মধ্যরাত থেকে পদ্মা-মেঘনায় ২ মাস জাটকা ধরা নিষিদ্ধ

ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত অর্থাৎ, ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস জাটকাসহ সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

নিষেধাজ্ঞার সময় জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় সরকারিভাবে নিবন্ধিত প্রায় ৪৩ হাজার জেলে সব ধরনের মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকবেন।

দুই মাসের এই জাটকা সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে জেলার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, সদর ও হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদী উপকূলীয় এলাকায় সচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সভা, মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

সরেজমিন সদর উপজেলার আনন্দবাজার, শহরের টিলাবাড়ী, বড় স্টেশন মোলহেড, পুরান বাজার রনাগোয়াল, দোকানঘর, বহরিয়া, হরিণা ও আখনের হাট জেলেপল্লি ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ জেলে তাঁদের মাছ ধরার নৌকা ডাঙায় উঠিয়ে রেখেছেন। অনেকে তাঁদের জাল মেরামতের কাজ করছেন।

বহরিয়া এলাকার জেলে শাহাজাহান ব্যাপারী বলেন, জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে পারলে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। তবে এটি বাস্তবায়ন করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে। আমরা জাটকা আহরণ থেকে বিরত থাকলেও একশ্রেণির জেলে জাটকা নিধন করে।

হরিণা ফেরিঘাট-সংলগ্ন মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম সৈয়াল বলেন, নানা কারণে নদীতে ইলিশের বিচরণ কমেছে। সবার সহযোগিতায় যদি জাটকা সংরক্ষণ করা যায়, তাহলে কিছুটা হলেও ইলিশের উৎপাদন বাড়বে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, জাটকা সংরক্ষণে পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স দায়িত্ব পালন করবে। জাটকা আহরণ থেকে বিরত থাকা জেলের জন্য ইতিমধ্যে খাদ্যসহায়তা হিসেবে বরাদ্দ করা চাল এসেছে। এসব জেলের জন্য ৪০ কেজি করে (বিজিএফ) চাল চার মাস বিতরণ করা হয়।

নৌ-পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘জাটকা সংরক্ষণ চাঁদপুরের অভয়াশ্রম এলাকায় নৌ-পুলিশের প্রতিটি ইউনিট দিন ও রাতে কাজ করবে। কোনো জেলে আইন অমান্য করে জাটকা নিধন করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। ইতিমধ্যে আমরা জেলেদের সঙ্গে কথা বলে সতর্ক করে দিয়েছি।’