Ajker Patrika

ট্রাম্পের আশাভঙ্গ, শান্তিতে নোবেল জিতলেন ভেনেজুয়েলার মারিয়া কোরিনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫১
ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। ছবি: সংগৃহীত
ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে এসে একাধিকবার নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, তাঁর প্রথম আমল ও বর্তমান আমল মিলিয়ে তিনি অন্তত ‘সাতটি’ সংঘাত থামিয়েছেন। তবে তাঁর নোবেল পাওয়ার আশা ভেঙে খানখান করে এবারে শান্তিতে নোবেল জিতেছেন ভেনেজুয়েলার রাজনীতিক মারিয়া কোরিনা মাচাদো।

স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার বেলা ১১টা (বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা) নরওয়ের রাজধানী অসলোর নোবেল ইনস্টিটিউট থেকে এবারের শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়।

মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার কারণ হিসেবে নোবেল ইনস্টিটিউট উল্লেখ করেছে, ‘ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলস প্রচেষ্টা এবং একনায়কতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে ন্যায়সংগত ও শান্তিপূর্ণ পরিবর্তনের লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পাচ্ছেন। ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র আন্দোলনের নেতা হিসেবে মারিয়া কোরিনা মাচাদো সাম্প্রতিক সময়ে লাতিন আমেরিকার অন্যতম সাহসী বেসামরিক নেত্রী।’

নোবেল ইনস্টিটিউট বিবৃতিতে বলেছে, ‘মাচাদো এমন এক সময়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলেছেন, যখন তারা ছিল গভীরভাবে বিভক্ত। অবাধ নির্বাচন ও প্রতিনিধিত্বমূলক সরকারের দাবিতে সেই বিভক্ত বিরোধীরা এক হয়েছে, যা গণতন্ত্রের মূল চেতনা। ভিন্নমতের মধ্যেও জনগণের শাসনের নীতিকে রক্ষা করার যে সম্মিলিত অঙ্গীকার, সেটিই গণতন্ত্রের প্রাণ। আর আজ যখন গণতন্ত্র হুমকির মুখে, তখন এই যৌথ অবস্থান রক্ষা করা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ভেনেজুয়েলা একসময় ছিল তুলনামূলকভাবে গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ দেশ। কিন্তু এখন তা পরিণত হয়েছে এক নিষ্ঠুর, স্বৈরাচারী রাষ্ট্রে, যেখানে মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকট চরমে পৌঁছেছে। দেশের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে, অথচ শাসক শ্রেণির এক ক্ষুদ্র অংশ সম্পদের পাহাড় গড়ছে। রাষ্ট্রের সহিংস যন্ত্র এখন নিজের নাগরিকদের বিরুদ্ধেই ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রায় ৮০ লাখ মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। নির্বাচন জালিয়াতি, মামলা ও কারাবন্দিত্বের মাধ্যমে বিরোধী পক্ষকে পদ্ধতিগতভাবে দমন করা হচ্ছে।’

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এটি পাওয়ার জন্য যেভাবে দৌড়ঝাঁপ চালিয়েছেন, সেভাবে ইতিহাসে আর কোনো প্রার্থী প্রচারণা বা লবিং করেননি। ট্রাম্প নিজেই প্রকাশ্যে বলেছেন, যদি তাঁকে নোবেল না দেওয়া হয়, তবে সেটি হবে ‘একটি বড় অপমান’।

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তাঁর এই নজিরবিহীন প্রচেষ্টা খুব একটা ফলপ্রসূ হবে না। বিশেষজ্ঞদের যুক্তি হলো, পুরস্কারটি দেওয়া হয় আগের বছরের কর্মকাণ্ডের ভিত্তিতে, অথচ ২০২৪ সালে ট্রাম্প নির্বাচিত হলেও তখনো ক্ষমতা গ্রহণ করেননি।

অসলোভিত্তিক শান্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক নিনা গ্রেগার বলেন, ‘কমিটির ওপর এমন চাপ দেওয়া কিংবা বলা ‘আমিই যোগ্য প্রার্থী’, এটি মোটেও শান্তিপূর্ণ আচরণ নয়।’ নরওয়ের আন্তর্জাতিক বিষয়ক ইনস্টিটিউটের গবেষণা পরিচালক হালভার্ড লেইরা বলেন, আগেও লবিং হয়েছে, তবে এত প্রকাশ্যে নয়। উদাহরণস্বরূপ দক্ষিণ কোরিয়া ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট কিম দায়ে-জংয়ের পক্ষে অত্যন্ত কৌশলী প্রচারণা চালিয়েছিল।

তবু ট্রাম্প থামেননি। তাঁর বক্তব্যে অহংকারের ছাপ স্পষ্ট—‘আমি সাতটি যুদ্ধ বন্ধ করেছি, তবু তারা আমাকে নোবেল দেবে না। দুঃখজনক, এটি আমারই প্রাপ্য।’

এর আগে গত বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জেতে জাপানে পরমাণু বোমা হামলায় জীবিতদের নিয়ে গড়ে ওঠা পরমাণু অস্ত্রবিরোধী সংগঠন নিহন হিদাঙ্কিও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বোমার আঘাত থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষদের নিয়ে সোচ্চার তৃণমূল সংগঠনটি স্থানীয়ভাবে ‘হিবাকুশা’ নামেও পরিচিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ফোন বন্ধ পেলে ধরে নিবা মারা গেছি’, স্ত্রীকে বলেছিলেন ইউক্রেনে নিহত রাজবাড়ীর নজরুল

শাহবাগে গত রাতে ফুটপাত থেকে নারীসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার

নার্সিং হোমে বয়স্ক পুরুষদের ওষুধ খেতে উৎসাহিত করতে মিনি স্কার্ট পরে তরুণীর নাচ

ফিলিস্তিনিদের বের করে দেওয়া হবে না, বরং উল্টোটা ঘটবে: ট্রাম্প

যে কারণে শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন ইসরায়েলের দুজন প্রধানমন্ত্রী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত