Ajker Patrika

নড়াইলে বিএনপি নেতা হত্যা: আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৬ জনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানা হত্যা মামলায় একই উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কাজল মোল্লাসহ ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মো. রফিকুল ইসলাম এ রায় দেন।

রায়ে আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২১ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন সেতু মোল্লা, লিংকু শেখ, সিরাজুল ইসলাম ওরফে শিপুল মোল্লা, লিঠু মোল্লা ও তপু খান ওরফে হাশিব খান। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১১ আসামি হলেন তৈয়েবুর গাজী, হুমায়ুন মোল্লা, লিমন মোল্লা, হৃদয় খান, টনি মোল্লা, সোহাগ মোল্লা, হাসমত মোল্লা, নজরুল মোল্লা, রবি মোল্লা, আবুজর মোল্লা ও সম্রাট মোল্লা। এদের মধ্যে প্রথম সাতজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অন্য চার আসামিকে এক বছরের কারাদণ্ডসহ ২০০ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৭ দিনের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

এ ছাড়া এই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২১ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডালিয়া পারভীন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২০ সালের ৫ আগস্ট নড়াইল জেলার কালিয়া থানাধীন এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জেরে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দোনলা বন্দুক, শটগান, পিস্তল, রামদা, চাপাতি, শাবল, লোহার রড, হকিস্টিক, হাতুড়ি, বাঁশের লাঠিসহ মারাত্মক অস্ত্রে বেআইনিভাবে সজ্জিত হয়ে অতর্কিত হামলা করে ভিকটিম মাসুদ রানাকে মারাত্মক জখম করেন। ভিকটিম মাসুদ রানাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় মাসুদ রানার ছোট ভাই মামুন শেখ কালিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ৩৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরের বছর ১ সেপ্টেম্বর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

মামলাটির বিচার চলাকালে অভিযোগপত্রভুক্ত ৪৭ জনের মধ্যে ৪০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। এই মামলায় বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য মামলাটি স্থানান্তরের নির্দেশ দেন।

এদিকে রায় ঘোষণার পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেন নিহতের স্বজন ও আসামিদের হামলায় আহত ভুক্তভোগীরা। তাঁরা বিচারককে আওয়ামী লীগের দোসর উল্লেখ করে আদালতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডালিয়া পারভিন বলেন, ‘এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। এ মামলার প্রধান আসামি কাজল মোল্লা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সবকিছু প্রমাণ হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে ফাঁসির আদেশ না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত