স্পর্শকাতর এবং গভীর একটি বিষয়। অনেক খাটাখাটনির পরই কেবল এ বিষয়ে ডিগ্রি নেওয়া যায়। মানুষের সেবার অঙ্গীকার করেই চিকিৎসকেরা তাঁদের কাজ শুরু করেন। কিন্তু সেই অঙ্গীকার ভঙ্গ করার নজিরও কম নয়। হাসপাতালকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মতো পরিচালনা করার মতো খবরও মাঝে মাঝে শোনা যায়।

শোনা যায়, চিকিৎসকদের একটি নির্দিষ্ট টার্গেট দিয়ে দেওয়া হয়, সেটা পূরণ করতে না পারলে তাঁর সম্মানীতেও সেই আঘাত এসে লাগে। ওষুধ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে অনৈতিক সুযোগ নিয়ে অনেক চিকিৎসকই তাঁদের ওষুধ লিখে দেন বলে অভিযোগ আছে। রোগীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করার অভিযোগও আছে অনেক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। কিন্তু ত্যাগী চিকিৎসকের সংখ্যা কম নয়। এমন অনেক চিকিৎসক আছেন, যাঁদের সঙ্গে কথা বললেই অর্ধেক রোগ ভালো হয়ে যায়।

এই চিত্রের সঙ্গে যুক্ত করুন ভুয়া চিকিৎসকের গল্পটা। এত পেশা থাকতে কেন একজন মানুষকে চিকিৎসা পেশার বারোটা বাজানোর পথ বেছে নিতে হবে, তা বোঝা যাচ্ছে না। কতটা বুকের পাটা থাকলে একজন অনভিজ্ঞ মানুষ নির্দ্বিধায় রোগীকে অপারেশনও করে থাকেন, তা সাদা কথায় বোঝার উপায় নেই।

এ ধরনের ভুয়া চিকিৎসকদের হওয়া উচিত কঠোর সাজা। আমাদের স্বাস্থ্যসেবায় অনেক রকম গলদ আছে। সেগুলো কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি ভুয়ারা যেন জাঁকিয়ে বসতে না পারে, তার ব্যবস্থাও করা দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনাল চালুতে বাধা, রাজস্ব ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েন

ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে এবি ব্যাংক

বৈপ্লবিক পরিবর্তন করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগ: যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা চলতি সপ্তাহে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত