Ajker Patrika

শুক্রবারের ফকির

বিরস
শুক্রবারের ফকির

ক. নির্বাচনে দাঁড়িয়ে প্রার্থীরা সাধারণত ভোটারদের কাছে গালভরা সব প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। এগুলো আসলে ভোটারদের মন ভুলিয়ে ভোট আদায়ের কৌশল ছাড়া কিছু নয়। যিনি প্রতিশ্রুতি দেন, তিনি যেমন জানেন এগুলো কোনো দিন বাস্তবায়ন করা হবে না, ভোটাররাও বিষয়টি বোঝেন না তা নয়। তবু ভোটের আগে প্রতিশ্রুতির বান বয়ে যায়।

একবার এক ভোটভিক্ষুক তাঁর নির্বাচনী প্রচার সভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বক্তৃতা দিতে উঠে তিনি ভোটে জিতলে কী কী করবেন, তার একটি দীর্ঘ ফিরিস্তি দিয়ে শেষে বললেন, 
‘আমি আপনাদের এলাকায় একটি ব্রিজ (সেতু) নির্মাণ করে দেব।’ বিপুল করতালির মধ্যেই একজন দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বললেন, আমাদের এখানে তো কোনো নদী নেই—
একটুও বিব্রত না হয়ে ভোটভিখারি বললেন, ঠিক আছে, আমি এখানে একটি নদীও বানিয়ে দেব।

খ. জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ৫৩ সদস্যবিশিষ্ট দূতপুল গঠন করা হয়েছিল। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, এই পুলের সদস্যরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাহায্য বিষয়ে আলোচনার জন্য বিদেশ সফর করবেন। প্রশ্ন উঠেছিল, বিদেশে আমাদের দূতাবাস, রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য কর্মকর্তা থাকা সত্ত্বেও এই দূতপুল কেন?

সরকারের একজন সমালোচক জবাব দিয়েছিলেন এভাবে: যারা সারা সপ্তাহ ধরে ভিক্ষা করে তাদের সঙ্গে প্রতি শুক্রবার এসে যোগ দেয় কিছু নতুন ফকির। এরা সপ্তাহের ছয় দিন অন্য কাজকর্ম করে। কিন্তু শুক্রবার এরা বিশেষভাবে ভিক্ষা করতে বের হয়।

শুক্রবার মানুষ জুমার নামাজ পড়তে বাড়ি থেকে বের হয়ে মসজিদে আসা-যাওয়ার পথে বাড়তি ছোয়াবের আশায় একটু বেশি দান-খয়রাত করে থাকে। আমাদের এই স্পেশাল দূতেরা বিশেষ বিশেষ সময়ে সাহায্যের জন্য বিদেশ যাবেন, অর্থাৎ এঁরা হচ্ছেন শুক্রবারের ফকির।  

এখন অবশ্য বিদেশে গিয়ে হাত পেতে সাহায্য আনার জন্য আর শুক্রবারের বিশেষ ফকিরের দরকার হয় না।

গ. সংসদ ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গেটের কাছে সার্বক্ষণিক পাহারা থাকে। বেশ কয়েক বছর আগে, যখন দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ছিল না, সে সময় একদিন সংসদ অধিবেশন চলাকালে এক লোক সংসদ-সীমার গেটের সামনে ভাঙাচোরা একটা সাইকেলে তালা মেরে রেখে ভেতরে যাচ্ছিলেন।

তা দেখে এক নিরাপত্তাকর্মী হুংকার দিয়ে ছুটে আসেন। সংসদ ভবনের নিরাপত্তাকর্মী বলে কথা! অত্যন্ত গম্ভীর একটা ভাব নিয়ে ধমকের সুরে সাইকেলওয়ালা লোকটিকে বলল, ‘ওই ব্যাটা, এখানে সাইকেল রাখছিস কী বুঝে? জানিস না, এ পথ দিয়ে মন্ত্রী-মিনিস্টাররা যান?’

সাইকেলওয়ালা লোকটি একগাল হেসে জবাব দিল, ‘আমার সাইকেল নিয়া কোনো টেনশন কইরেন না ভাইজান, সাইকেলে তালা মাইরা দিছি!’

ঘ. একজন মন্ত্রী তাঁর ছেলেকে ইংরেজি পড়াচ্ছিলেন। Assassination শব্দের বানান মুখস্থ করাচ্ছিলেন এইভাবে:একটা গাধা (Ass), তার পাশে আরেকটি গাধা (ass), দুই গাধার পাশে আমি (i) এবং আমার পাশে পুরো জাতি (nation)।

ঙ. একটি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্মেলনে একদিন বিকেলে পরিস্থিতি একটু আনন্দদায়ক করার জন্য ব্রিটিশ ও রাশিয়ান দূত বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতায় রাজি হলেন। ঠিক হলো তাঁরা এক শ মিটার দৌড়াবেন। দুই পক্ষের কর্মচারীরা বাজি ধরল, কে জিতবে সে বিষয়ে। লন্ডনের দ্য টাইমস পত্রিকা ওই দৌড়ের খবর ছাপল: ব্রিটিশ ও রাশিয়ান দূতের মধ্যে একটি দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত বিজয়ী হন। একই বিষয়ে মস্কোর ইজভেজস্তিয়া পত্রিকার রিপোর্ট: বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতের মধ্যে একটি দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় রাশিয়ান দূত দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত সর্বশেষ স্থানের আগের স্থানটি অধিকার করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডাকসুতে শিবিরের জয়ে উদ্বেগ শশী থারুরের, জবাব দিলেন মেঘমল্লার

সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ডে স্থায়ী বসবাসের আবেদন করবেন যেভাবে

‘ম্যামের মুখটা দেখলাম, মনে হলো—শুয়ে আছেন, কিছুই হয়নি তাঁর’

তিন ভোটে দায়িত্ব পালনকারীদের ‘যথাসম্ভব’ দূরে রাখতে হবে

৪ বিষয়ে সুরাহা চেয়ে ডাকসুর চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অভিযোগ দিলেন ৯ পোলিং এজেন্ট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত