Ajker Patrika

ঘর থেকে বের হতেই হবে?

সম্পাদকীয়
ঘর থেকে বের হতেই হবে?

করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুহার না কমে ক্রমাগত বেড়ে চলায় মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ, মাস্ক ব্যবহারসহ কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। অথচ এ বিষয়গুলো যথাযথভাবে প্রতিপালনে শিথিলতা দূর হচ্ছে না।

সরকার একাধিকবার লকডাউন, কঠোর লকডাউন, শাটডাউন ইত্যাদি আরোপ করলেও বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিভিন্ন পর্যায়ে কয়েক দফা বিধিনিষেধ জারি করে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আট দিন ছাড় দিয়ে আবার ২৩ জুলাই থেকে সারা দেশে লকডাউন জারি করে সরকার কিছুটা কঠোর অবস্থান নিয়েছে। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। মানুষকে নিষেধাজ্ঞা মানতে বাধ্য করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় টহল দিচ্ছে। এ কাজে সশস্ত্র বাহিনীকেও মাঠে নামানো হয়েছে। এর আগে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বিপর্যয় ছাড়া হুটহাট সেনাবাহিনীকে ছাউনির বাইরে নিতে দেখা যায়নি।

এটা দুঃখজনক যে ঘর থেকে বের না হওয়ার সরকারি অনুরোধ অনেকেই গ্রাহ্য করছেন না। ঠুনকো অজুহাতে কেউ কেউ ঘরের বাইরে আসছেন, জটলা করছেন, চায়ের দোকানের সামনে আড্ডা দিচ্ছেন। অনেকে মাস্ক ব্যবহারের গুরুত্বও বুঝতে পারছেন না। একজনের অসচেতনতা, অবহেলা, উদাসীনতা যে অনেকের জীবনকে অনিরাপদ বা ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে, সেটা আমরা কবে বুঝব?

করোনাভাইরাস মানুষই বহন করে। একজন অনেকজনকে সংক্রমিত করতে পারে। করোনা এর মধ্যেই আমাদের দেশে ১৯ হাজারের বেশি মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। আর কত মৃত্যু আমাদের চেতনা জাগাবে?

কেউ কেউ বলছেন, আয়-উপার্জনহীন হতদরিদ্র মানুষের ঘরে বসে থাকলে তাদের পেট চলবে কীভাবে? প্রশ্ন হলো, যাদের ঘরে খাবার নেই, তাদের জন্য কেউ কি ঘরের বাইরে খাবার নিয়ে বসে আছে? ঘর থেকে বের হলে কি কর্মহীনদের কাজ জুটছে? কয়েকটা দিনের কষ্ট যদি বেশি দিন পৃথিবীর রূপরস দেখার নিশ্চয়তা দেয়, তাহলে এই সাময়িক কষ্ট মেনে নিতে কেন আমরা অনীহা দেখাব?

সরকারের নানা ত্রুটি-দুর্বলতা আছে। সরকারের মন্ত্রী এবং বড় কর্মকর্তারা কাজ কম করেন, কথা বেশি বলেন। কেউ কেউ দুর্নীতি-অনিয়মেরও সহযোগী। সরকারের প্রতি অসন্তুষ্টি থাকাও স্বাভাবিক। সব সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত সরকারের ওপরই তো সব ধরনের সেবার জন্য আমাদের নির্ভর করতে হয়। মানুষের জীবন বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্বও সরকারেরই।  সরকার তার দায়িত্ব পালনে গাফিলতি দেখালে, ব্যর্থ হলে তার সমালোচনায় যেমন সোচ্চার হতে হবে, তেমনি নাগরিকদেরও তাদের কর্তব্য পালনে তৎপর হতে হবে। কর্তব্য পালন না করে অধিকার দাবি করলে চলবে কেন? সরকার যদি নাগরিকদের স্বার্থেই ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দেয়, তখন সেটা উপেক্ষা করলে তো শৃঙ্খলাই ভেঙে পড়ে। তাই আসুন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আমরা শুধু শুধু ঘর থেকে বের না হই। নিজে নিরাপদ থেকে আরও অনেককে নিরাপদ রাখি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

আদালতের বিচারকাজে বাধা দেওয়ায় আইনজীবীর দণ্ড, ক্ষমা চেয়ে পার

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত