Ajker Patrika

মাচায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সফল চাষিরা, বাড়ছে আগ্রহ

এস. এম. রকি, খানসামা (দিনাজপুর)
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় মাচায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় মাচায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় মাচায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সাফল্য পেয়েছেন কৃষকেরা। মাত্র ৭৩ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তুলতে পারায় তাঁরা লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভাগের দাবি, এ পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠলে স্থানীয় কৃষি অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চলতি মৌসুমে ৬০ শতক জমিতে মাচায় তরমুজ চাষ হয়েছে। কৃষকদের বীজ, সার, ফেরোমন ফাঁদ, জৈব কীটনাশক ও আন্তঃপরিচর্যার জন্য নগদ সহায়তাও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উদ্বুদ্ধ হয়ে কৃষকেরা নিজ উদ্যোগে আরও ১ একর ৪০ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। সব মিলিয়ে উপজেলায় এবার ২ একর জমিতে মাচায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ হয়েছে।

গতকাল সোমবার উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষক রবিউল ইসলাম বিক্রির জন্য তাঁর মাচা থেকে তরমুজ তুলছেন। তিনি জানান, ২০ শতক জমিতে মার্সেলো গোল্ড জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। মাচা তৈরি ও পরিচর্যায় তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাঁশের মাচায় ১৪–১৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। জৈব কীটনাশক, সার ও শ্রমিকের পেছনে গেছে আরও কিছু টাকা।

তিনি বলেন, ‘৭৫ দিনে প্রথম দফায় ১৫–১৬ মণ তরমুজ বিক্রি করেছি। প্রতি মণ ২ থেকে ২.৫ হাজার টাকায় বিক্রি হওয়ায় ভালো লাভ হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় আরও ১০ মণ এবং তৃতীয় দফায় কিছু তরমুজ বিক্রির আশা করছি। সব মিলিয়ে প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি সম্ভব হবে।’

রাণীরবন্দর বাজারের ব্যবসায়ী রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আগে দিনাজপুরে তরমুজ বাইরে থেকে আনতে হতো। এখন স্থানীয়ভাবে চাষ হওয়ায় কৃষকদের কাছ থেকে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে কিনে বাজারে ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি করা যাচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছেন।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘মোট ২ একর ৬০ শতক জমিতে মাচায় তরমুজ চাষ হয়েছে। কৃষকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে সার, বীজ ও নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মাচা তৈরিই ছিল প্রধান খরচ। তবে কৃষকেরা লাভবান হওয়ায় এই উদ্যোগ আরও সম্প্রসারিত হবে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘খানসামা এখন কৃষি সমৃদ্ধ উপজেলায় পরিণত হয়েছে। সবজি উৎপাদনের পাশাপাশি মাচায় তরমুজ নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। কৃষি বিভাগের সহায়তা ও মাঠ পর্যায়ের প্রশিক্ষণ এই সাফল্যের মূল কারণ। ভবিষ্যতে আরও নতুন ফসল যুক্ত করে কৃষি সমৃদ্ধিকে এগিয়ে নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত