লাভা মাহমুদা
‘জীবনে বড় ভুল করেছি ইন্ডাস্ট্রি করে। ইন্ডাস্ট্রি করলে শ্রমিক থাকবে। শ্রমিক থাকলে কাজ হবে। কাজ হলে আগুন লাগতেই পারে। এর দায় কি আমার? আমি তো আর গিয়ে আগুন লাগিয়ে দিইনি। অথবা আমার কোনো ম্যানেজার আগুন লাগায়নি। শ্রমিকদের অবহেলার কারণেও আগুন লাগতে পারে।’ একটি দৈনিকের সঙ্গে কথা বলার সময় এমনটিই বলেছেন সজীব গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ আবুল হাশেম। ৫২ জনের মৃত্যুর দায় তিনি নেবেন না।
নারায়ণগঞ্জের হাশেম ফুডস লিমিটেডের ছয়তলা ভবনের আগুন পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিটের ৪৮ ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী অগ্নিকাণ্ড ছিল এটিই।
৫২ জনের মৃত্যুর নিশ্চিত তথ্য মিললেও কতজনের খোঁজ নেই, তা এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি। একটি বেসরকারি সংস্থা স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে ৫১ জনের তালিকা তৈরি করেছে। তবে সঠিক সংখ্যাটি কত, কোনো সূত্রই তা নিশ্চিত করতে পারছে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ওই ভবনে এমনিতেই দাহ্য পদার্থ এবং রাসায়নিকের পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। ছিল জ্বালানি তেল, প্লাস্টিকসামগ্রী, ফয়েল পেপার, প্যাকেট তৈরির কাগজসহ নানা ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য ও তরল পদার্থ। এই সবকিছুই দাহ্য পদার্থ। তাই শুধু পানি দিয়ে এ আগুন নেভানো সম্ভব ছিল না। সে জন্য ফোম ও আগুন নেভানোর অন্যান্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ পানির সঙ্গে মিশিয়ে ছিটাতে হয়। এ ক্ষেত্রে কেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে–সেটাও দেখার বিষয়।
বাংলাদেশ কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০০০ সালে স্থাপিত হাশেম ফুডসের কোন তলায় এবং কোথায় কী ধরনের বস্তু আছে, তা দেখার জন্য একাধিকবার চিঠি দিলেও কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি।
এই ৫২ জন মানুষ পুড়ে মারা যায়নি, তাঁদের পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। গেটে তালা ছিল, কেউ বের হতে পারেনি। বীরদর্পে মিডিয়ায় বড় বড় কথা বললেও শেষ পর্যন্ত শেষরক্ষা হয়নি। চেয়ারম্যান আবুল হাশেম ও তাঁর চার পুত্রসহ মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও এসব গ্রেপ্তার বা আটক সাধারণ মানুষকে শান্ত রাখার কৌশল কি না, সে প্রশ্ন অনেকের মনেই আছে। ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের কর্ণধার রফিকুল আমীন ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে দুদকের করা মানি লন্ডারিং মামলায় জেলে আছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অসুস্থতার অজুহাতে তিনি বেশির ভাগ সময়ই হাসপাতালের প্রিজন সেলে কাটান। সম্প্রতি প্রিজন সেল থেকে জুমে ব্যবসায়িক বৈঠক করার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তাঁকে আবার কারাগারে নেওয়া হয়েছে। প্রতারণামূলক ব্যবসার ফাঁদ পেতে মানুষ ঠকিয়ে কিংবা শ্রমিকদের শোষণ করে ‘ধনবান’ হওয়া এসব ব্যক্তির জন্য কারাগার অনেকটাই যেন বিনোদনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইন এঁদের কাছে যেন মাকড়সার জাল। হাশেম ফুডসের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের ক্ষেত্রে যেন একই রকম ঘটনা না ঘটে।
অন্যায় করে কেউ পার পাবে না–এমন বাগাড়ম্বর আমরা আগেও শুনেছি। হয়তো ভবিষ্যতেও শুনতে হবে। এটাই যেন নিয়তি। একদল মানুষের জন্মই হয়েছে আগুনে পুড়ে, ভবনচাপা পড়ে অথবা অন্য কোনোভাবে ধনিকশ্রেণির হাতে ক্রীড়নক হয়ে মরার জন্য। এই শ্রমিকের লাশের ওপর তৈরি হয় গগনচুম্বী অট্টালিকা, বিলাসবহুল বাড়ি এবং গাড়ি, বিদেশে সন্তানের পড়াশোনা–সবকিছু।
প্রিয় এই দেশটিকে সভ্য বলা যায় কি না, কয়েকবার ভাবতে হবে। আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছি, উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছি। কিন্তু ভেবে দেখেছি কি–কত প্রাণের বিনিময়ে, কত মায়ের আর্তনাদে, কত সন্তানের হাহাকারের ওপর রচিত হচ্ছে এই উন্নয়নের মহাকাব্য।
মরে যাওয়া ভাগ্যহতদের বেশির ভাগেরই বয়স ছিল ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। দেশে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ, তবু এত বিপুলসংখ্যক শিশুকে কেন কাজে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে? সহজলভ্যতার কারণে, সস্তায় শ্রম কিনতে পারার কারণে নিশ্চিত করেই বলা যায়। এটা দেখভালের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চাই।
লকডাউনে এই বাচ্চাদের ঘরে থাকার কথা। কিন্তু রাষ্ট্র খাবারের ব্যবস্থা করতে পারেনি বিধায় সেই বদ্ধ কারখানার মৃত্যুপুরীতে পুড়ে মরেছে কিংবা লাফিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছে এই অসহায় শ্রমিকেরা।
এই ব্যর্থতাও রাষ্ট্র ঢাকতে পারবে না।
ইন্ডাস্ট্রি থাকলে আগুন লাগতেই পারে। কিন্তু অব্যবস্থাপনার কারণে, শিশুশ্রমিক নিয়োগ দেওয়ার কারণে, অতি মুনাফার লোভে এবং জীবনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে এত মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারোরই নেই। এতগুলো মানুষের মৃত্যুর দায় অবশ্যই মালিককে নিতে হবে।
মরে যাওয়া অথবা বার্ন ইউনিটে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরানো মানুষগুলোরও দোষ আছে। তাঁরা এ দেশের হতভাগ্য দরিদ্র মানুষ, তাঁরা নিরন্ন। তাঁরা গিয়েছে সজীব গ্রুপ বা তার মতো শিল্প গ্রুপে কাজ করতে পেটের দায়ে, বেঁচে থাকার তাগিয়ে, দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে সংযুক্ত করতে।
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনেকগুলো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে একই সঙ্গে। অবৈধভাবে শিশুদের নিয়োগ দিয়ে, কারখানার গেট বন্ধ রেখে, ফায়ার এক্সিট ছাড়া কারখানা চালিয়ে। তা ছাড়া জুস, নসিলা, বিস্কুট, নুডলসের নামে যা খাওয়ানো হচ্ছে, তা কতটুকু স্বাস্থ্যকর–সেটাও খতিয়ে দেখার দাবি রাখে।
যতই খোঁড়া যুক্তি দেখানো হোক না কেন, অগ্নিকাণ্ডে দায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক। ফিনিক্স, তাজরীন, রানা প্লাজা, এফ আর টাওয়ার–পুড়ে যাওয়া ভবনগুলোর কোনো মালিকেরই বিচার হয়নি। এই বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে যুক্ত হলো আরও একটি নাম–সেজান জুস, ট্যাং, নসিলার মালিক মোহাম্মদ আবুল হাশেমের সজীব গ্রুপ।
একদিন সবকিছু শান্ত হবে ঠিক আগের মতোই, রূপগঞ্জে আবারও প্রাণের জোয়ার বইবে, পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া অসংখ্য মানুষের কথাও ভুলে যাবে সবাই। পেটের দায়ে এখানেই গ্রাম থেকে ছুটে আসবে অসংখ্য উপবাসী মানুষ। আবারও কাজ শুরু হবে পুরোদমে। প্রচণ্ড গরমে আয়েশি ভঙ্গিতে সেজান জুস বা ট্যাংয়ের কোমল পানীয়ে চুমুক দিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলবে সব বয়সীরা, অভিভাবকেরা আদর করে সন্তানের হাতে পরম মমতায় তুলে দেবে নসিলা, ওরিও কিংবা বর্নভিটা অথবা ম্যাকরনি নুডলসে পূরণ করতে চাইবে সন্তানের আবদার। আবারও এমন আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়বে শান্তা, মুন্না, নাজমুল, রহিমা, অমৃতা, তাসলিমা কিংবা শেফালিদের আশা, আনন্দ, স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ এবং বেঁচে থাকাও।
লেখক: শিক্ষক, প্রাবন্ধিক।
‘জীবনে বড় ভুল করেছি ইন্ডাস্ট্রি করে। ইন্ডাস্ট্রি করলে শ্রমিক থাকবে। শ্রমিক থাকলে কাজ হবে। কাজ হলে আগুন লাগতেই পারে। এর দায় কি আমার? আমি তো আর গিয়ে আগুন লাগিয়ে দিইনি। অথবা আমার কোনো ম্যানেজার আগুন লাগায়নি। শ্রমিকদের অবহেলার কারণেও আগুন লাগতে পারে।’ একটি দৈনিকের সঙ্গে কথা বলার সময় এমনটিই বলেছেন সজীব গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ আবুল হাশেম। ৫২ জনের মৃত্যুর দায় তিনি নেবেন না।
নারায়ণগঞ্জের হাশেম ফুডস লিমিটেডের ছয়তলা ভবনের আগুন পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিটের ৪৮ ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী অগ্নিকাণ্ড ছিল এটিই।
৫২ জনের মৃত্যুর নিশ্চিত তথ্য মিললেও কতজনের খোঁজ নেই, তা এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি। একটি বেসরকারি সংস্থা স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে ৫১ জনের তালিকা তৈরি করেছে। তবে সঠিক সংখ্যাটি কত, কোনো সূত্রই তা নিশ্চিত করতে পারছে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ওই ভবনে এমনিতেই দাহ্য পদার্থ এবং রাসায়নিকের পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। ছিল জ্বালানি তেল, প্লাস্টিকসামগ্রী, ফয়েল পেপার, প্যাকেট তৈরির কাগজসহ নানা ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য ও তরল পদার্থ। এই সবকিছুই দাহ্য পদার্থ। তাই শুধু পানি দিয়ে এ আগুন নেভানো সম্ভব ছিল না। সে জন্য ফোম ও আগুন নেভানোর অন্যান্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ পানির সঙ্গে মিশিয়ে ছিটাতে হয়। এ ক্ষেত্রে কেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে–সেটাও দেখার বিষয়।
বাংলাদেশ কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০০০ সালে স্থাপিত হাশেম ফুডসের কোন তলায় এবং কোথায় কী ধরনের বস্তু আছে, তা দেখার জন্য একাধিকবার চিঠি দিলেও কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি।
এই ৫২ জন মানুষ পুড়ে মারা যায়নি, তাঁদের পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। গেটে তালা ছিল, কেউ বের হতে পারেনি। বীরদর্পে মিডিয়ায় বড় বড় কথা বললেও শেষ পর্যন্ত শেষরক্ষা হয়নি। চেয়ারম্যান আবুল হাশেম ও তাঁর চার পুত্রসহ মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও এসব গ্রেপ্তার বা আটক সাধারণ মানুষকে শান্ত রাখার কৌশল কি না, সে প্রশ্ন অনেকের মনেই আছে। ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের কর্ণধার রফিকুল আমীন ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে দুদকের করা মানি লন্ডারিং মামলায় জেলে আছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অসুস্থতার অজুহাতে তিনি বেশির ভাগ সময়ই হাসপাতালের প্রিজন সেলে কাটান। সম্প্রতি প্রিজন সেল থেকে জুমে ব্যবসায়িক বৈঠক করার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তাঁকে আবার কারাগারে নেওয়া হয়েছে। প্রতারণামূলক ব্যবসার ফাঁদ পেতে মানুষ ঠকিয়ে কিংবা শ্রমিকদের শোষণ করে ‘ধনবান’ হওয়া এসব ব্যক্তির জন্য কারাগার অনেকটাই যেন বিনোদনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইন এঁদের কাছে যেন মাকড়সার জাল। হাশেম ফুডসের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের ক্ষেত্রে যেন একই রকম ঘটনা না ঘটে।
অন্যায় করে কেউ পার পাবে না–এমন বাগাড়ম্বর আমরা আগেও শুনেছি। হয়তো ভবিষ্যতেও শুনতে হবে। এটাই যেন নিয়তি। একদল মানুষের জন্মই হয়েছে আগুনে পুড়ে, ভবনচাপা পড়ে অথবা অন্য কোনোভাবে ধনিকশ্রেণির হাতে ক্রীড়নক হয়ে মরার জন্য। এই শ্রমিকের লাশের ওপর তৈরি হয় গগনচুম্বী অট্টালিকা, বিলাসবহুল বাড়ি এবং গাড়ি, বিদেশে সন্তানের পড়াশোনা–সবকিছু।
প্রিয় এই দেশটিকে সভ্য বলা যায় কি না, কয়েকবার ভাবতে হবে। আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছি, উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছি। কিন্তু ভেবে দেখেছি কি–কত প্রাণের বিনিময়ে, কত মায়ের আর্তনাদে, কত সন্তানের হাহাকারের ওপর রচিত হচ্ছে এই উন্নয়নের মহাকাব্য।
মরে যাওয়া ভাগ্যহতদের বেশির ভাগেরই বয়স ছিল ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। দেশে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ, তবু এত বিপুলসংখ্যক শিশুকে কেন কাজে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে? সহজলভ্যতার কারণে, সস্তায় শ্রম কিনতে পারার কারণে নিশ্চিত করেই বলা যায়। এটা দেখভালের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চাই।
লকডাউনে এই বাচ্চাদের ঘরে থাকার কথা। কিন্তু রাষ্ট্র খাবারের ব্যবস্থা করতে পারেনি বিধায় সেই বদ্ধ কারখানার মৃত্যুপুরীতে পুড়ে মরেছে কিংবা লাফিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছে এই অসহায় শ্রমিকেরা।
এই ব্যর্থতাও রাষ্ট্র ঢাকতে পারবে না।
ইন্ডাস্ট্রি থাকলে আগুন লাগতেই পারে। কিন্তু অব্যবস্থাপনার কারণে, শিশুশ্রমিক নিয়োগ দেওয়ার কারণে, অতি মুনাফার লোভে এবং জীবনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে এত মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারোরই নেই। এতগুলো মানুষের মৃত্যুর দায় অবশ্যই মালিককে নিতে হবে।
মরে যাওয়া অথবা বার্ন ইউনিটে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরানো মানুষগুলোরও দোষ আছে। তাঁরা এ দেশের হতভাগ্য দরিদ্র মানুষ, তাঁরা নিরন্ন। তাঁরা গিয়েছে সজীব গ্রুপ বা তার মতো শিল্প গ্রুপে কাজ করতে পেটের দায়ে, বেঁচে থাকার তাগিয়ে, দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে সংযুক্ত করতে।
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনেকগুলো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে একই সঙ্গে। অবৈধভাবে শিশুদের নিয়োগ দিয়ে, কারখানার গেট বন্ধ রেখে, ফায়ার এক্সিট ছাড়া কারখানা চালিয়ে। তা ছাড়া জুস, নসিলা, বিস্কুট, নুডলসের নামে যা খাওয়ানো হচ্ছে, তা কতটুকু স্বাস্থ্যকর–সেটাও খতিয়ে দেখার দাবি রাখে।
যতই খোঁড়া যুক্তি দেখানো হোক না কেন, অগ্নিকাণ্ডে দায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক। ফিনিক্স, তাজরীন, রানা প্লাজা, এফ আর টাওয়ার–পুড়ে যাওয়া ভবনগুলোর কোনো মালিকেরই বিচার হয়নি। এই বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে যুক্ত হলো আরও একটি নাম–সেজান জুস, ট্যাং, নসিলার মালিক মোহাম্মদ আবুল হাশেমের সজীব গ্রুপ।
একদিন সবকিছু শান্ত হবে ঠিক আগের মতোই, রূপগঞ্জে আবারও প্রাণের জোয়ার বইবে, পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া অসংখ্য মানুষের কথাও ভুলে যাবে সবাই। পেটের দায়ে এখানেই গ্রাম থেকে ছুটে আসবে অসংখ্য উপবাসী মানুষ। আবারও কাজ শুরু হবে পুরোদমে। প্রচণ্ড গরমে আয়েশি ভঙ্গিতে সেজান জুস বা ট্যাংয়ের কোমল পানীয়ে চুমুক দিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলবে সব বয়সীরা, অভিভাবকেরা আদর করে সন্তানের হাতে পরম মমতায় তুলে দেবে নসিলা, ওরিও কিংবা বর্নভিটা অথবা ম্যাকরনি নুডলসে পূরণ করতে চাইবে সন্তানের আবদার। আবারও এমন আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়বে শান্তা, মুন্না, নাজমুল, রহিমা, অমৃতা, তাসলিমা কিংবা শেফালিদের আশা, আনন্দ, স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ এবং বেঁচে থাকাও।
লেখক: শিক্ষক, প্রাবন্ধিক।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্বয়ং একাধিকবার বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন এমন এক আবহে অনুষ্ঠিত হবে যে তা শুধু দেশে নয়, সারা পৃথিবীতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সর্বজনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এটা তাঁর নিজের এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে
১১ ঘণ্টা আগেসোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫। আস্থা আছে কি না, স্বপ্রণোদিত হয়ে যাচাই করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু। সংসদে ১৯৪ জন সংসদ সদস্য তাঁর ওপর আস্থা জানিয়ে ভোট দিলেও ৩৬৪ জন তাঁকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ফ্রান্সের আইনপ্রণেতা হচ্ছেন মোট ৫৭৭ জন। ফলে মাত্র ৯ মাস ক্ষমতায়
১১ ঘণ্টা আগেসময় এখন অদ্ভুত এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। মানুষ তার হাজার বছরের ইতিহাসে অনেক বিপ্লবের সাক্ষী হয়েছে—কৃষি, শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি। প্রতিটি বিপ্লব আমাদের জীবনধারায় গভীর পরিবর্তন এনেছে, কেউ কেউ পেছনে পড়ে গেছে, কেউ সামনের সারিতে উঠে এসেছে। কিন্তু এইবার যা আসছে, তা হয়তো আর কাউকে কেবল পেছনেই ফেলবে না; বরং মানুষক
১১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে ১৯৭২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কীটনাশক ব্যবহারের পরিমাণ প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। আজকের পত্রিকায় ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ‘সেন্টার ফর অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড বায়োসায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল’ (ক্যাবি) আয়োজিত এক কর্মশালায় এই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে।
১১ ঘণ্টা আগে