Ajker Patrika

বাকৃবিতে অবরুদ্ধ শিক্ষকদের উদ্ধারে বহিরাগতদের হামলা, সাংবাদিক-শিক্ষার্থীসহ আহত ১০

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৫, ২২: ৩৮
বাকৃবিতে হামলায় আহত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন সহপাঠীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাকৃবিতে হামলায় আহত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন সহপাঠীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অবরুদ্ধ ২০০ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে উদ্ধারে হামলা চালিয়েছে বহিরাগতরা। এতে সাংবাদিক-শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছেন।

ভেটেরিনারি অনুষদ ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের প্রায় এক মাস ধরে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন চলছে। দুই অনুষদের ডিগ্রিকে একীভূত করে একটি কম্বাইন্ড ডিগ্রি দেওয়ার দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ বিষয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়নি।

আজ রোববার একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় বেলা ১টার দিকে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে ভিসিসহ প্রায় ২০০ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে আটকে রেখে সামনে তালা মেরে দেন শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি সমাধানে ছুটে যান জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম, জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তবে শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবিতে অনড় অবস্থানে থাকেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভিসির বাসভবনের পাশ থেকে ২৫০-৩০০ জন বহিরাগত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে বহিরাগতরা তালা ভেঙে দিলে অবরুদ্ধ শিক্ষকেরা বেরিয়ে যান। এ সময় সাংবাদিক-শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।

হামলায় আহত স্থানীয় দৈনিক ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আনিসুর রহমান ফারুক বলেন, ‘সন্ধ্যার পর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার যখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বোঝাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই বহিরাগত ২৫০-৩০০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে। পরে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে বহিরাগতরা তালা ভেঙে দিলে শিক্ষকেরা বেরিয়ে যান। এ সময় প্রশাসনের লোকজন দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমিও রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একজন এসে আমার ঘাড়ে আঘাত করে। এতে রক্তাক্ত জখম হই।’

আহত আঙ্গর টিভির সাংবাদিক সালমান সাদিক শাওন বলেন, ‘হঠাৎ করে এমন হামলা হবে, বুঝতে পারিনি। হামলাকারীরা আমাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে।’

ভেটেরিনারি অনুষদের অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু ছেলেপেলে এসে তালা ভেঙে দিলে আমরা বের হই। কিন্তু এটা কোনো সমাধান নয়। আমরা চাই, বিষয়টির সুষ্ঠু সুরাহা হোক। বেশির ভাগ শিক্ষক সমন্বিত ডিগ্রির পক্ষে, কিন্তু গুটিকয়েক শিক্ষকের কারণে এই অবস্থা।’

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে, কিন্তু আজকে দুপুর থেকে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। একপর্যায়ে কিছু লোকজন শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমরা বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত