Ajker Patrika

ছাত্রদল কর্মীকে পিটিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন জবি ছাত্রলীগ নেতারা 

জবি প্রতিনিধি
ছাত্রদল কর্মীকে পিটিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন জবি ছাত্রলীগ নেতারা 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে দুই ঘণ্টা আটকে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের এক কর্মীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। মারধরের শিকার আহত শিক্ষার্থীর নাম আজিজুল হাকিম আকাশ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের সদস্য। 

আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেটে অবস্থান করা চন্দ্রমূখী বাসে মারধরের এই ঘটনা ঘটে। আহত আকাশ বর্তমানে কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মার্কেটিং বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরাফাত ও গণিত বিভাগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান, বাংলা বিভাগের সাধারণ সম্পাদক অর্জুন বিশ্বাসসহ ছয় সাতজন মিলে মারধর করেন ওই শিক্ষার্থীকে। তাঁরা সবাই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের অনুসারী। 

মারধরের শিকার ছাত্রদল কর্মী আকাশ বলেন, ‘আমি ক্লাস শেষ করে ভাষা শহিদ রফিক ভবন থেকে নামার সময় কোনো কারণ ছাড়া দুই–তিনজন এসে আমাকে পোগোজ স্কুলের ভেতরে নিয়ে গিয়ে কিল ঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। এরপর আমি ওখান থেকে পালিয়ে আসার চেষ্টা করলে আমাকে সাত–আটজন ধরে নিয়ে দ্বিতীয় গেটে রাখা চন্দ্রমূখী বাসের ভেতর নিয়ে যান। এরপরই তাঁরা আমাকে বাঁশ ও কাঠের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে আমার অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে নিয়ে যান।’ 

ছাত্রদল কর্মী আকাশ জানান, ‘এ সময় তাঁরা আমার পকেটে থাকা সব টাকা নিয়ে নেন। আমার নগদ অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড জোরপূর্বক নিয়ে সেখান থেকে সব টাকাও তাঁরা তুলে নিয়ে যান।’ 

এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ নেতা আরাফাত ও অর্জুনের মোবাইলে কল দেওয়া হলে তাঁর কল রিসিভ করেননি। 

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম আক্তার হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত পরিবেশকে যারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চেষ্টা করে তাঁদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু দেশের স্বাধীনতা বিরোধী কোনো অপশক্তি যদি ফেসবুক পোস্ট ও ক্যাম্পাসের ভেতর কোনো উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করে তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা সর্বোচ্চ সজাগ অবস্থানে থাকবে ৷ আর এসব ঘটনা ব্যক্তিগত ক্ষোভ থাকার কারণেও ঘটতে পারে। যদি তাই হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বলেন, পরীক্ষার হল থেকে, ক্লাস থেকে ধরে নিয়ে আদিম যুগের কায়দায় এ ধরনের হামলা একমাত্র ছাত্রলীগের পক্ষেই সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত হামলাকারীদের ধরে পুলিশে দেওয়া। তারা উল্টো হামলায় আহত হওয়া শিক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে বেআইনি এবং বিমাতাসুলভ আচরণ করেন। আমরা হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে একজন আমাকে ফোন দিয়ে একটা বাসে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করার বিষয়টি জানিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গেই আমি একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠিয়ে বাসে তল্লাশি চালিয়েছি। তখন কাউকে পাওয়া যায়নি।’ 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসার মো. রাকিব হোসেন খান আবির বলেন, ‘আমাদের কাছে একজনকে আনা হয়েছিল। তবে তিনি ছাত্রদলের কিনা জানি না। জিজ্ঞাসা করার পরও মারধরের শিকার হয়েছেন এটা বলেননি। আমাদের বলা হয়েছে উনি পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছেন। আমরা তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত