Ajker Patrika

ঢাকায় ইইউ ও মার্কিন প্রতিনিধি: বুধবার বিএনপিকে ঠেকাতে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৩, ২১: ৫০
ঢাকায় ইইউ ও মার্কিন প্রতিনিধি: বুধবার বিএনপিকে ঠেকাতে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ

সরকার পতনের দাবিতে আগামীকাল এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি। এ নিয়ে রাজধানীতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে চায় দলটি। তবে, বসে নেই আওয়ামী লীগও। শান্তি সমাবেশের মাধ্যমে রাজধানীতে লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটিয়ে রাজপথে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চায় ক্ষমতাসীনরাও। 

বুধবার বেলা ২টা থেকে রাজধানীর নয়াপল্টনে তারুণ্যের সমাবেশ করবে বিএনপি। অন্যদিকে বেলা ৩টা থেকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করবে। এতে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। 

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটাতে চাই। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনার জন্য দলের সাংগঠনিক অবস্থাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বিএনপি ষড়যন্ত্রের যে নতুন কর্মসূচি দিয়েছে, তা মোকাবিলা করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের কর্মসূচি থেকে সহিংস ঘটনা যাতে জনগণ প্রতিরোধ করতে পারে, সেই বার্তা দেওয়া হবে। 

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, শান্তি সমাবেশে লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর সমাগম ঘটিয়ে রাজপথ যে তাদের দখলেই রয়েছে, বিদেশিদের এমন বার্তা দিতে চায়। আওয়ামী লীগ দেখাতে চায় তাদের বিপুল জনসমর্থন। একই সঙ্গে বিএনপিসহ বিরোধীদের চাপে রাখার বিষয়টি এতে কাজ করবে। তবে আগ বাড়িয়ে সংঘর্ষে না জড়াতে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

দলটির নেতারা মনে করছেন, যত দফার আন্দোলনই বিএনপি করুক না কেন, মাঠে আওয়ামী লীগ থাকলে তারা সুবিধা করতে পারবে না। একই সঙ্গে নির্বাচন পর্যন্ত যে দলটিকে তারা রাজপথে ছাড় দেবে না সেটিও আজকের শান্তি সমাবেশের মাধ্যমে প্রমাণ করবে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, মুখে আমেরিকার সমালোচনা করলেও বাস্তবে সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য কূটনীতিকেরা কাজ করছেন। একই সঙ্গে রাজপথ দখলে থাকলে ভোটের খেলায় এগিয়ে থাকা যাবে। এ জন্যই আমরা সরকারে থাকলেও বিরোধী দলের মতো রাজপথে শক্তি প্রদর্শন করব। বিএনপি সহিংসতার চেষ্টা করলে তা মোকাবিলা করব। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দলই চাইবে গণসমর্থন ঠিকঠাক থাকে এই জন্য মাঠ পাহারায় থাকবে। আর বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে। তারা একটি ভালো নির্বাচন চায়। আর সরকারও ভালো নির্বাচন করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এখানে বিএনপির দাবি হচ্ছে সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আলাপ-আলোচনা হবে না। দলটির এ অবস্থানের কারণে আওয়ামী লীগ মনে করে বিষয়টি মাঠে গড়ালে সেখানে নিজেদের উপস্থিতি জরুরি। সেই জন্য তারা এখন পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছে। 

তারা বলছে, বাংলাদেশে এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল রয়েছে। তাদের এজেন্ডায় হলো আগামী জাতীয় নির্বাচন। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে তাদের অবস্থান দেখাতে চায় বিদেশিদের। এ ক্ষেত্রে কোনো একটি রাজনৈতিক দল যদি একপেশেভাবে মাঠ গরম করে দেখানো শুরু করে, সে ক্ষেত্রে সরকারি দল মেনে নেবে না। তাই তারাও মাঠে আছে। তবে সহিংসতা এড়াতে দুই দলকেই সতর্ক থাকার অনুরোধ তাদের। 

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসবে রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আরও বাড়বে। কারণ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে বেশি সময় নেই। মাস দুই-তিনেক সময় হাতে রয়েছে। আরেকটি বিষয় হলো, উন্নয়ন সহযোগীদের আমাদের নির্বাচনের বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে। এ কারণে তারা একের পর এক বাংলাদেশে আসছে। এখন তাদের সামনে শক্তি প্রদর্শনের ব্যাপার দলগুলোর মধ্যে রয়েছে। 

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাজপথে আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান থাকবে। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে হয় সে জন্য জনগণকে আহ্বান করা হবে। 

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সহিংসতার বা সংঘর্ষের আশঙ্কা প্রসঙ্গে আবদুর রহমান বলেন, প্রশ্নই ওঠে না। আমরা তো সহিংসতার দলই না। তারা (বিএনপি) সহিংসতার দল। তারা কিছু করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। আর জনগণের জানমাল যদি নিরাপত্তাহীনতার মাঝে পড়ে, সেখানে জনগণও প্রতিরোধ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপি মহাসচিবকে ফোন করে বলেছিলাম, আমরা একটু আলোচনায় বসি: জামায়াত নেতা তাহের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ০৪
জামায়াতের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ফাইল ছবি
জামায়াতের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ফাইল ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোটের বিষয়ে সমঝোতার জন্য আলোচনায় বসতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিএনপির এই নেতাকে ফোন করেন তিনি।

আজ সন্ধ্যায় ফোন করার বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন জামায়াত নেতা তাহের।

সৈয়দ তাহের বলেন, ‘আমিই বিএনপির মহাসচিবকে ফোন করেছিলাম। ওনাকে বলেছিলাম, আমরা একটু আলোচনায় বসি।’ জবাবে উনি বলেছেন জানাবেন।

গত সোমবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে দলগুলোকে সাত দিনের মধ্যে একমত হয়ে সরকারকে জানাতে অনুরোধ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় জামায়াতের পক্ষ থেকে বিএনপিকে আলোচনার জন্য আহ্বান করা হয় এবং আজ ফোনকল করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘যাঁরা নিজেদের লোক হত্যা করেন, তাঁরা ক্ষমতায় গেলে মানুষ নিরাপদে থাকতে পারবে না’

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সিগঞ্জ শহরে আজ বৃহস্পতিবার পাঁচ দফা দাবিতে গণসমাবেশে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। ছবি: আজকের পত্রিকা
মুন্সিগঞ্জ শহরে আজ বৃহস্পতিবার পাঁচ দফা দাবিতে গণসমাবেশে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই খুনাখুনি শুরু করেছে। নিজেদের মধ্যে নিজেরাই খুনাখুনি করছে। যাঁরা নিজেদের লোককে নিজেরা হত্যা করেন, সেই দল যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে এই দেশের মানুষ নিরাপদে থাকতে পারবে না।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুন্সিগঞ্জ শহরের পুরোনো কাচারি এলাকার ডিসি পার্ক-সংলগ্ন প্রধান সড়কে ইসলামী আন্দোলনের জেলা শাখার গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফয়জুল করীম এসব কথা বলেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে জুলাই সনদের ভিত্তিতে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে এ সমাবেশ হয়।

ফয়জুল করীম আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ অতীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ—দুই দলকেই ক্ষমতায় এনেছে। একাধিকবার তারা পরীক্ষায় ফেল করেছে। দেশের মানুষ তাদের কর্মকাণ্ড দেখেছে। তাদের কাছে সমাধান নেই।’

ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান সাহেব ভালো মানুষ ছিলেন, এই গুণকীর্তনের কারণে দেশের মানুষ ১৯৯১ ও ২০০১ সালে খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় এনেছিল; থাকতে পারেননি। আবার শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের গুণকীর্তনের কারণে ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেছিলেন। কী উপহার দিয়েছেন, তা দেশবাসী জানে।’

ফয়জুল করীম বলেন, ‘দুই দল মিলে দেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে। শুধু ১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বিএনপি তিনবার বিশ্বে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সব দলকে পরীক্ষা করা হয়েছে, শুধু ইসলামকে পরীক্ষা করা হয়নি। ইসলামী আন্দোলনকে একবার পরীক্ষা করে দেখুন।’

গণসমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের মুন্সিগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মুফতি শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৮ দল নিয়ে রাজনৈতিক জোট করতে পারে এনসিপি: নাসীরুদ্দীন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আটটি দল নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজনৈতিক জোট হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

যে দলগুলোর সঙ্গে এনসিপি জোটবদ্ধ হতে চাইছে, সেগুলো হচ্ছে—গণতন্ত্র মঞ্চে থাকা ছয়টি দল জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদ।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘এই আট দলের সঙ্গে আমাদের একটা পলিটিক্যাল জোট হওয়ার সম্ভাবনা আছে। অর্থাৎ গণতন্ত্র মঞ্চ প্লাস যে দুই দল রয়েছে, তাদের নিয়ে রাজনৈতিক জোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে জোট হচ্ছে কি না—সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘যেহেতু দেশ সংকটকালীন মুহূর্তে আছে, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী যদি সংস্কার বাস্তবায়ন নিয়ে এক জায়গায় আসে এবং তারা যদি সংস্কারগুলো ভবিষ্যতে বাস্তবায়ন করবে—এমন প্রতিশ্রুতি দেয়, তাহলে বিএনপি এবং জামায়াত যে কারও সাথেই আমাদের জোট হতে পারে।’

নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক শর্ত—বিচার এবং সংস্কার। এই বিষয়ে যদি সমাধান না হয়, তাহলে কারও সাথেই জোটে যাব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোটের আগে গণভোট নয়, বিএনপি ভেসে আসেনি— ফখরুলের কড়া হুঁশিয়ারি

­যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ৫৮
যশোরে সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরে সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপিকে অবজ্ঞা করলে ফল ভালো হবে না বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপি ভেসে আসা দল নয়। বিএনপিকে খাটো করে দেখবেন না। আমরা যদি মাঠে নামি, তাহলে রাজনৈতিক বিষয়গুলো ভিন্নভাবে আসবে।’

যশোরে সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপির আয়োজনে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোর টাউন হল ময়দানে এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।

‘উপদেষ্টা পরিষদ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছেন’ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাঁরা ঐকমত্যের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সাত দিন সময় দিয়েছেন, কিন্তু রাজনৈতিক দল তো হাতের খেলনার মতো নয়। সংস্কার কমিশনের সব সভায় আমরা গিয়েছি। মতামত দিয়েছি। যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। যেগুলো হয়নি, সেগুলো পরবর্তী পার্লামেন্টে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু তা না করে তাঁরা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’

উপদেষ্টাদের ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন হয়েছি। চব্বিশের আন্দোলনের পর সুযোগ হয়েছে গণতন্ত্রের পথে ফেরার। দয়া করে পানি ঘোলা করবেন না। দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবেন না।’

মির্জা ফখরুল জোর দিয়ে বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট হবে, এর আগে নয়। সংস্কার কমিশনে আমরা যেসব বিষয়ে একমত হয়েছি, তার ভিত্তিতে কাজ শুরু করুন। যেগুলো হয়নি, সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পার্লামেন্টে হবে। দ্রুত তফসিল ঘোষণা করুন। নির্বাচন দিয়ে দিন। অন্যথায় আপনারা ব্যর্থ হবেন। সে ক্ষেত্রে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’

প্রয়াত তরিকুল ইসলামকে স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিস্টের বিয়োগাত্মক বিদায় তিনি দেখে যেতে পারলেন না। তাঁর বিদায়ে জাতি একজন দেশপ্রেমিক নেতাকে হারিয়েছে। তিনি একটি ইনস্টিটিউট ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকে তিনি সংগ্রাম করেছেন, জেল খেটেছেন, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন; কিন্তু জনগণকে ছেড়ে যাননি। তাঁর মতো নেতার এখন খুব প্রয়োজন।

যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, বিএনপির সাবেক তথ্যবিষয়ক সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টি এস আইয়ুব, ঝিকরগাছা থানা বিএনপির সভাপতি সাবিরা নাজমুল মুন্নী, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, যশোর বারের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ইসহক, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, যশোর নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, কোতোয়ালি বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, ইমাম পরিষদের সহসভাপতি আব্দুল মান্নান প্রমুখ।

স্মরণসভায় দোয়া পরিচালনা করেন মুফতি মাওলানা আমানুল্লাহ কাসেমী। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম, ছেলে কেন্দ্রীয় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত