Ajker Patrika

ফ্লোটিলা ও মানবতা

সম্পাদকীয়
ফ্লোটিলা ও মানবতা

ইসরায়েলি আক্রমণের মুখে পড়েছে ফ্লোটিলা। গাজা অভিমুখে ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি। এই বহরে থাকা সব নৌযান থেকেই অধিকারকর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েল। এদের মধ্যে সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও রয়েছেন।

গাজাবাসী রয়েছে বিপদে। তাদের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসাসহ নানা বিষয়ে রয়েছে অপ্রতুলতা। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই ভূমিটিতে মানবিক সাহায্যের আজ বড় প্রয়োজন। হামাস ও ইসরায়েল সরকারের মধ্যে চলা যুদ্ধের শিকার হয়েছে গাজাবাসী। দুই বছর ধরে এখানে চলছে ইসরায়েলি নৃশংসতা। দুই বছরে এই উপত্যকাবাসীর মধ্যে ৬৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজায় দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্যসংকট। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার বাসিন্দারা প্রতিদিন প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র ২৬ শতাংশ খাদ্য পাচ্ছে। ইসরায়েলি অবরোধ ভেঙে গাজাবাসীর কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে চাইছিল ফ্লোটিলা। ফ্লোটিলার নৌযানগুলো স্পেনের একটি সমুদ্রবন্দর থেকে গাজার উদ্দেশে রওনা হয়েছিল ৩১ আগস্ট। ভূমধ্যসাগরে গাজা উপকূল থেকে ১২৯ কিলোমিটার দূরে ফ্লোটিলা প্রথম ইসরায়েলিদের বাধার সামনে পড়ে। নৌযানগুলোর যাত্রাপথ পরিবর্তনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই ইসরায়েলি নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে ইসরায়েলি নৌসেনারা ফ্লোটিলা বহরের নৌযানে ঢুকতে শুরু করে এবং নৌযানগুলোর যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়। এই অহিংস যাত্রাকে বাধা দিয়ে নৌযানগুলোয় থাকা সবাইকে আটক করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ত্রাণবাহী নৌবহর আটকে দেওয়ার মাধ্যমে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে। আন্তর্জাতিক জলসীমায় অহিংস মানবিক কর্মকাণ্ড-সংশ্লিষ্ট কোনো নৌযানে হামলা অবৈধ ও অগ্রহণযোগ্য। কিন্তু ইসরায়েল তা মানছে না। বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে ইতালি ও ফ্রান্সে। কিন্তু ইসরায়েল যাদের মদদে যা ইচ্ছে তা-ই করে যাচ্ছে, তাদের দিক থেকে টুঁ শব্দটি শোনা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের এই নীরবতা ইসরায়েলের অমানবিক কর্মকাণ্ডকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। এমনকি ইউরোপের শক্তিমান নেতারাও মুখ বন্ধ করে আছেন। এ তালিকায় রয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুই শীর্ষ নেতা উরসুলা ফন ডার লেন ও আন্তোনিও কস্তা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান কাজা কাল্লাস।

ত্রাণ বহনকারী ফ্লোটিলা বহর আটকে দেওয়ার মাধ্যমে ইসরায়েল প্রমাণ করেছে, ফিলিস্তিনিদের ব্যাপারে তাদের নির্মমতা কত দূর পর্যন্ত যেতে পারে। ইসরায়েলের হামলা ও অবরোধের কারণে গাজা উপত্যকার অধিবাসীরা চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিশ্বব্যাপী নিন্দা ও ক্ষোভকে আমলেই নিচ্ছে না ইসরায়েল। বরং উপত্যকাবাসীর জীবন অতিষ্ঠ করে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে তারা। ইসরায়েলকে মদদদানকারী পৃথিবীর পরাশক্তিসম্পন্ন দেশগুলোর নীরবতা, আরব দেশগুলোর মৌখিক আশ্বাস বনাম সত্যিকার সমর্থন বিষয়ে রহস্যময়তা ইত্যাদি কারণে ফিলিস্তিন প্রসঙ্গটি বারবার শুধু রক্তাক্ত নাটকের অংশ হয়ে যাচ্ছে। সত্যিকার অর্থে সংকটটি বুঝে সমঝোতার দিকে কেন নেওয়া যাচ্ছে না, সে প্রশ্নের জবাব কে দেবে?

ইসরায়েলের এই অমানবিক অবস্থান থেকে গাজাবাসীকে রক্ষা করতে বিশ্বজনমত এগিয়ে আসুক, এই আমাদের চাওয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সোহান-শরীফুলের ব্যাটে রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

মাদক পাচার: ইয়াবার আঁতাতে জড়িত সবাই

জুবিন গার্গের মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর মোড়: বিষ প্রয়োগের অভিযোগ ব্যান্ড সদস্যের

২০ দফায় শর্ত সাপেক্ষে সম্মতি দিল হামাস, ইসরায়েলকে বোমা হামলা বন্ধের নির্দেশ ট্রাম্পের

হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে গুলতেকিন খানের পোস্ট, কেন এতো আলোচনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত