সম্পাদকীয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা কি জানেন না, সব খেলা একই নিয়মে হয় না? সিন্ডিকেট সভা যদি ডেকে থাকেন উপাচার্য, তাহলে বুঝতে হবে তার একটা মাজেজা আছে। সেই সঙ্গে ছাত্রলীগের সদস্য এবং বহিরাগত ব্যক্তিরা যদি উপাচার্য ভবনের সামনে ভিড় জমান, তাহলে বুঝতে হবে খেলা জমে গেছে।
সভা ডাকা হয়েছিল মঙ্গলবার সকালে। প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ চেয়েছিলেন, এ সময় যেন সিন্ডিকেটের নিয়মিত সভাটি না হয়। উপাচার্যের বিদায়ঘণ্টা বেজে উঠেছে, তাই এ সময় যদি সিন্ডিকেট সভা হয়, তাহলে অ্যাডহক নিয়োগের মহাযজ্ঞ ঘটে যেতে পারে। ইজারাসহ কিছু অনিয়ম হতে পারে। শিক্ষকেরা ভেবেছিলেন, ৬ মে উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হলে নতুন উপাচার্য আসার পরই সিন্ডিকেট সভাটি হলে ভালো হয়। আর তা নিয়েই ঘটে গেল ছাত্রলীগের সঙ্গে শিক্ষকদের বচসা। বোঝা গেল, সিন্ডিকেট সভায় এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছিল, যাতে কোনো অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করা হতে পারে। শিক্ষকেরা যখন প্রক্টর মোহাম্মদ লুৎফর রহমানকে বহিরাগত ব্যক্তিদের বের করে দিতে বলেন, তখন প্রক্টর শিক্ষকদের সঙ্গে ঝগড়াই করেছেন, বহিরাগত ব্যক্তিদের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেননি।
শিক্ষকেরা উপাচার্যের বাসভবনে ঢুকতে গেলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আবদার করেন, ‘না স্যার, ভেতরে ঢোকা যাবে না!’ একজন তো অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় বলে ওঠেন, ‘তাহলে কিন্তু স্যার গুলি করে দেব একদম!’ যিনি এ কথা বলেছেন, তিনি ছিলেন চাকরিপ্রার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষার আলয়। কিন্তু এই শিক্ষা লাভের পরিসরটি রাজনীতি ও দুর্নীতির সঙ্গে দিব্যি হেসেখেলে বন্ধুত্ব পাতানোর কারণে লেখাপড়ার চেয়ে অন্যান্য দিকেই দৃষ্টি থাকে প্রশাসনের। আমাদের অতীত রাজনীতি বলে দেয়, যেকোনো প্রগতিশীল আন্দোলনে ছাত্ররা সব সময় অংশ নিয়েছে। পাল্টে যাওয়া দিনগুলোয় দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করার আগেই আখের গোছানোর অনেক কিছুই পেয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে। সবচেয়ে বড় যেটা পায়, সেটা হলো অনৈতিক কাজে প্রশাসনের সমর্থন। যেহেতু লাভালাভটি ভাইস ভার্সা, তাই প্রশাসন ও ক্ষমতা আঁকড়ে ধরা শিক্ষার্থী দল একে অন্যের পরিপূরক হয়ে নিজেদের ষোলোকলা পূর্ণ করে নেয়।
প্রগতিশীল শিক্ষক এর দল কেন যে এই ব্যাপারগুলো বোঝেন না, নিতান্ত গায়ে পড়ে অপমানিত হন, সেটা বোঝা কঠিন। লাভের গুড়ে তাঁরাও তো ভাগ বসাতে পারতেন! আর সেটা করলেই এই সম্পাদকীয়টি লিখতে হতো না।
সিন্ডিকেট সভাটি এই অসংস্কৃত আচরণের ডামাডোলে স্থগিত হয়ে গেছে। তাতে বহিরাগত ব্যক্তি ও শিক্ষার্থীদের লাভের গুড় খাওয়ার জন্য যাঁরা উপস্থিত হয়েছিলেন, তাঁরা নিশ্চয়ই কিছুটা হতাশ হয়েছেন। তবে তাঁদের এই হতাশ হওয়ায় অন্তত একটি ব্যাপারে আমরা বলতে পারি, কিছুদিনের জন্য অনৈতিকতা থেকে মুক্তি পেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ভবিষ্যতে কী হবে, সেটা আগাম বলতে পারবে না কেউ।
রসিকতা থাক। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দিনে দিনে যেদিকে যাচ্ছে, তাতে কিছুদিনের মধ্যেই গবেষণা ও পড়াশোনা নিয়ে গর্ব করার মতো কিছুই আর বাকি থাকবে না। শিক্ষকেরা নিজের মর্যাদা ধরে রাখতে পারছেন না, শিক্ষার্থীরা তাদের আরদ্ধ কাজের সঙ্গে না থেকে ভিন্ন দিকে মাথা ঘামাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তীর্থের কাকের মতো চেয়ে থাকছে সরকারের দিকে, কারও ওপর নেক নজর পড়লেই কেল্লাফতে! এই অবস্থা একটি দেশের শিক্ষার মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
উপাচার্য মহাশয় কেন বিদায়ের মাত্র দুদিন আগে সিন্ডিকেট সভা ডাকার ব্যাপারে নিজেই সিদ্ধান্ত নিলেন না, সেটা ভাবতে গেলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাজেডিগুলো বারবার মনে আঘাত করতে থাকে। এই করুণ গাথা থেকে বের হওয়ার কোনো পথ খোলা আছে কি না, আপাতদৃষ্টিতে তা বোঝার কোনো উপায় নেই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা কি জানেন না, সব খেলা একই নিয়মে হয় না? সিন্ডিকেট সভা যদি ডেকে থাকেন উপাচার্য, তাহলে বুঝতে হবে তার একটা মাজেজা আছে। সেই সঙ্গে ছাত্রলীগের সদস্য এবং বহিরাগত ব্যক্তিরা যদি উপাচার্য ভবনের সামনে ভিড় জমান, তাহলে বুঝতে হবে খেলা জমে গেছে।
সভা ডাকা হয়েছিল মঙ্গলবার সকালে। প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ চেয়েছিলেন, এ সময় যেন সিন্ডিকেটের নিয়মিত সভাটি না হয়। উপাচার্যের বিদায়ঘণ্টা বেজে উঠেছে, তাই এ সময় যদি সিন্ডিকেট সভা হয়, তাহলে অ্যাডহক নিয়োগের মহাযজ্ঞ ঘটে যেতে পারে। ইজারাসহ কিছু অনিয়ম হতে পারে। শিক্ষকেরা ভেবেছিলেন, ৬ মে উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হলে নতুন উপাচার্য আসার পরই সিন্ডিকেট সভাটি হলে ভালো হয়। আর তা নিয়েই ঘটে গেল ছাত্রলীগের সঙ্গে শিক্ষকদের বচসা। বোঝা গেল, সিন্ডিকেট সভায় এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছিল, যাতে কোনো অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করা হতে পারে। শিক্ষকেরা যখন প্রক্টর মোহাম্মদ লুৎফর রহমানকে বহিরাগত ব্যক্তিদের বের করে দিতে বলেন, তখন প্রক্টর শিক্ষকদের সঙ্গে ঝগড়াই করেছেন, বহিরাগত ব্যক্তিদের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেননি।
শিক্ষকেরা উপাচার্যের বাসভবনে ঢুকতে গেলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আবদার করেন, ‘না স্যার, ভেতরে ঢোকা যাবে না!’ একজন তো অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় বলে ওঠেন, ‘তাহলে কিন্তু স্যার গুলি করে দেব একদম!’ যিনি এ কথা বলেছেন, তিনি ছিলেন চাকরিপ্রার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষার আলয়। কিন্তু এই শিক্ষা লাভের পরিসরটি রাজনীতি ও দুর্নীতির সঙ্গে দিব্যি হেসেখেলে বন্ধুত্ব পাতানোর কারণে লেখাপড়ার চেয়ে অন্যান্য দিকেই দৃষ্টি থাকে প্রশাসনের। আমাদের অতীত রাজনীতি বলে দেয়, যেকোনো প্রগতিশীল আন্দোলনে ছাত্ররা সব সময় অংশ নিয়েছে। পাল্টে যাওয়া দিনগুলোয় দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করার আগেই আখের গোছানোর অনেক কিছুই পেয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে। সবচেয়ে বড় যেটা পায়, সেটা হলো অনৈতিক কাজে প্রশাসনের সমর্থন। যেহেতু লাভালাভটি ভাইস ভার্সা, তাই প্রশাসন ও ক্ষমতা আঁকড়ে ধরা শিক্ষার্থী দল একে অন্যের পরিপূরক হয়ে নিজেদের ষোলোকলা পূর্ণ করে নেয়।
প্রগতিশীল শিক্ষক এর দল কেন যে এই ব্যাপারগুলো বোঝেন না, নিতান্ত গায়ে পড়ে অপমানিত হন, সেটা বোঝা কঠিন। লাভের গুড়ে তাঁরাও তো ভাগ বসাতে পারতেন! আর সেটা করলেই এই সম্পাদকীয়টি লিখতে হতো না।
সিন্ডিকেট সভাটি এই অসংস্কৃত আচরণের ডামাডোলে স্থগিত হয়ে গেছে। তাতে বহিরাগত ব্যক্তি ও শিক্ষার্থীদের লাভের গুড় খাওয়ার জন্য যাঁরা উপস্থিত হয়েছিলেন, তাঁরা নিশ্চয়ই কিছুটা হতাশ হয়েছেন। তবে তাঁদের এই হতাশ হওয়ায় অন্তত একটি ব্যাপারে আমরা বলতে পারি, কিছুদিনের জন্য অনৈতিকতা থেকে মুক্তি পেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ভবিষ্যতে কী হবে, সেটা আগাম বলতে পারবে না কেউ।
রসিকতা থাক। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দিনে দিনে যেদিকে যাচ্ছে, তাতে কিছুদিনের মধ্যেই গবেষণা ও পড়াশোনা নিয়ে গর্ব করার মতো কিছুই আর বাকি থাকবে না। শিক্ষকেরা নিজের মর্যাদা ধরে রাখতে পারছেন না, শিক্ষার্থীরা তাদের আরদ্ধ কাজের সঙ্গে না থেকে ভিন্ন দিকে মাথা ঘামাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তীর্থের কাকের মতো চেয়ে থাকছে সরকারের দিকে, কারও ওপর নেক নজর পড়লেই কেল্লাফতে! এই অবস্থা একটি দেশের শিক্ষার মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
উপাচার্য মহাশয় কেন বিদায়ের মাত্র দুদিন আগে সিন্ডিকেট সভা ডাকার ব্যাপারে নিজেই সিদ্ধান্ত নিলেন না, সেটা ভাবতে গেলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাজেডিগুলো বারবার মনে আঘাত করতে থাকে। এই করুণ গাথা থেকে বের হওয়ার কোনো পথ খোলা আছে কি না, আপাতদৃষ্টিতে তা বোঝার কোনো উপায় নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে পড়াশোনা করা মোজাম্মেল হোসেন, ঘনিষ্ঠ মহলে যিনি মঞ্জু নামেই বেশি পরিচিত, ছাত্রাবস্থায় ১৯৬৯ সালে সাপ্তাহিক ‘যুগবাণী’ ও ১৯৭০ সালে সাপ্তাহিক ‘একতা’য় প্রতিবেদক হিসেবে পেশাজীবন শুরু করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘মুক্তিযুদ্ধ’ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক ছিলেন।
২০ ঘণ্টা আগেসোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ। নতুন প্রজন্ম বেড়ে উঠছে ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটার (বর্তমানে এক্স), ইনস্টাগ্রাম, মোবাইল অ্যাপ, ডিজিটাল কনটেন্টের প্রভাবিত জগতে। শুধু নতুন প্রজন্মই নয়, এটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সব বয়সীর মধ্যে।
২০ ঘণ্টা আগেঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ৩৭ নম্বর মধ্য গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে আজকের পত্রিকায় ছাপা হওয়া এক প্রতিবেদনে। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজনমাত্র শিক্ষক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বসেছেন পড়াতে।
২০ ঘণ্টা আগেআশা-নিরাশা নিয়ে যুগে যুগে জ্ঞানী-গুণী, মহাজনদের মুখনিঃসৃত বাণী আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে বিষম-বিভ্রমের মধ্যে ফেলে রেখেছে। কারণ, তাঁদের কেউ বলেছেন ‘ধন্য আশা কুহকিনি/তোমার মায়ায়, অসার সংসারচক্র ঘোরে নিরবধি, দাঁড়াইত স্থিরভাবে, চলিত না হায়; মন্ত্রবলে তুমি চক্র না ঘুরাতে যদি...’।
২ দিন আগে