আজকের পত্রিকা ডেস্ক
এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সাম্প্রতিক সময়ে তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে জেনারেশন জেড, দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার হয়ে উঠেছে। নেপালের ঘটনা এই তরঙ্গের এখন কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নেপালের শুরুটা হয়েছিল ভক্তপুর শহরে এক রাজনীতিবিদের মেয়ের বিয়েকে কেন্দ্র করে। সে সময় খবর ছড়ায়—ভিআইপি অতিথিদের জন্য শহরের প্রধান সড়ক ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ ছিল এবং এতে বড় ধরনের যানজট তৈরি হয়। এই অভিযোগ পরবর্তীতে অস্বীকার করলেও ২৩ বছর বয়সী আন্দোলনকর্মী আদিত্য এটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে আখ্যা দেন। এরপর তিনি সামাজিক মাধ্যমে রাজনীতিকদের সন্তানদের বিলাসবহুল জীবনযাপন—দামি গাড়ি, বিদেশ ভ্রমণ, ব্র্যান্ডেড উপহার—নিয়ে একের পর এক পোস্ট করেন। এরই মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় এক মন্ত্রীর ছেলের লুই ভুইতোঁ ও গুচি ব্র্যান্ডের উপহারের স্তূপ। এতে ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।
৮ সেপ্টেম্বর আদিত্য ও তাঁর বন্ধুরা হাজারো তরুণের সঙ্গে রাজধানী কাঠমান্ডুতে দুর্নীতিবিরোধী মিছিলে যোগ দেন। আন্দোলন সহিংস রূপ নিলে পুলিশের গুলিতে বহু প্রাণহানি ঘটে। সরকারি ভবন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, সংসদ ভবন অবরোধ হয় এবং শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেন। প্রাণ হারান প্রায় অন্তত ৭০ জন।
এই তরঙ্গ শুধু নেপালেই সীমাবদ্ধ নয়। ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনেও হাজার হাজার তরুণ দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভ করছে। তাদের অভিযোগ—রাজনৈতিক অভিজাত ও তাঁদের সন্তানেরা রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে, অথচ সাধারণ মানুষের জন্য মৌলিক সুযোগ সীমিত। ইন্দোনেশিয়ায় প্রতি মাসে শুধু আইনপ্রণেতাদের আবাসন ভাতাই সাধারণ মানুষের গড় আয়ের প্রায় ২০ গুণ।
ইন্দোনেশিয়ার কৃষক পরিবারের সন্তান জিকরি সিরেগার। মোটরসাইকেল চালিয়ে পড়াশোনার খরচ জোগান তিনি। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘খাবার কিনতেই মানুষ কষ্টে আছে, অথচ কর্মকর্তাদের ভাতা বাড়ছে।’
সামাজিক মাধ্যমে ‘নেপো কিডস’ বা প্রভাবশালী পরিবারে জন্ম নেওয়া তরুণদের বিরুদ্ধে প্রবল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাদেরকে দুর্নীতির প্রতীক মনে করছে আন্দোলনকারীরা। যদিও অনেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করছে।
এসব আন্দোলনে প্রযুক্তি বড় ভূমিকা রাখছে। নেপালের তরুণেরা টিকটক, ভিপিএন ও এআই টুল ব্যবহার করে শত শত ভিডিও তৈরি করেছে। ডিসকর্ড-এর মতো প্ল্যাটফর্মে তারা কৌশলে আলোচনা করছে। ফিলিপাইনে রেডিটে ‘লাইফস্টাইল চেক’ প্রচারণায় হাজারো মানুষ ক্ষমতাশালীদের বিলাসী জীবনযাপনের তথ্য শেয়ার করছে।
এশিয়ার ইতিহাসে প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিবাদ নতুন নয়। তবে এবার সোশ্যাল মিডিয়া ও এআই ব্যবহারের পরিসর অনেক বিস্তৃত। এক দেশের আন্দোলন অন্য দেশে প্রভাব ফেলছে। ইন্দোনেশিয়ার ‘হ্যাশট্যাগ সি-ব্লিংস’ নামে একটি প্রতীকী লোগো ফিলিপাইন ও নেপালেও ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে এসব আন্দোলনের পরিণতি ভয়াবহ। নেপালে ৭০ জন নিহত, ইন্দোনেশিয়ায় কমপক্ষে ১০ জন মারা গেছেন। ভবন ও ব্যবসা ধ্বংস হয়ে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে কোটি কোটি ডলার। সরকারগুলো সহিংসতার নিন্দা করছে, আবার কিছু দাবি মেনে নিতেও বাধ্য হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ায় বিতর্কিত ভাতা ও বিদেশ ভ্রমণ সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। ফিলিপাইনে দুর্নীতির তদন্তে কমিশন গঠিত হয়েছে।
তবু বড় প্রশ্ন থেকে যায়—এই ক্ষোভ কি টেকসই রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে পারবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক মাধ্যম দ্রুত ক্ষোভ ছড়াতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য সংগঠিত রাজনৈতিক কৌশল দরকার। নেপালের তরুণেরা অবশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা অতীত প্রজন্মের মতো ভুল করবে না। আদিত্যর ভাষায়, ‘আমরা শিখেছি—কোনো নেতাকে দেবতার মতো পূজা নয়, আমাদের লড়াই শুধু দুর্নীতির বিরুদ্ধে।’
এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সাম্প্রতিক সময়ে তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে জেনারেশন জেড, দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার হয়ে উঠেছে। নেপালের ঘটনা এই তরঙ্গের এখন কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নেপালের শুরুটা হয়েছিল ভক্তপুর শহরে এক রাজনীতিবিদের মেয়ের বিয়েকে কেন্দ্র করে। সে সময় খবর ছড়ায়—ভিআইপি অতিথিদের জন্য শহরের প্রধান সড়ক ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ ছিল এবং এতে বড় ধরনের যানজট তৈরি হয়। এই অভিযোগ পরবর্তীতে অস্বীকার করলেও ২৩ বছর বয়সী আন্দোলনকর্মী আদিত্য এটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে আখ্যা দেন। এরপর তিনি সামাজিক মাধ্যমে রাজনীতিকদের সন্তানদের বিলাসবহুল জীবনযাপন—দামি গাড়ি, বিদেশ ভ্রমণ, ব্র্যান্ডেড উপহার—নিয়ে একের পর এক পোস্ট করেন। এরই মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় এক মন্ত্রীর ছেলের লুই ভুইতোঁ ও গুচি ব্র্যান্ডের উপহারের স্তূপ। এতে ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।
৮ সেপ্টেম্বর আদিত্য ও তাঁর বন্ধুরা হাজারো তরুণের সঙ্গে রাজধানী কাঠমান্ডুতে দুর্নীতিবিরোধী মিছিলে যোগ দেন। আন্দোলন সহিংস রূপ নিলে পুলিশের গুলিতে বহু প্রাণহানি ঘটে। সরকারি ভবন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, সংসদ ভবন অবরোধ হয় এবং শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেন। প্রাণ হারান প্রায় অন্তত ৭০ জন।
এই তরঙ্গ শুধু নেপালেই সীমাবদ্ধ নয়। ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনেও হাজার হাজার তরুণ দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভ করছে। তাদের অভিযোগ—রাজনৈতিক অভিজাত ও তাঁদের সন্তানেরা রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে, অথচ সাধারণ মানুষের জন্য মৌলিক সুযোগ সীমিত। ইন্দোনেশিয়ায় প্রতি মাসে শুধু আইনপ্রণেতাদের আবাসন ভাতাই সাধারণ মানুষের গড় আয়ের প্রায় ২০ গুণ।
ইন্দোনেশিয়ার কৃষক পরিবারের সন্তান জিকরি সিরেগার। মোটরসাইকেল চালিয়ে পড়াশোনার খরচ জোগান তিনি। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘খাবার কিনতেই মানুষ কষ্টে আছে, অথচ কর্মকর্তাদের ভাতা বাড়ছে।’
সামাজিক মাধ্যমে ‘নেপো কিডস’ বা প্রভাবশালী পরিবারে জন্ম নেওয়া তরুণদের বিরুদ্ধে প্রবল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাদেরকে দুর্নীতির প্রতীক মনে করছে আন্দোলনকারীরা। যদিও অনেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করছে।
এসব আন্দোলনে প্রযুক্তি বড় ভূমিকা রাখছে। নেপালের তরুণেরা টিকটক, ভিপিএন ও এআই টুল ব্যবহার করে শত শত ভিডিও তৈরি করেছে। ডিসকর্ড-এর মতো প্ল্যাটফর্মে তারা কৌশলে আলোচনা করছে। ফিলিপাইনে রেডিটে ‘লাইফস্টাইল চেক’ প্রচারণায় হাজারো মানুষ ক্ষমতাশালীদের বিলাসী জীবনযাপনের তথ্য শেয়ার করছে।
এশিয়ার ইতিহাসে প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিবাদ নতুন নয়। তবে এবার সোশ্যাল মিডিয়া ও এআই ব্যবহারের পরিসর অনেক বিস্তৃত। এক দেশের আন্দোলন অন্য দেশে প্রভাব ফেলছে। ইন্দোনেশিয়ার ‘হ্যাশট্যাগ সি-ব্লিংস’ নামে একটি প্রতীকী লোগো ফিলিপাইন ও নেপালেও ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে এসব আন্দোলনের পরিণতি ভয়াবহ। নেপালে ৭০ জন নিহত, ইন্দোনেশিয়ায় কমপক্ষে ১০ জন মারা গেছেন। ভবন ও ব্যবসা ধ্বংস হয়ে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে কোটি কোটি ডলার। সরকারগুলো সহিংসতার নিন্দা করছে, আবার কিছু দাবি মেনে নিতেও বাধ্য হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ায় বিতর্কিত ভাতা ও বিদেশ ভ্রমণ সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। ফিলিপাইনে দুর্নীতির তদন্তে কমিশন গঠিত হয়েছে।
তবু বড় প্রশ্ন থেকে যায়—এই ক্ষোভ কি টেকসই রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে পারবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক মাধ্যম দ্রুত ক্ষোভ ছড়াতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য সংগঠিত রাজনৈতিক কৌশল দরকার। নেপালের তরুণেরা অবশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা অতীত প্রজন্মের মতো ভুল করবে না। আদিত্যর ভাষায়, ‘আমরা শিখেছি—কোনো নেতাকে দেবতার মতো পূজা নয়, আমাদের লড়াই শুধু দুর্নীতির বিরুদ্ধে।’
জাতিসংঘের মঞ্চে ফিলিস্তিনকে স্বাধীনতা রাষ্ট্র হিসেবে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের স্বীকৃতি শতবর্ষী ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব মুহূর্ত। তবে এটি এক ধরনের কূটনৈতিক ঝুঁকিও। কারণ, বড় ইউরোপীয় শক্তিগুলো মনে করছে—সংঘাত এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তাদের এমন নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হতে হচ্ছে।
১৫ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রে ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে জায়নবাদী বয়ান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায়। এই বয়ান এবং তা দিয়ে জনমত তৈরিতে ভূমিকা রাখছে লবিস্ট, খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারকেরা এবং প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমগুলো। ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা শুরুর আগপর্যন্ত এ বয়ানকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়নি।
১ দিন আগেজাতিসংঘে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির ঘোষণা ইসরায়েল–ফিলিস্তিন শতবছরের সংঘাতে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত এনে দিল। কিন্তু একই সঙ্গে এই ‘কূটনৈতিক জুয়া’ দেখিয়ে দিল, মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যে এই নজিরবিহীন পদক্ষেপ নেওয়ার বিকল্প ছিল না বলে ভাবছে প্রধান ইউরোপীয় শক্তিগুলো।
১ দিন আগেজাতিসংঘের দ্বিতীয় মহাসচিব দাগ হ্যামারশোল্ড এই কৌশলের সবচেয়ে দক্ষ ব্যবহারকারী ছিলেন। ১৯৬১ সালে কঙ্গোতে শান্তি মিশনের সময় এক রহস্যময় বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। কিন্তু তাঁর ভাষণগুলো বিশ্ববাসীর মনোযোগ কাড়ত। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘জাতিসংঘের লক্ষ্য মানবজাতিকে স্বর্গে পৌঁছে দেওয়া নয়, বরং নরক থেকে বাঁচান
১ দিন আগে