Ajker Patrika

সীতাকুণ্ডে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৫৬ হাজার পশু, চাহিদার চেয়ে ৯ হাজার বেশি

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
খামারে গরু। ছবি: আজকের পত্রিকা
খামারে গরু। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় এবারের ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৫৬ হাজার ২১৩টি পশু। উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিস জানিয়েছে, দেশি ঘরোয়া পদ্ধতিতে এবং খামার পর্যায়ে পালিত এসব গবাদিপশুই এবারের কোরবানির চাহিদা পূরণে যথেষ্ট হবে। চাহিদার তুলনায় পশুর মজুত বেশি থাকায় উপজেলায় পশুর সংকট হবে না বলে আশা প্রকাশ করেছেন কর্মকর্তারা।

প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়াসহ কোরবানিযোগ্য পশুর চাহিদা রয়েছে ৪৬ হাজার ৯৭৮ টি। অথচ উৎপাদন হয়েছে ৫৬ হাজার ২১৩ টি, যা চাহিদার তুলনায় ৯ হাজার ২৩৫টি বেশি। গত বছর এই চাহিদা ছিল ৪৪ হাজার ৫২৬টি এবং উৎপাদন হয়েছিল ৫৩ হাজার ৮০৪ টি।

গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে উপজেলায় কোরবানির পশুর হাট বসতে শুরু করেছে। পাশাপাশি অনলাইনে পশু বিক্রিতেও ভালো সাড়া পাচ্ছেন খামারিরা। এতে খুশি হলেও অতিরিক্ত পশু খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে শেষ সময়ে এসে অনেক খামারি হিমশিম খাচ্ছেন। তবে আশাবাদী নতুন-পুরোনো ১০৭ জন প্রান্তিক খামারি। ভালো দামে বিক্রির আশায় তারা অপেক্ষায় রয়েছেন।

সীতাকুণ্ড পৌরসদরের ইদিলপুর এলাকার খামারি মো. খোরশেদ জানান, দশ বছর আগে প্রতিবেশীর কাছ থেকে তিনটি গরু বর্গা নিয়ে খামার শুরু করেন তিনি। এখন তার খামারে রয়েছে ২০টি গরু, যার মধ্যে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ১০ টি। বাজারদর ভালো থাকলে এগুলো ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকায় বিক্রি হবে বলে আশাবাদী তিনি।

সৈয়দপুর ইউনিয়নের বাঁকখালী এলাকার খামারি রবিউল হোসেন জানান, তার খামারে ৩৩টি গরু রয়েছে, যার মধ্যে ১৬টি ষাঁড় কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছেন তিনি। কাঁচা ঘাসের পাশাপাশি দানাদার খাদ্য খাওয়াতে গিয়ে খরচ বেড়েছে বলে জানান তিনি। তার খামারে থাকা গরুগুলোর দাম ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে বলে আশা করছেন তিনি।

ছোট দারোগারহাট এলাকার খামারি মো. আব্দুল আলিম বলেন, এবার তার খামারে ২২টি গরু প্রস্তুত রয়েছে। এসব গরুকে প্রাকৃতিক উপায়ে মোটা তাজা করতে খেসারি, সূর্যমুখীর খল্লি ও কাঁচা ঘাস খাওয়ানো হয়েছে। তবে খাদ্যের উচ্চমূল্যের কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে, ফলে এবার গরু বিক্রি করতে হবে তুলনামূলক বেশি দামে।

কুমিরা রয়েল গেট এলাকার হাজ্বী এগ্রোর মালিক ইব্রাহিম জানান, তার খামারে থাকা ২০টি বড় গরুর মধ্যে কয়েকটি হাটে তোলার আগেই অনলাইনে বিক্রি হয়ে গেছে। কাঙ্ক্ষিত দাম পেয়েও তিনি সন্তুষ্ট।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তাহমিনা আরজু জানান, প্রতিটি হাটে মেডিকেল টিমসহ তদারকির জন্য চারটি ভাগে টিম গঠন করা হয়েছে। গরুর যে কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যায় তারা প্রয়োজনীয় সেবা দেবেন। চাহিদার তুলনায় এবার পশু বেশি থাকায় সংকটের আশঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি।

এদিকে কোরবানির পশু কেনাবেচা নির্বিঘ্ন করতে উপজেলা প্রশাসন ১৫টি পশুর হাট বসানোর অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৩টি স্থায়ী, ১১টি অস্থায়ী এবং পৌরসভার একটি হাট। হাটগুলো হলো—সীতাকুণ্ড হাইস্কুল মাঠ, ফকিরহাট, বড় দারোগারহাট, কুমিরা, সৈয়দপুর মিয়াজান ভূঁইয়ার হাট, শেখের হাট, তোহর আলী ভূঁইয়ার হাট, মীরেরহাট, ছোট দারোগার হাট, বাড়বকুণ্ড হাই স্কুল মাঠ, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ মাঠ, মদনহাট বাজার, মাদামবিবির হাট, ভাটিয়ারী উত্তর বাজার এবং ফৌজদারহাট সিডিএ এলাকা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, পশুর হাটে প্রশাসনের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিনসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি হাটে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সীতাকুণ্ড থানার ওসি মজিবুর রহমান জানান, হাটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। অনিয়ম বা বিশৃঙ্খলার কোনো ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি মাওলানা তাওহীদুল হক চৌধুরী জানান, পশুর স্বাস্থ্য, ওজন ও দামের বিষয়ে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি প্রতারণা ঠেকাতে কাজ করছে তারা। কোরবানির দিন স্বাস্থ্যবিধি ও নৈতিকতা নিশ্চিতে মাঠে থাকবে সিআরবি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতে পোশাকের অর্ডার স্থগিত করছে মার্কিন ক্রেতারা, বাংলাদেশ-ভিয়েতনামে কারখানা স্থানান্তরের পরামর্শ

মোবাইল-টাকা ছিনতাইয়ের পর দুই তরুণীকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩

১১ বছর বয়সেই যৌন সম্পর্ক, ১৩-তে ছয় নারীর শয্যাসঙ্গী হন এই ব্রিটিশ রাজপুত্র

যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রক্রয় চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর ‘দমন-পীড়নে’ ২০২ শিক্ষকের উদ্বেগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত