Ajker Patrika

ইসরায়েলি হামলায় নিহত মাতৃগর্ভে জীবিত শিশু, নাম রাখা হচ্ছে ‘রুহ’

আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১৩: ২৯
ইসরায়েলি হামলায় নিহত মাতৃগর্ভে জীবিত শিশু, নাম রাখা হচ্ছে ‘রুহ’

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড অবরুদ্ধ গাজার দক্ষিণাঞ্চলের শহর রাফাহে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১৯ জনের মধ্যে এক পরিবারের স্বামী, স্ত্রী ও মেয়েও ছিল। এই হামলায় নিহত মায়ের গর্ভ থেকে জীবিত অবস্থায় বের করা হয়েছে এক কন্যা শিশুকে। গত শনিবার রাতে রাফাহে ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী। 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বোমা দুটি বাড়িতে আঘাত হানে। এতে এক পরিবারেরই ১৩ শিশুর মৃত্যু হয়। 

মৃত ফিলিস্তিনি মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুর দেখভাল করছেন চিকিৎসক মোহাম্মদ সালামা। তিনি বলেন, ‘জরুরি সি–সেকশনের বা সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুটির প্রসবের সময় ওজন ছিল ১ দশমিক ৪ কেজি। শিশুটির অবস্থা এখন স্থিতিশীল এবং ধীরে ধীরে তার উন্নতি হচ্ছে।’ 

শিশুটির মা, সাবরিন আল–সাকানি ৩০ সপ্তাহের গর্ভবতী ছিলেন। শিশুটিকে রাফাহ হাসপাতালের ইনকিউবেটরে অন্য একটি শিশুর সঙ্গে রাখা হয়েছে। তার বুকে টেপ দিয়ে লেখা ‘শহীদ সাবরিন আল–সাকানির সন্তান’।

সাকানির ছোট মেয়ে মালাকও এই হামলায় নিহত হয়েছে। ছোট বোনের আগমনের অপেক্ষায় থাকা মালাক বোনের নাম রাখতে চেয়েছিল ‘রুহ’। আরবি ভাষার এই শব্দটির বাংলা অর্থ হলো আত্মা। মালাকের চাচা ররামি আল–শেখ জানান, ‘ছোট বোন আসছে জেনেই মালাক অনেক খুশি ছিল।’ 

চিকিৎসক সালামা বলেন, ‘শিশুটি আরও তিন থেকে চার সপ্তাহ হাসপাতালে থাকবে। এরপর আমরা শিশুটি কোথায় যাবে, চাচা–চাচি না কি দাদা–দাদির কাছে এ বিষয়গুলো দেখব। তবে সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো, এ শিশু জন্ম থেকেই অনাথ। 

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তথ্য বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী দ্বিতীয় যে বাড়িতে হামলা করেছিল তা ছিল আবদেল আল পরিবারের। হামলায় এই পরিবারের ১৩ শিশু ও দুই নারী নিহত হয়। সাদা কাফনে মোড়ানো এক শিশুর লাশ নিয়ে শোকার্ত সাকর আবদেল আল তিনি বলেন, ‘নিহতদের মধ্যে একজনও পুরুষকে দেখেছেন? এখানে সবাই নারী ও শিশু। আমার স্ত্রী, সন্তান ও পুরো পরিবারের সঙ্গে আমার পুরো পরিচয়ই মুছে গেছে।’ 

মোহাম্মদ আল–বেহাইরি নামে আরেক ফিলিস্তিনি জানান, তাঁর মেয়ে ও নাতি এখনো ধ্বংসস্তূপ নিচে চাপা পড়ে আছে। তিনি বলেন, ‘এটা দুঃখ ও বিষণ্নতার অনুভূতি।  আমাদের এই জীবনে কান্নাকাটি করার মতো কিছুই অবশিষ্ট নেই, আমাদের আর কেমন অনুভূতি থাকবে? আপনি যখন আপনার সন্তান হারাবেন, সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ প্রিয়জন হারাবেন, আপনার অনুভূতি কেমন হবে?’

রাফাহে হতাহতের বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র বলে, গাজায় সামরিক কম্পাউন্ড, লঞ্চ পোস্ট ও সশস্ত্র সদস্যসহ বিভিন্ন সশস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত