আজকের পত্রিকা ডেস্ক
ডাকসু নির্বাচনে শিবির প্যানেলের বড় ব্যবধানে বিজয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্ট করেন কংগ্রেস এমপি শশী থারুর। সেই টুইটের জবাবে ডাকসুর প্রতিরোধ পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী (জিএস) মেঘমল্লার বসু শশী থারুরের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লিখেন। মেঘমল্লার ওই চিঠিতে অভিযোগ করেন, শশী থারুর শিবিরের বিজয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে গিয়ে পরোক্ষভাবে জামায়াতে ইসলামের পক্ষেই প্রচারণা চালাচ্ছেন।
মেঘমল্লারের খোলা চিঠি নেটিজেনদের মাঝে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই এ নিয়ে শশী থারুরকে ট্রল করেছেন। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়েছে শশী থারুরের। তবে তিনি মেঘের দাবি অস্বীকার করে আরেক টুইটে বলেছেন, ‘আমি ‘জামায়াতের প্রশংসা’ করেছি বলে বেশ কিছু ট্রল করা হয়েছে। অথচ আমি আমার টুইটে তাদের (শিবির) বিজয়কে বলেছিলাম ‘ভবিষ্যতের জন্য এক উদ্বেগজনক ইঙ্গিত’ (it is a worrying portent of things to come)—যদি এটিকেই কেউ ‘প্রশংসা’ বলে ধরে নেয়, তাহলে শুধু এটুকুই বলতে পারি যে, ইংরেজি ভাষা আর আগের মতো নেই, যখন আমি এটি শিখেছিলাম।
এ নিয়ে এনডিটিভিতে তিনি ‘দ্য ঢাকা ব্লিপ: হোয়াই ইন্ডিয়া ক্যান নট অ্যাফর্ড টু লুক অ্যাওয়’ শিরোনামে একটি বিশ্লেষণও লিখেছেন। বিশ্লেষণটি আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য অনুবাদ করা হলো:
আমাদের পূবের প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে আসা এ খবর ভারতের সংবাদমাধ্যমে তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত ছাত্রসংগঠনের এই বিশাল জয় এক অভাবনীয় ঘটনা। ১৯৭১ সালের পর এটাই প্রথমবার কোনো ইসলামপন্থী ছাত্রসংগঠন এই প্রভাবশালী সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ নিল। অনেকের কাছে এটি কেবল বিদেশের এক ছাত্র সংসদের নির্বাচন। কিন্তু নয়াদিল্লির কাছে এটি নিছক কোনো খবর নয়—এটি অনাগত সময়ের এক অশনিসংকেত, এক রাজনৈতিক ভূকম্পন, যার অভিঘাত খুব শিগগির সীমান্তের এপাশেও অনুভূত হতে পারে।
প্রসঙ্গটি বোঝার জন্য আগে প্রেক্ষাপটটা দেখা দরকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ নির্বাচন কেবল একটি ক্যাম্পাসের ভোট নয়, ঐতিহাসিকভাবে এটি দেশটির একটি রাজনৈতিক সূচক হিসেবে বিবেচিত হয়। জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয় স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, দেশের দুই ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক শক্তি (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও অন্যতম প্রধান দল বিএনপি) নিয়ে মানুষের গভীর হতাশা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ দশক ধরে এই দুই দলই দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর রাজনৈতিক সহিংসতার প্রতীক হয়ে উঠেছে। ফলে ভোটারদের একটি বড় অংশ এখন বিমুখ।
জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠনের এ বিজয়কে ধর্মান্ধ মৌলবাদের প্রতি প্রবল সমর্থন হিসেবে দেখার চেয়ে বরং তা একধরনের বিকল্প খোঁজার মরিয়া আকুতি হিসেবে দেখাটা ভালো। ভোটারেরা ধর্মীয় উগ্রপন্থার অনুসারী নন; তাঁরা জামায়াতে ইসলামীর আদর্শে আকৃষ্ট হয়ে নয়, বরং একে এমন একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দেখছেন, যেটি এখনো পুরোনো নেতৃত্বের গভীর পচন-দূষণে কলঙ্কিত হয়নি।
এই হতাশা আরও বেড়েছে সম্প্রতি ছাত্রদের নেতৃত্বে হওয়া গণ-অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনার সরকার অপসারণে তৈরি হওয়া রাজনৈতিক শূন্যতার কারণে। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী নাজুক প্রশাসনের মধ্য দিয়ে এ সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজছে দেশ আর জনগণ খুঁজছে নতুন দিকনির্দেশনা।
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনকালে দমন ও হয়রানির শিকার জামায়াতে ইসলামী এখন পুনরায় আত্মপ্রকাশ ও প্রভাব শক্তিশালী করার জন্য উর্বর ভূমি পাচ্ছে। ঢাকার মতো ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল রাজনীতির জমিনে জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত ছাত্রসংগঠনের এ জয় দলটির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার প্রমাণ, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ভোটারদের মধ্যে, যারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে দলটির বিতর্কিত ভূমিকা প্রত্যক্ষ করেনি।
এখন প্রশ্ন হলো, ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এ বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে এর অর্থ ভারতের কাছে কী হতে পারে? বাংলাদেশে পরম্পরাগত যে রাজনৈতিক দৃশ্যপটের সঙ্গে ভারত দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত ছিল, তা এখন পরিবর্তনের মুখে। আওয়ামী লীগ একসময় নয়াদিল্লির সবচেয়ে বিশ্বস্ত অংশীদার থাকলেও বর্তমানে অস্থির অবস্থায় রয়েছে। দলটির নেতারা নির্বাসনে এবং ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। যা-ই হোক, বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞার কারণে দলটি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবে না।
বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল—বিএনপি দেশের অন্যতম প্রধান দল হলেও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ ও জনমনে অনাস্থার মুখে পড়েছে তারা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া চিকিৎসা শেষে ঢাকায় ফিরেছেন। কিন্তু তিনি অসুস্থ এবং রাজনীতিতে সক্রিয় নন। তাঁর অবর্তমানে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে—যিনি বহু বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন—ব্যাপকভাবে দূরদর্শী ও জনবান্ধব বলে দেখা হচ্ছে।
এটি স্পষ্টভাবে জামায়াতের জন্য একটি পথ খুলে দিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে সামাজিক ও কল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে তৈরি হওয়া ইসলামি দলটির তৃণমূলভিত্তিক নেটওয়ার্ক ও রাজনীতির ময়দানে তাদের ‘পরিচ্ছন্ন’ ইমেজ—অন্তত হতাশ ভোটারদের চোখে—আসন্ন নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের কারণ হতে পারে।
বাংলাদেশে জামায়াত নেতৃত্বের সরকার বা নতুন জোটে জামায়াতের প্রভাবশালী উপস্থিতি ভারতের জন্য জটিল ও সম্ভাব্য শত্রুতাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। ভারতের বৈদেশিক নীতি অ-হস্তক্ষেপমূলক’ হলেও বাস্তবে আমাদের নিকট প্রতিবেশের ঘটনা কখনোই সম্পূর্ণভাবে কেবলই তাদের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ নয়। ঢাকায় আরও কট্টর সরকার গঠন সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভারতবিরোধী উপাদানগুলোকে উৎসাহিত করতে পারে। বিশেষ করে, পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সঙ্গে সহযোগিতায় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে পারে।
জামায়াতের উত্থান বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুর জন্যও মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। ইতিহাসে দেখা গেছে, ইসলামি দলগুলোর রাজনৈতিক উত্থানের সময় হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের ঝুঁকি বেশি থাকে। জামায়াতের ঐতিহাসিক ভূমিকা এবং এর আদর্শিক ভিত্তি—যা ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রকে প্রত্যাখ্যান করে এবং ইসলামের একটি আরও কট্টর, অনেকের মতে চরমপন্থী ব্যাখ্যার ওপর দাঁড়িয়ে—এর ভবিষ্যৎ আচরণ সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন তোলে।
এই অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ভারতের জন্য একটি সতর্কবার্তা। এটি দেখাচ্ছে যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক টেকটোনিক প্লেটের অবস্থান পরিবর্তিত হচ্ছে। এই অবস্থায় ভারতের অপ্রস্তুত হয়ে পড়া সমীচীন হবে না। নয়াদিল্লিকে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সব উদীয়মান রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে হবে, এমনকি জামায়াতের মধ্যে থাকা পক্ষের সঙ্গেও সংযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি আমরা হয়তো আর ঢাকায় বন্ধুত্বপূর্ণ ও স্থিতিশীল সরকার পাব না—এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
এত দিন আমরা যে কৌশলগত অংশীদারত্বের ওপর নির্ভর করেছি, তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে এবং যত দ্রুত আমরা এ নতুন বাস্তবতা স্বীকার করে প্রস্তুতি নেব, ততই আমরা সামনে আসা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও ভালোভাবে সক্ষম হব।
ডাকসু নির্বাচনে শিবির প্যানেলের বড় ব্যবধানে বিজয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্ট করেন কংগ্রেস এমপি শশী থারুর। সেই টুইটের জবাবে ডাকসুর প্রতিরোধ পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী (জিএস) মেঘমল্লার বসু শশী থারুরের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লিখেন। মেঘমল্লার ওই চিঠিতে অভিযোগ করেন, শশী থারুর শিবিরের বিজয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে গিয়ে পরোক্ষভাবে জামায়াতে ইসলামের পক্ষেই প্রচারণা চালাচ্ছেন।
মেঘমল্লারের খোলা চিঠি নেটিজেনদের মাঝে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই এ নিয়ে শশী থারুরকে ট্রল করেছেন। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়েছে শশী থারুরের। তবে তিনি মেঘের দাবি অস্বীকার করে আরেক টুইটে বলেছেন, ‘আমি ‘জামায়াতের প্রশংসা’ করেছি বলে বেশ কিছু ট্রল করা হয়েছে। অথচ আমি আমার টুইটে তাদের (শিবির) বিজয়কে বলেছিলাম ‘ভবিষ্যতের জন্য এক উদ্বেগজনক ইঙ্গিত’ (it is a worrying portent of things to come)—যদি এটিকেই কেউ ‘প্রশংসা’ বলে ধরে নেয়, তাহলে শুধু এটুকুই বলতে পারি যে, ইংরেজি ভাষা আর আগের মতো নেই, যখন আমি এটি শিখেছিলাম।
এ নিয়ে এনডিটিভিতে তিনি ‘দ্য ঢাকা ব্লিপ: হোয়াই ইন্ডিয়া ক্যান নট অ্যাফর্ড টু লুক অ্যাওয়’ শিরোনামে একটি বিশ্লেষণও লিখেছেন। বিশ্লেষণটি আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য অনুবাদ করা হলো:
আমাদের পূবের প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে আসা এ খবর ভারতের সংবাদমাধ্যমে তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত ছাত্রসংগঠনের এই বিশাল জয় এক অভাবনীয় ঘটনা। ১৯৭১ সালের পর এটাই প্রথমবার কোনো ইসলামপন্থী ছাত্রসংগঠন এই প্রভাবশালী সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ নিল। অনেকের কাছে এটি কেবল বিদেশের এক ছাত্র সংসদের নির্বাচন। কিন্তু নয়াদিল্লির কাছে এটি নিছক কোনো খবর নয়—এটি অনাগত সময়ের এক অশনিসংকেত, এক রাজনৈতিক ভূকম্পন, যার অভিঘাত খুব শিগগির সীমান্তের এপাশেও অনুভূত হতে পারে।
প্রসঙ্গটি বোঝার জন্য আগে প্রেক্ষাপটটা দেখা দরকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ নির্বাচন কেবল একটি ক্যাম্পাসের ভোট নয়, ঐতিহাসিকভাবে এটি দেশটির একটি রাজনৈতিক সূচক হিসেবে বিবেচিত হয়। জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয় স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, দেশের দুই ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক শক্তি (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও অন্যতম প্রধান দল বিএনপি) নিয়ে মানুষের গভীর হতাশা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ দশক ধরে এই দুই দলই দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর রাজনৈতিক সহিংসতার প্রতীক হয়ে উঠেছে। ফলে ভোটারদের একটি বড় অংশ এখন বিমুখ।
জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠনের এ বিজয়কে ধর্মান্ধ মৌলবাদের প্রতি প্রবল সমর্থন হিসেবে দেখার চেয়ে বরং তা একধরনের বিকল্প খোঁজার মরিয়া আকুতি হিসেবে দেখাটা ভালো। ভোটারেরা ধর্মীয় উগ্রপন্থার অনুসারী নন; তাঁরা জামায়াতে ইসলামীর আদর্শে আকৃষ্ট হয়ে নয়, বরং একে এমন একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দেখছেন, যেটি এখনো পুরোনো নেতৃত্বের গভীর পচন-দূষণে কলঙ্কিত হয়নি।
এই হতাশা আরও বেড়েছে সম্প্রতি ছাত্রদের নেতৃত্বে হওয়া গণ-অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনার সরকার অপসারণে তৈরি হওয়া রাজনৈতিক শূন্যতার কারণে। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী নাজুক প্রশাসনের মধ্য দিয়ে এ সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজছে দেশ আর জনগণ খুঁজছে নতুন দিকনির্দেশনা।
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনকালে দমন ও হয়রানির শিকার জামায়াতে ইসলামী এখন পুনরায় আত্মপ্রকাশ ও প্রভাব শক্তিশালী করার জন্য উর্বর ভূমি পাচ্ছে। ঢাকার মতো ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল রাজনীতির জমিনে জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত ছাত্রসংগঠনের এ জয় দলটির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার প্রমাণ, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ভোটারদের মধ্যে, যারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে দলটির বিতর্কিত ভূমিকা প্রত্যক্ষ করেনি।
এখন প্রশ্ন হলো, ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এ বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে এর অর্থ ভারতের কাছে কী হতে পারে? বাংলাদেশে পরম্পরাগত যে রাজনৈতিক দৃশ্যপটের সঙ্গে ভারত দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত ছিল, তা এখন পরিবর্তনের মুখে। আওয়ামী লীগ একসময় নয়াদিল্লির সবচেয়ে বিশ্বস্ত অংশীদার থাকলেও বর্তমানে অস্থির অবস্থায় রয়েছে। দলটির নেতারা নির্বাসনে এবং ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। যা-ই হোক, বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞার কারণে দলটি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবে না।
বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল—বিএনপি দেশের অন্যতম প্রধান দল হলেও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ ও জনমনে অনাস্থার মুখে পড়েছে তারা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া চিকিৎসা শেষে ঢাকায় ফিরেছেন। কিন্তু তিনি অসুস্থ এবং রাজনীতিতে সক্রিয় নন। তাঁর অবর্তমানে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে—যিনি বহু বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন—ব্যাপকভাবে দূরদর্শী ও জনবান্ধব বলে দেখা হচ্ছে।
এটি স্পষ্টভাবে জামায়াতের জন্য একটি পথ খুলে দিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে সামাজিক ও কল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে তৈরি হওয়া ইসলামি দলটির তৃণমূলভিত্তিক নেটওয়ার্ক ও রাজনীতির ময়দানে তাদের ‘পরিচ্ছন্ন’ ইমেজ—অন্তত হতাশ ভোটারদের চোখে—আসন্ন নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের কারণ হতে পারে।
বাংলাদেশে জামায়াত নেতৃত্বের সরকার বা নতুন জোটে জামায়াতের প্রভাবশালী উপস্থিতি ভারতের জন্য জটিল ও সম্ভাব্য শত্রুতাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। ভারতের বৈদেশিক নীতি অ-হস্তক্ষেপমূলক’ হলেও বাস্তবে আমাদের নিকট প্রতিবেশের ঘটনা কখনোই সম্পূর্ণভাবে কেবলই তাদের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ নয়। ঢাকায় আরও কট্টর সরকার গঠন সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভারতবিরোধী উপাদানগুলোকে উৎসাহিত করতে পারে। বিশেষ করে, পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সঙ্গে সহযোগিতায় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে পারে।
জামায়াতের উত্থান বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুর জন্যও মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। ইতিহাসে দেখা গেছে, ইসলামি দলগুলোর রাজনৈতিক উত্থানের সময় হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের ঝুঁকি বেশি থাকে। জামায়াতের ঐতিহাসিক ভূমিকা এবং এর আদর্শিক ভিত্তি—যা ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রকে প্রত্যাখ্যান করে এবং ইসলামের একটি আরও কট্টর, অনেকের মতে চরমপন্থী ব্যাখ্যার ওপর দাঁড়িয়ে—এর ভবিষ্যৎ আচরণ সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন তোলে।
এই অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ভারতের জন্য একটি সতর্কবার্তা। এটি দেখাচ্ছে যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক টেকটোনিক প্লেটের অবস্থান পরিবর্তিত হচ্ছে। এই অবস্থায় ভারতের অপ্রস্তুত হয়ে পড়া সমীচীন হবে না। নয়াদিল্লিকে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সব উদীয়মান রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে হবে, এমনকি জামায়াতের মধ্যে থাকা পক্ষের সঙ্গেও সংযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি আমরা হয়তো আর ঢাকায় বন্ধুত্বপূর্ণ ও স্থিতিশীল সরকার পাব না—এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
এত দিন আমরা যে কৌশলগত অংশীদারত্বের ওপর নির্ভর করেছি, তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে এবং যত দ্রুত আমরা এ নতুন বাস্তবতা স্বীকার করে প্রস্তুতি নেব, ততই আমরা সামনে আসা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও ভালোভাবে সক্ষম হব।
জাকসু নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন সদস্যের ছত্রচ্ছায়ায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য অপপ্রচার ও নির্বাচনী অনিয়মের নিন্দা জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। আজ শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় সংগঠনটি।
৬ ঘণ্টা আগেফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলের বসতি সম্প্রসারণ পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই পরিকল্পনা বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আজ শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তারেক রহমান এ কথা বলেন।
৭ ঘণ্টা আগেদ্রুততম সময়ের মধ্যে জাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ভোট গণনার ধীরগতির মাধ্যমে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হচ্ছে, যা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না।
৮ ঘণ্টা আগেডাকসুর সাবেক সহসভাপতি ও আ স ম আবদুর রব বলেন, ছাত্ররাজনীতি শিক্ষার পাশাপাশি জনগণের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেবে। এটি কখনো ব্যক্তিগত, দলীয় বা গোষ্ঠীর উচ্চাকাঙ্ক্ষার খেলা হতে পারে না। আজ শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বৈ. স) নবগঠিত কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মোসলেহ উদ্দিন
৯ ঘণ্টা আগে