Ajker Patrika

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১৫: ০৬
বিক্ষোভ করছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিক্ষোভ করছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

হিজাব পরতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত শিক্ষক ফজিলাতুন নাহারকে পুনর্বহাল, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ‘অপপ্রচারকারীদের’ শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।

আজ বুধবার সকাল থেকে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের আশপাশের সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।

জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাজেদা বেগম বলেন, ‘অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমরা একটি তদন্ত করছি। আমাদের বিশ্বাস, তদন্তে সত্য ঘটনা উঠে আসবে। সে অনুসারে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাব।’

বিক্ষোভ করছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিক্ষোভ করছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাজেদা বেগম স্বাক্ষরিত নোটিশে ছাত্রীদের ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে ওই শিক্ষককে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

কর্তৃপক্ষের নোটিশে বলা হয়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা প্রভাতি শাখার ষষ্ঠ শ্রেণির একটি শ্রেণিকক্ষ থেকে ২২ জন শিক্ষার্থীকে হিজাব পরার কারণে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এবং অ্যাডহক কমিটির (অস্থায়ী কমিটি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিক্ষোভ করছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিক্ষোভ করছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

তাঁকে চাকরি থেকে কেন স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না, তার ব্যাখ্যা সাত কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতেও বলা হয়েছে নোটিশে।

আন্দোলনরত নবম শ্রেণির ছাত্রী রোকাইয়া বিনতে মাজহার বলেন, ‘আমাদের আপা হিজাব পরতে নিষেধ করেননি, তিনি সঠিকভাবে হিজাব পরতে বলেছিলেন। আমাদের শিক্ষকের নামে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আমরা আপার পুনর্বহাল এবং অপপ্রচারকারীদের শাস্তি চাই।’

আন্দোলনরত দশম শ্রেণির ছাত্রী মেহের আফরোজ কনক বলেন, তিনি ছাত্রীদের ড্রেস কোড মানতে বলেছিলেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

অভিযুক্ত শিক্ষক ফজিলাতুন নাহার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেছেন। তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করার আগে কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমি আইনি পদক্ষেপ নেব।’

বিক্ষোভ করছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিক্ষোভ করছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল মঙ্গলবার ফজিলাতুন নাহার বলেন, ‘আমি এই কাজটা করিনি। আর এই ক্লাসে ২২ জন মেয়ে হিজাব পরে না। ৯-১০ জন পরে। আমি মেয়েদের বলেছি, তোমরা হিজাব পরে স্কুলে আসবা।’

হিজাব কীভাবে পরতে হবে তার নিয়মও ছাত্রীদের বলেছিলেন বলে দাবি করেন এই শিক্ষক।

দেড় দশকের বেশি সময় প্রতিষ্ঠানটির বসুন্ধরা শাখায় কর্মরত ওই শিক্ষক সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি যখন ক্লাসে গেলাম, গিয়ে দেখি ভলান্টিয়াররা বাচ্চাদের চেক করছে, পোশাক ঠিক আছে কি না, নখ বড় কি না, চুল বাঁধা ঠিক আছে কি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘তখন আমি ওদের (ভলান্টিয়ার) বললাম, তোমরা সারা দিন কী করলা? বলে, আপা আমরা সময় পাইনি। তখন বললাম, তাই বলে লাস্ট পিরিয়ডে চেক করবা? তা ঠিক আছে যাও, তোমাদের যা যা কাজ তোমরা বাইরে নিয়ে যাও এদের, বাইরে নিয়ে তোমাদের দায়িত্ব পালন করো, এটা বলছি, মেয়েদের বেরও করে দিইনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত