Ajker Patrika

সমৃদ্ধ করা ইউরেনিয়াম ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে: ইরান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৪
ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইরানের ইশফাহান শহরের একটি পারমাণবিক কেন্দ্র। ছবি: আইডিএফ
ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইরানের ইশফাহান শহরের একটি পারমাণবিক কেন্দ্র। ছবি: আইডিএফ

তেহরান জানিয়েছে, ইসরায়েল-ইরান সাম্প্রতিক যুদ্ধের সময় ইরানের কিছু পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেখানে সংরক্ষিত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে। বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এই তথ্য প্রকাশ করেন।

আরাঘচি বলেন, ‘আমাদের সব উপাদান ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে। দেশের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করছে এবং সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কাছে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেবে।’ ইরানের এই পরিষদই দেশের পরমাণু নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্বে রয়েছে।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, সম্প্রতি মিসরের কায়রোতে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসির সঙ্গে ইরান একটি নতুন সহযোগিতা কাঠামোতে সম্মত হয়েছে। তবে এই বিষয়ে আরাঘচি স্পষ্ট করে বলেন, জাতিসংঘের পরমাণু পরিদর্শকেরা ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলোতে প্রবেশাধিকার পাবেন শুধু নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনের পরই। তিনি জোর দিয়ে জানান, আগে পরিবেশ ও নিরাপত্তা-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্প্রতি ১২ দিনের যুদ্ধে ইরান তার আইএইএ সহযোগিতা স্থগিত করেছিল। ইরানের অভিযোগ ছিল—সংস্থাটি যথাযথভাবে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানায়নি।

আরাঘচি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা এবং অক্ষত স্থাপনার মধ্যে পার্থক্য করা হবে। যেমন—দক্ষিণ ইরানের বুশেহর রিঅ্যাক্টরের মতো অক্ষত স্থাপনাগুলোতে প্রবেশাধিকার বিষয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে আলাদা করে সিদ্ধান্ত নেবে নিরাপত্তা পরিষদ। কিন্তু আঘাতপ্রাপ্ত স্থাপনাগুলোতে প্রবেশের বিষয়টি জটিল এবং আপাতত সেখানে কোনো কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে না।

এর আগে গত জুনে এক সাক্ষাৎকারে আইএইএ মহাপরিচালক গ্রোসি বলেছিলেন, ‘ইরানের উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম কোথায় আছে আমরা জানি না।’ তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ইসরায়েলের আক্রমণে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কয়েক দশক পিছিয়ে গেছে। আক্রমণের আগে ইরানের কাছে প্রায় ৪০৮ কেজি উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ছিল বলে ধারণা করা হয়েছিল।

ইরান বারবার দাবি করেছে, তারা পরমাণু অস্ত্র বানাতে চায় না। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলের অভিযোগ, ইরান এমন মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যার শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নেই। পাশাপাশি তারা পরিদর্শনেও বাধা সৃষ্টি করছে এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি জোরদার করেছে।

এদিকে গত আগস্টে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ বিষয়ে আরাঘচি সতর্ক করে বলেছেন, যদি নিরাপত্তা পরিষদে ‘স্ন্যাপব্যাক’ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়, তবে ইরানের দৃষ্টিতে বর্তমান সহযোগিতা চুক্তি আর বৈধ থাকবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত