Ajker Patrika

হলের ডাইনিংয়ে চাঁদাবাজি কমছে খাবারের মান

আরাফাত রহমান অভি, শেকৃবি
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২২, ১২: ৩৮
হলের ডাইনিংয়ে চাঁদাবাজি কমছে খাবারের মান

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের ডাইনিং থেকে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেন বিশ্ববিদ্যালয় হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান। সম্প্রতি এ সম্পর্কিত প্রমাণ দৈনিক আজকের পত্রিকার কাছে এসেছে। ডাইনিং থেকে চাঁদা নেওয়ায় প্রতিনিয়ত কমছে খাবারের মান। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতি মাসে চাঁদা দিয়ে মানসম্পন্ন খাবার পরিবেশনে হিমশিম খাচ্ছেন ডাইনিং ম্যানেজাররা। ফলে গত ছয় মাসে ডাইনিংয়ের তিনজন ম্যানেজার পরিবর্তন হয়েছেন।

এ অবস্থায় ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ডাইনিং ম্যানেজার ডাইনিংয়ের খাবারের মূল্যবৃদ্ধির চেষ্টা করেছেন বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্ব পান সজীব ও আরিফ। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তাঁরা দুজন ডাইনিং থেকে নির্ধারিত হারে মাসিক চাঁদা দাবি করেন। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতি মাসে নেতাদের চাঁদা দিতে গিয়ে প্রতিনিয়তই খাবারের মান কমতে থাকে। হলের শিক্ষার্থীরা বলেন, করোনার বন্ধের পর হল খোলার প্রথম দুই মাস ডাইনিংয়ে খাবারের মান ভালো ছিল। ছাত্রলীগের হল কমিটি গঠনের পর থেকে খাবারের মান কমতে থাকে। এখন যে খাবার দেওয়া হয়, তা আসলে খাবারের অযোগ্য।

এদিকে সজীব ও আরিফ হল ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসার পর ১৫ বছর ধরে ডাইনিং পরিচালনার দায়িত্বে থাকা মো. রসুল ডাইনিংয়ের দায়িত্ব ছেড়ে দেন। এরপর পরিচালনার দায়িত্বে আসেন প্রধান বাবুর্চি ইউসুফ। তিনিও কয়েক মাস চালানোর পর দায়িত্ব ছেড়ে দেন। সর্বশেষ চলতি বছরের মে মাসে ডাইনিং পরিচালনার দায়িত্ব নেন হলের সহকারী বাবুর্চি মো. জুয়েল। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি ডাইনিংয়ের খাবারের মূল্যবৃদ্ধির জন্য তোড়জোড় শুরু করেন। ঈদুল আজহার ছুটির পর ১৭ জুলাই হল খুললেও খাবারের দাম বৃদ্ধি না করায় ২৪ জুলাই পর্যন্ত ডাইনিং বন্ধ রাখা হয়।

পরে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সম্মতিক্রমে ডাইনিংয়ের খাবারের দাম গত সোমবার ৫ টাকা বাড়িয়ে ৩৫ টাকা নির্ধারণ করে হল কর্তৃপক্ষ। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার রাতে সংশ্লিষ্ট হল প্রভোস্ট, হল ছাত্রলীগ সভাপতি, ডাইনিংয়ের কর্মচারী, ম্যানেজার ও কিছু শিক্ষার্থী হলের প্রভোস্ট কক্ষে আলোচনা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে খাবারের দাম ৩০ টাকা বহাল রাখা হয়।

তবে হল সভাপতি সজীব এবং সাধারণ সম্পাদক আরিফ অভিযোগ অস্বীকার করেন। সভাপতি সজীব হোসাইন বলেন, ‘এসব কথা ভিত্তিহীন। বরং আমরাই ডাইনিংয়ের মানোন্নয়নের জন্য চেষ্টা করছি। তা ছাড়া আমরা তো নতুন দায়িত্ব পেয়েছি, এখনো ওই পর্যন্ত রিচ করতে পারিনি।’

জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এ সম্পর্কে আমাদের কাছেও বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ এসেছে। উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে আমরা দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত