আব্দুর রাজ্জাক
পারিপার্শ্বিক অবস্থা, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, লোকমুখের প্রচার ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা বিশ্লেষণ করলে এক বাক্যে উপনীত হওয়া যায় যে নির্বাচন আসন্ন। কিছুটা দ্বিমত ও সন্দেহ প্রকাশ করছেন কেউ কেউ। তবে নির্বাচন হলে কারা জনপ্রতিনিধি হবেন, তা নিয়ে কথা বলা দরকার।
জনপ্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা কী? যোগ্যতা বলতে বোঝাচ্ছি শিক্ষাগত যোগ্যতা, জনগণকে সেবাদানের যোগ্যতা, মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য নিঃস্বার্থভাবে প্রতিনিধি প্রস্তুত কি না, সেই যোগ্যতা। এসব যোগ্যতা বিশ্লেষণ করেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা উচিত। সারা বিশ্বের গণতান্ত্রিক সমাজে এই ধরনের মানুষকেই তাদের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করে।
জাতীয় নির্বাচনে কে কোন পার্টির প্রার্থী, সেই পার্টির আদর্শ কী, এটা মানুষ অবশ্যই বিবেচনায় নেয়। জাতীয় স্বার্থে, সার্বিকভাবে জাতির উন্নতির স্বার্থে কর্মসংস্থান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার ম্যানিফেস্টো বিশ্লেষণ করে, ওই দলের প্রতিনিধিকে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিষয়টা হিসাবে ধরে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে কোন দল বেশি অবদান রেখেছে, জনগণের মতামতকে কোন দল সব সময় অগ্রাধিকার দেয়, এটাও মাথায় রেখে জনগণ ভোট দেয়। কোন দলের মধ্যে গণতন্ত্র আছে, নিজের দলের মধ্যে গণতন্ত্র আছে কি না, সেটাও কিন্তু জনগণ বিবেচনায় নেয় অনেক ক্ষেত্রেই। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ স্থানীয় প্রার্থীর যাবতীয় যোগ্যতা, গুণাগুণ, আচার-ব্যবহার সাধারণ মানুষের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া বিবেচনায় নিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের চেষ্টা করে।
আমাদের দেশে যখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তার কয়েক মাস আগেই আপনারা রাস্তাঘাটে, পথেপ্রান্তরে বিভিন্ন রঙের বিভিন্ন সাইজের পোস্টারে লেখা দেখবেন, অমুক ভাইয়ের চরিত্র, ফুলের মতো পবিত্র। অমুক ভাই চায় কী জনগণের শান্তি। অমুক ওয়ার্ডের একটি ফুল, নাম তার...রুল। সংগত কারণে নামটি উল্লেখ করলাম না। তোমার ভাই আমার ভাই অমুক ভাই অমুক ভাই। এ রকম স্লোগানসংবলিত পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুন নির্বাচন আসার আগে আগে দেখতে পাব, অতীতেও দেখেছি। যে কথা পোস্টারে, ব্যানারে, ফেস্টুনে লেখা থাকে, সেগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখবেন, যে ভাইয়ের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র বলা হচ্ছে, তা শুনলে ফুল আর ফুটবে না। যে ভাই জনগণের শান্তি চায়, তার চরিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখবেন ওই অঞ্চলের যত অশান্তির মূলে ওই ভাই। আবার যে সবার ভাই, তার চরিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখবেন আসলে সে সবার সাক্ষাৎ যমদূত। আমি উল্লেখ করেছি অমুক ওয়ার্ডের একটি ফুল, নাম তার... রুল। আসলে সে ওই ওয়ার্ডের কয়েকটি খুনের মামলার আসামি, সবচেয়ে কুখ্যাত ব্যক্তি। কিন্তু তাঁর চরিত্রকে পোস্টার-ফেস্টুন-ব্যানারে চিত্রায়িত করা হয়েছে ফুলের মতো পবিত্র হিসেবে।
ওপরের লিখিত এই ধরনের পোস্টার, বিলবোর্ড, ফেস্টুনের কোনো দোষ দেখি না, যে যার কথা তো বলবেই, অবশ্যই সবাই সবাইকে নিজের চরিত্র সম্পর্কে ভালো ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এই ক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী, সেই সম্পর্কে আমরা কী সিদ্ধান্ত নেব, তার দায়িত্ব তো আমাদের নিজেদের। আজকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু, সাধারণ জনগণ কাকে নির্বাচিত করবে? প্রার্থীরা নিজেদের প্রচার চালিয়ে গেলেন, আমরা শুনলাম, দেখলাম, বুঝলাম, তারপর আমরা যদি সঠিক সিদ্ধান্ত না নিতে পারি, তাহলে তো নির্বাচিত প্রতিনিধিদের খুব একটা দোষ দেওয়া যাবে না।
বহু বছর ধরে আমরা দেখে আসছি, সঠিক যোগ্য ব্যক্তি অনেক স্থান থেকেই নির্বাচিত হয়ে আসেন না। আমাদের মজ্জাগত একটা ধারণা—কোন প্রার্থী কত টাকা খরচ করতে পারবেন, তিনি এলাকায় নির্বাচিত হওয়ার আগেই কী ধরনের উন্নয়নকাজ করেন, সাহায্য-সহযোগিতা করেন—এসবের ওপরই আমরা নির্ভর করে ভোট প্রদান করি। আমরা কোনো সময় ভেবে দেখি না যে ভদ্রলোক নির্বাচনের আগে যে টাকা খরচ করলেন, তার উৎস কী, তাঁর এত টাকা খরচ করার সামর্থ্য আছে কি না। নিঃস্বার্থভাবে মানুষকে ভালোবাসা, নিঃস্বার্থভাবে এলাকার উন্নয়ন করা, নিঃস্বার্থভাবে মানুষের মঙ্গলের জন্য নিজের জীবনকে ব্যয় করার মানুষ আমাদের সমাজে আছে, তবে যাঁকে আমরা নির্বাচিত করব, তাঁর সেই যোগ্যতা আছে কি না, সেটা বিবেচনার ব্যাপার। শুধু স্লোগানের মাধ্যমে যে কথাগুলো বলে, তার ওপর বিশেষ নজর না দিয়ে তাঁর চরিত্রের গুণাবলির ওপর নজর দেওয়া দরকার।
আমাদের দেশের মানুষ হঠাৎ কিছু পেতে চায়। নির্বাচনের আগে কোনো ব্যক্তি এলাকায় গিয়ে প্রতিটা অঞ্চলের ইউনিয়নের গ্রামের মানুষকে নিজের মতো করে পোষ মানিয়ে নেন। এই নিজের মতো করে নেওয়ার মানে হলো, তিনি বেছে বেছে সমাজে যাঁদের একটু গ্রহণযোগ্যতা আছে, তাঁদের টাকা দিয়ে কিনে ফেলেন। এসব মানুষ ওই ব্যক্তির গুণগান করতে থাকেন। একটা কথা আছে—প্রচারেই প্রসার। এ রকম প্রচার পেয়ে অনেকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে যান। তারপর যা হওয়ার তা-ই হয়, এলাকার উন্নয়ন, জনগণের স্বার্থ—এসব আর মনে থাকে না। প্রথমে তাঁর খেয়াল থাকে তিনি কত টাকা খরচ করেছিলেন, সেই টাকার সুদ এবং আসল উশুল করা। এরপর তিনি যান লাভের দিকে। অতএব বুঝে দেখুন, আপনি কাকে নির্বাচিত করেছেন বা করবেন বলে মনস্থির করেছেন, তাঁর অবস্থা কী, তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি কী।
বর্তমান সময়ে একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে, নির্বাচনের আগে আগে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেওয়া। মানুষ গুনে গুনে দেখে কোন প্রার্থী কতগুলো মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেন, মোটরসাইকেলের আগে-পেছনে কতটি জিপ, কতটি গাড়ি আছে। প্রতিদিন তাঁর সঙ্গে যারা প্রচার করে, তাদের কত টাকা করে দিয়েছেন, এগুলো হিসাব করে তার পেছনে মানুষ ঘোরে এবং তাঁকে ভোট দেওয়ার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে।
অতএব বুঝে দেখুন, এখানে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে বা প্রচার করার ক্ষেত্রে, সমাজের সর্বস্তরের মানুষেরও একটি দায়বদ্ধতা আছে। নাগরিক দায়বদ্ধতা থেকে আমরা সঠিক যোগ্য ব্যক্তিকে যদি নির্বাচিত না করি, তাহলে বিপর্যয় যা হওয়ার তা তো হবেই, এ রকম বিপর্যয় বারবার হতেই থাকবে।
অনেক ক্ষেত্রে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেও জনগণের ভোট আদায় করা হয়। সব ক্ষেত্রে না হলেও একরকম শক্তি প্রদর্শন করা হয়। এখনো আমাদের সমাজে ভয়ভীতি প্রদর্শনের নমুনা আছে, যেটা আমরা আগে দেখেছি, ভবিষ্যতে সেই ব্যবস্থা যেন না দেখি, সেই জন্যই আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার।
কথায় কথায় আমরা বলি, জনগণই ক্ষমতার উৎস। কথাটা সত্যি, জনগণ যাঁকে নির্বাচিত করে তিনিই জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন। তবে সেই জনতা হতে হবে সচেতন জনতা, যে জনতা সঠিক ব্যক্তিকে নির্বাচিত করবে, নিজের স্বার্থ হাসিল করে জনগণের দোহাই দিয়ে ভুল মানুষকে নির্বাচিত করবে না। আমরা সেই জনতাকে চাই, যে জনতা লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে সঠিক ব্যক্তিকে নির্বাচন করবে, সঠিক প্রতিনিধিকে সংসদে পাঠাবে অথবা স্থানীয় সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পাঠাবে, সেই জনতাকে দেখতে চাই, যে জনতা আসলেই হয়ে উঠবে ক্ষমতার উৎস।
লেখক: প্রকৌশলী
পারিপার্শ্বিক অবস্থা, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, লোকমুখের প্রচার ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা বিশ্লেষণ করলে এক বাক্যে উপনীত হওয়া যায় যে নির্বাচন আসন্ন। কিছুটা দ্বিমত ও সন্দেহ প্রকাশ করছেন কেউ কেউ। তবে নির্বাচন হলে কারা জনপ্রতিনিধি হবেন, তা নিয়ে কথা বলা দরকার।
জনপ্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা কী? যোগ্যতা বলতে বোঝাচ্ছি শিক্ষাগত যোগ্যতা, জনগণকে সেবাদানের যোগ্যতা, মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য নিঃস্বার্থভাবে প্রতিনিধি প্রস্তুত কি না, সেই যোগ্যতা। এসব যোগ্যতা বিশ্লেষণ করেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা উচিত। সারা বিশ্বের গণতান্ত্রিক সমাজে এই ধরনের মানুষকেই তাদের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করে।
জাতীয় নির্বাচনে কে কোন পার্টির প্রার্থী, সেই পার্টির আদর্শ কী, এটা মানুষ অবশ্যই বিবেচনায় নেয়। জাতীয় স্বার্থে, সার্বিকভাবে জাতির উন্নতির স্বার্থে কর্মসংস্থান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার ম্যানিফেস্টো বিশ্লেষণ করে, ওই দলের প্রতিনিধিকে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিষয়টা হিসাবে ধরে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে কোন দল বেশি অবদান রেখেছে, জনগণের মতামতকে কোন দল সব সময় অগ্রাধিকার দেয়, এটাও মাথায় রেখে জনগণ ভোট দেয়। কোন দলের মধ্যে গণতন্ত্র আছে, নিজের দলের মধ্যে গণতন্ত্র আছে কি না, সেটাও কিন্তু জনগণ বিবেচনায় নেয় অনেক ক্ষেত্রেই। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ স্থানীয় প্রার্থীর যাবতীয় যোগ্যতা, গুণাগুণ, আচার-ব্যবহার সাধারণ মানুষের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া বিবেচনায় নিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের চেষ্টা করে।
আমাদের দেশে যখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তার কয়েক মাস আগেই আপনারা রাস্তাঘাটে, পথেপ্রান্তরে বিভিন্ন রঙের বিভিন্ন সাইজের পোস্টারে লেখা দেখবেন, অমুক ভাইয়ের চরিত্র, ফুলের মতো পবিত্র। অমুক ভাই চায় কী জনগণের শান্তি। অমুক ওয়ার্ডের একটি ফুল, নাম তার...রুল। সংগত কারণে নামটি উল্লেখ করলাম না। তোমার ভাই আমার ভাই অমুক ভাই অমুক ভাই। এ রকম স্লোগানসংবলিত পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুন নির্বাচন আসার আগে আগে দেখতে পাব, অতীতেও দেখেছি। যে কথা পোস্টারে, ব্যানারে, ফেস্টুনে লেখা থাকে, সেগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখবেন, যে ভাইয়ের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র বলা হচ্ছে, তা শুনলে ফুল আর ফুটবে না। যে ভাই জনগণের শান্তি চায়, তার চরিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখবেন ওই অঞ্চলের যত অশান্তির মূলে ওই ভাই। আবার যে সবার ভাই, তার চরিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখবেন আসলে সে সবার সাক্ষাৎ যমদূত। আমি উল্লেখ করেছি অমুক ওয়ার্ডের একটি ফুল, নাম তার... রুল। আসলে সে ওই ওয়ার্ডের কয়েকটি খুনের মামলার আসামি, সবচেয়ে কুখ্যাত ব্যক্তি। কিন্তু তাঁর চরিত্রকে পোস্টার-ফেস্টুন-ব্যানারে চিত্রায়িত করা হয়েছে ফুলের মতো পবিত্র হিসেবে।
ওপরের লিখিত এই ধরনের পোস্টার, বিলবোর্ড, ফেস্টুনের কোনো দোষ দেখি না, যে যার কথা তো বলবেই, অবশ্যই সবাই সবাইকে নিজের চরিত্র সম্পর্কে ভালো ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এই ক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী, সেই সম্পর্কে আমরা কী সিদ্ধান্ত নেব, তার দায়িত্ব তো আমাদের নিজেদের। আজকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু, সাধারণ জনগণ কাকে নির্বাচিত করবে? প্রার্থীরা নিজেদের প্রচার চালিয়ে গেলেন, আমরা শুনলাম, দেখলাম, বুঝলাম, তারপর আমরা যদি সঠিক সিদ্ধান্ত না নিতে পারি, তাহলে তো নির্বাচিত প্রতিনিধিদের খুব একটা দোষ দেওয়া যাবে না।
বহু বছর ধরে আমরা দেখে আসছি, সঠিক যোগ্য ব্যক্তি অনেক স্থান থেকেই নির্বাচিত হয়ে আসেন না। আমাদের মজ্জাগত একটা ধারণা—কোন প্রার্থী কত টাকা খরচ করতে পারবেন, তিনি এলাকায় নির্বাচিত হওয়ার আগেই কী ধরনের উন্নয়নকাজ করেন, সাহায্য-সহযোগিতা করেন—এসবের ওপরই আমরা নির্ভর করে ভোট প্রদান করি। আমরা কোনো সময় ভেবে দেখি না যে ভদ্রলোক নির্বাচনের আগে যে টাকা খরচ করলেন, তার উৎস কী, তাঁর এত টাকা খরচ করার সামর্থ্য আছে কি না। নিঃস্বার্থভাবে মানুষকে ভালোবাসা, নিঃস্বার্থভাবে এলাকার উন্নয়ন করা, নিঃস্বার্থভাবে মানুষের মঙ্গলের জন্য নিজের জীবনকে ব্যয় করার মানুষ আমাদের সমাজে আছে, তবে যাঁকে আমরা নির্বাচিত করব, তাঁর সেই যোগ্যতা আছে কি না, সেটা বিবেচনার ব্যাপার। শুধু স্লোগানের মাধ্যমে যে কথাগুলো বলে, তার ওপর বিশেষ নজর না দিয়ে তাঁর চরিত্রের গুণাবলির ওপর নজর দেওয়া দরকার।
আমাদের দেশের মানুষ হঠাৎ কিছু পেতে চায়। নির্বাচনের আগে কোনো ব্যক্তি এলাকায় গিয়ে প্রতিটা অঞ্চলের ইউনিয়নের গ্রামের মানুষকে নিজের মতো করে পোষ মানিয়ে নেন। এই নিজের মতো করে নেওয়ার মানে হলো, তিনি বেছে বেছে সমাজে যাঁদের একটু গ্রহণযোগ্যতা আছে, তাঁদের টাকা দিয়ে কিনে ফেলেন। এসব মানুষ ওই ব্যক্তির গুণগান করতে থাকেন। একটা কথা আছে—প্রচারেই প্রসার। এ রকম প্রচার পেয়ে অনেকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে যান। তারপর যা হওয়ার তা-ই হয়, এলাকার উন্নয়ন, জনগণের স্বার্থ—এসব আর মনে থাকে না। প্রথমে তাঁর খেয়াল থাকে তিনি কত টাকা খরচ করেছিলেন, সেই টাকার সুদ এবং আসল উশুল করা। এরপর তিনি যান লাভের দিকে। অতএব বুঝে দেখুন, আপনি কাকে নির্বাচিত করেছেন বা করবেন বলে মনস্থির করেছেন, তাঁর অবস্থা কী, তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি কী।
বর্তমান সময়ে একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে, নির্বাচনের আগে আগে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেওয়া। মানুষ গুনে গুনে দেখে কোন প্রার্থী কতগুলো মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেন, মোটরসাইকেলের আগে-পেছনে কতটি জিপ, কতটি গাড়ি আছে। প্রতিদিন তাঁর সঙ্গে যারা প্রচার করে, তাদের কত টাকা করে দিয়েছেন, এগুলো হিসাব করে তার পেছনে মানুষ ঘোরে এবং তাঁকে ভোট দেওয়ার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে।
অতএব বুঝে দেখুন, এখানে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে বা প্রচার করার ক্ষেত্রে, সমাজের সর্বস্তরের মানুষেরও একটি দায়বদ্ধতা আছে। নাগরিক দায়বদ্ধতা থেকে আমরা সঠিক যোগ্য ব্যক্তিকে যদি নির্বাচিত না করি, তাহলে বিপর্যয় যা হওয়ার তা তো হবেই, এ রকম বিপর্যয় বারবার হতেই থাকবে।
অনেক ক্ষেত্রে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেও জনগণের ভোট আদায় করা হয়। সব ক্ষেত্রে না হলেও একরকম শক্তি প্রদর্শন করা হয়। এখনো আমাদের সমাজে ভয়ভীতি প্রদর্শনের নমুনা আছে, যেটা আমরা আগে দেখেছি, ভবিষ্যতে সেই ব্যবস্থা যেন না দেখি, সেই জন্যই আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার।
কথায় কথায় আমরা বলি, জনগণই ক্ষমতার উৎস। কথাটা সত্যি, জনগণ যাঁকে নির্বাচিত করে তিনিই জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন। তবে সেই জনতা হতে হবে সচেতন জনতা, যে জনতা সঠিক ব্যক্তিকে নির্বাচিত করবে, নিজের স্বার্থ হাসিল করে জনগণের দোহাই দিয়ে ভুল মানুষকে নির্বাচিত করবে না। আমরা সেই জনতাকে চাই, যে জনতা লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে সঠিক ব্যক্তিকে নির্বাচন করবে, সঠিক প্রতিনিধিকে সংসদে পাঠাবে অথবা স্থানীয় সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পাঠাবে, সেই জনতাকে দেখতে চাই, যে জনতা আসলেই হয়ে উঠবে ক্ষমতার উৎস।
লেখক: প্রকৌশলী
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দল নিষিদ্ধ করার দাবি যেন এক পুনরাবৃত্ত ইতিহাস। যে দল ক্ষমতায় থাকে, তারা প্রায়ই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিষিদ্ধ করার পথ খোঁজে, আর একটি পক্ষ ‘ফাঁকা মাঠে গোল করার মওকা’ মিলবে ভেবে তাতে সমর্থন জোগায়—যেন নিষিদ্ধ করাই সংকট সমাধানের একমাত্র উপায়।
২ ঘণ্টা আগেআমাদের চিকিৎসাব্যবস্থায় বড় ক্ষত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি রোগ। দেশের প্রায় ৫৩ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন সদস্য কোনো না কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত। ‘পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার’ (পিপিআরসি)-এর সম্প্রতি এক গবেষণায় এ ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।
২ ঘণ্টা আগেআগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যতই জোর দেওয়া হচ্ছে, চারপাশে ততই বইছে আশঙ্কার গুমোট হাওয়া। আশঙ্কা দানা বাঁধছে সরকারেরই কিছু কথায়। সরকারের পক্ষ থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে জোর দেওয়ার পাশাপাশি বলা হচ্ছে নির্বাচন ভন্ডুল করার ষড়যন্
১ দিন আগেরবীন্দ্রনাথের ঋতু বন্দনা আমরা জানি। বসন্ত হেমন্ত শীত গ্রীষ্ম বর্ষা সব ঋতু নিয়েই কবিতা আর গান আছে তাঁর। অথচ এই রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, আমার রাত পোহালো শারদ প্রাতে। তার মানে কি অন্য ঋতুতে তাঁর রাত পোহায়নি?
১ দিন আগে