নুসরাত রুষা
বাংলাদেশে শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের সমস্যা আছে। দেশ আজ উন্নয়নের নানা সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে আমরা প্রায়ই গর্ব করি। মাথাপিছু আয় বেড়েছে, অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে, প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। কিন্তু একটি মৌলিক প্রশ্ন আমাদের আলোচনায় যথেষ্ট জায়গা পায় না—শিক্ষার ভবিষ্যৎ কোথায় যাচ্ছে? আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কি সত্যিই সবার জন্য উন্মুক্ত, নাকি তা কেবল সামর্থ্যবানদের কাছে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আমরা প্রথমেই দেখতে পাই প্রাথমিক শিক্ষা স্তরেই বৈষম্যের শুরু। করোনা মহামারির সময় এক বিরাট ধাক্কার মধ্যে পড়েছে কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। এ সময় দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে যায়। এগুলো মূলত ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত হতো এবং দীর্ঘ এক বছর কিংবা দেড় বছর টিকতে না পেরে তারা ধসে পড়েছে। আর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দীর্ঘ সময় ক্লাস না হওয়ায় অনেক শিশুশিক্ষার্থী ঝরে পড়ে।
যারা সচ্ছল পরিবারের সন্তান, তারা সহজেই ভালো মানের কিন্ডারগার্টেনে পড়াশোনা শুরু করে। অন্যদিকে যারা অর্থনৈতিক কারণে প্রি-প্রাইমারি স্তরে যেতে পারেনি, তারা হঠাৎ করেই ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়েছে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতি ছাড়াই। ফলে একশ্রেণির ভেতরেই তৈরি হয়েছে তীব্র বৈষম্য। যে শিশু শুরু থেকেই ভালো ভিত্তি পেয়ে যাচ্ছে, সে এগিয়ে যাচ্ছে; আর যে শিশু শুরুর সময়ই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলো, সে পিছিয়ে পড়ছে।
এই বৈষম্য শুধু প্রাথমিক স্তরেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা আরও প্রকট হয়ে উঠছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে এসে এর ভয়াবহ রূপ স্পষ্ট হয়। বাংলাদেশের হাইস্কুল ড্রপ আউটের একটি বড় অংশ হলো নারী শিক্ষার্থী। বিশেষ করে ২০২১ সালের পর থেকে এই হার বেড়েছে। দারিদ্র্য, সামাজিক চাপ এবং শিক্ষার অতিরিক্ত খরচ—সব মিলিয়ে অনেক পরিবার মেয়েসন্তানের পড়াশোনার খরচ বহন করতে না পেরে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। ফলে বাল্যবিবাহ বেড়ে যাচ্ছে।
শিক্ষা থেকে বাদ পড়ার এই প্রবণতা কেবল একটি ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, বরং একটি সামাজিক বিপর্যয়। একটি মেয়ের শিক্ষা বন্ধ হয়ে গেলে সে শুধু নিজের সম্ভাবনাই হারায় না, বরং সমাজও একটি শিক্ষিত নারী থেকে বঞ্চিত হয়। আরও মারাত্মক হলো, বাল্যবিবাহের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়ে যাচ্ছে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার। একজন কিশোরী যখন অল্প বয়সে মা হয়, তখন স্বাস্থ্যঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। সন্তান জন্মের সময় জটিলতা তৈরি হয়, অনেক সময় প্রাণহানিও ঘটে। অর্থাৎ ড্রপ আউট শুধু শিক্ষাগত বৈষম্য তৈরি করছে না, তা নারীর স্বাস্থ্য, শিশুদের ভবিষ্যৎ, এমনকি পুরো সমাজের টেকসই উন্নয়নকেও ব্যাহত করছে।
অন্যদিকে উচ্চশিক্ষায় প্রবেশ করতে পারলেও শিক্ষার্থীদের সামনে অপেক্ষা করছে আরেকটি বড় সংকট—শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একসময় দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের জন্য উচ্চশিক্ষার প্রধান আশ্রয়স্থল ছিল। কম খরচে মানসম্মত শিক্ষা পাওয়ার সুযোগ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বলা হতো সমান সুযোগের ক্ষেত্র। কিন্তু এখন বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। ভর্তি ফরমের দাম থেকে শুরু করে উন্নয়ন ফি, প্রতিটি খাতে খরচ নিয়মিত বাড়ছে। এমনকি ভর্তি হওয়ার সময়ও কাউকে স্পষ্টভাবে জানানো হয় না যে একটি নির্দিষ্ট বিভাগে পড়তে কত টাকা খরচ হবে।
উদাহরণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগ বা চারুকলা অনুষদের কথা ধরা যেতে পারে। এই বিভাগগুলোতে পড়াশোনার জন্য প্রচুর শিক্ষা উপকরণ দরকার হয়। আগে এসব উপকরণের ওপর ভর্তুকি ছিল। ফলে শিক্ষার্থীরা সামান্য খরচেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারত। এখন সেই ভর্তুকি উঠে গেছে। এখন একজন শিক্ষার্থীকে নিজের সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে উপকরণ কিনতে হচ্ছে। এর ফলে দরিদ্র পরিবারের মেধাবী সন্তানেরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছে না, মাঝপথে বাদ পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
এভাবে এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ধীরে ধীরে এমন এক জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে কেবল মধ্যবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির সন্তানেরা টিকে থাকতে পারছে। শিক্ষার এই সংকোচন নীতি আমাদের সামাজিক কাঠামোকে আরও বৈষম্যমূলক করে তুলছে। শিক্ষা সবার জন্য নয়, বরং কেবল সামর্থ্যবানদের জন্য—এই ধারণা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
আরেকটি উদ্বেগজনক দিক হলো, শিক্ষার সংকটকেও আমরা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছি। কোনো কোনো গোষ্ঠী ফরমের দাম বেশি হওয়ার কারণে কয়েকজন দরিদ্র শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে নিজেদের বড় দাতা হিসেবে উপস্থাপন করছে। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের ত্রাতা হিসেবে ভাবলেও, আসল সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না। এর মাধ্যমে কাঠামোগত সমস্যাগুলোকে জিইয়ে রাখা হচ্ছে।
শিক্ষা আসলে একটি দর্শন। এটি কেবল অর্থনৈতিক বিনিয়োগ নয়, বরং মূল্যবোধ সৃষ্টি এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রধান হাতিয়ার। কিন্তু আমরা ধীরে ধীরে সেই দর্শন থেকে সরে যাচ্ছি। শিক্ষা এখন আর সর্বজনীন অধিকার হিসেবে দেখা হচ্ছে না, বরং প্রতিযোগিতার মাঠ হিসেবে কল্পনা করা হচ্ছে, যেখানে প্রবেশাধিকার নির্ধারিত হচ্ছে অর্থনৈতিক সামর্থ্যের ভিত্তিতে।
এই অবস্থায় প্রশ্ন হলো, আমরা কি কেবল প্রতিদিনকার ছোট ছোট সমস্যা নিয়েই ব্যস্ত থাকব? নাকি দীর্ঘ মেয়াদে ভাবব, আগামী ১০ বছর, ১৫ বছর কিংবা ২০ বছর পর বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা কোথায় দাঁড়াবে? শিক্ষা কি তখনো সর্বজনীন অধিকার হিসেবে টিকে থাকবে, নাকি তা আরও সীমিত হয়ে একটি বিশেষ শ্রেণির হাতের মুঠোয় চলে যাবে?
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার এই গভীর সংকট তাই আমাদের কেবল দৈনন্দিন আলোচনার বিষয় হওয়া উচিত নয়, বরং এটি হয়ে ওঠা উচিত জাতীয় বিতর্কের কেন্দ্র হিসেবে। শিক্ষা কী হবে—পণ্য, নাকি সর্বজনীন অধিকার? এর উত্তর নির্ধারণ করবে আগামী দিনের বাংলাদেশ কেমন হবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশে শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের সমস্যা আছে। দেশ আজ উন্নয়নের নানা সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে আমরা প্রায়ই গর্ব করি। মাথাপিছু আয় বেড়েছে, অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে, প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। কিন্তু একটি মৌলিক প্রশ্ন আমাদের আলোচনায় যথেষ্ট জায়গা পায় না—শিক্ষার ভবিষ্যৎ কোথায় যাচ্ছে? আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কি সত্যিই সবার জন্য উন্মুক্ত, নাকি তা কেবল সামর্থ্যবানদের কাছে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আমরা প্রথমেই দেখতে পাই প্রাথমিক শিক্ষা স্তরেই বৈষম্যের শুরু। করোনা মহামারির সময় এক বিরাট ধাক্কার মধ্যে পড়েছে কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। এ সময় দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে যায়। এগুলো মূলত ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত হতো এবং দীর্ঘ এক বছর কিংবা দেড় বছর টিকতে না পেরে তারা ধসে পড়েছে। আর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দীর্ঘ সময় ক্লাস না হওয়ায় অনেক শিশুশিক্ষার্থী ঝরে পড়ে।
যারা সচ্ছল পরিবারের সন্তান, তারা সহজেই ভালো মানের কিন্ডারগার্টেনে পড়াশোনা শুরু করে। অন্যদিকে যারা অর্থনৈতিক কারণে প্রি-প্রাইমারি স্তরে যেতে পারেনি, তারা হঠাৎ করেই ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়েছে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতি ছাড়াই। ফলে একশ্রেণির ভেতরেই তৈরি হয়েছে তীব্র বৈষম্য। যে শিশু শুরু থেকেই ভালো ভিত্তি পেয়ে যাচ্ছে, সে এগিয়ে যাচ্ছে; আর যে শিশু শুরুর সময়ই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলো, সে পিছিয়ে পড়ছে।
এই বৈষম্য শুধু প্রাথমিক স্তরেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা আরও প্রকট হয়ে উঠছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে এসে এর ভয়াবহ রূপ স্পষ্ট হয়। বাংলাদেশের হাইস্কুল ড্রপ আউটের একটি বড় অংশ হলো নারী শিক্ষার্থী। বিশেষ করে ২০২১ সালের পর থেকে এই হার বেড়েছে। দারিদ্র্য, সামাজিক চাপ এবং শিক্ষার অতিরিক্ত খরচ—সব মিলিয়ে অনেক পরিবার মেয়েসন্তানের পড়াশোনার খরচ বহন করতে না পেরে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। ফলে বাল্যবিবাহ বেড়ে যাচ্ছে।
শিক্ষা থেকে বাদ পড়ার এই প্রবণতা কেবল একটি ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, বরং একটি সামাজিক বিপর্যয়। একটি মেয়ের শিক্ষা বন্ধ হয়ে গেলে সে শুধু নিজের সম্ভাবনাই হারায় না, বরং সমাজও একটি শিক্ষিত নারী থেকে বঞ্চিত হয়। আরও মারাত্মক হলো, বাল্যবিবাহের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়ে যাচ্ছে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার। একজন কিশোরী যখন অল্প বয়সে মা হয়, তখন স্বাস্থ্যঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। সন্তান জন্মের সময় জটিলতা তৈরি হয়, অনেক সময় প্রাণহানিও ঘটে। অর্থাৎ ড্রপ আউট শুধু শিক্ষাগত বৈষম্য তৈরি করছে না, তা নারীর স্বাস্থ্য, শিশুদের ভবিষ্যৎ, এমনকি পুরো সমাজের টেকসই উন্নয়নকেও ব্যাহত করছে।
অন্যদিকে উচ্চশিক্ষায় প্রবেশ করতে পারলেও শিক্ষার্থীদের সামনে অপেক্ষা করছে আরেকটি বড় সংকট—শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একসময় দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের জন্য উচ্চশিক্ষার প্রধান আশ্রয়স্থল ছিল। কম খরচে মানসম্মত শিক্ষা পাওয়ার সুযোগ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বলা হতো সমান সুযোগের ক্ষেত্র। কিন্তু এখন বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। ভর্তি ফরমের দাম থেকে শুরু করে উন্নয়ন ফি, প্রতিটি খাতে খরচ নিয়মিত বাড়ছে। এমনকি ভর্তি হওয়ার সময়ও কাউকে স্পষ্টভাবে জানানো হয় না যে একটি নির্দিষ্ট বিভাগে পড়তে কত টাকা খরচ হবে।
উদাহরণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগ বা চারুকলা অনুষদের কথা ধরা যেতে পারে। এই বিভাগগুলোতে পড়াশোনার জন্য প্রচুর শিক্ষা উপকরণ দরকার হয়। আগে এসব উপকরণের ওপর ভর্তুকি ছিল। ফলে শিক্ষার্থীরা সামান্য খরচেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারত। এখন সেই ভর্তুকি উঠে গেছে। এখন একজন শিক্ষার্থীকে নিজের সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে উপকরণ কিনতে হচ্ছে। এর ফলে দরিদ্র পরিবারের মেধাবী সন্তানেরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছে না, মাঝপথে বাদ পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
এভাবে এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ধীরে ধীরে এমন এক জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে কেবল মধ্যবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির সন্তানেরা টিকে থাকতে পারছে। শিক্ষার এই সংকোচন নীতি আমাদের সামাজিক কাঠামোকে আরও বৈষম্যমূলক করে তুলছে। শিক্ষা সবার জন্য নয়, বরং কেবল সামর্থ্যবানদের জন্য—এই ধারণা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
আরেকটি উদ্বেগজনক দিক হলো, শিক্ষার সংকটকেও আমরা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছি। কোনো কোনো গোষ্ঠী ফরমের দাম বেশি হওয়ার কারণে কয়েকজন দরিদ্র শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে নিজেদের বড় দাতা হিসেবে উপস্থাপন করছে। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের ত্রাতা হিসেবে ভাবলেও, আসল সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না। এর মাধ্যমে কাঠামোগত সমস্যাগুলোকে জিইয়ে রাখা হচ্ছে।
শিক্ষা আসলে একটি দর্শন। এটি কেবল অর্থনৈতিক বিনিয়োগ নয়, বরং মূল্যবোধ সৃষ্টি এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রধান হাতিয়ার। কিন্তু আমরা ধীরে ধীরে সেই দর্শন থেকে সরে যাচ্ছি। শিক্ষা এখন আর সর্বজনীন অধিকার হিসেবে দেখা হচ্ছে না, বরং প্রতিযোগিতার মাঠ হিসেবে কল্পনা করা হচ্ছে, যেখানে প্রবেশাধিকার নির্ধারিত হচ্ছে অর্থনৈতিক সামর্থ্যের ভিত্তিতে।
এই অবস্থায় প্রশ্ন হলো, আমরা কি কেবল প্রতিদিনকার ছোট ছোট সমস্যা নিয়েই ব্যস্ত থাকব? নাকি দীর্ঘ মেয়াদে ভাবব, আগামী ১০ বছর, ১৫ বছর কিংবা ২০ বছর পর বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা কোথায় দাঁড়াবে? শিক্ষা কি তখনো সর্বজনীন অধিকার হিসেবে টিকে থাকবে, নাকি তা আরও সীমিত হয়ে একটি বিশেষ শ্রেণির হাতের মুঠোয় চলে যাবে?
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার এই গভীর সংকট তাই আমাদের কেবল দৈনন্দিন আলোচনার বিষয় হওয়া উচিত নয়, বরং এটি হয়ে ওঠা উচিত জাতীয় বিতর্কের কেন্দ্র হিসেবে। শিক্ষা কী হবে—পণ্য, নাকি সর্বজনীন অধিকার? এর উত্তর নির্ধারণ করবে আগামী দিনের বাংলাদেশ কেমন হবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আসুন, একটা অমানবিক গল্প বলি। ঘটনার জন্ম যশোর জেলায়। এই জেলায় প্রায়ই ঘটছে অটোরিকশা চুরির ঘটনা। অটোরিকশা বলতে শুধু এককালের বেবিট্যাক্সির কথা বলা হচ্ছে না। এখন তো ইজিবাইকের রমরমা। দেড় থেকে দুই লাখ টাকায় কেনা যায় তা। অটোভ্যান রয়েছে, যেগুলো কিনতে হলে লাগে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
১৬ ঘণ্টা আগেনতুন চলচ্চিত্র দেখা মানেই আপনি ঝুঁকি নিয়ে ছবিটি দেখছেন। এটা ঠিক, লোকমুখে, পত্রপত্রিকায়, এমনকি নানামুখী প্রচারে হয়তো একটি চলচ্চিত্র সম্পর্কে আপনার পূর্বধারণা হচ্ছে, কিন্তু গোটা ছবি না দেখা পর্যন্ত আসলে আপনার পক্ষে বলা সম্ভব নয়, ছবিটি আপনার আদৌ ভালো লেগেছে নাকি খারাপ লেগেছে।
১৭ ঘণ্টা আগেআজকের বিশ্বে একটি দেশের ধর্ম, সম্প্রদায় ও ভাষার মধ্যে বৈচিত্র্য গণতান্ত্রিকতার সৌন্দর্য হলেও, এটি প্রায়ই সংঘাতের জন্ম দেয়। ‘আমরা বনাম তারা’ মানসিকতা মানুষের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে, যা সমাজকে বিভাজনের দিকে নিয়ে যায়। প্রায় ক্ষেত্রে দেখা যায় সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষেরা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর...
১৭ ঘণ্টা আগেগাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে ইসরায়েল দিন দিন একঘরে হয়ে পড়ছে। চাপ বাড়ছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর। সম্প্রতি স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি রাষ্ট্র স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, গাজায় যা ঘটছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়।
২ দিন আগে