Ajker Patrika

গাইবান্ধার ফুলছড়ি: চিকিৎসকের অভাবে বন্ধ প্রসবের অস্ত্রোপচার

  • দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত দুই মেডিকেল কর্মকর্তা।
  • ৪৮টি পদ শূন্য, কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে ক্ষোভ।
আমিনুল হক, ফুলছড়ি (গাইবান্ধা)
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ৪৮টি পদ শূন্য থাকায় স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসকের ঢাকায় প্রেষণে থাকা এবং দুই মেডিকেল কর্মকর্তার দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিতি। অনগ্রসর জনপদ হিসেবে পরিচিত ফুলছড়িতে স্বাস্থ্যসেবার এমন অবহেলায় জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনবল চেয়ে কয়েকবার পত্র দেওয়া হলেও কাঙ্ক্ষিত সাড়া মেলেনি। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক ও মেডিকেল কর্মকর্তা নিয়োগ দিলে হাসপাতালে অস্ত্রোপচারসহ সব জরুরি স্বাস্থ্যসেবা আবার চালু করা সম্ভব হবে।

জানা গেছে, চরাঞ্চলনির্ভর ফুলছড়ি উপজেলার সাত ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন। প্রায় ২ লাখ মানুষ চিকিৎসার জন্য এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওপর নির্ভরশীল। পাশের সাঘাটা ও সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষও এখানে আসেন চিকিৎসা নিতে। স্বল্প আয়ের মানুষের ভরসার জায়গা এই হাসপাতালটি; কিন্তু জনবল সংকটে প্রসবের অস্ত্রোপচারসহ স্বাস্থ্যসেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০১১ সালে এটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও জনবল রয়ে গেছে আগের মতোই। গাইনি, মেডিসিন, সার্জারি ও অ্যানেসথেসিয়া—এই চার বিভাগে জুনিয়র কনসালট্যান্টের ১১টি পদের মধ্যে ১০টি শূন্য। অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক মাহফুজা আখতার খাতা-কলমে ফুলছড়ির হলেও যোগদানের দিন থেকেই ঢাকায় প্রেষণে আছেন। এ ছাড়া মেডিকেল কর্মকর্তা সালেহীন কাদেরী ২০০৬ এবং সহকারী সার্জন মাজেদুল ইসলাম ২০১১ সাল থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাঁদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের ৯টি পদের মধ্যে কর্মরত মাত্র ৪ জন। ১৩৯ পদের মধ্যে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, স্বাস্থ্য সহকারী, ফার্মাসিস্টসহ বিভিন্ন পদে মোট ৪৮টি শূন্যপদ দীর্ঘদিন ধরে পূরণ করা হয়নি।

জানতে চাইলে আবাসিক মেডিকেল অফিসার রুহুল আমিন মিয়া বলেন, ‘হাসপাতালে প্রতি মাসে গড়ে বহির্বিভাগে ১০ হাজার, আন্তবিভাগে ৫০০, জরুরি বিভাগে দেড় হাজার রোগী চিকিৎসা নেন। এনসিডি কর্নারে গড়ে ২০০ রোগী উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসা নিতে আসেন। সীমিত জনবল দিয়ে সেবা চালু রাখার চেষ্টা করছি। তবে বহির্বিভাগে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যানালাইজার না থাকায় অনেক পরীক্ষা রোগীদের বাইরে গিয়ে করাতে হয়।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সমন্বয়ক আহসানুল হক স্বাধীন বলেন, ‘ফুলছড়ির মতো অনগ্রসর এলাকায় অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসককে ঢাকায় প্রেষণে রাখা মোটেও কাম্য নয়। প্রয়োজনীয় জনবল ছাড়া একটি হাসপাতাল চলতে পারে না।’

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস এম তানভীর রহমান বলেন, ‘গাইনি ও অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক না থাকায় সিজারিয়ান অপারেশন চালু করা যাচ্ছে না। জনবল চেয়ে কয়েকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। সীমিত লোকবল দিয়ে সাধ্যমতো সেবা দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় জনবল পেলে অপারেশন থিয়েটার চালু করা সম্ভব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোফায়েল আহমেদ হাসপাতালে

শিশুকে হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রাখেন স্কুলশিক্ষক চাচি: পুলিশ

সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা, যুবদল নেতা গ্রেপ্তার

হাজি সেলিমের আজিমপুরের বাড়িতে যৌথ বাহিনীর অভিযান, ৬টি বিলাসবহুল গাড়ি উদ্ধার

ধর্ষণ মামলার আসামি এএসপি, তদন্তে হস্তক্ষেপের অভিযোগ নারীর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত