Ajker Patrika

বরাদ্দ ৮ লাখ টাকা, রাস্তার বদলে মিলল ড্রামের ভেলা

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ মে ২০২২, ১৭: ১৫
বরাদ্দ ৮ লাখ টাকা, রাস্তার বদলে মিলল ড্রামের ভেলা

বগুড়ার শেরপুরে পুরোনো সেতু ভাঙার আগে বিকল্প সড়ক নির্মাণের কথা থাকলেও তা করা হয়নি; বরং এ জন্য বরাদ্দ দেওয়া আট লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বিকল্প রাস্তার বদলে তৈরি করে দেওয়া হয়েছে প্লাস্টিকের ড্রামের ভেলা। এখন উপজেলার ঝাঁঝর গ্রামের চেঙ্গামারি খাল পারাপারে স্থানীয়দের ভরসা এই ভেলা। এতে দুর্ভোগে পড়েছে হাজারো মানুষ।

উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, ঝাঁঝরের চেঙ্গামারি খালের ওপর নির্মিত হচ্ছে ৬০ দশমিক শূন্য ৫ মিটার আরসিসি গার্ডার সেতু। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে গত ২২ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু হয়। আগামী বছরের ৮ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী পুরোনো সেতু ভাঙার আগেই বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করার কথা। এর জন্য টেন্ডারে ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে আট লাখ টাকা। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিকল্প রাস্তা নির্মাণ না করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এত দিন তাঁরা পার্শ্ববর্তী জমির মধ্য দিয়ে চলাচল করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি ভারী বর্ষণের কারণে খালে পানি জমে যায়। এর পর থেকেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন এলাকার হাজার হাজার মানুষ। আজকের পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্লাস্টিকের ছয়টি ড্রাম দিয়ে ভেলা বানিয়েই দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, চেঙ্গামারী খাল পারাপারের জন্য তৈরি করা হয়েছে ছোট একটি ড্রামের ভেলা। একদিকে দুর্ঘটনার ঝুঁকি, অন্য দিকে ভেলা চালানোর লোক না থাকায় ভোগান্তি কাটেনি।

ঝাঁঝর পঞ্চশক্তি হাইস্কুলের শিক্ষক হীরা বলেন, ‘ভেলায় পারাপারের জন্য কাউকে রাখা হয়নি। একাই মোটরসাইকেল নিয়ে পার হওয়ার চেষ্টা করলে ভেলা উল্টে খালে পড়ে যাই। এর পর থেকে আট কিলোমিটার ঘুরে স্কুলে যেতে হচ্ছে।’

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক সানোয়ার হোসেন বাবলু বলেন, আগে একবার গ্যাস ভরলে শেরপুরে ১০ থেকে ১২ বার যাওয়া যেত। কিন্তু এখন ঘুরে যাওয়ার কারণে পাঁচ ট্রিপের বেশি হয় না। এ জন্য যাত্রীদের কাছ থেকে ২০ টাকার পরিবর্তে এখন ৪০ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

খামারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আবদুল মোমিন মহসীন বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে এলাকার হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। তাঁদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাসুমা বেগমের প্রতিনিধি খোয়েব শেখ বলেন, ‘আমরা কাঠের সেতু তৈরির জন্য ১২০টি পাইলিং করেছিলাম। কিন্তু ঈদের পরের দিন পার্শ্ববর্তী স্লুইসগেটের পানি ছেড়ে দেওয়ায় সব ডুবে গেছে। আগামী দুই তিন দিনের মধ্যেই ড্রামের ভেলার আকার বড় করে পারাপারে লোক নিয়োগ করা হবে।’

বগুড়া এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোর্শেদ বলেন, ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাঠের সেতু নির্মাণের চেষ্টা করছি। সম্ভব না হলে পারাপারের জন্য নৌকার ব্যবস্থা করে লোক নিয়োগ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত