উপসম্পাদকীয়
‘আজকের পত্রিকা’ বের হওয়ার পর অনেকেই একদিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, অন্যদিকে কিছু পরামর্শও কেউ কেউ দিচ্ছেন। পরামর্শদাতাদের বেশির ভাগ রাজনৈতিক পক্ষপাতমুক্ত থেকে বস্তুনিষ্ঠ মতামত বা সংবাদ প্রকাশের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। নিশ্চয়ই এসব পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে। কারণ, পাঠকদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা উপেক্ষা করা চলে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ‘নিরপেক্ষতা’, ‘বস্তুনিষ্ঠতা’–এই শব্দগুলো কি আসলে রাজনীতিনিরপেক্ষ? অথবা সবার দেখার চোখ বা উপলব্ধি কি এক রকম? সবাই কি যার যার বুঝ, স্বার্থ ও সুবিধা অনুযায়ী এগুলো ব্যবহার বা প্রয়োগ করেন না? নিরপেক্ষতা বলে কি সত্যি কিছু আছে? আপনি হয় অন্যায়ের পক্ষে অথবা অন্যায়ের বিপক্ষে থাকবেন। বস্তুনিষ্ঠতাও তা-ই। আপনি যেটাকে বস্তুনিষ্ঠ বলবেন, আরেকজনের কাছে তা হয়তো পক্ষপাতদুষ্ট। একজন চুরি করেছে। আপনি চুরির খবর ও চোরের পরিচয় সবাইকে জানিয়ে দিলেন। শান্তিকামীরা এতে খুশি হবেন। কিন্তু চোরের আত্মীয়স্বজন তাতে অখুশি হবেন। এখন প্রশ্ন হলো, আপনি পক্ষপাত কার প্রতি করবেন। শান্তিকামীদের পক্ষে, না চোরের পক্ষে?
মানুষের জীবনযাপন দিনদিন জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে, রসেবশে থাকার সুযোগ কমে আসছে। তাই একটু আমোদিত হওয়ার চেষ্টা এই লেখার মাধ্যমে–
কৌতুকটা নিশ্চয়ই মনে আছে সবার। দুর্ঘটনার পর প্রাণে বেঁচে যাওয়া চালককে যখন জিজ্ঞাসা করা হলো: এই স্পষ্ট দিবালোকে সেতুতে ওঠার এত চওড়া ফাঁকা রাস্তা থাকা সত্ত্বেও তুমি রাস্তা ছেড়ে খাদে পড়লে কী করে? উত্তরে চালক বলল, মোড় ঘুরতেই দেখি সামনে খুব দ্রুতবেগে একটা ট্যাক্সিক্যাব ধেয়ে আসছে ঠিক আমার দিকে। আমিও খুব দ্রুততার সঙ্গে ওটাকে সাইড দিয়ে দিলাম। এরপরই দেখি একটা বিরাট কাভার্ড ভ্যান! স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে ওটাকে সাইড দিতে না দিতেই দেখি আস্ত একটা ব্রিজ একেবারে গায়ের ওপর এসে পড়ল বলে! চোখ-মুখ বন্ধ করে অল্পের জন্য সংঘর্ষ এড়িয়ে ওটাকেও সাইড দিয়ে দিলাম।
এই চালক মাতাল ছিল। কিন্তু তার বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ আছে কি? চালক তার নিজের অবস্থান থেকে যেভাবে যা দেখেছে বা উপলব্ধি করেছে, সে অনুযায়ীই তৎপর হয়েছে নিঃসন্দেহে। কিন্তু মাতাল থাকার কারণে তার বিবেচনাবোধে যে ঘাটতি ছিল, তা আমরা অস্বীকার করতে পারি না। বিবেচনাবোধের এই ঘাটতিটা কী? হতে পারে বিভ্রম বা সচেতনতার অভাব–ব্রিজটা তার দিকে ধেয়ে আসা। অর্থাৎ, ব্রিজটা নয়, সে-ই যে ব্রিজের দিকে ধেয়ে যাচ্ছিল, এই বোধটাই হারিয়ে ফেলেছিল সে। অর্থাৎ, চালকের বোধ এখানে সত্য নয়, ভ্রান্ত। কিন্তু ওই চালক যদি মাতাল না হয়ে সুস্থ স্বাভাবিক হতো, তাহলেও কি এর ব্যতিক্রম কিছু দেখত বা উপলব্ধি বোধ হতো?
উপলব্ধির ক্ষেত্রে প্রকৃতপক্ষে তেমন কোনো ব্যতিক্রমই হতো না হয়তো, তবে তখন সচেতন বিচারবোধটুকু যে অন্তত সক্রিয় থাকত–সেটা ধারণা করা চলে। ফলে ব্রিজ পাশ কাটিয়ে গাড়িটাকে খাদে যেতে হতো না হয়তো। এখন প্রশ্ন, এই যে বিবেচনাবোধের ঘাটতি বিচার করা হচ্ছে, এই বিচার আসলে কে করছে? আমরা করছি। এই আমরা কারা? আমরা যাঁরা ব্রিজটিকে স্থির বিবেচনা করে গাড়িটি রাস্তা ছেড়ে খাদের দিকে ধাবিত হয়েছে বলে অনুমান করছি। অথবা ধরা যেতে পারে যে, আমরা অনুভূত স্থির ব্রিজটির পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছি। চালক যদি প্রথম পক্ষ হয়, আমরা এখানে দ্বিতীয় পক্ষ–যাঁরা মনে করছি যে, আমাদের বোধ সত্য। অর্থাৎ, আমাদের বিবেচনাবোধে ব্রিজটি স্থির অবস্থায় রয়েছে। আমাদের বোধ এখানে ভ্রান্ত নয়, সত্য বলে প্রতিপাদন করছি আমরাই।
কাজেই সত্য-মিথ্যার দ্বন্দ্বের কোনো সহজ সমাধান নেই।
এ প্রসঙ্গে একটি গল্প বলা যাক।
এক বৃদ্ধ ব্যবসায়ী তার শিশু-নাতিকে নিয়ে নিজের দোকানে এসেছেন। তিনি নাতিকে নিয়ে ক্যাশবাক্সের পেছনে গদিতে বসেছেন। পাশের দেয়ালেই ‘সততাই আমাদের মূলধন’ বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে। নাতি পড়তে শিখেছে। সে ওটা দেখে পিতামহকে প্রশ্ন করল: ‘দাদু, সততা কী?’ দাদু বললেন, ‘সততা একটা খুব খাঁটি জিনিস। চট করে বোঝানো কঠিন। মনে করো, আমি আর তুমি এ ব্যবসার অংশীদার। এখন একজন গ্রাহক এসে একটা জিনিস কিনে ১০ টাকা দিতে গিয়ে ভুল করে ২০ টাকার নোট তোমাকে দিয়ে চলে গেল। তুমিই ক্যাশবাক্সে বসেছ। তোমার অংশীদার আমি দোকানের অন্যদিকে রয়েছি। আমি দেখতে পাইনি গ্রাহক ভুল করে ১০ টাকা বেশি দিয়েছে। এখন তুমি যদি ওই ১০ টাকা থেকে আমাকে ৫ টাকা দাও, তাহলে সেটাই হলো তোমার সততা।’
নাতি বলল, ‘কিন্তু দাদু গ্রাহক…!
দাদু বললেন, ‘গ্রাহকের কথা ভেবো না, ওটা বাদ দাও।’
‘আজকের পত্রিকা’ বের হওয়ার পর অনেকেই একদিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, অন্যদিকে কিছু পরামর্শও কেউ কেউ দিচ্ছেন। পরামর্শদাতাদের বেশির ভাগ রাজনৈতিক পক্ষপাতমুক্ত থেকে বস্তুনিষ্ঠ মতামত বা সংবাদ প্রকাশের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। নিশ্চয়ই এসব পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে। কারণ, পাঠকদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা উপেক্ষা করা চলে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ‘নিরপেক্ষতা’, ‘বস্তুনিষ্ঠতা’–এই শব্দগুলো কি আসলে রাজনীতিনিরপেক্ষ? অথবা সবার দেখার চোখ বা উপলব্ধি কি এক রকম? সবাই কি যার যার বুঝ, স্বার্থ ও সুবিধা অনুযায়ী এগুলো ব্যবহার বা প্রয়োগ করেন না? নিরপেক্ষতা বলে কি সত্যি কিছু আছে? আপনি হয় অন্যায়ের পক্ষে অথবা অন্যায়ের বিপক্ষে থাকবেন। বস্তুনিষ্ঠতাও তা-ই। আপনি যেটাকে বস্তুনিষ্ঠ বলবেন, আরেকজনের কাছে তা হয়তো পক্ষপাতদুষ্ট। একজন চুরি করেছে। আপনি চুরির খবর ও চোরের পরিচয় সবাইকে জানিয়ে দিলেন। শান্তিকামীরা এতে খুশি হবেন। কিন্তু চোরের আত্মীয়স্বজন তাতে অখুশি হবেন। এখন প্রশ্ন হলো, আপনি পক্ষপাত কার প্রতি করবেন। শান্তিকামীদের পক্ষে, না চোরের পক্ষে?
মানুষের জীবনযাপন দিনদিন জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে, রসেবশে থাকার সুযোগ কমে আসছে। তাই একটু আমোদিত হওয়ার চেষ্টা এই লেখার মাধ্যমে–
কৌতুকটা নিশ্চয়ই মনে আছে সবার। দুর্ঘটনার পর প্রাণে বেঁচে যাওয়া চালককে যখন জিজ্ঞাসা করা হলো: এই স্পষ্ট দিবালোকে সেতুতে ওঠার এত চওড়া ফাঁকা রাস্তা থাকা সত্ত্বেও তুমি রাস্তা ছেড়ে খাদে পড়লে কী করে? উত্তরে চালক বলল, মোড় ঘুরতেই দেখি সামনে খুব দ্রুতবেগে একটা ট্যাক্সিক্যাব ধেয়ে আসছে ঠিক আমার দিকে। আমিও খুব দ্রুততার সঙ্গে ওটাকে সাইড দিয়ে দিলাম। এরপরই দেখি একটা বিরাট কাভার্ড ভ্যান! স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে ওটাকে সাইড দিতে না দিতেই দেখি আস্ত একটা ব্রিজ একেবারে গায়ের ওপর এসে পড়ল বলে! চোখ-মুখ বন্ধ করে অল্পের জন্য সংঘর্ষ এড়িয়ে ওটাকেও সাইড দিয়ে দিলাম।
এই চালক মাতাল ছিল। কিন্তু তার বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ আছে কি? চালক তার নিজের অবস্থান থেকে যেভাবে যা দেখেছে বা উপলব্ধি করেছে, সে অনুযায়ীই তৎপর হয়েছে নিঃসন্দেহে। কিন্তু মাতাল থাকার কারণে তার বিবেচনাবোধে যে ঘাটতি ছিল, তা আমরা অস্বীকার করতে পারি না। বিবেচনাবোধের এই ঘাটতিটা কী? হতে পারে বিভ্রম বা সচেতনতার অভাব–ব্রিজটা তার দিকে ধেয়ে আসা। অর্থাৎ, ব্রিজটা নয়, সে-ই যে ব্রিজের দিকে ধেয়ে যাচ্ছিল, এই বোধটাই হারিয়ে ফেলেছিল সে। অর্থাৎ, চালকের বোধ এখানে সত্য নয়, ভ্রান্ত। কিন্তু ওই চালক যদি মাতাল না হয়ে সুস্থ স্বাভাবিক হতো, তাহলেও কি এর ব্যতিক্রম কিছু দেখত বা উপলব্ধি বোধ হতো?
উপলব্ধির ক্ষেত্রে প্রকৃতপক্ষে তেমন কোনো ব্যতিক্রমই হতো না হয়তো, তবে তখন সচেতন বিচারবোধটুকু যে অন্তত সক্রিয় থাকত–সেটা ধারণা করা চলে। ফলে ব্রিজ পাশ কাটিয়ে গাড়িটাকে খাদে যেতে হতো না হয়তো। এখন প্রশ্ন, এই যে বিবেচনাবোধের ঘাটতি বিচার করা হচ্ছে, এই বিচার আসলে কে করছে? আমরা করছি। এই আমরা কারা? আমরা যাঁরা ব্রিজটিকে স্থির বিবেচনা করে গাড়িটি রাস্তা ছেড়ে খাদের দিকে ধাবিত হয়েছে বলে অনুমান করছি। অথবা ধরা যেতে পারে যে, আমরা অনুভূত স্থির ব্রিজটির পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছি। চালক যদি প্রথম পক্ষ হয়, আমরা এখানে দ্বিতীয় পক্ষ–যাঁরা মনে করছি যে, আমাদের বোধ সত্য। অর্থাৎ, আমাদের বিবেচনাবোধে ব্রিজটি স্থির অবস্থায় রয়েছে। আমাদের বোধ এখানে ভ্রান্ত নয়, সত্য বলে প্রতিপাদন করছি আমরাই।
কাজেই সত্য-মিথ্যার দ্বন্দ্বের কোনো সহজ সমাধান নেই।
এ প্রসঙ্গে একটি গল্প বলা যাক।
এক বৃদ্ধ ব্যবসায়ী তার শিশু-নাতিকে নিয়ে নিজের দোকানে এসেছেন। তিনি নাতিকে নিয়ে ক্যাশবাক্সের পেছনে গদিতে বসেছেন। পাশের দেয়ালেই ‘সততাই আমাদের মূলধন’ বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে। নাতি পড়তে শিখেছে। সে ওটা দেখে পিতামহকে প্রশ্ন করল: ‘দাদু, সততা কী?’ দাদু বললেন, ‘সততা একটা খুব খাঁটি জিনিস। চট করে বোঝানো কঠিন। মনে করো, আমি আর তুমি এ ব্যবসার অংশীদার। এখন একজন গ্রাহক এসে একটা জিনিস কিনে ১০ টাকা দিতে গিয়ে ভুল করে ২০ টাকার নোট তোমাকে দিয়ে চলে গেল। তুমিই ক্যাশবাক্সে বসেছ। তোমার অংশীদার আমি দোকানের অন্যদিকে রয়েছি। আমি দেখতে পাইনি গ্রাহক ভুল করে ১০ টাকা বেশি দিয়েছে। এখন তুমি যদি ওই ১০ টাকা থেকে আমাকে ৫ টাকা দাও, তাহলে সেটাই হলো তোমার সততা।’
নাতি বলল, ‘কিন্তু দাদু গ্রাহক…!
দাদু বললেন, ‘গ্রাহকের কথা ভেবো না, ওটা বাদ দাও।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্বয়ং একাধিকবার বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন এমন এক আবহে অনুষ্ঠিত হবে যে তা শুধু দেশে নয়, সারা পৃথিবীতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সর্বজনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এটা তাঁর নিজের এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে
১১ ঘণ্টা আগেসোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫। আস্থা আছে কি না, স্বপ্রণোদিত হয়ে যাচাই করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু। সংসদে ১৯৪ জন সংসদ সদস্য তাঁর ওপর আস্থা জানিয়ে ভোট দিলেও ৩৬৪ জন তাঁকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ফ্রান্সের আইনপ্রণেতা হচ্ছেন মোট ৫৭৭ জন। ফলে মাত্র ৯ মাস ক্ষমতায়
১১ ঘণ্টা আগেসময় এখন অদ্ভুত এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। মানুষ তার হাজার বছরের ইতিহাসে অনেক বিপ্লবের সাক্ষী হয়েছে—কৃষি, শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি। প্রতিটি বিপ্লব আমাদের জীবনধারায় গভীর পরিবর্তন এনেছে, কেউ কেউ পেছনে পড়ে গেছে, কেউ সামনের সারিতে উঠে এসেছে। কিন্তু এইবার যা আসছে, তা হয়তো আর কাউকে কেবল পেছনেই ফেলবে না; বরং মানুষক
১১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে ১৯৭২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কীটনাশক ব্যবহারের পরিমাণ প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। আজকের পত্রিকায় ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ‘সেন্টার ফর অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড বায়োসায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল’ (ক্যাবি) আয়োজিত এক কর্মশালায় এই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে।
১১ ঘণ্টা আগে