Ajker Patrika

ভোলার চারটি আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, দুই আসনে নতুন মুখ

শিমুল চৌধুরী, ভোলা
গোলাম নবী আলমগীর (ভোলা-১) ও নুরুল ইসলাম নয়ন (ভোলা-৪)। ছবি: সংগৃহীত
গোলাম নবী আলমগীর (ভোলা-১) ও নুরুল ইসলাম নয়ন (ভোলা-৪)। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোলার চারটি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভোলার চারটি আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।

ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী ভোলা-১ (সদর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য গোলাম নবী আলমগীর। ভোলা-২ (দৌলতখান-বোরহানউদ্দিন) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মো. হাফিজ ইব্রাহীম। তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বড় ভাই। বিগত ২০০১ সালের জোট সরকারের আগে তাঁকে দল থেকে প্রথম মনোনয়ন দেওয়া হয়। ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম)। তিনি ভোলা-৩ আসন থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মেজর হাফিজ বিএনপির একজন অভিজ্ঞ ও হেভিওয়েট নেতা। ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন।

দলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, ভোলা-১ আসনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর ভোলা সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের ছোট ভাই। দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন গোলাম নবী আলমগীর। স্থানীয় পর্যায়ে তাঁর জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা বিবেচনায় তাঁকে এবার প্রার্থী করেছে দলটি। এই আসনে গোলাম নবী আলমগীর সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে এই প্রথম মনোনয়ন পান।

এর আগে ২০০১ সালে চারদলীয় জোট থেকে এই আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয় ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান। তাঁকে এবার এই আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।

ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) আসনে নতুন মুখ হিসেবে এবার মনোনয়ন পেয়েছেন নুরুল ইসলাম নয়ন। এই আসনে এর আগে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও ডাকসুর সাবেক এজিএস নাজিমউদ্দিন আলম। তিনি দলের একজন হেভিওয়েট নেতা। তিনি এবার দলের মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোলা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর মঙ্গলবার সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বড় ভাই মোশারেফ হোসেন শাহজাহান এই আসনে এমপি ছিলেন। তিনি ভোলার জন্য অনেক কাজ করে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। আমিও দলমত-নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে ভোলার উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চাই। এটা আমার প্রত্যাশা।’ তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে যে অসহযোগিতা, মারামারি-হানাহানি এবং বৈরী ভাব দেখা গেছে, সেটা কমিয়ে এনে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করা যায় কি না সেই চেষ্টা করব।’

ভোলা-৪ আসনে নাজিমউদ্দিন আলম বাদ পড়ার বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, ‘এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। নাজিমউদ্দিন আলম তিনবারের এমপি ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলায় কাজ করেছেন। কিন্তু নতুন নেতৃত্বকেও জায়গা করে দিতে হবে। হয়তো সে জন্যই তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এমনও হতে পারে তাঁকে অন্য জায়গায় স্থান করে দেবে।’

এ বিষয়ে মতামত জানতে বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ ও বিএনপি নেতা নাজিমউদ্দিন আলমকে মঙ্গলবার সকালে মোবাইলে কল দিলেও তাঁরা ধরেননি।

এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বিজেপি ভোলা জেলা শাখার সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম রতন। তিনি মঙ্গলবার সকালে বলেন, ‘আমি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছি।’

এদিকে ভোলার চারটি আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণায় জেলার রাজনীতিতে নতুন গতি এনেছে বলে মনে করছেন দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। স্থানীয় পর্যায়ে নেতা-কর্মীরা নির্বাচনী প্রস্তুতি, গণসংযোগ ও প্রচারণায় সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ