অরুণ কর্মকার
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্বয়ং একাধিকবার বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন এমন এক আবহে অনুষ্ঠিত হবে যে তা শুধু দেশে নয়, সারা পৃথিবীতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সর্বজনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এটা তাঁর নিজের এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আন্তরিক ও দৃঢ় অঙ্গীকার। এরপর এল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বললেন, এই নির্বাচনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের একটি স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে। ডাকসু নির্বাচন ভালোভাবেই অনুষ্ঠিত হলো। বেশ শান্তিপূর্ণই বলা যায়। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণও ছিল আশাব্যঞ্জক। কিন্তু নির্বাচনটি প্রশ্নাতীত হলো না। অনেক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা যে এই নির্বাচনে ছিল, তা কেউই অস্বীকার করেননি। তারপরও সব পক্ষই তা মেনে নিয়েছে বলেই প্রতীয়মান হয়।
এরপর অনুষ্ঠিত হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। সেই নির্বাচনে ডাকসুর তুলনায় অনেক বেশি অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। পাঁচ-পাঁচটি প্যানেল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, সংশপ্তক পর্ষদ, সম্প্রীতির ঐক্য, স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (একাংশ) নির্বাচন বর্জন করল। তাদের সবারই সুস্পষ্ট অভিযোগ, নির্বাচনে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা ছিল। একই অভিযোগে, এমনকি নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা থেকে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে সরে দাঁড়ালেন অন্তত তিনজন শিক্ষক। হ্যাঁ, তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে। সে পরিচয় তাঁরা গোপন করেননি। আর রাজনৈতিক পরিচয় থাকলেই সব অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার অভিযোগ অন্তঃসারশূন্য হয়ে যায় না।
তা ছাড়া, নির্বাচন বর্জনকারী প্যানেলগুলোর পক্ষ থেকে কতিপয় অভিযোগ তোলা হয়েছে একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে। যেমন ভোটার হওয়ার পরও ভোটার তালিকায় নাম না থাকা; ভোট দেওয়ার পর অনেকের আঙুলে কালির চিহ্ন না দেওয়া; আগের রাতে ব্যালট বাক্স নিয়ে হট্টগোল; আগের রাত ২টায় পোলিং এজেন্ট-সংক্রান্ত ঘোষণা দেওয়া, ১৫ নম্বর ছাত্রী হল কেন্দ্র থেকে পূরণ করা ব্যালট উদ্ধার করা হয়েছে এবং সেখানে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার (শিবিরের ছাত্রী শাখা) মেয়েরা জাল ভোট দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শহীদ সালাম বরকত হলে মোট ভোটার সংখ্যা ২৯৯। কিন্তু সেখানে ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে ৪০০টি। ভোটার তালিকায় ছবি সংযুক্ত না থাকায় যে কেউ যে কারও নামে ভোট দিতে পেরেছেন। রফিক-জব্বার হল থেকে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রায় প্রতিটি হলে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে বহিরাগতদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে। জাকসু নির্বাচন নিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরও কিছু অভিযোগ তুলেছিল। কিন্তু তারা আর বেশি দূর অগ্রসর হয়নি। হয়তো বিজয়ের সম্ভাবনা বেশি বলে। তবে নির্বাচন বর্জনকারী প্যানেলগুলো নতুন তফসিল ঘোষণা করে নতুন নির্বাচনের দাবি করেছে।
সামনে আসছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) নির্বাচন। সেই নির্বাচন আমাদের সামনে কী চিত্র হাজির করে, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এরপর অবশিষ্ট থাকবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) নির্বাচন। স্থানীয় পরিস্থিতির কারণে সে নির্বাচনের দিনক্ষণ এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করা যায়নি। জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান নির্বাচন জাতির জন্য ভালো কিছু বয়ে আনুক। তবে এই নির্বাচনগুলোকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত যা ঘটেছে তাকে পুরোপুরি ভালো কিছু বলা যায় না। তা ছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা সারা পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো যে নির্বাচন আয়োজনের দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছেন, তার কোনো আভাসও এই নির্বাচনগুলোতে পাওয়া যায় না। আর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যে বলেছেন, এই নির্বাচনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের একটি স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে, তা যদি সত্য হয় তাহলে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। যদিও আমাদের সবার প্রত্যাশা ভালো একটি নির্বাচনের। সুন্দর আগামীর।
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এই শঙ্কার কথাই বারবার ঘুরেফিরে আসছে। কথাগুলো বলছেন আগামী নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের নেতারাই। এই যেমন গত বৃহস্পতিবারও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করাই জাতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নাগরিক কোয়ালিশন নামের একটি সংগঠন আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এই চ্যালেঞ্জের কথা বলেন। জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ওই একই দিন দলীয় একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন হলে দেশের সংকট আরও বাড়বে। বর্তমান পরিস্থিতি বলতে তিনি কী পরিস্থিতির কথা বলতে চেয়েছেন, তা-ও স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক দুরবস্থা, লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মামলা-বাণিজ্য ও মব সন্ত্রাস চলছে। এর মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব কি না, তা সরকারকে ভাবতে হবে।
সরকারের আরও বড় ভাবনার বিষয় হলো নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী অদৃশ্য শক্তির কর্মকাণ্ড। এ মাসের গোড়ার দিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই দফা বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, ‘যারা অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে দিতে চায় না, তারা যত রকমভাবে পারে বাধা দেবে। বাংলাদেশের নতুন সত্তাকে গড়ে তুলতে তারা বাধা দেবে। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে নির্বাচন বানচাল করার। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে যাতে নির্বাচন না হয়। এগুলোর কিছু লক্ষণ এখন দেখা যাচ্ছে। সামনে আরও আসবে। এ জন্য আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। আমাদের চেষ্টা হবে নির্বাচন করার।’ প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যে নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কার বিষয়টি স্পষ্ট। এটাও স্পষ্ট যে, এই আশঙ্কার কারণ দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র।
অবশ্য ওই বৈঠকে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের বক্তব্যে যে বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে তা হলো, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঐতিহ্যগতভাবে স্থান করে নেওয়া ষড়যন্ত্র ছাড়াও আগামী নির্বাচন নিয়ে তাঁদের শঙ্কার একটি বড় কারণ অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা। সরকার যে পদ্ধতিতে দেশ পরিচালনা এবং সংস্কারপ্রক্রিয়া চালিয়ে এসেছে, তাতে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে অনতিক্রম্য দূরত্ব ও অনৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। সেই দূরত্ব ও অনৈক্যই হয়ে উঠেছে এখন গলার কাঁটা। ফলে নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন, জাতীয় সংসদের সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন, জাতীয় সংসদের পাশাপাশি একই সঙ্গে গণপরিষদ নির্বাচন প্রভৃতি ইস্যুগুলো যে দেশে নতুন এক রাজনৈতিক সমীকরণ সৃষ্টি করেছে, তার নিরসন কীভাবে করবে, সেটাও সরকারের এক বড় চ্যালেঞ্জ। সেই কারণেই নির্বাচন নিয়ে বারবার শঙ্কা-সংশয়ের কথা ঘুরেফিরে উঠে আসছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্বয়ং একাধিকবার বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন এমন এক আবহে অনুষ্ঠিত হবে যে তা শুধু দেশে নয়, সারা পৃথিবীতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সর্বজনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এটা তাঁর নিজের এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আন্তরিক ও দৃঢ় অঙ্গীকার। এরপর এল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বললেন, এই নির্বাচনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের একটি স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে। ডাকসু নির্বাচন ভালোভাবেই অনুষ্ঠিত হলো। বেশ শান্তিপূর্ণই বলা যায়। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণও ছিল আশাব্যঞ্জক। কিন্তু নির্বাচনটি প্রশ্নাতীত হলো না। অনেক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা যে এই নির্বাচনে ছিল, তা কেউই অস্বীকার করেননি। তারপরও সব পক্ষই তা মেনে নিয়েছে বলেই প্রতীয়মান হয়।
এরপর অনুষ্ঠিত হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। সেই নির্বাচনে ডাকসুর তুলনায় অনেক বেশি অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। পাঁচ-পাঁচটি প্যানেল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, সংশপ্তক পর্ষদ, সম্প্রীতির ঐক্য, স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (একাংশ) নির্বাচন বর্জন করল। তাদের সবারই সুস্পষ্ট অভিযোগ, নির্বাচনে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা ছিল। একই অভিযোগে, এমনকি নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা থেকে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে সরে দাঁড়ালেন অন্তত তিনজন শিক্ষক। হ্যাঁ, তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে। সে পরিচয় তাঁরা গোপন করেননি। আর রাজনৈতিক পরিচয় থাকলেই সব অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার অভিযোগ অন্তঃসারশূন্য হয়ে যায় না।
তা ছাড়া, নির্বাচন বর্জনকারী প্যানেলগুলোর পক্ষ থেকে কতিপয় অভিযোগ তোলা হয়েছে একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে। যেমন ভোটার হওয়ার পরও ভোটার তালিকায় নাম না থাকা; ভোট দেওয়ার পর অনেকের আঙুলে কালির চিহ্ন না দেওয়া; আগের রাতে ব্যালট বাক্স নিয়ে হট্টগোল; আগের রাত ২টায় পোলিং এজেন্ট-সংক্রান্ত ঘোষণা দেওয়া, ১৫ নম্বর ছাত্রী হল কেন্দ্র থেকে পূরণ করা ব্যালট উদ্ধার করা হয়েছে এবং সেখানে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার (শিবিরের ছাত্রী শাখা) মেয়েরা জাল ভোট দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শহীদ সালাম বরকত হলে মোট ভোটার সংখ্যা ২৯৯। কিন্তু সেখানে ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে ৪০০টি। ভোটার তালিকায় ছবি সংযুক্ত না থাকায় যে কেউ যে কারও নামে ভোট দিতে পেরেছেন। রফিক-জব্বার হল থেকে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রায় প্রতিটি হলে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে বহিরাগতদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে। জাকসু নির্বাচন নিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরও কিছু অভিযোগ তুলেছিল। কিন্তু তারা আর বেশি দূর অগ্রসর হয়নি। হয়তো বিজয়ের সম্ভাবনা বেশি বলে। তবে নির্বাচন বর্জনকারী প্যানেলগুলো নতুন তফসিল ঘোষণা করে নতুন নির্বাচনের দাবি করেছে।
সামনে আসছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) নির্বাচন। সেই নির্বাচন আমাদের সামনে কী চিত্র হাজির করে, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এরপর অবশিষ্ট থাকবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) নির্বাচন। স্থানীয় পরিস্থিতির কারণে সে নির্বাচনের দিনক্ষণ এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করা যায়নি। জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান নির্বাচন জাতির জন্য ভালো কিছু বয়ে আনুক। তবে এই নির্বাচনগুলোকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত যা ঘটেছে তাকে পুরোপুরি ভালো কিছু বলা যায় না। তা ছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা সারা পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো যে নির্বাচন আয়োজনের দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছেন, তার কোনো আভাসও এই নির্বাচনগুলোতে পাওয়া যায় না। আর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যে বলেছেন, এই নির্বাচনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের একটি স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে, তা যদি সত্য হয় তাহলে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। যদিও আমাদের সবার প্রত্যাশা ভালো একটি নির্বাচনের। সুন্দর আগামীর।
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এই শঙ্কার কথাই বারবার ঘুরেফিরে আসছে। কথাগুলো বলছেন আগামী নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের নেতারাই। এই যেমন গত বৃহস্পতিবারও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করাই জাতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নাগরিক কোয়ালিশন নামের একটি সংগঠন আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এই চ্যালেঞ্জের কথা বলেন। জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ওই একই দিন দলীয় একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন হলে দেশের সংকট আরও বাড়বে। বর্তমান পরিস্থিতি বলতে তিনি কী পরিস্থিতির কথা বলতে চেয়েছেন, তা-ও স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক দুরবস্থা, লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মামলা-বাণিজ্য ও মব সন্ত্রাস চলছে। এর মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব কি না, তা সরকারকে ভাবতে হবে।
সরকারের আরও বড় ভাবনার বিষয় হলো নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী অদৃশ্য শক্তির কর্মকাণ্ড। এ মাসের গোড়ার দিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই দফা বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, ‘যারা অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে দিতে চায় না, তারা যত রকমভাবে পারে বাধা দেবে। বাংলাদেশের নতুন সত্তাকে গড়ে তুলতে তারা বাধা দেবে। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে নির্বাচন বানচাল করার। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে যাতে নির্বাচন না হয়। এগুলোর কিছু লক্ষণ এখন দেখা যাচ্ছে। সামনে আরও আসবে। এ জন্য আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। আমাদের চেষ্টা হবে নির্বাচন করার।’ প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যে নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কার বিষয়টি স্পষ্ট। এটাও স্পষ্ট যে, এই আশঙ্কার কারণ দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র।
অবশ্য ওই বৈঠকে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের বক্তব্যে যে বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে তা হলো, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঐতিহ্যগতভাবে স্থান করে নেওয়া ষড়যন্ত্র ছাড়াও আগামী নির্বাচন নিয়ে তাঁদের শঙ্কার একটি বড় কারণ অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা। সরকার যে পদ্ধতিতে দেশ পরিচালনা এবং সংস্কারপ্রক্রিয়া চালিয়ে এসেছে, তাতে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে অনতিক্রম্য দূরত্ব ও অনৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। সেই দূরত্ব ও অনৈক্যই হয়ে উঠেছে এখন গলার কাঁটা। ফলে নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন, জাতীয় সংসদের সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন, জাতীয় সংসদের পাশাপাশি একই সঙ্গে গণপরিষদ নির্বাচন প্রভৃতি ইস্যুগুলো যে দেশে নতুন এক রাজনৈতিক সমীকরণ সৃষ্টি করেছে, তার নিরসন কীভাবে করবে, সেটাও সরকারের এক বড় চ্যালেঞ্জ। সেই কারণেই নির্বাচন নিয়ে বারবার শঙ্কা-সংশয়ের কথা ঘুরেফিরে উঠে আসছে।
সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫। আস্থা আছে কি না, স্বপ্রণোদিত হয়ে যাচাই করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু। সংসদে ১৯৪ জন সংসদ সদস্য তাঁর ওপর আস্থা জানিয়ে ভোট দিলেও ৩৬৪ জন তাঁকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ফ্রান্সের আইনপ্রণেতা হচ্ছেন মোট ৫৭৭ জন। ফলে মাত্র ৯ মাস ক্ষমতায়
৩ ঘণ্টা আগেসময় এখন অদ্ভুত এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। মানুষ তার হাজার বছরের ইতিহাসে অনেক বিপ্লবের সাক্ষী হয়েছে—কৃষি, শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি। প্রতিটি বিপ্লব আমাদের জীবনধারায় গভীর পরিবর্তন এনেছে, কেউ কেউ পেছনে পড়ে গেছে, কেউ সামনের সারিতে উঠে এসেছে। কিন্তু এইবার যা আসছে, তা হয়তো আর কাউকে কেবল পেছনেই ফেলবে না; বরং মানুষক
৩ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে ১৯৭২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কীটনাশক ব্যবহারের পরিমাণ প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। আজকের পত্রিকায় ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ‘সেন্টার ফর অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড বায়োসায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল’ (ক্যাবি) আয়োজিত এক কর্মশালায় এই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে।
৩ ঘণ্টা আগেডাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হয়েছে। অনেকের কাছে এই ফলাফল অপ্রত্যাশিত হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীরা এই নির্বাচনে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের ওপর আস্থা রেখেছেন। নির্বাচন চলাকালে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছিল এবং নির্বাচনের পর ভোট গণনার সময় সারা রাত বিক্ষোভে উত্তাল ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
১ দিন আগে