Ajker Patrika

গাজার চলমান হত্যাকাণ্ড যুদ্ধাপরাধের সমান: জাতিসংঘ

আপডেট : ১২ জুন ২০২৪, ১৮: ০৪
গাজার চলমান হত্যাকাণ্ড যুদ্ধাপরাধের সমান: জাতিসংঘ

ইসরায়েল ও হামাস উভয়েই যুদ্ধাপরাধ করেছে বলে প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনে বলেছে জাতিসংঘ। তদন্তে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েল যে বিশাল মাত্রায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তা মানবতাবিরোধী অপরাধ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন (সিওআই) দ্বারা প্রকাশিত এই তদন্তের ফলাফলে দুটি ভাগ রয়েছে। এক ভাগ ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার ওপর আর অন্যটি ইসরায়েলের সামরিক কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে প্রকাশিত।

কমিশনের জানিয়েছে, ইসরায়েল তাদের এই তদন্তে কোনো সহযোগিতা করেনি বরং ইসরায়েলবিরোধী পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছে। তারা (ইসরায়েল) তদন্তকারীদের ইসরায়েল ও অধিকৃত ফিলিস্তিন উভয় অঞ্চলেই প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে।

তবে জাতিসংঘে ইসরায়েলের কূটনৈতিক মিশন এই তথ্য প্রত্যাখ্যান করেছে। ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত মেইরাভ ইলন শাহার বলেছেন, ‘সিওআই আবারও প্রমাণ করেছে যে তাদের ক্রিয়াকলাপ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডার বহিঃপ্রকাশ।’

এ বিষয়ে হামাস তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

ইসরায়েলের তথ্যমতে, ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলি ভূখণ্ডে আক্রমণে ১ হাজার ২০০-রও বেশি মানুষ নিহত এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়েছে। এ হামলা গাজায় ইসরায়েলি হামলাকে উসকে দিয়েছিল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত সংঘাতকে বিবেচনা করা হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের নির্যাতন, খুন ও আত্মহত্যা, ব্যক্তিগত মর্যাদার ওপর আক্রোশ সঙ্গে অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরণের চিত্র উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল কেবল গাজাবাসীদের খাদ্য, পানি, আশ্রয় ও ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় সাহায্য সরবরাহ করতেই ব্যর্থ হয়নি, বরং অন্য কারও দ্বারা সেই প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহে বাধা দেওয়ার চেষ্টাও করেছে।

সিওআইয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে জেনে–বুঝে আক্রমণ আন্তর্জাতিক অপরাধে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। আর সব ধরনের সতর্কতা ও নীতি উপেক্ষা করে সর্বাধিক ক্ষতি করার জন্য নেওয়া কৌশলের অনিবার্য ফলাফল হচ্ছে গাজায় ধ্বংস ও বেসামরিক হতাহতের ঘটনা।

জাতিসংঘ নির্দেশিত সংস্থাগুলোর দ্বারা সংগৃহীত প্রমাণ অনেক ক্ষেত্রেই যুদ্ধাপরাধের বিচারের ভিত্তি তৈরি করে দেয় এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তার বিচার করা হয়।

গণহত্যা, যৌন সহিংসতা ও অপমান

সিওআই এই প্রতিবেদন তৈরিতে শত শত ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার, স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবি, মেডিকেল রিপোর্ট এবং ওপেন সোর্সের সহায়তা নিয়েছে।

হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার ওপর ৫৯ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে প্রাপ্ত ফলাফলগুলোর মধ্যে কমিশন পাবলিক শেল্টারে গণহত্যার চারটি ঘটনা যাচাই করেছে। সেখানে উঠে এসেছে জঙ্গিদের অভিযানের নির্দেশনার পরিকল্পনা। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা সংঘটিত যৌন সহিংসতার প্যাটার্ন খুঁজে পাওয়ার দাবি করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। তবে ধর্ষণের অভিযোগগুলোর সত্যতা আলাদাভাবে যাচাই করা যায়নি।

১২৬ পৃষ্ঠার গাজা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল যে এমকে-৮৪ নামের ধ্বংসাত্মক বোমার ব্যবহার করছে, তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কারণ, এসব অস্ত্র উদ্দেশ্যমূলকভাবে সামরিক লক্ষ্যবস্তু ও বেসামরিক বস্তু আলাদা করতে পারে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনিরা মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার হয়েছে। একটি ঘটনার উল্লেখ করে বলা হয়, ‘তাদের (ফিলিস্তিনিদের) মানসিকভাবে হেনস্তা করার জন্য জনসমক্ষে নগ্ন হতে বাধ্য করার মতো ঘটনাও ঘটেছে।’

জাতিসংঘে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান নাভি পিলেসহ তিনজন বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে গঠিত সিওআই ২০২১ সালে জেনেভা কাউন্সিল দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। আগামী সপ্তাহে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে এই প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও হৃদ্‌রোগ থাকলে বাতিল হতে পারে মার্কিন ভিসার আবেদন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৩৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের জন্য ভিসাপ্রার্থীদের মধ্যে যাঁদের ডায়াবেটিস বা স্থূলতার মতো স্বাস্থ্য সমস্যা আছে, তাঁদের আবেদন বাতিল হতে পারে—এমন একটি নির্দেশনা জারি করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) নতুন এ নির্দেশিকা জারি করে, যেখানে বলা হয়েছে, এ ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত আবেদনকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘পাবলিক চার্জ’ বা অর্থনৈতিকভাবে বোঝা হয়ে উঠতে পারেন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ক্ষয় করতে পারেন। তাই যুক্তরাষ্ট্রে আসার আগে এসব বিষয় যাচাই করতে হবে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম কেএফএফ হেলথ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ নির্দেশনা মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে নোটিশ আকারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে মার্কিন ভিসাপ্রক্রিয়ায় সংক্রামক রোগ, টিকাদানের ইতিহাস, মানসিক অবস্থা ও শারীরিক সুস্থতার মতো বিষয়গুলোই বিবেচনায় নেওয়া হতো। তবে নতুন এই নীতিমালায় আরও কিছু স্বাস্থ্য সমস্যাকে যুক্ত করা হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আবেদনকারীর স্বাস্থ্য বিবেচনা করতে হবে। কিছু রোগের (যেমন হৃদ্‌রোগ, শ্বাসযন্ত্র, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, মেটাবলিক, স্নায়বিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা) চিকিৎসার জন্য কয়েক লাখ ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ভিসা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আবেদনকারী চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে সক্ষম কি না, তা মূল্যায়ন করতে হবে।

অলাভজনক আইনি সহায়তা সংস্থা ক্যাথলিক লিগ্যাল ইমিগ্রেশন নেটওয়ার্কের সিনিয়র অ্যাটর্নি চার্লস হুইলার বলেছেন, যদিও এ নির্দেশনা সব ধরনের ভিসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তবে এটি মূলত স্থায়ী বসবাসের (পারমানেন্ট রেসিডেন্সি) আবেদনকারীদের ওপরই প্রয়োগ করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হুইলার আরও বলেন, চিকিৎসাসংক্রান্ত বিষয়গুলো মূল্যায়নের ক্ষমতা ভিসা কর্মকর্তাদের ওপর ন্যস্ত করাটা উদ্বেগজনক। তাঁরা চিকিৎসক নন, এ ক্ষেত্রে তাঁদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই আর তাঁদের নিজস্ব ধারণা বা পক্ষপাতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনুচিত।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আবেদনকারীর কি আজীবন চিকিৎসার খরচ বহনের মতো পর্যাপ্ত আর্থিক সামর্থ্য আছে, যাতে তিনি সরকারি সহায়তা বা দীর্ঘমেয়াদি প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সেবার প্রয়োজন ছাড়াই জীবন যাপন করতে পারেন? বিষয়টি অবশ্যই যাচাই করতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, আবেদনকারীর পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যের দিকও বিবেচনা করতে হবে। যেমন সন্তান বা প্রবীণ অভিভাবকের কোনো শারীরিক অক্ষমতা, দীর্ঘস্থায়ী রোগ বা বিশেষ যত্নের প্রয়োজন আছে কি না। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনো নির্ভরশীল সদস্যের (ডিপেনডেন্ট) এমন কোনো শারীরিক বা মানসিক অবস্থা আছে কি না, যার কারণে আবেদনকারীর কাজে কোনো প্রভাব পড়তে পারে?

জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিবাসন আইনজীবী সোফিয়া জেনোভেস বলেন, এ নির্দেশিকায় আবেদনকারীদের চিকিৎসা ইতিহাসের ভিত্তিতে তাঁদের চিকিৎসা ব্যয়ের সম্ভাবনা ও যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থানের সক্ষমতা যাচাই করতে ভিসা কর্মকর্তাদের উৎসাহিত করা হয়েছে; যাতে তাঁরা বুঝতে পারেন, যুক্তরাষ্ট্রে আসার আবেদনকারী এ ধরনের কোনো জটিলতায় না পড়েন।

সার্বিকভাবে, স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত আবেদনকারীরা যুক্তরাষ্ট্রে এসে যেন ‘পাবলিক চার্জ’ বা অর্থনৈতিকভাবে বোঝা হয়ে না ওঠেন, তা এড়াতে এই নতুন নিয়ম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ সীমান্তে সেনাসমাবেশ বাড়াচ্ছে ভারত, চিকেনস নেকের কাছে নতুন তিন গ্যারিসন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে নতুন তিনটি সক্রিয় সেনাঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত। সিলিগুড়ি করিডর বা ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত এই অঞ্চল কৌশলগতভাবে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধারণা করা হচ্ছে, এর নিরাপত্তা বাড়াতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাম-বাংলাদেশ সীমান্তের ধুবড়ির কাছে বামুনি, বিহারের কিশনগঞ্জ এবং পশ্চিমবঙ্গের চোপড়ায় এই তিন নতুন ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ ভারতের পূর্ব সীমান্তে প্রতিরক্ষা জোরদার করার বড় পরিকল্পনার অংশ, যার লক্ষ্য সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো, ট্যাকটিক্যাল ঘাটতি পূরণ করা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

উত্তরবঙ্গের ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত সিলিগুড়ি করিডর ভারতের মূল ভূখণ্ডকে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করে। এই অঞ্চল চারদিক থেকে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ও চীনের ঘেরা।

চিকেনস নেককে অনেকে ভারতের দুর্বল অংশ মনে করলেও ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একে দেশের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা করিডর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট এক সেনা সূত্রের ভাষায়, ‘সিলিগুড়ি করিডর বহুস্তরীয় নিরাপত্তাবলয়ে সুরক্ষিত। নতুন ঘাঁটিগুলো আমাদের দ্রুত চলাচল, লজিস্টিকস এবং রিয়েল টাইম গোয়েন্দা তথ্য সংহত করার ক্ষমতা আরও বাড়াবে।’

এর আগে ভারতীয় সেনাপ্রধানও মন্তব্য করেছিলেন, ‘চিকেনস নেককে আমি দুর্বল অংশ হিসেবে দেখি না। এটি আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী অঞ্চল। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত আমাদের সব বাহিনী এখানে একত্রে মোতায়েন করা যায়।’

জানা গেছে, সিলিগুড়ির কাছে সুখনায় অবস্থিত ত্রি-শক্তি কর্পস (৩৩-কর্পস) এই করিডরের প্রতিরক্ষা তদারক করে।

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আকাশপথে করিডরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে পশ্চিমবঙ্গের হাশিমারা বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন রাফাল যুদ্ধবিমান। এ ছাড়া মিগ সিরিজের বিমান এবং ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র রেজিমেন্টও রয়েছে।

এ ছাড়া ভারত এই অঞ্চলে একটি উন্নত তিনস্তরের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা স্থাপন করেছে, যেখানে রয়েছে রাশিয়া থেকে আনা এস-৪০০ সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, ইসরায়েল ও ডিআরডিওর যৌথভাবে তৈরি এমআরএসএএম সিস্টেম এবং দেশীয় আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা। এই তিনটি মিলেই পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসা বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা কাভারেজ দেয়।

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই অঞ্চলে এস-৪০০ সিস্টেম মূলত চীন বা অন্য শত্রুপক্ষের বিমান অনুপ্রবেশ ঠেকানোর উদ্দেশ্যে স্থাপন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে ‘বন্দে মাতরম’ নিয়ে আবারও বিতর্ক—বাদ দেওয়া হয়েছিল স্তবক, কিন্তু কেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ৫১
‘বন্দে মাতরম’ কবিতাটি লিখেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত
‘বন্দে মাতরম’ কবিতাটি লিখেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সংগীত নিয়ে বিতর্ক আবারও সামনে এসেছে। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ‘বন্দে মাতরম’ শিরোনামে এই সংগীত রচনার ১৫০ বছর পূর্তি ছিল। এই উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পুরো কবিতাটি পাঠ করেন এবং অভিযোগ করেন, বর্তমান বিরোধী দল কংগ্রেস কবিতাটিকে অতীতে ‘ছিন্নভিন্ন’ করেছে।

১৮৭৫ সালের ৭ নভেম্বর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন ‘বন্দে মাতরম’ কবিতাটি। এটি পরে তাঁর ‘আনন্দমঠ’ (১৮৮২) উপন্যাসে প্রকাশিত হয়। ছয় স্তবকের এই কবিতা একসময় ভারতীয় স্বাধীনতাসংগ্রামের অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে ওঠে। কবিতাটিতে মাতৃভূমিকে এক দেবীরূপে কল্পনা করা হয়েছে—যিনি একই সঙ্গে স্নেহময়ী ও দুর্জয়। বঙ্কিমচন্দ্র শেষের স্তবকগুলোয় ভারতমাতাকে দুর্গা, লক্ষ্মী ও সরস্বতী রূপে উল্লেখ করেছিলেন।

এদিকে ১৯৩৭ সালে কংগ্রেস দলের একটি অধিবেশনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়—জাতীয় অনুষ্ঠানে শুধু প্রথম দুটি স্তবক গাওয়া হবে। কারণ, অন্য স্তবকগুলোতে হিন্দু দেবীদের সরাসরি উল্লেখ কিছু মুসলিম প্রতিনিধির কাছে ‘বর্জনমূলক’ মনে হয়েছিল। সেই সময় দলের নেতা জওহরলাল নেহরু নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে চিঠি লিখে জানান—পুরো কবিতাটি সুপাঠ্য হলেও এর কিছু অংশ মুসলিম সমাজে অস্বস্তি সৃষ্টি করছে। তাই আপাতত কেবল প্রথম দুটি স্তবকই জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া উচিত বলে তিনি মত দেন।

আজ দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তকেই আজ বিজেপি ‘বিভাজনের বীজ বপন’ বলে সমালোচনা করছে। প্রধানমন্ত্রী মোদির দাবি, কংগ্রেস রাজনৈতিক সুবিধার জন্য জাতীয় ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অন্যদিকে কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে পাল্টা মন্তব্যে বলেছেন, যারা আজ জাতীয়তাবাদের রক্ষক সেজেছে—আরএসএস ও বিজেপি—বন্দে মাতরম তারা কখনোই গায়নি।

বিতর্ক আরও তীব্র হয়, যখন নেহরু ও নেতাজির মধ্যে ১৯৩৭ সালে আদান-প্রদান হওয়া চিঠি প্রকাশ করে বিজেপি। সেই পত্রে নেহরু স্বীকার করেন, কিছু মুসলিমের আপত্তির ক্ষেত্রে যুক্তি থাকতে পারে।

প্রায় ৯০ বছর পর কংগ্রেসের সেই সিদ্ধান্ত ভারতের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে, পশ্চিমবঙ্গের আগামী নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশপ্রেম ও মুসলিম তোষণ ইস্যুতে ‘বন্দে মাতরম’ আবারও রাজনৈতিক তরবারি হয়ে উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, সোমবার হোয়াইট হাউসে বৈঠক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি সংগৃহীত
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি সংগৃহীত

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। আগামী সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠকের ঠিক আগে গতকাল বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া করা এই প্রস্তাবে সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী আনাস খাত্তাবের ওপর থেকেও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবটির পক্ষে ১৪টি ভোট পড়ে, তবে চীন ভোটদানে বিরত ছিল।

ওয়াশিংটন কয়েক মাস ধরে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদকে সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার জন্য তাগিদ দিচ্ছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত মে মাসে যখন সিরিয়ার ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে একটি বড় পরিবর্তন আসে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি, শারা দারুণ কাজ করছেন। অঞ্চলটি কঠিন, তিনিও কঠিন প্রকৃতির মানুষ, কিন্তু তাঁর সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আমরা সিরিয়া নিয়ে অনেক দূর এগিয়েছি।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছি, যাতে তারা নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য নতুনভাবে লড়াইয়ের সুযোগ পায়।’

১৩ বছরের বিধ্বংসী গৃহযুদ্ধের পর গত ডিসেম্বরে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিদ্রোহী জোটের আকস্মিক হামলায় ক্ষমতাচ্যুত হন। ইসলামপন্থী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নেতৃত্ব দেয় সেই হামলায়।

এইচটিএস একসময় আল-কায়েদার সিরীয় শাখা নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। ২০১৪ সালের মে মাস থেকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আল-কায়েদা ও আইএস-সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে এই সংগঠন।

এইচটিএসের একাধিক সদস্যের ওপর জাতিসংঘের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, সম্পদ জব্দ এবং অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। তবে এবার প্রেসিডেন্ট শারা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খাত্তাবের বিরুদ্ধে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলো।

জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে পর্যবেক্ষকেরা জানিয়েছেন, চলতি বছর আল-কায়েদা ও এইচটিএসের মধ্যে কোনো সক্রিয় সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে জুলাইয়ে রয়টার্সের হাতে আসা জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনেও এমন তথ্যের উল্লেখ ছিল।

নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকে চীন। জাতিসংঘে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেন, ‘খসড়া প্রস্তাবটিতে সিরিয়ার সন্ত্রাসবিরোধী ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ যথাযথভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।’

চীন দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ায় ইস্টার্ন তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্টের (ইটিআইএম) কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এই সংগঠনে চীন ও মধ্য এশিয়া থেকে আসা উইঘুর যোদ্ধারা যুক্ত রয়েছে।

তবে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভোট দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির জাতিসংঘে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, মস্কো এই সংক্ষিপ্ত প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে; কারণ, এটি ‘সিরীয় জনগণের নিজস্ব স্বার্থ ও আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে।’

গৃহযুদ্ধ চলাকালীন রাশিয়া বারবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সিরিয়ার আসাদ সরকারের পক্ষে ভেটো দেয়। এ সময় চীনও রাশিয়ার পাশে ছিল। প্রসঙ্গত, যুদ্ধকালীন সিরিয়া ইস্যুতে রাজনৈতিক, মানবিক ও রাসায়নিক অস্ত্রবিষয়ক আলোচনার জন্য পরিষদ মাসে একাধিকবার বৈঠকে বসত।

এদিকে, দীর্ঘ বিভাজনের পর নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সিরিয়ার জাতিসংঘ প্রতিনিধি ইব্রাহিম ওলাবি। তিনি বলেন, ‘এটি সিরিয়ার নারী-পুরুষদের জন্য মাতৃভূমি পুনর্গঠন এবং জীবন পুনঃস্থাপনে আশার সঞ্চার করবে।’

ইব্রাহিম ওলাবি আরও বলেন, ‘নতুন সিরিয়া হবে এক সাফল্যের গল্প। এটি প্রমাণ করবে যে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সর্বোত্তম পথ হলো ইতিবাচক সম্পৃক্ততা ও গঠনমূলক সহযোগিতা। যদি কারও কোনো উদ্বেগ থাকে, সিরিয়া তা সমাধানে সদিচ্ছাসহ পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে কাজ করতে প্রস্তুত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত