Ajker Patrika

চাল-আটা কিনতে বাড়ছে সারি

সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২২, ১৫: ৫৫
চাল-আটা কিনতে বাড়ছে সারি

পাবনার সাঁথিয়ায় সরকারের খোলাবাজারে বিক্রির (ওএমএস) চাল ও আটা বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ভিড় বাড়ছে। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম থাকায় চাল ও আটা কিনতে না পেরে খালি হাতে ফিরছেন অনেকে। তাই বরাদ্দ ও বিক্রয়কেন্দ্র বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, চাল ও আটার বরাদ্দ বাড়ানোর নির্দেশনা এখনো আসেনি, তাই এ মুহূর্তে বরাদ্দ বাড়ানোর সুযোগ নেই।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৪ জানুয়ারি থেকে সাঁথিয়া পৌর এলাকার কালীবাড়ির সামনে, দৌলতপুর সেতু এলাকায়, বোয়াইলমারী মাদ্রাসা গেটের সামনে ও গোপিনাথপুর বাজারে চারজন ডিলারের মাধ্যমে চাল ও আটা বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিদিন প্রত্যেক ডিলার ২০০ জনের কাছে পাঁচ কেজি চাল ও পাঁচ কেজি আটা ওএমএসের মাধ্যমে বিক্রি করছেন। একজন ডিলার প্রতিদিন খাদ্যগুদাম থেকে এক টন চাল ও এক টন আটা উত্তোলন করে থাকেন।

চাল ও আটা কিনতে আসা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক ক্রেতা বলেন, বাজারে ধান, চাল, আটাসহ পণ্যের দাম ক্রমশ বাড়ায় মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে না থাকায় স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে ভোগ্যপণ্য। তাই মানুষ বাজারে বেশি দামে চাল ও আটা কিনতে পারছে না।

উপজেলার নন্দনপুর গ্রাম থেকে আসা ফজর আলী বলেন, ‘বাজারে এক কেজি মোটা চালের দাম ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। এত টাকা দিয়ে চাল কিনব কী করে। তাই সরকারি চালের জন্য অনেক দূর থেকে এখানে এসেছি।’

সাঁথিয়া পৌর এলাকার শশীদয়া গ্রামের মাহিরন বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি তাঁতের কাজ করেন। দিনে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা আয় হয়। এ টাকা দিয়ে বাজার থেকে চাল কিনলে অন্য কোনো কিছু করা যায় না। তাই ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে চাল ও আটা কিনতে এসেছেন তিনি।

নওয়ানী পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদ বলেন, তিনি একজন অস্ত্রোপচারের রোগী। বেশি সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না। ডিলারদের অনুরোধ করেও আজ আটা না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন তিনি। ছেলে মেয়েদের সকালে কি খাওয়াব এই চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, অসুস্থ ব্যক্তিদের আলাদাভাবে চাল, আটা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে তাঁর মতো অসুস্থ, প্রতিবন্ধীদের এত কষ্ট করতে হবে না।

সাতানির চর গ্রামের হালিমা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী একজন ভ্যানচালক। প্রতিদিন ভ্যান চালিয়ে ২০০-৩০০ টাকা রোজগার করে। এতে সংসারের চলে না। সরকার ওএমএসের মাধ্যমে চাল ও আটা দেওয়ায় তাঁর মতো গরিব মানুষের সুবিধা হয়েছিল। কিন্তু বাজারে চাল ও আটার দাম বেশি হওয়ায় বিত্তশালীরা লাইন ছাড়াই চাল ও আটা নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে সারা দিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে আটা না পেয়ে ফিরে তাঁদের আসতে হয়েছে। গরিব মানুষের সংখ্যা বেশি ,তাই চাল ও আটার বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন।

পৌর এলাকার ওএমএসের ডিলার মুক্তার হোসেন বলেন, পণ্য নিতে প্রতিদিনই মানুষের ভিড় বাড়ছে। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম থাকায় পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে অনেককে। তবে সরকার চাল ও আটার বরাদ্দ বাড়ালে আরও অনেক গরিব মানুষ সুফল পেত। তিনি আরও বলেন, চালের চেয়ে আটার চাহিদা একটু বেশি। এক টন আটা নিমেষেই শেষ হয়ে যায়। তাই বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহিনুর আলম বলেন, চাল ও আটার বরাদ্দ বাড়ানোর নির্দেশনা এখনো আসেনি। তাই এই মুহূর্তে চাল ও আটার বরাদ্দ বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ বাড়ানো হলে ডিলারদের চাল ও আটার পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রীকে বিদেশ যেতে বাধা

‘মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে’, চিরকুট লিখে ঠিকাদারের ‘আত্মহত্যা’

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত