Ajker Patrika

ইসরায়েলি সেনারা সরছে, ধ্বংসস্তূপে ফিরছে ফিলিস্তিনিরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৩৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর আজ শুক্রবার হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। ইসরায়েলি সেনারা গাজার কিছু এলাকা থেকে পিছু হটা শুরু করলে গাজাবাসীরা দলে দলে ধুলায় মোড়া রাস্তায় হেঁটে গাজা সিটির দিকে ফিরতে থাকেন, যা কয়েক দিন আগেই ইসরায়েলের বড় হামলায় ধ্বংস হয়।

গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান এলাকার বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী ইসমাইল জায়দা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমার বাড়িটা এখনো দাঁড়িয়ে আছে। এ জন্য আল্লাহকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু চারপাশের সব শেষ। আমার প্রতিবেশীদের বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে; পুরো পাড়া-পড়শি নিশ্চিহ্ন।’

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আজ স্থানীয় সময় দুপুরে যুদ্ধবিরতি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়েছে। ইসরায়েল সরকার ভোরের দিকে হামাসের সঙ্গে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করে; যার ফলে আংশিকভাবে সেনা প্রত্যাহার এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুরোপুরি যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার পথ খুলে যায়।

চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে; বিনিময়ে ইসরায়েলে বন্দী শত শত ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে।

গাজায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগের প্রথম ধাপে ইসরায়েলি বাহিনীকে গাজার প্রধান শহরগুলো থেকে সরে আসতে বলা হয়েছে; যদিও তারা এখনো উপত্যকার প্রায় অর্ধেক এলাকার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

চুক্তি কার্যকর হলে খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী বহনকারী ট্রাকগুলো গাজায় ঢুকতে পারবে। এর ফলে ত্রাণ দেওয়া যাবে সেই লাখো নাগরিককে, যারা ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছিল।

গাজার মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আজ সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, সরকার সব ফিলিস্তিনি জিম্মিকে মুক্তি দিতে একটি প্রক্রিয়া অনুমোদন করেছে।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের বাসিন্দাদের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, কিছু ইসরায়েলি সেনা গাজার পূর্ব দিকে সীমান্তসংলগ্ন এলাকা থেকে পিছু হটেছে; যদিও সেখান থেকে ট্যাংক থেকে গোলাবর্ষণের শব্দ শোনা গেছে।

গাজার কেন্দ্রস্থল নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে কিছু ইসরায়েলি সেনা তাদের সামরিক অবস্থান গুটিয়ে ইসরায়েলি সীমান্তের দিকে চলে যায়। তবে আজ ভোরের দিকে গোলাগুলির শব্দ শোনার পর বাকি সেনারা সেই এলাকাতেই থেকে যায়।

রয়টার্স জানিয়েছে, ভূমধ্যসাগরীয় উপকূল ধরে গাজা সিটির দিকে যাওয়ার রাস্তা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সরে এসেছে। গত মাসজুড়ে ইসরায়েলি আক্রমণের শিকার এই অঞ্চলে ফিরে যাওয়ার আশায় সেখানে আজ শত শত মানুষ জড়ো হয়।

তবে কাছাকাছি গোলাগুলির শব্দ শুনে অনেকে সামনে এগোনোর বিষয়ে দ্বিধান্বিত ছিল। বাসিন্দারা জানায়, হাতে গোনা কয়েকজন হেঁটে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করছিল।

গাজা সিটিতে উদ্ধারকর্মীরা সেই এলাকাগুলোতে কাজ শুরু করেছেন, যেখানে তারা আগে পৌঁছাতে পারেননি। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, আগের হামলায় নিহত অন্তত ১০টি মৃতদেহ তাঁরা উদ্ধার করেছেন।

দীর্ঘ দুই বছর পর বাড়ি ফেরার অনুভূতি জানিয়ে ৪০ বছর বয়সী মাহদি সাকলা বলেন, ‘আমরা যুদ্ধবিরতি এবং অস্ত্রবিরতির খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গেই খুব খুশি হয়েছিলাম। গাজা সিটিতে আমাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলাম। অবশ্য এখন আর বাড়ি নেই; সব ধ্বংস হয়ে গেছে।

কিন্তু ধ্বংসস্তূপ হলেও সেখানে ফিরে যেতে পারলে আমরা খুশি। এটাও এক দারুণ আনন্দ। গত দুই বছর আমরা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বাস্তুচ্যুত হয়ে কষ্ট সহ্য করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ফোন বন্ধ পেলে ধরে নিবা মারা গেছি’, স্ত্রীকে বলেছিলেন ইউক্রেনে নিহত রাজবাড়ীর নজরুল

নার্সিং হোমে বয়স্ক পুরুষদের ওষুধ খেতে উৎসাহিত করতে মিনি স্কার্ট পরে তরুণীর নাচ

শাহবাগে গত রাতে ফুটপাত থেকে নারীসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার

ফিলিস্তিনিদের বের করে দেওয়া হবে না, বরং উল্টোটা ঘটবে: ট্রাম্প

ট্রাম্পের আশাভঙ্গ, শান্তিতে নোবেল জিতলেন ভেনেজুয়েলার মারিয়া কোরিনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত