ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
হিজরি সনের সর্বশেষ মাস জিলহজ। এ মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো ১০ তারিখে ঈদুল আজহা আদায় করে আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করা। কিন্তু জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার পর ঈদুল আজহার নামাজ পর্যন্ত এমন কিছু কার্যাবলি আছে, যা পালন করলে আমরা অধিক সওয়াব লাভে ধন্য হই এবং অতি সহজে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি।
জিলহজ মাসের প্রথম ৯ দিন নফল রোজা পালন করা এবং বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, তওবা ও ইস্তিগফারের মাধ্যমে রাত অতিবাহিত করা। এ প্রসঙ্গে জামিউত তিরমিযিতে বর্ণিত আছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘জিলহজ মাসের ১০ দিনের ইবাদত আল্লাহর নিকট অন্য দিনের ইবাদতের চেয়ে বেশি প্রিয়। প্রতিদিনের রোজা এক বছরের রোজার ন্যায় আর প্রতি রাতের ফজিলত লাইলাতুল কদরের ন্যায়।’ অনুরূপভাবে ঈদের দিন কোরবানির আগে কিছু না খেয়ে কোরবানির গোশত দিয়ে খাওয়া সুন্নত। যাঁদের নামে কোরবানি দেওয়া হয়, তাঁদের জন্য জিলহজের চাঁদ দেখা থেকে কোরবানি না করা পর্যন্ত নখ, চুল না কাটা মুস্তাহাব। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যাঁরা কোরবানি করবে, তারা যেন চুল ও নখ না কাটে’ (ইবন মাজাহ)। তবে কোরবানি হয়ে যাওয়ার পর নখ-চুল কাটতে পারবে। ৯ জিলহজ পবিত্র আরাফার দিন। এ দিনে হাজিগণ আরাফা ময়দানে একত্র হয়ে ইমামের ভাষণ শ্রবণ করেন এবং মহান রবের দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। যাঁরা অন্য দিনে রোজা রাখতে পারেন না তাঁরা যেন কমপক্ষে এ দিনে রোজা রাখেন। কারণ, এ দিনে রোজা রাখা আরও বেশি সওয়াবের কাজ। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে আল্লাহ তাআলা এ দিনে রোজা পালনকারীকে বিগত ও পরবর্তী এক বছরের গোনাহ মাফ করে দেন (তিরমিযি)। ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত তাকবির বলা। এ দিনগুলোকে আইয়ামে তাশরিক বলা হয়। প্রতিটি ফরজ নামাজের পর তাকবির দেওয়া ওয়াজিব। তাকবিরটি হলো, ‘আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর ওয়া লিল্লাহিল হামদ’ (ফাওয়া শামী)। ১০, ১১ ও ১২ জিলহজের যেকোনো দিন, কোনো ব্যক্তির মালিকানায় যদি নিত্যপ্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা অথবা এর সমমূল্যের সম্পদ থাকে, তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। সে পুরুষ হোক আর মহিলা হোক। কোরবানি করার নির্দেশ দিয়ে মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে’ (ইবন মাজাহ)।
১০ জিলহজ তারিখে ঈদের নামাজ পড়া, অতঃপর কোরবানি করা ওয়াজিব। ঈদগাহে তাকবির দিতে দিতে এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া এবং অন্য রাস্তা দিয়ে প্রত্যাবর্তন করাও সওয়াবের কাজ। এ দিনে ফজর থেকে জোহর নামাজ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ে ঈদুল আজহার নামাজ এবং কোরবানি করার চেয়ে আল্লাহর নিকট আর কোনো উত্তম ইবাদত নেই। কোরবানি করার অনেক ফজিলত রয়েছে। এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত আছে যে একদা সাহাবিগণ রাসুলুল্লাহ (সা.)–কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এ কোরবানি কী? তিনি বললেন, এটি তোমাদের পিতা ইবরাহিম (আ.)–এর সুন্নত। তাঁরা পুনরায় প্রশ্ন করলেন, এতে আমাদের জন্য কী কল্যাণ নিহিত আছে? তিনি বললেন, এর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি রয়েছে। তাঁরা আবার প্রশ্ন করলেন, ছাগলের পশমেও কি
তা–ই নেকি আছে? উত্তরে তিনি বললেন, ছাগলের প্রতিটি পশমের বিনিময়েও একটি করে নেকি রয়েছে (ইবন মাজাহ)।
বছরে পাঁচ দিন রোজা রাখা হারাম। তা হলো দুই ঈদের দিন এবং ঈদুল আজহার পরের তিন দিন। এ পাঁচ দিন মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাদের জন্য দাওয়াত। উক্ত দিনসমূহে যদি কেউ রোজা রাখে, তবে সে পাপী হবে। উল্লেখ্য, উক্ত পাঁচ দিনের চার দিনই ঈদুল আজহার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। কারণ, এ ঈদে কোরবানি দেওয়া হয় এবং কোরবানির গোশত ১৩ তারিখের মধ্যে শেষ করাও মুস্তাহাব। এ ব্যাপারে মহানবী (সা.) সাহাবিদের উৎসাহিত করেছেন।
জিলহজ মাসের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত হলো সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য হজ–ওমরাহ আদায় করা। যাঁরা একবার হজ আদায় করেছেন, তাঁদের জন্য পরবর্তী সময়ে যেকোনো সময় হজ করা নফল হয়ে যায়।
জিলহজ মাস অনেক ফজিলত লাভের মাস। এ মাসে যেসব ইবাদত–বন্দেগি রয়েছে, তা প্রতিটি মুসলমানের জন্য সম্পাদন করা খুবই মর্যাদার কাজ। ইবাদতকারী বান্দারা এসব কাজ করে অধিক সওয়াব লাভ করেন এবং মহান রবের নৈকট্য লাভে ধন্য হন।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
হিজরি সনের সর্বশেষ মাস জিলহজ। এ মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো ১০ তারিখে ঈদুল আজহা আদায় করে আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করা। কিন্তু জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার পর ঈদুল আজহার নামাজ পর্যন্ত এমন কিছু কার্যাবলি আছে, যা পালন করলে আমরা অধিক সওয়াব লাভে ধন্য হই এবং অতি সহজে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি।
জিলহজ মাসের প্রথম ৯ দিন নফল রোজা পালন করা এবং বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, তওবা ও ইস্তিগফারের মাধ্যমে রাত অতিবাহিত করা। এ প্রসঙ্গে জামিউত তিরমিযিতে বর্ণিত আছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘জিলহজ মাসের ১০ দিনের ইবাদত আল্লাহর নিকট অন্য দিনের ইবাদতের চেয়ে বেশি প্রিয়। প্রতিদিনের রোজা এক বছরের রোজার ন্যায় আর প্রতি রাতের ফজিলত লাইলাতুল কদরের ন্যায়।’ অনুরূপভাবে ঈদের দিন কোরবানির আগে কিছু না খেয়ে কোরবানির গোশত দিয়ে খাওয়া সুন্নত। যাঁদের নামে কোরবানি দেওয়া হয়, তাঁদের জন্য জিলহজের চাঁদ দেখা থেকে কোরবানি না করা পর্যন্ত নখ, চুল না কাটা মুস্তাহাব। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যাঁরা কোরবানি করবে, তারা যেন চুল ও নখ না কাটে’ (ইবন মাজাহ)। তবে কোরবানি হয়ে যাওয়ার পর নখ-চুল কাটতে পারবে। ৯ জিলহজ পবিত্র আরাফার দিন। এ দিনে হাজিগণ আরাফা ময়দানে একত্র হয়ে ইমামের ভাষণ শ্রবণ করেন এবং মহান রবের দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। যাঁরা অন্য দিনে রোজা রাখতে পারেন না তাঁরা যেন কমপক্ষে এ দিনে রোজা রাখেন। কারণ, এ দিনে রোজা রাখা আরও বেশি সওয়াবের কাজ। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে আল্লাহ তাআলা এ দিনে রোজা পালনকারীকে বিগত ও পরবর্তী এক বছরের গোনাহ মাফ করে দেন (তিরমিযি)। ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত তাকবির বলা। এ দিনগুলোকে আইয়ামে তাশরিক বলা হয়। প্রতিটি ফরজ নামাজের পর তাকবির দেওয়া ওয়াজিব। তাকবিরটি হলো, ‘আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর ওয়া লিল্লাহিল হামদ’ (ফাওয়া শামী)। ১০, ১১ ও ১২ জিলহজের যেকোনো দিন, কোনো ব্যক্তির মালিকানায় যদি নিত্যপ্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা অথবা এর সমমূল্যের সম্পদ থাকে, তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। সে পুরুষ হোক আর মহিলা হোক। কোরবানি করার নির্দেশ দিয়ে মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে’ (ইবন মাজাহ)।
১০ জিলহজ তারিখে ঈদের নামাজ পড়া, অতঃপর কোরবানি করা ওয়াজিব। ঈদগাহে তাকবির দিতে দিতে এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া এবং অন্য রাস্তা দিয়ে প্রত্যাবর্তন করাও সওয়াবের কাজ। এ দিনে ফজর থেকে জোহর নামাজ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ে ঈদুল আজহার নামাজ এবং কোরবানি করার চেয়ে আল্লাহর নিকট আর কোনো উত্তম ইবাদত নেই। কোরবানি করার অনেক ফজিলত রয়েছে। এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত আছে যে একদা সাহাবিগণ রাসুলুল্লাহ (সা.)–কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এ কোরবানি কী? তিনি বললেন, এটি তোমাদের পিতা ইবরাহিম (আ.)–এর সুন্নত। তাঁরা পুনরায় প্রশ্ন করলেন, এতে আমাদের জন্য কী কল্যাণ নিহিত আছে? তিনি বললেন, এর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি রয়েছে। তাঁরা আবার প্রশ্ন করলেন, ছাগলের পশমেও কি
তা–ই নেকি আছে? উত্তরে তিনি বললেন, ছাগলের প্রতিটি পশমের বিনিময়েও একটি করে নেকি রয়েছে (ইবন মাজাহ)।
বছরে পাঁচ দিন রোজা রাখা হারাম। তা হলো দুই ঈদের দিন এবং ঈদুল আজহার পরের তিন দিন। এ পাঁচ দিন মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাদের জন্য দাওয়াত। উক্ত দিনসমূহে যদি কেউ রোজা রাখে, তবে সে পাপী হবে। উল্লেখ্য, উক্ত পাঁচ দিনের চার দিনই ঈদুল আজহার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। কারণ, এ ঈদে কোরবানি দেওয়া হয় এবং কোরবানির গোশত ১৩ তারিখের মধ্যে শেষ করাও মুস্তাহাব। এ ব্যাপারে মহানবী (সা.) সাহাবিদের উৎসাহিত করেছেন।
জিলহজ মাসের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত হলো সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য হজ–ওমরাহ আদায় করা। যাঁরা একবার হজ আদায় করেছেন, তাঁদের জন্য পরবর্তী সময়ে যেকোনো সময় হজ করা নফল হয়ে যায়।
জিলহজ মাস অনেক ফজিলত লাভের মাস। এ মাসে যেসব ইবাদত–বন্দেগি রয়েছে, তা প্রতিটি মুসলমানের জন্য সম্পাদন করা খুবই মর্যাদার কাজ। ইবাদতকারী বান্দারা এসব কাজ করে অধিক সওয়াব লাভ করেন এবং মহান রবের নৈকট্য লাভে ধন্য হন।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্বয়ং একাধিকবার বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন এমন এক আবহে অনুষ্ঠিত হবে যে তা শুধু দেশে নয়, সারা পৃথিবীতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সর্বজনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এটা তাঁর নিজের এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে
৬ ঘণ্টা আগেসোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫। আস্থা আছে কি না, স্বপ্রণোদিত হয়ে যাচাই করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু। সংসদে ১৯৪ জন সংসদ সদস্য তাঁর ওপর আস্থা জানিয়ে ভোট দিলেও ৩৬৪ জন তাঁকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ফ্রান্সের আইনপ্রণেতা হচ্ছেন মোট ৫৭৭ জন। ফলে মাত্র ৯ মাস ক্ষমতায়
৬ ঘণ্টা আগেসময় এখন অদ্ভুত এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। মানুষ তার হাজার বছরের ইতিহাসে অনেক বিপ্লবের সাক্ষী হয়েছে—কৃষি, শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি। প্রতিটি বিপ্লব আমাদের জীবনধারায় গভীর পরিবর্তন এনেছে, কেউ কেউ পেছনে পড়ে গেছে, কেউ সামনের সারিতে উঠে এসেছে। কিন্তু এইবার যা আসছে, তা হয়তো আর কাউকে কেবল পেছনেই ফেলবে না; বরং মানুষক
৬ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে ১৯৭২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কীটনাশক ব্যবহারের পরিমাণ প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। আজকের পত্রিকায় ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ‘সেন্টার ফর অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড বায়োসায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল’ (ক্যাবি) আয়োজিত এক কর্মশালায় এই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে।
৬ ঘণ্টা আগে