Ajker Patrika

ভোটে জিতলেন একজন, গেজেট প্রকাশ হলো আরেকজনের নামে

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৭: ৩৮
ভোটে জিতলেন একজন, গেজেট প্রকাশ হলো আরেকজনের নামে

পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সদস্য পদে মতিয়ার রহমান পেয়েছিলেন ৬৬৬ ভোট। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছিলেন ৬৫১ ভোট। জয়-পরাজয়ে দুজনের মাঝে ব্যবধান ছিল ১৫ ভোটের। নির্বাচন শেষে তাই প্রিসাইডিং অফিসার মতিয়ারকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন। কিন্তু সরকারি গেজেটে সে ফল উল্টে গেছে। সেখানে বিজয়ী দেখানো হয়েছে নির্বাচনের মাঠে ১৫ ভোটে পরাজিত প্রার্থী শামসুর রহমানকে। 

ঘটনাটি যশোর সদর উপজেলার কাশিমপুর ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের। সম্প্রতি গেজেটে নিজের নাম পেয়ে শামসুর রহমান শুভেচ্ছাবিনিময়ে নামলে বিষয়টি জনসাধারণের নজরে আসে। আর তাতেই সৃষ্টি হয় তোলপাড়। 

গত ৫ জানুয়ারি যশোর সদরে অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচন। ভোট গণনা শেষে রাতে সদরের কাশিমপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মতিয়ার রহমানকে ১৫ ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেন মিরাপুর দাখিল মাদ্রাসায় দায়িত্বরত প্রিসাইডিং অফিসার। পরবর্তী সময়ে প্রিসাইডিং অফিসার স্বাক্ষরিত ফলাফলের কপি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থীর এজেন্টরা বুঝে নেন। 

ফলাফল অনুযায়ী টিউবওয়েল প্রতীকে মতিয়ার রহমান পান ৬৬৬ ভোট। অন্যদিকে তালা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী শামসুর রহমান পান ৬৫১। 

এরপর বিজয়ী প্রার্থী মতিয়ার রহমানকে গলায় ফুলের মালা দিয়ে বিজয় মিছিল করেন তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা। আনন্দ-উল্লাসের পাশাপাশি করানো হয় মিষ্টিমুখ। তারপর থেকেই দায়িত্ব গ্রহণের অপেক্ষায় ছিলেন মতিয়ার। 

নির্বাচনের ২২ দিন পর ২৭ জানুয়ারি প্রকাশ পায় সরকারি গেজেট। তাতে সদস্য হিসেবে নাম পাওয়া যায় ১৫ ভোটে পরাজিত প্রার্থী শামসুর রহমানের। 

গেজেটে উল্লেখ আছে, কাশিমপুর ইউনিয়নে দায়িত্বরত রিটার্নিং কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম শামসুর রহমানকে বিজয়ী দেখিয়ে নির্বাচন কমিশনে ফল পাঠিয়েছেন। এতে হতবাক স্থানীয়রা।

কেন্দ্রে ঘোষিত ফলাফলে বিজয়ী মতিয়ার রহমান বলেন, ‘সবার উপস্থিতিতে ভোট গণনায় আমি বিজয়ী হয়েছি। এটি সবাই জানেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে আমি চিঠি পাঠাব। প্রয়োজনে আইনের দ্বারস্থ হব।’ 

অপরদিকে গেজেটে বিজয়ী শামসুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রেও আমি বিজয়ী হয়েছিলাম। তবে একটি পক্ষ প্রভাব খাটিয়ে আমাকে বাদ দিয়ে মতিয়ার রহমানকে বিজয়ী ঘোষণা করে। গেজেটে সত্য চিত্রটিই তুলে ধরা হয়েছে।’ 

কাশিমপুর ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কেন্দ্রের ফলাফলে মতিয়ার রহমানকে ১৫ ভোটে জয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে কী কারণে গেজেটে তাঁর নাম এল না, সেটি আমার বোধগম্য নয়।’ 

যশোরের জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির বলেন, বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়েছে। সেখানে সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে।

কীভাবে এমন ভুল হলো এবং যিনি ভুল করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গেই হুমায়ূন কবির ফোন কেটে দেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লক্ষ্মীপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অভিযান শুরু, অবরুদ্ধ কর্মকর্তারা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

লক্ষ্মীপুরে শতাধিক অবৈধ ইটভাটায় অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রামগতি উপজেলার চর আফজাল এলাকা থেকে শুরু হয় এই অভিযান। দুপুর পর্যন্ত আমানত ইটভাটা, জেসমিন সারোয়ার, আবদুল ওয়াহাবসহ তিনটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

পাঁচটি ভেকু মেশিনের সাহায্যে ভাটার চুল্লি, চিমনি ও কাঁচা ইট বিনষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এরপর অন্য ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ার সময় চৌধুরী বাজার এলাকায় রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা।

এ সময় প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ থাকেন তাঁরা।

অভিযানে অংশ নেন রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক জমির উদ্দিন, ঢাকা কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমান, লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান, রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেনসহ পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা।

রামগতি থানার ওসি মো. কবির হোসেন বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লক্ষ্মীপুরের পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান বলেন, রামগতি ও কমলনগরে ৫১টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ৪৯টি ভাটা অবৈধ। জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এসব ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। টানা সাত দিন অভিযান চলবে। অবৈধ ভাটা ভেঙে দেওয়ার পরেও যাতে চালু করতে না পারে, সে জন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি জেলায় শতাধিক ইটভাটার কোনো কাগজপত্র নেই। এগুলো পুরোপুরি অবৈধ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, শুধু লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ৫১টি ইটভাটার মধ্যে ৪৯টি ইটভাটার কোনো কাগজপত্র নেই। এগুলো পুরোপুরি অবৈধ। তাই এসব অবৈধ ইটভাটা কোনোভাবে চলতে দেওয়া হবে না। এগুলো সব বন্ধ করে দেওয়া হবে। কোনো শক্তির কাছে মাথা নত করা হবে না।

ইউএনও মো. আমজাদ হোসেন বলেন, সকাল থেকে অভিযান চালিয়ে অবৈধ তিনটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দুপুরের পর অন্য ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ার সময় শ্রমিকেরা রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের হাজতির ঢামেকে মৃত্যু

ঢামেক প্রতিবেদক
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের হাজতির ঢামেকে মৃত্যু

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) এক হাজতির ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কারারক্ষীরা ওই বন্দীকে কারাগার থেকে ঢামেকে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত হাজতির নাম মামুনুর রশীদ (৩৪)। তাঁর বাবার নাম শহিদুল ইসলাম।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কারারক্ষীরা অচেতন অবস্থায় ওই বন্দীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এরপর চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

মো. ফারুক আরও জানান, ওই ব্যক্তি হাজতি হিসেবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর মামলার বিবরণ জানা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বুড়িমারী স্থলবন্দর: ভারতীয় ট্রাক থেকে ওষুধ ও সিসা জব্দ, চালক আটক

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় ভারতীয় একটি ট্রাক থেকে বাংলাদেশি ওষুধ ও সিসা জব্দ করে বিজিবি। ছবি: আজকের পত্রিকা
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় ভারতীয় একটি ট্রাক থেকে বাংলাদেশি ওষুধ ও সিসা জব্দ করে বিজিবি। ছবি: আজকের পত্রিকা

লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় ভারতীয় একটি ট্রাক থেকে বাংলাদেশি ওষুধ ও সিসা জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় ট্রাকচালককে আটক করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অবৈধভাবে এসব পণ্য পাচারের সময় সেগুলো জব্দ করা হয়।

আটক ট্রাকচালক সমির পালের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থানার চ্যাংড়াবান্ধা গ্রামে। তাঁর বাবার নাম গৌরঙ্গ পাল।

বিজিবি ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দরগামী ভারতীয় ট্রাকচালক সমির পাল (৩৫) খালি ট্রাক নিয়ে শূন্যরেখা সড়কপথে যাচ্ছিলেন। এ সময় তল্লাশিচৌকিতে দায়িত্বরত বুড়িমারী আইসিপি বিজিবির সদস্যদের সন্দেহ হলে তাঁরা ট্রাকটিতে তল্লাশি চালান। এতে চালকের আসনের নিচে বিশেষভাবে লুকানো অবস্থায় বাংলাদেশি ওষুধ কোম্পানি এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের ক্যানসার প্রতিরোধী ওষুধ ‘ওসিমার্ট’ বড়ি ১ হাজার ৫০০টি, জিসকা ফার্মাসিউটিক্যালসের ‘ওসিকিন’ বড়ি ১ হাজার ৫০০টি এবং ২৭২ কেজি সিসা পাওয়া যায়।

বিজিবি জানায়, জব্দ করা ওষুধ ও ধাতব সিসার মূল্য ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ টাকা এবং ট্রাকসহ মোট মূল্য ৫৭ লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ টাকা ধরা হয়েছে। এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রংপুরের ৬১ বিজিবি (তিস্তা-২) ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মোহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম বলেন, চোরাচালানের পণ্যসহ আটক ভারতীয় চালকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাঁকেসহ জব্দ পণ্য পাটগ্রাম থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চকবাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ

কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর চকবাজারে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা জরিমানা ও বিপুল পরিমাণ ব্যবহার নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে র‍্যাব সদর দপ্তরের আইন কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আবু হাসান ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়জুনেছা আক্তারের নেতৃত্বে র‍্যাব-১০-এর সহযোগিতায় এ অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে মো. জসিমকে দেড় লাখ, মো. আলামিনকে এক লাখ ও বাবুলকে এক লাখ টাকা জরিমানা করে। এ সময় বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করে প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করা হয়।

র‍্যাব জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায় দীর্ঘদিন ধরে এসব ব্যবসায়ী নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রি করে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

র‍্যাব-১০-এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তাপস কর্মকার জানান, জনস্বার্থে নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে র‍্যাবের অভিযান চলমান থাকবে এবং এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত