সম্পাদকীয়
এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। এতে একদিকে যেমন শিক্ষার ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে তেমনি ঘরের চার দেয়ালে অবরুদ্ধ থেকে শিশু-কিশোরেরা এক বিশেষ শারীরিক-মানসিক সমস্যার মধ্যে পড়েছে। বিশেষ করে ঢাকা শহরের শিশু-কিশোরদের অবস্থা খুবই করুণ। এমনিতেই ঢাকা এবং অন্য বড় শহরের শিশুরা খোলামেলা পরিবেশ পায় না। একধরনের খাঁচার মধ্যে তাদের বসবাস। তারপর করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে তাদের দিনের পর দিন বন্দিদশায় কাল কাটাতে হচ্ছে। স্কুলে গেলে তারা কিছুটা হলেও মুক্ত পরিবেশ পায়। সমবয়সীদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কথা বলার সুযোগ পায়। শত শত শিশু-কিশোরের কলকাকলি যে উচ্ছ্বাস ছড়াত, তা বন্ধ হয়ে আছে।
সব মিলিয়ে আমরা নানা দিক বিবেচনাতেই একটি বন্ধ্যা সময় অতিক্রম করছি। সৃষ্টিসুখের উল্লাসে মেতে না উঠে আমরা সবাই নিজেকে নিয়ে বিব্রত হয়ে পড়ছি। অর্থনেতিক সমৃদ্ধি অর্জন করলেও মানসিকভাবে, সৃজনশীল উদ্যোগ-আয়োজনের দিক থেকে আমাদের দীনতা ঘুচছে না, বরং বাড়ছে। আমরা ক্রমশ কেমন যেন বৃত্তবন্দী হয়ে পড়ছি। করোনাকালে সেটাই আরও প্রসারিত হচ্ছে।
আমাদের শিশু-কিশোরদের জন্য সময় এবং পরিবেশ নিরানন্দ ও যাতনাময়। সাধারণ অবস্থাতেই তারা বেড়ে ওঠে পড়াশোনার এক ভয়াবহ চাপের মধ্য দিয়ে। একজন শিশুর মধ্যে শিশুসুলভ যে চাপল্য থাকার কথা, তার মধ্যে যে স্বতঃস্ফূর্ত কৌতূহল থাকার কথা—তা দেখা যায় না, বইয়ের ব্যাগ বহনের চাপে। শিশুদের আমরা বইয়ের পোকা বানাতে গিয়ে তার বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছি।
একটি শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের জন্য যেসব উপায় ও উপকরণ দরকার, তা এখন নেই বললেই চলে। খোলা আকাশ, উন্মুক্ত খেলার মাঠ, আত্মীয়-পরিজনে ভরা পারিবারিক পরিবেশ—এর কোনোটাই শিশুর নাগালে নেই। শিশুকে মানবশিশু হিসেবে বেড়ে ওঠার পরিবেশ না দিয়ে তাকে আমরা যন্ত্রমানুষে পরিণত করছি। শিশু-কিশোরদের সৃজনশীলতা বিকাশ ও প্রকাশের সুযোগ এখন সীমিত। অথচ একজন চিন্তাশীল মানবিক গুণসম্পন্ন উদার ও মুক্তমনের মানুষ হিসেবে শিশু-কিশোরদের গড়ে তোলার জন্য থাকা দরকার বিভিন্ন ধরনের সৃজন-উদ্যোগ। শিশু-কিশোরেরা অবশ্যই বই পড়বে, পাঠমুখী হবে। কিন্তু একই সঙ্গে সে লিখবে, ছবি আঁকবে, খেলাধুলা করবে। যখন মন যা চায়, তা-ই করবে। শৃঙ্খলার নামে তার জীবন শৃঙ্খলিত হবে না। তার হৃদয়বৃত্তি কুসুমিত হবে। সে আত্মকেন্দ্রিক হবে না। সে নিজেকে নিয়ে মশগুল থাকবে না। সে তার চেতনাকে শাণিত করবে একজন প্রকৃত মানুষের গুণাবলি দিয়ে। কিন্তু সেটা তো হচ্ছে না।
করোনাকাল নিশ্চয়ই একদিন শেষ হবে। মানুষ তার প্রাণের আবেগ চেপে রাখার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবে। কিন্তু শিশু-কিশোরদের জীবন বিকাশের মুক্ত পরিবেশ কি আমরা নিশ্চিত করতে পারব? সজীব বৃক্ষ পেতে হলে তার গোড়ায় নিয়মিত পানি দিতে হয়। আমরা আমাদের শিশু-কিশোরদের জীবনের সজীবতা ফিরিয়ে আনার কোনো চিন্তা, পরিকল্পনার কথা কি এখনই ভাবতে পারি না? সৃজনশীলতার জন্য চর্চা প্রয়োজন। আমরা কি কৃত্রিমতায় ভরা একটি আড়ষ্ট ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তৈরির পথেই আমাদের সময় এবং মেধার অপচয় করব? এসব নিয়ে ভাবনার সময় এখনই।
এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। এতে একদিকে যেমন শিক্ষার ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে তেমনি ঘরের চার দেয়ালে অবরুদ্ধ থেকে শিশু-কিশোরেরা এক বিশেষ শারীরিক-মানসিক সমস্যার মধ্যে পড়েছে। বিশেষ করে ঢাকা শহরের শিশু-কিশোরদের অবস্থা খুবই করুণ। এমনিতেই ঢাকা এবং অন্য বড় শহরের শিশুরা খোলামেলা পরিবেশ পায় না। একধরনের খাঁচার মধ্যে তাদের বসবাস। তারপর করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে তাদের দিনের পর দিন বন্দিদশায় কাল কাটাতে হচ্ছে। স্কুলে গেলে তারা কিছুটা হলেও মুক্ত পরিবেশ পায়। সমবয়সীদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কথা বলার সুযোগ পায়। শত শত শিশু-কিশোরের কলকাকলি যে উচ্ছ্বাস ছড়াত, তা বন্ধ হয়ে আছে।
সব মিলিয়ে আমরা নানা দিক বিবেচনাতেই একটি বন্ধ্যা সময় অতিক্রম করছি। সৃষ্টিসুখের উল্লাসে মেতে না উঠে আমরা সবাই নিজেকে নিয়ে বিব্রত হয়ে পড়ছি। অর্থনেতিক সমৃদ্ধি অর্জন করলেও মানসিকভাবে, সৃজনশীল উদ্যোগ-আয়োজনের দিক থেকে আমাদের দীনতা ঘুচছে না, বরং বাড়ছে। আমরা ক্রমশ কেমন যেন বৃত্তবন্দী হয়ে পড়ছি। করোনাকালে সেটাই আরও প্রসারিত হচ্ছে।
আমাদের শিশু-কিশোরদের জন্য সময় এবং পরিবেশ নিরানন্দ ও যাতনাময়। সাধারণ অবস্থাতেই তারা বেড়ে ওঠে পড়াশোনার এক ভয়াবহ চাপের মধ্য দিয়ে। একজন শিশুর মধ্যে শিশুসুলভ যে চাপল্য থাকার কথা, তার মধ্যে যে স্বতঃস্ফূর্ত কৌতূহল থাকার কথা—তা দেখা যায় না, বইয়ের ব্যাগ বহনের চাপে। শিশুদের আমরা বইয়ের পোকা বানাতে গিয়ে তার বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছি।
একটি শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের জন্য যেসব উপায় ও উপকরণ দরকার, তা এখন নেই বললেই চলে। খোলা আকাশ, উন্মুক্ত খেলার মাঠ, আত্মীয়-পরিজনে ভরা পারিবারিক পরিবেশ—এর কোনোটাই শিশুর নাগালে নেই। শিশুকে মানবশিশু হিসেবে বেড়ে ওঠার পরিবেশ না দিয়ে তাকে আমরা যন্ত্রমানুষে পরিণত করছি। শিশু-কিশোরদের সৃজনশীলতা বিকাশ ও প্রকাশের সুযোগ এখন সীমিত। অথচ একজন চিন্তাশীল মানবিক গুণসম্পন্ন উদার ও মুক্তমনের মানুষ হিসেবে শিশু-কিশোরদের গড়ে তোলার জন্য থাকা দরকার বিভিন্ন ধরনের সৃজন-উদ্যোগ। শিশু-কিশোরেরা অবশ্যই বই পড়বে, পাঠমুখী হবে। কিন্তু একই সঙ্গে সে লিখবে, ছবি আঁকবে, খেলাধুলা করবে। যখন মন যা চায়, তা-ই করবে। শৃঙ্খলার নামে তার জীবন শৃঙ্খলিত হবে না। তার হৃদয়বৃত্তি কুসুমিত হবে। সে আত্মকেন্দ্রিক হবে না। সে নিজেকে নিয়ে মশগুল থাকবে না। সে তার চেতনাকে শাণিত করবে একজন প্রকৃত মানুষের গুণাবলি দিয়ে। কিন্তু সেটা তো হচ্ছে না।
করোনাকাল নিশ্চয়ই একদিন শেষ হবে। মানুষ তার প্রাণের আবেগ চেপে রাখার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবে। কিন্তু শিশু-কিশোরদের জীবন বিকাশের মুক্ত পরিবেশ কি আমরা নিশ্চিত করতে পারব? সজীব বৃক্ষ পেতে হলে তার গোড়ায় নিয়মিত পানি দিতে হয়। আমরা আমাদের শিশু-কিশোরদের জীবনের সজীবতা ফিরিয়ে আনার কোনো চিন্তা, পরিকল্পনার কথা কি এখনই ভাবতে পারি না? সৃজনশীলতার জন্য চর্চা প্রয়োজন। আমরা কি কৃত্রিমতায় ভরা একটি আড়ষ্ট ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তৈরির পথেই আমাদের সময় এবং মেধার অপচয় করব? এসব নিয়ে ভাবনার সময় এখনই।
গত শতকের নব্বইয়ের দশক থেকে দেশে আঙুর চাষের চেষ্টা চলেছে। দেশের মাটিতে আঙুরের ফলন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু স্বাদ ছিল বেজায় টক। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ তখনো জানত না আঙুরগাছ দেখতে কেমন।
১০ ঘণ্টা আগেমে মাসে সূর্য যেন শুধু তাপ নয়, আগুন ছড়াচ্ছে। আকাশ থেকে যেন নেমে এসেছে মাথার ওপর, ওপর থেকে ঢুকে গেছে, যাচ্ছে ভেতরে। শহরের রাস্তায় আগুনের মতো উত্তাপ, গ্রামগঞ্জে পানির জন্য হাহাকার।
১০ ঘণ্টা আগেউপকূলীয় এলাকায় জেগে ওঠা চরাঞ্চলে ১৯৬৫ সাল থেকে বন সৃষ্টি করা হচ্ছে, যাকে প্যারাবন বলা হয়। বন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর এবং কক্সবাজার জেলায় এই প্যারাবন গড়ে উঠেছে। প্রায় ১ লাখ ৯৬ হাজার হেক্টর ভূমিতে এই বন তৈরি করা হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগেকুড়িগ্রামের উলিপুরের একটি গ্রামে সম্প্রতি যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রচলিত বিচারব্যবস্থা ও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোই বটে। একই সঙ্গে আমাদের গ্রামীণ সমাজকাঠামোতে যে এখনো গ্রাম্য মাতবরদের দৌরাত্ম্য আছে, সেটা স্পষ্ট হয়েছে।
১১ ঘণ্টা আগে