মাসুদ উর রহমান
আজকের লেখাটি কেবল ছাত্রছাত্রী বয়সীদের জন্য। মাসাধিককাল ধরে আমি রবীন্দ্ররচনা খুব বেশি পড়ছি। কেন পড়ছি তার একটা কারণ অবশ্য আছে—জগৎসংসারের কোনো একটি ঘটনা আমাকে খুব বিচলিত করেছিল। বিধ্বস্ত বললেও অত্যুক্তি হবে না। আমি সারা দিনমান একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়িয়েছি। পড়তে পড়তে আমার কাছে মনে হয়েছে এই পড়াগুলো খুব দরকার কেননা পাঠ্যবই পড়ে আমরা বড়জোর একটা চাকরির উপযুক্ত হই। দায়িত্বশীল, মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষ কি হই?
যেমন ধরুন রবীন্দ্রনাথের বিচারক গল্পটির কথাই যদি বলি, গল্পে হেমশশী পাশের বাড়ির মোহিতের ভালোবাসায় উদ্বেলিত হয়ে তাকে দেবতুল্য জ্ঞান করে। একদিন গভীর রাত্রে পিতা–মাতা–ভ্রাতা এবং গৃহ ছেড়ে মোহিতের সঙ্গে একই গাড়িতে উঠে বসে। একসময় গাড়ি ছেড়ে দিলে তার বোধের রাজ্য জেগে ওঠে— ‘জল নিমগ্ন মরণাপন্ন ব্যক্তির যেমন মুহূর্তের মধ্যে জীবনের সমস্ত ঘটনাবলি স্পষ্ট মনে পড়ে, তেমনই সেই দ্বার রুদ্ধ গাড়ির গাঢ় অন্ধকারের মধ্যে হেমশশীর মনে পড়িতে লাগিল, প্রতিদিন আহারের সময় তাহার বাপ তাহাকে সম্মুখে না লইয়া খাইতে বসিতেন না; মনে পড়িল, তাহার সর্বকনিষ্ঠ ভাইটি ইস্কুল হইতে আসিয়া তাহার দিদির হাতে খাইতে ভালোবাসিত; মনে পড়িল, সকালে সে তাহার মায়ের সহিত পান সাজিতে বসিত এবং বিকালে মা তাহার চুল বাঁধিয়া দিতেন। ঘরের প্রত্যেক ক্ষুদ্র কোণ এবং দিনের প্রত্যেক ক্ষুদ্র কাজটি তাহার মনের সম্মুখে জাজ্বল্যমান হইয়া উঠিতে লাগিল। তখন তাহার নিভৃত জীবন এবং ক্ষুদ্র সংসারটিকেই স্বর্গ বলিয়া মনে হইল। সেই পান সাজা, চুল বাঁধা, পিতার আহারস্থলে পাখা করা, ছুটির দিনে মধ্যাহ্ননিদ্রার সময় তাঁহার পাকা চুল তুলিয়া দেওয়া, ভাইদের দৌরাত্ম্য সহ্য করা—এ-সমস্তই তাহার কাছে পরম শান্তিপূর্ণ দুর্লভ সুখের মতো বোধ হইতে লাগিল; বুঝিতে পারিল না, এ-সব থাকিতে সংসারে আর কোন্ সুখের আবশ্যক আছে।
‘মনে হইতে লাগিল, পৃথিবীতে ঘরে ঘরে সমস্ত কুলকন্যারা এখন গভীর সুষুপ্তিতে নিমগ্ন। সেই আপনার ঘরে আপনার শয্যাটির মধ্যে নিস্তব্ধ রাত্রের নিশ্চিন্ত নিদ্রা যে কত সুখের, তাহা ইতিপূর্বে কেন সে বুঝিতে পারে নাই।’
প্রিয় পাঠক, ততক্ষণে হেমশশীর অনেক দেরি হয়ে গেছে। তার কোনো কথা, কোনো আর্তনাদই দেবতুল্য মোহিতের কর্ণকুহরে পৌঁছাচ্ছে না—‘নরমাংসের স্বাদ পাইলে মানুষের সম্বন্ধে বাঘের যে দশা হয়, হেমশশীর সম্বন্ধে তাহার ভাবটাও এখন সেইরূপ হইয়া উঠিয়াছে। রক্তে তার নাচন ধরেছে। ফলশ্রুতিতে হেম এর মুখ চেপে দ্বিতীয় শ্রেণীর চক্রশব্দমুখরিত রথে চড়াইয়া তাহাকে তাহার বহু দিনের আকাঙ্ক্ষিত স্বর্গলোকে লইয়া গেল...
‘ইহার অনতিকাল পরেই দেবতা (মোহিত) এবং স্বর্গ (হেমশশী) পুনশ্চ আর-একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর জীর্ণ রথে চড়িয়া আর-এক পথে প্রস্থান করিলে হেমশশী আকণ্ঠ পঙ্কের মধ্যে নিমজ্জিত হইয়া গেল। সমস্ত হারিয়ে সে এখন নিঃস্ব-অসহায়। মনে ভাবিল ঘরের মেয়েরা কাল সকালবেলায় ঘরের মধ্যে জাগিয়া উঠিবে, নিঃসংকোচ নিত্যকর্মের মধ্যে প্রবৃত্ত হইবে, আর গৃহচ্যুতা হেমশশীর এই নিদ্রাহীন রাত্রি কোনখানে গিয়া প্রভাত হইবে এবং সে নিরানন্দ প্রভাতে তাহাদের সেই গলির ধারের ছোটোখাটো ঘরকন্নাটির উপর যখন সকালবেলাকার চিরপরিচিত শান্তিময় হাস্যপূর্ণ রৌদ্রটি আসিয়া পতিত হইবে, তখন সেখানে সহসা কী লজ্জা প্রকাশিত হইয়া পড়িবে—কী লাঞ্ছনা, কী হাহাকার জাগ্রত হইয়া উঠিবে।’
প্রিয় পাঠক হেমশশীর মতো ঘটনা আমাদের চারপাশে এখন নিত্য ঘটছে। তথাকথিত প্রেম ভালোবাসার মোহে অন্ধ হয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতিশীল তারুণ্য যেমন বেপথু হচ্ছে, তেমনই তার মা–বাবা, আত্মীয়–আপনজনকে সমাজ-সংসারের তীর্যক মন্তব্য হজম করার পাশাপাশি অপমান আর অবিশ্রান্ত আঘাতে জর্জরিত হতে হতে যে জীবন্মৃত হওয়ার উপক্রম হতে হয়, তা বোঝার জন্য হেমশশীর ঘটনাটি নিশ্চয়ই প্রাসঙ্গিক! যে কিশোর-কিশোরী বা যুবক-যুবতী এমন গল্প পড়ে, তার মর্ম উপলব্ধি করতে পারে, তার পক্ষে পরিবারকে বিপদে ফেলার আত্মঘাতী, অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত নেওয়া নিশ্চয়ই কঠিন হবে।
কৈশোর-উত্তীর্ণ বয়সটা এক ব্যাখ্যাতীত অনুভূতিতে আচ্ছন্ন। পা ফেলতে হয় অতি সাবধানে। প্রেম ভালোবাসার স্বর্গীয় সংজ্ঞায় মত্ত না হয়ে বাস্তবতার নিরিখে পথ চলতে হয়। কোনটা মন্দ কোনটা ভালো তার সঠিক শিক্ষাটি নিতে হয়। ওই সময়ে ভালো লাগা ভালোবাসায় আচ্ছন্ন হয়নি এমন মানুষ খুব কমই আছে কিংবা নেই বললেও চলে কিন্তু সবার জীবন কি বিষময় হয়ে ওঠে? বুঝতে হবে।
প্রেম ভালোবাসা আসলে কী? এর সংজ্ঞায়ন তো আর পৃথিবীতে কম হয়নি। একেকজন মুনিঋষি একেক সংজ্ঞা দিলেও সর্বজনীন অর্থ অনেকটাই অভিন্ন। এই যেমন ভালোবাসা নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘ভালোবেসে সখী নিভৃত যতনে আমার নামটি লিখো তোমার মনেরও মন্দিরে’। তিনি এ ধরনের কথা বলেছিলেন কেননা আবেগধর্মী ভালোবাসা সাধারণত গভীর হয় এবং বিশেষ কারও সঙ্গে নিজের সব মানবীয় অনুভূতি ভাগ করে নেওয়া হয়, যার নামটি মনের মন্দিরে লিখে রাখে মানুষ, তাকেই সে ভালোবাসে।
বিপরীতে গুগল প্রদত্ত প্রেমের সংজ্ঞাটি এ রকম—প্রেম হলো ভালোবাসার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি উত্তেজনাপূর্ণ, যৌনতাপূর্ণ এবং রহস্যময় অনুভূতি। এটি হলো কোনো ব্যক্তির প্রতি যৌন আকর্ষণের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো আবেগীয় আকর্ষণ থেকে উদ্বুদ্ধ একটি বহিঃপ্রকাশমূলক ও আনন্দঘন অনুভূতি।
পার্থক্যটা বুঝতে হবে। আমি বলি কি প্রেম ভালোবাসা বড় অদ্ভুত জিনিস। চূড়ান্ত পরিণতির আগে পর্যন্ত তাকে গুছিয়ে রাখতে হয়, সাজানো, গোছানো, রাখঢাকের একেবারে চূড়ান্ত। কেননা, ভালোবাসা যদি গলে যায় পূর্ণিমার মতো, শিরায়–শিরায় তখন আগুন ধরে। ফলে ক্ষণিকের ভুলে হয়ে যায় সবকিছু তছনছ। ঝড়ে ভয়ংকর মূর্তি ধারণ করা সমুদ্র থেকে আসা জলোচ্ছ্বাসের জলের মতো মানবমনের সমস্ত আদব-কায়দাকে তখন এক লহমায় ভাসিয়ে নিয়ে যায়। একসময় শেষ হয় ঝড়—তখন জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া ভাঙা ঘরদোর, গাছপালার মতোই ঝুলে থাকে সেই অপরিণামদর্শী প্রেম।
আজকের লেখাটি কেবল ছাত্রছাত্রী বয়সীদের জন্য। মাসাধিককাল ধরে আমি রবীন্দ্ররচনা খুব বেশি পড়ছি। কেন পড়ছি তার একটা কারণ অবশ্য আছে—জগৎসংসারের কোনো একটি ঘটনা আমাকে খুব বিচলিত করেছিল। বিধ্বস্ত বললেও অত্যুক্তি হবে না। আমি সারা দিনমান একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়িয়েছি। পড়তে পড়তে আমার কাছে মনে হয়েছে এই পড়াগুলো খুব দরকার কেননা পাঠ্যবই পড়ে আমরা বড়জোর একটা চাকরির উপযুক্ত হই। দায়িত্বশীল, মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষ কি হই?
যেমন ধরুন রবীন্দ্রনাথের বিচারক গল্পটির কথাই যদি বলি, গল্পে হেমশশী পাশের বাড়ির মোহিতের ভালোবাসায় উদ্বেলিত হয়ে তাকে দেবতুল্য জ্ঞান করে। একদিন গভীর রাত্রে পিতা–মাতা–ভ্রাতা এবং গৃহ ছেড়ে মোহিতের সঙ্গে একই গাড়িতে উঠে বসে। একসময় গাড়ি ছেড়ে দিলে তার বোধের রাজ্য জেগে ওঠে— ‘জল নিমগ্ন মরণাপন্ন ব্যক্তির যেমন মুহূর্তের মধ্যে জীবনের সমস্ত ঘটনাবলি স্পষ্ট মনে পড়ে, তেমনই সেই দ্বার রুদ্ধ গাড়ির গাঢ় অন্ধকারের মধ্যে হেমশশীর মনে পড়িতে লাগিল, প্রতিদিন আহারের সময় তাহার বাপ তাহাকে সম্মুখে না লইয়া খাইতে বসিতেন না; মনে পড়িল, তাহার সর্বকনিষ্ঠ ভাইটি ইস্কুল হইতে আসিয়া তাহার দিদির হাতে খাইতে ভালোবাসিত; মনে পড়িল, সকালে সে তাহার মায়ের সহিত পান সাজিতে বসিত এবং বিকালে মা তাহার চুল বাঁধিয়া দিতেন। ঘরের প্রত্যেক ক্ষুদ্র কোণ এবং দিনের প্রত্যেক ক্ষুদ্র কাজটি তাহার মনের সম্মুখে জাজ্বল্যমান হইয়া উঠিতে লাগিল। তখন তাহার নিভৃত জীবন এবং ক্ষুদ্র সংসারটিকেই স্বর্গ বলিয়া মনে হইল। সেই পান সাজা, চুল বাঁধা, পিতার আহারস্থলে পাখা করা, ছুটির দিনে মধ্যাহ্ননিদ্রার সময় তাঁহার পাকা চুল তুলিয়া দেওয়া, ভাইদের দৌরাত্ম্য সহ্য করা—এ-সমস্তই তাহার কাছে পরম শান্তিপূর্ণ দুর্লভ সুখের মতো বোধ হইতে লাগিল; বুঝিতে পারিল না, এ-সব থাকিতে সংসারে আর কোন্ সুখের আবশ্যক আছে।
‘মনে হইতে লাগিল, পৃথিবীতে ঘরে ঘরে সমস্ত কুলকন্যারা এখন গভীর সুষুপ্তিতে নিমগ্ন। সেই আপনার ঘরে আপনার শয্যাটির মধ্যে নিস্তব্ধ রাত্রের নিশ্চিন্ত নিদ্রা যে কত সুখের, তাহা ইতিপূর্বে কেন সে বুঝিতে পারে নাই।’
প্রিয় পাঠক, ততক্ষণে হেমশশীর অনেক দেরি হয়ে গেছে। তার কোনো কথা, কোনো আর্তনাদই দেবতুল্য মোহিতের কর্ণকুহরে পৌঁছাচ্ছে না—‘নরমাংসের স্বাদ পাইলে মানুষের সম্বন্ধে বাঘের যে দশা হয়, হেমশশীর সম্বন্ধে তাহার ভাবটাও এখন সেইরূপ হইয়া উঠিয়াছে। রক্তে তার নাচন ধরেছে। ফলশ্রুতিতে হেম এর মুখ চেপে দ্বিতীয় শ্রেণীর চক্রশব্দমুখরিত রথে চড়াইয়া তাহাকে তাহার বহু দিনের আকাঙ্ক্ষিত স্বর্গলোকে লইয়া গেল...
‘ইহার অনতিকাল পরেই দেবতা (মোহিত) এবং স্বর্গ (হেমশশী) পুনশ্চ আর-একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর জীর্ণ রথে চড়িয়া আর-এক পথে প্রস্থান করিলে হেমশশী আকণ্ঠ পঙ্কের মধ্যে নিমজ্জিত হইয়া গেল। সমস্ত হারিয়ে সে এখন নিঃস্ব-অসহায়। মনে ভাবিল ঘরের মেয়েরা কাল সকালবেলায় ঘরের মধ্যে জাগিয়া উঠিবে, নিঃসংকোচ নিত্যকর্মের মধ্যে প্রবৃত্ত হইবে, আর গৃহচ্যুতা হেমশশীর এই নিদ্রাহীন রাত্রি কোনখানে গিয়া প্রভাত হইবে এবং সে নিরানন্দ প্রভাতে তাহাদের সেই গলির ধারের ছোটোখাটো ঘরকন্নাটির উপর যখন সকালবেলাকার চিরপরিচিত শান্তিময় হাস্যপূর্ণ রৌদ্রটি আসিয়া পতিত হইবে, তখন সেখানে সহসা কী লজ্জা প্রকাশিত হইয়া পড়িবে—কী লাঞ্ছনা, কী হাহাকার জাগ্রত হইয়া উঠিবে।’
প্রিয় পাঠক হেমশশীর মতো ঘটনা আমাদের চারপাশে এখন নিত্য ঘটছে। তথাকথিত প্রেম ভালোবাসার মোহে অন্ধ হয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতিশীল তারুণ্য যেমন বেপথু হচ্ছে, তেমনই তার মা–বাবা, আত্মীয়–আপনজনকে সমাজ-সংসারের তীর্যক মন্তব্য হজম করার পাশাপাশি অপমান আর অবিশ্রান্ত আঘাতে জর্জরিত হতে হতে যে জীবন্মৃত হওয়ার উপক্রম হতে হয়, তা বোঝার জন্য হেমশশীর ঘটনাটি নিশ্চয়ই প্রাসঙ্গিক! যে কিশোর-কিশোরী বা যুবক-যুবতী এমন গল্প পড়ে, তার মর্ম উপলব্ধি করতে পারে, তার পক্ষে পরিবারকে বিপদে ফেলার আত্মঘাতী, অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত নেওয়া নিশ্চয়ই কঠিন হবে।
কৈশোর-উত্তীর্ণ বয়সটা এক ব্যাখ্যাতীত অনুভূতিতে আচ্ছন্ন। পা ফেলতে হয় অতি সাবধানে। প্রেম ভালোবাসার স্বর্গীয় সংজ্ঞায় মত্ত না হয়ে বাস্তবতার নিরিখে পথ চলতে হয়। কোনটা মন্দ কোনটা ভালো তার সঠিক শিক্ষাটি নিতে হয়। ওই সময়ে ভালো লাগা ভালোবাসায় আচ্ছন্ন হয়নি এমন মানুষ খুব কমই আছে কিংবা নেই বললেও চলে কিন্তু সবার জীবন কি বিষময় হয়ে ওঠে? বুঝতে হবে।
প্রেম ভালোবাসা আসলে কী? এর সংজ্ঞায়ন তো আর পৃথিবীতে কম হয়নি। একেকজন মুনিঋষি একেক সংজ্ঞা দিলেও সর্বজনীন অর্থ অনেকটাই অভিন্ন। এই যেমন ভালোবাসা নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘ভালোবেসে সখী নিভৃত যতনে আমার নামটি লিখো তোমার মনেরও মন্দিরে’। তিনি এ ধরনের কথা বলেছিলেন কেননা আবেগধর্মী ভালোবাসা সাধারণত গভীর হয় এবং বিশেষ কারও সঙ্গে নিজের সব মানবীয় অনুভূতি ভাগ করে নেওয়া হয়, যার নামটি মনের মন্দিরে লিখে রাখে মানুষ, তাকেই সে ভালোবাসে।
বিপরীতে গুগল প্রদত্ত প্রেমের সংজ্ঞাটি এ রকম—প্রেম হলো ভালোবাসার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি উত্তেজনাপূর্ণ, যৌনতাপূর্ণ এবং রহস্যময় অনুভূতি। এটি হলো কোনো ব্যক্তির প্রতি যৌন আকর্ষণের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো আবেগীয় আকর্ষণ থেকে উদ্বুদ্ধ একটি বহিঃপ্রকাশমূলক ও আনন্দঘন অনুভূতি।
পার্থক্যটা বুঝতে হবে। আমি বলি কি প্রেম ভালোবাসা বড় অদ্ভুত জিনিস। চূড়ান্ত পরিণতির আগে পর্যন্ত তাকে গুছিয়ে রাখতে হয়, সাজানো, গোছানো, রাখঢাকের একেবারে চূড়ান্ত। কেননা, ভালোবাসা যদি গলে যায় পূর্ণিমার মতো, শিরায়–শিরায় তখন আগুন ধরে। ফলে ক্ষণিকের ভুলে হয়ে যায় সবকিছু তছনছ। ঝড়ে ভয়ংকর মূর্তি ধারণ করা সমুদ্র থেকে আসা জলোচ্ছ্বাসের জলের মতো মানবমনের সমস্ত আদব-কায়দাকে তখন এক লহমায় ভাসিয়ে নিয়ে যায়। একসময় শেষ হয় ঝড়—তখন জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া ভাঙা ঘরদোর, গাছপালার মতোই ঝুলে থাকে সেই অপরিণামদর্শী প্রেম।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্বয়ং একাধিকবার বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন এমন এক আবহে অনুষ্ঠিত হবে যে তা শুধু দেশে নয়, সারা পৃথিবীতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সর্বজনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এটা তাঁর নিজের এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে
১ দিন আগেসোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫। আস্থা আছে কি না, স্বপ্রণোদিত হয়ে যাচাই করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু। সংসদে ১৯৪ জন সংসদ সদস্য তাঁর ওপর আস্থা জানিয়ে ভোট দিলেও ৩৬৪ জন তাঁকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ফ্রান্সের আইনপ্রণেতা হচ্ছেন মোট ৫৭৭ জন। ফলে মাত্র ৯ মাস ক্ষমতায়
১ দিন আগেসময় এখন অদ্ভুত এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। মানুষ তার হাজার বছরের ইতিহাসে অনেক বিপ্লবের সাক্ষী হয়েছে—কৃষি, শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি। প্রতিটি বিপ্লব আমাদের জীবনধারায় গভীর পরিবর্তন এনেছে, কেউ কেউ পেছনে পড়ে গেছে, কেউ সামনের সারিতে উঠে এসেছে। কিন্তু এইবার যা আসছে, তা হয়তো আর কাউকে কেবল পেছনেই ফেলবে না; বরং মানুষক
১ দিন আগেবাংলাদেশে ১৯৭২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কীটনাশক ব্যবহারের পরিমাণ প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। আজকের পত্রিকায় ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ‘সেন্টার ফর অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড বায়োসায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল’ (ক্যাবি) আয়োজিত এক কর্মশালায় এই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে।
১ দিন আগে