বিগত কয়েক দশক ধরে ইরান-ইসরায়েল শত্রুতা ছিল অন্তরালে, কখনোই তেমন প্রকাশ্যে আসেনি। কিন্তু ২০২৩ সালে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর এই দুই দেশ স্বল্প সময়ের মধ্যে তিন তিনবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। সর্বশেষ সংঘর্ষ টানা ৮ দিন ধরে চলছে। ইসরায়েলের দাবি, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির খুব কাছাকাছি।
যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক যুদ্ধ-ইতিহাস দেখলে বোঝা যাবে, নতুন করে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কতটা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। ইরাক যুদ্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রাণহানি ও বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়েছিল।
আমেরিকার রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক নীতিতে এক প্রভাব বিস্তারকারী ধর্মীয় গোষ্ঠীর নাম ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান। এদের মধ্যেই রয়েছে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ—খ্রিষ্টান জায়নবাদী, যারা আধুনিক ইসরায়েল রাষ্ট্রের দৃঢ় সমর্থক। তারা আসলে কারা, তাদের বিশ্বাস কী এবং কেন ইসরায়েল প্রসঙ্গে বারবার উঠে আসে তাদের নাম?
মার্কিন সংবিধানের প্রথম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যুদ্ধ ঘোষণা করার ক্ষমতা কংগ্রেসের। অনেক আইনজীবী এটিকে এভাবে ব্যাখ্যা করেন, দেশের সামরিক হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়ার চূড়ান্ত অধিকার কংগ্রেসের, প্রেসিডেন্টের নয়। অর্থাৎ, যুদ্ধের ব্যাপারে প্রধান নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে আইন প্রণয়নকারী শাখা এবং চূড়ান্ত...
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত কেবল সামরিক হামলা বা পাল্টা হামলার বিষয় নয়—এটি এক দীর্ঘকালীন আদর্শিক, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক সংঘর্ষ। যখন দুই নেতা নিজেদের জাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য অতীতের ধর্মীয় প্রতীক ও যুদ্ধগাথা তুলে আনেন, তখন বোঝা যায়, সংঘাতের এই ক্ষেত্র কেবল আকাশপথে বা ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ নয়।
মধ্যপ্রাচ্য এক বিস্তৃত আঞ্চলিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। ১৩ জুন থেকে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং তেল-গ্যাসের ডিপোগুলোতে টানা বোমাবর্ষণ শুরু করেছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাষায়, এই হামলার লক্ষ্য, ইরানের সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির হুমকি ‘দমন...
বিশ্লেষকদের অনেকেই এই দুই সপ্তাহের আল্টিমেটামকে ট্রাম্পের পিছু হটা বলেই মনে করছেন। অবশ্য এর যথেষ্ট কারণও আছে। ট্রাম্প শিবিরের বেশির ভাগ নেতাই ইসরায়েলের হয়ে ইরানের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার বিপক্ষে। উদাহরণ হিসেবে আমরা ট্রাম্পের এক সময়কার প্রধান কৌশলী স্টিভ ব্যাননের কথা বলতে পারি।
আল জাজিরার বিশ্লেষণ
মাত্র সাত বছর আগে ট্রাম্প পাকিস্তানকে ‘মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয়দাতা’ বলেছিলেন, অথচ এখন সেই দেশকেই ‘গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সহযোগী’ হিসেবে তুলে ধরছেন। তাঁর আমন্ত্রণে পাকিস্তান সেনাপ্রধানের আমেরিকা সফর এবং কাশ্মীর ইস্যুতে মে মাসের ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা—সব মিলিয়ে স্পষ্ট হচ্ছে...
ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্ট পাহাড়ের গভীরে স্থাপন করা হয়েছে। এই কেন্দ্রের নাম ফোরদো। এটি ইরানের ঐতিহাসিক কৌম শহর থেকে ২০ মাইল দূরে অবস্থিত এবং এমন প্রাকৃতিকভাবে সুরক্ষিত যে বিশ্বের একমাত্র একটি অস্ত্রই এটি ধ্বংস করতে পারে বলে মনে করা হয়।
ইরানের ওপর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আকস্মিক বিমান হামলার পেছনে শুধু সামরিক তৎপরতা নয়, ছিল এক বিস্তৃত, বহুস্তরবিশিষ্ট গোয়েন্দা অপারেশনের জটিল নকশা। একটা সময় ছিল, যখন সামরিক অভিযান ছিল কেবলই সেনাবাহিনীর কাজ। কিন্তু আজ গোয়েন্দা, প্রযুক্তিবিদ, বেসরকারি উদ্যোগ ও গোপন চ্যানেল মিলিয়ে এক বিরাট ‘স্পাই ওয়ার’ চলছে
ইসরায়েলের আক্রমণে শীর্ষ ইরানি সামরিক কর্মকর্তাদের মৃত্যু, তেহরানে ক্রমাগত বিস্ফোরণ ও যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠছে, ইরানে ইসলামি শাসনব্যবস্থার পতন কি এবার হতেই চলেছে? অনেক বিশ্লেষক বলছেন, খামেনির পতন এখন সময়ের ব্যাপারমাত্র।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কূটনৈতিকভাবে যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব থেকে সরে এসে সামরিক পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাই ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে যোগ দেবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি ইরানে সামরিক হামলার কথা বিবেচনা করছেন বলে এনবিসি নিউজকে জানিয়েছে হোয়াইট হাউসের একটি সূত্র। ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যালের এক পোস্টে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করার সক্ষমতার কথাও উল্লেখ করেন।
নিকু পাজুম লিখেছেন, আমি জীবনের প্রথম দুই দশক ইরানে কাটিয়েছি। আমি এমন এক ইরান দেখেছি, যেটি মোল্লাতন্ত্রের শাসনে চলছে। আমি এমন এক ইরান দেখেছি, যেখানে নারীদের হত্যা, ধর্ষণ ও অপমান করা হয়, যেখানে ভিন্নমতকে দমন করা হয় নির্মমভাবে।
ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাত যখন বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান ঘিরে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। আর এই অনিশ্চয়তা নতুন কিছু নয়—বরং নিজের রাজনৈতিক দর্শনের অংশ হিসেবেই ‘অপ্রত্যাশিত’ বা ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ থেকে যেতে পছন্দ করেন তিনি।
ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত বাড়তে থাকার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কূটনৈতিক সমাধানের পক্ষে আছেন কি না—তা নিয়ে মিশ্র বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। প্রকাশ্যে ট্রাম্প প্রশাসন আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কথা বলছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র যুক্ত হবে কি না সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে, তখন মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে দুশ্চিন্তা ছড়িয়ে পড়েছে—এর ফলাফল কী হতে পারে। বিশেষ করে, ইরানে কি ২০০৩ সালে ইরাক হামলার পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে।