Ajker Patrika

দারিদ্র্যকে জয় করে রেশমী পেল জিপিএ-৫ 

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২২, ১৫: ৫০
দারিদ্র্যকে জয় করে রেশমী পেল জিপিএ-৫ 

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের তালুকদারপাড়ার দরিদ্র কৃষক অনিল তালুকদার। অভাবের সংসারে যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরায়, সেখানে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালানো তাঁর জন্য কষ্টকর। তবে অদম্য মনোবল থাকলে দারিদ্র্য জয় করা সম্ভব, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন অনিল তালুকদারের মেয়ে রেশমী তালুকদার। গত সোমবার প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ওয়াগ্গা উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে সে জিপিএ-৫ পেয়েছে।

অনিল তালুকদারের সংসারে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে। কৃষিকাজ করে কোনো রকমে সংসার চালান। অভার তাঁর পরিবারের নিত্যসঙ্গী।

এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় রেশমী তালুকদারের। সে বলে, ‘ঘরে সব সময় অভাব-অনটন লেগে থাকত। তবু বাবা অনেক কষ্ট করে আমাদের লেখাপড়া করিয়েছেন। মা-বাবা আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষকেরা আমার পাশে ছিলেন। টাকার অভাবে টিউশনি পড়তে না পারলেও সাফছড়ি এলাকার অনার্স পড়ুয়া বড় ভাই সুজন তঞ্চঙ্গ্যা ও সুদেব তঞ্চঙ্গ্যা আমাকে পড়াশোনার ব্যাপারে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন।’

সে আরও বলে, ‘আমার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। অনেক সময় গাড়িভাড়া না থাকলে হেঁটেই স্কুলে যেতাম। ঝড়, বৃষ্টি, তুফানেও স্কুলে অনুপস্থিত থাকিনি। ভবিষ্যতে একজন চিকিৎসক হয়ে এলাকার দরিদ্র মানুষদের সেবা করতে চাই।’ 

তার বাবা অনিল তালুকদার এবং মা শিলপতি তালুকদার জানান, তাঁদের মেয়ে লেখাপড়ার বাইরে অন্য কোনো আবদার করেনি। অভাবের সংসারে তার অনেক শখ পূরণ করতে পারেননি। মেয়ের এই ফলাফলে তাঁরা খুশি।

ওয়াগ্গা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুবিমল তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘আমরা খুবই আনন্দিত। সে স্কুলে সব সময় প্রথম হতো এবং একজন মনোযোগী ছাত্রী হিসেবে সবার প্রিয় ছিল। পিছিয়ে পড়া একটা এলাকা থেকে জিপিএ-৫ অর্জন করা মোটেই সহজ নয়। আমরা শিক্ষকেরা সব সময় তার পাশে ছিলাম। তার ভবিষ্যৎ জীবনের সফলতা কামনা করছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত