Ajker Patrika

মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে: বাতিহীন ৬ পদচারী-সেতু আতঙ্ক ছিনতাইয়ের

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান ও শ্রীনগর উপজেলায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ছয়টি ফুটওভার ব্রিজ বা পদচারী-সেতু সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে ডুবে যায়। রাতে যাতায়াতের জন্য সেতুগুলোতে নেই কোনো বাতির ব্যবস্থা। ফলে আঁধারের মধ্যেই সেখান দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের এক পাশ থেকে অপর পাশে যেতে হচ্ছে পথচারীদের। এ ক্ষেত্রে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় থাকতে হয় তাঁদের।

মুন্সিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নির্বিঘ্নে এক্সপ্রেসওয়ে পারাপারের জন্য সিরাজদিখানের কুচিয়ামোড়া এলাকায় ধলেশ্বরী সেতু টোল প্লাজার কাছে ও নিমতলায় দুটি পদচারী-সেতু রয়েছে। এ ছাড়া শ্রীনগরের কেয়টখালী, হাসাড়া, বেজগাঁও ও ষোলঘর এলাকায় রয়েছে চারটি সেতু।

নির্মাণ শেষে চালু হওয়ার পর প্রায় সাড়ে ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুগুলোয় কোনো আলোর ব্যবস্থা করা হয়নি, সংযোগ করা হয়নি বাতি। এ অবস্থায় অনেক পথচারী রাতে এগুলো ব্যবহার না করে নিচ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে বা দৌড়ে পারাপার হন এক্সপ্রেসওয়ে।

সিরাজদিখানের বড় শিকারপুর গ্রামের সুমি আক্তারকে প্রায়ই চিকিৎসক দেখাতে ছুটতে হয় ঢাকায়। চিকিৎসক দেখানো শেষে অনেক সময় রাতে ফিরতে হয়। তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে ফেরার পথে রাতে এক্সপ্রেসওয়ে পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে হয়। বাতি না থাকার কারণে অন্ধকারে কোথায় পা ফেলব বুঝতে পারি না। একবার ব্রিজের ওপর অন্ধকারের মধ্যে আমার মোবাইল ফোন ছিনতাই হয়েছিল। এখন ভয় নিয়ে চলাচল করতে হয়।’

একই উপজেলার রশুনিয়ার শিরিন বেগম বলেন, ‘অন্ধকার ব্রিজে উঠতে ভয় লাগে। অনেকের কাছে শুনেছি ছিনতাই হয়। তাই এখানে আলো বসানোর দাবি জানাচ্ছি।’

শ্রীনগরের ষোলঘর গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, রাতের অন্ধকারে ফুটওভার ব্রিজের ওপর দিয়ে পারাপার হতে যে কারও ভয় লাগবে। সম্প্রতি ষোলঘর ব্রিজের ওপর থেকে এক পথচারীর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। তা ছাড়া ছিনতাইকারী চক্র এক নারীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিল।

ঢাকায় চাকরি করা কেয়টখালীর বাসিন্দা কামরুল হাসান বলেন, ‘রাত ৯টার দিকে বাড়ি ফিরতে হয় আমাকে। বাসে করে কেয়টখালী স্ট্যান্ডে নেমে ফুটওভার ব্রিজ পারাপার হতে হয়। সেখানে আলো না থাকায় ছিনতাইয়ের ভয় নিয়ে ব্রিজ পারাপার হই।’

হাসাড়ার গাড়িচালক মনির হোসেন জানান, রাতে অন্ধকারের ভেতর অনেকেই ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে পারাপার হতে চান না। কেউ কেউ নিচ দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে পারাপার হচ্ছেন। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার পাশাপাশি প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে।

এ নিয়ে কথা হলে হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু নাঈম সিদ্দিকী

বলেন, ফুটওভার ব্রিজগুলোয় রাতের বেলায় পথচারী পারাপারে সমস্যা হচ্ছে। সেখানে আলোকবাতির ব্যবস্থা করার জন্য বেশ কয়েকবার সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তারপরও কোনো সাড়া মেলেনি।

যোগাযোগ করা হলে মুন্সিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহবুব সুমন জানান, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের অধীনে এসব পদচারী-সেতুর নির্মাণকাজ করা হয়েছিল। প্রায় সাড়ে ৩ বছর হলো এগুলো চালু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যদি ব্রিজগুলোয় বৈদ্যুতিক লাইন টানা থাকে, তবে আমরা বাতির ব্যবস্থা করব। আর যদি লাইন টানা না থাকে, তাহলে আমরা শিগগির লাইন টেনে সেখানে আলোর ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত