Ajker Patrika

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ০৭
চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সেকেন্ড ইন কমান্ড রায়হান। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সেকেন্ড ইন কমান্ড রায়হান। ছবি: সংগৃহীত

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—গুলি করে হত্যার তিন দিন আগে মোবাইল ফোনে এমন হুমকি দেওয়া হয়েছিল ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলাকে (৪৩)। প্রতিপক্ষ চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সেকেন্ড ইন কমান্ড রায়হান এই হুমকি দিয়েছিলেন বলে বাবলার বাবার অভিযোগ।

হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল বুধবার রাতে বাবলার বাবা আবদুল কাদের চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর চালিতাতলী এলাকার খন্দকারপাড়ার বাড়িতে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

বিএনপির গণসংযোগের সময় গুলিতে নিহত সরোয়ার হোসেন বাবলার লাশ আজ বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিএনপির গণসংযোগের সময় গুলিতে নিহত সরোয়ার হোসেন বাবলার লাশ আজ বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

এর আগে গতকাল সন্ধ্যার পর নগরীর চালিতাতলী হাজির পোল এলাকায় চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগের সময় পেছন থেকে গুলিতে বাবলার মৃত্যু হয়।

আবদুল কাদের জানান, তাঁর ছেলেকে গুলি করে হত্যার আগে দুবার ‘খতম’ করার হুমকি দিয়েছিল প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপ। সাত দিন ও তিন দিন আগে এসব হুমকি এসেছিল। বাবলা এ বিষয়ে সতর্ক থাকলেও একেবারে নিজ এলাকায় ঢুকে এভাবে গুলি করার বিষয়টি তিনি তেমন আমলে নেননি। কারণ, হুমকি এসেছিল মোবাইল ফোনে।

বাবলার ছোট ভাই মো. আজিজ বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে আমার ভাইকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছিল হত্যাকারীরা। ওরা বলেছিল আমার ভাইয়ের সময় আর এক সপ্তাহ আছে। ওরা একাধিকবার এক সপ্তাহ সময় আছে জানিয়ে হুমকি দিত। হুমকির ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় তারা আমার ভাইকে হত্যা করল।’

আজিজ কাতারপ্রবাসী ছিলেন। দুই বছর আগে দেশে আসেন। এলাকায় নতুন ভবন করার সময় ইট ও বালু সরবরাহের কাজ করেন। এ কারণে সাজ্জাদদের রোষানলে পড়েন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ শক্তি হিসেবে সাজ্জাদদের সামনে ছিলেন সরোয়ার হোসেন বাবলা।

এদিকে সরোয়ারের বাবা আবদুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, তাঁর ছেলেকে প্রায়ই হুমকি দিতেন বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী, তাঁর সহযোগী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ, মো. রায়হান ও জিশানরা। গতকাল তাঁর বাড়ি থেকে ২০০ থেকে ৩০০ গজ দূরে রাস্তার পাশে দোকানে গণসংযোগ চালান বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ। একেবারে বাড়ির পাশে এসে কেউ তাঁকে হত্যা করবে, সে ব্যাপারে সতর্ক ছিলেন না বাবলা। পরিবারের সদস্যরাও তা কল্পনা করেননি।

আবদুল কাদের বলেন, ‘বাড়ির পাশে বায়তুন নুর জামে মসজিদে মাগরিবের নামাজে প্রথম কাতারে এরশাদ উল্লাহ, বাবলা দ্বিতীয় কাতারে ও আমি তৃতীয় কাতারে ছিলাম। নামাজ শেষে বের হওয়ার পরই সাত থেকে আট রাউন্ড গুলি। পরে দেখলাম, আমার ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে। অটোরিকশায় করে হাসপাতালের পথে রওনা দিলাম ছেলেকে কোলে নিয়ে। তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য মাঝপথে রিকশা ছেড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠে হাসপাতালে যাওয়ার আগেই আমার ছেলে আর নেই।’ পাঞ্জাবি ও লুঙ্গিতে লেগে থাকা ছোপ ছোপ রক্ত নিয়েই কথা বলছিলেন তিনি।

এদিকে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার সময় মোবাইলে লাইভে ব্যস্ত যুবককে নিয়েও সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। পিস্তল হাতে হামলাকারী যুবক লাইভে থাকা যুবককে ঠেলে সামনে হাত বাড়িয়ে বাবলাকে গুলি করেন।

এ বিষয়ে বাবলার ভাই আজিজকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ভারতে অবস্থানরত সাজ্জাদ (বড় সাজ্জাদ) আমার ভাইকে গুলি করার দৃশ্য দেখতে চেয়েছিল। এটা হয়তো দেখাচ্ছিল ওই যুবক।’

ওই যুবকের পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলী বলেন, ‘ওই যুবক অতি উৎসাহী হয়ে লাইভ করতে পারেন। তবে তাকে আমরা চিনতে পারছি না।’

জানা গেছে, সরোয়ার হোসেন বাবলার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আজ সকালে ফ্রিজ থেকে বের করে মর্গে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ঘটনার পর ওই এলাকায় দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি থমথমে। হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত, সে বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি নন। সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে দোকানের ভেতরে বাবলাকে গুলি করা হয়েছে, সেটিও বন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, গতকাল মাগরিবের নামাজের পর বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায় নির্বাচনী জনসংযোগ করছিলেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। ‘চালিতাতলীর মাটি, এরশাদ ভাইয়ের ঘাঁটি’—এ ধরনের স্লোগানও চলছিল। একপর্যায়ে লিফলেট বিতরণের জন্য পাশের একটি দোকানে ঢোকেন এরশাদ উল্লাহ। তাঁর সঙ্গে ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী ছিলেন। হত্যাকারীরা ওই নেতা-কর্মীদের বহরে ঢুকে মিশে যায়। হঠাৎ গুলির শব্দ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যান নেতা-কর্মীরা। খুব কাছ থেকে ঘাড়ের নিচে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করা হয় বাবলাকে। গুলিবিদ্ধ হন এরশাদ উল্লাহসহ চারজন। এরশাদ উল্লাহসহ অন্যরা নগরের বেসরকারি হাসপাতাল এভারকেয়ারে চিকিৎসাধীন। তাঁরা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের জিএম রাম প্রসাদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত ইয়াছিনের অনুসারীদের গণ-ইফতার

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা টাউন হল মাঠে নফল রোজা শেষে গণ-ইফতার ইয়াছিন অনুসারীদের। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লা টাউন হল মাঠে নফল রোজা শেষে গণ-ইফতার ইয়াছিন অনুসারীদের। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিনের অনুসারীরা চার দিন ধরে নানা কর্মসূচি পালন করছেন। এর ধারাবাহিকতায় নফল রোজা শেষে আজ বৃহস্পতিবার নগরীর কান্দিরপাড়ে গণ-ইফতারের আয়োজন করা হয়।

এর আগে গতকাল বুধবার কান্দিরপাড়ের নারী সমাবেশ থেকে হাজী আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে ‘নফল রোজা’ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।

নেতা-কর্মীরা জানান, এলাকার উন্নয়ন, শান্তি, সাংগঠনিক ঐক্য ও অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিনকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান কুমিল্লার সাধারণ মানুষ। এ জন্য তাঁরা আল্লাহর দরবারে দোয়া, ইবাদত ও কর্মসূচির মাধ্যমে বিশেষ প্রার্থনা করে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন।

জানা যায়, কুমিল্লা-৬ আসনটি কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, আদর্শ সদর উপজেলা, সদর দক্ষিণ উপজেলা ও সেনানিবাসের একটি অংশ নিয়ে গঠিত। ২০১৮ সালে আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিন কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন।

অন্যদিকে মনিরুল হক চৌধুরী একই নির্বাচনে কুমিল্লা-১০ আসনে দলীয় মনোনয়ন পান। পরে সীমানা পুনর্নির্ধারণে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা কুমিল্লা-১০ থেকে বাদ পড়ে কুমিল্লা-৬ আসনের সঙ্গে যুক্ত হয়। এরপর থেকে নতুন সীমানার কুমিল্লা-৬ আসনে মনিরুল হক চৌধুরী। আর অন্যদিকে কুমিল্লা-৬ পুরোনো সীমানার রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের নেতৃত্বের দাবি তুলে ধরছেন ইয়াছিনপন্থীরা।

মনছুর নিজামী নামের এক যুবদল নেতা বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছি। আমাদের লক্ষ্য বিরোধিতা নয়—ন্যায়সংগত দাবির স্বীকৃতি। আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিন শুধু একজন নেতা নন, কুমিল্লা-৬ আসনের মানুষের আস্থা-ভরসার নাম। তাই তাঁকেই চাই।’

ডলি আক্তার নামের এক নারীনেত্রী বলেন, ‘নারীদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করা, স্থানীয় সমস্যায় পাশে থাকা, শিক্ষা ও মানবিক সহায়তায় ভূমিকা থাকায় নারীদের আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে ইয়াছিন ভাইয়ের প্রতি। এ জন্য আজ আমরা রোজা-ইফতার করেছি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে।’

উল্লেখ্য, গত সোমবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। সেখানে কুমিল্লা-৬ আসনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়।

এরপর থেকেই কুমিল্লার রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিনের অনুসারীরা এ ঘোষণাকে তৃণমূল নেতা-কর্মীর প্রতিকূল দাবি করে প্রতিক্রিয়া জানান এবং ধারাবাহিক কর্মসূচি শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১০ বছরে বাবাকে হারাল, ১৭ বছরে নিজেই না ফেরার দেশে

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি      
বাঘা শাহদৌলা সরকারি কলেজমাঠে ইয়ামিনের জানাজা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাঘা শাহদৌলা সরকারি কলেজমাঠে ইয়ামিনের জানাজা। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাল রাজশাহীর বাঘায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কলেজশিক্ষার্থী মোস্তাকিন আহমেদ ইয়ামিন (১৭)। আজ বৃহস্পতিবার বাঘা শাহদৌলা সরকারি কলেজমাঠে জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

নিহত ইয়ামিনের দাদা আব্দুর রহমান এছার ইমামতিতে জানাজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, বন্ধু-বান্ধবসহ নানা শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ অংশ নেয়। এ সময় জানাজায় দাঁড়িয়ে স্বজনদের সঙ্গে অনেককে কাঁদতে দেখা যায়।

এর আগে গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোস্তাকিন আহমেদ ইয়ামিনের মৃত্যু হয়।

বাঘা ইসলামি একাডেমি উচ্চবিদ্যালয়, কারিগরি ও কৃষি কলেজের শিক্ষার্থী ইয়ামিন পৌরসভার (জিরো পয়েন্ট) মিলিকবাঘা গ্রামের মৃত ইউসুফ বিন মুসার ছেলে এবং বিএনপি নেতা ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুনের ভাতিজা।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ অক্টোবর বাঘা-আড়ানী সড়ক হয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে ফিরছিলেন ইয়ামিন। উপজেলার আমোদপুর জামে মসজিদের উত্তর বাঁকের সামনে পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক (খুলনা মেট্রো-ড, ১১-০৩৮৮) পাশ কাটিয়ে বের হওয়ার সময় ধাক্কা লেগে ছিটকে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয় ইয়ামিন।

আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, পরে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল সিডিএমএ (আইসিইউসি) ভর্তি করা হয়। তিন দিন পর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

জানতে চাইলে মুসার বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সাত বছর আগে ইউসুফ বিন মুসা এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে ৩৫ বছর বয়সে হৃদ্‌রোগে মারা যান। তখন ইয়ামিনের বয়স হয়েছিল ১০ বছর।

দুর্ঘটনার বিষয়ে বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ ফ ম আছাদুজ্জামান জানান, ঘটনার পর ট্রাক রেখে চালক-হেলপার পালিয়ে যান। পরে ট্রাকটি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। আইনিপ্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টুঙ্গিপাড়ায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি 
মেহেদী হাসান। ছবি: সংগৃহীত
মেহেদী হাসান। ছবি: সংগৃহীত

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় মেহেদী হাসান নামের এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার গিমাডাঙ্গা পৌর এলাকার বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মেহেদীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর।

স্থানীয় সাংবাদিকেরা জানান, মেহেদী হাসান দৈনিক কালবেলা টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল নবধারার সম্পাদক ও প্রকাশক। এ ছাড়া তিনি এর আগে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন।

ওসি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের পাকুড়তিয়া বাজারে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ মশাল মিছিল বের করা হয়। এ সময় নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা, লোহার রড দিয়ে দোকানপাট ভাঙচুর ও রাস্তার পাশে থাকা পরিত্যক্ত টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই ঘটনায় মেহেদী হাসানের সংশ্লিষ্টতা থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

থানা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় টুঙ্গিপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আকরাম হোসেন বাদী হয়ে ৫১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০-২০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপির কর্মী হাকিম হত্যার পরিকল্পনাকারীসহ গ্রেপ্তার ৪, নেপথ্যে বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আবদুল হাকিম। ছবি: সংগৃহীত
আবদুল হাকিম। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার মদুনাঘাট সেতু এলাকায় রাউজানের ব্যবসায়ী ও বিএনপির কর্মী আবদুল হাকিম হত্যা (৬৫) মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় হত্যার কাজে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) এসব তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মদুনাঘাটে গত ৭ অক্টোবর আবদুল হাকিম হত্যা মামলার সূত্র উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ। যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন সময় চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে ল্যাংড়া খোকন, মো. মারুফ, সাকলাইন হোসেন ও জিয়াউর রহমান। সাকলাইন হোসেনকে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৩১ অক্টোবর রাউজান থেকে আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে ল্যাংড়া খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হাকিম হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে ২ নভেম্বর রাউজানের চৌধুরীহাট থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. মারুফকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেন, যা সাকলাইন হোসেনের হেফাজতে ছিল। ৪ নভেম্বর রাউজানের নোয়াপাড়ায় সাকলাইন হোসেনের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একনলা বন্দুক, একটি এলজি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এর আগে হত্যার এ ঘটনায় এর মধ্যে জিয়াউর রহমানসহ চার আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১০-১২ জন আসামির পরিচয় শনাক্ত হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গত ৭ অক্টোবর বিকেলে ব্যবসায়ী হাকিম নিজের গাড়িতে করে চট্টগ্রাম শহরে ফিরছিলেন। মদুনাঘাট সেতুর পশ্চিম পাশে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে আসা অস্ত্রধারীরা তাঁর গাড়ির সামনে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। ঘটনার পরপরই চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও হাটহাজারী থানা যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে। হাকিম পাঁচখাইন এলাকার বাসিন্দা এবং রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) মো. রাসেল বলেন, রাউজান এলাকার বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এই হত্যাকাণ্ডসহ জেলার অন্যান্য অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি নোয়াপাড়া, চৌধুরীহাট ও আশপাশের এলাকায় চেকপোস্ট, টহল ও রাত্রিকালীন তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত