Ajker Patrika

সময়ের হিসাব-নিকাশ

আহমেদ শমসের
সময়ের হিসাব-নিকাশ

একটি জনপ্রিয় গানের লাইন: ‘এক পলকে একটু দেখা–আরও একটু বেশি হলে ক্ষতি কী? ‘পড়ে না চোখের পলক’—এমন বাক্যের সঙ্গেও আমাদের পরিচয় আছে। তা এই ‘পলক’ আসলে কতটা সময়? শব্দটা কিন্তু এমনি এমনি আসেনি। পলক হলো অতি স্বল্প সময় বা মুহূর্তকাল। ঘড়ি ধরে বললে এটা ২৪ সেকেন্ড।

এরপর আছে ‘ক্ষণ’। ‘দাঁড়াও পথিকবর, জন্ম যদি বঙ্গে তব তিষ্ঠ ক্ষণকাল এ সমাধি স্থলে’—মাইকেল মধুসূদন দত্তের এই কবিতার সঙ্গে আমাদের পরিচয় আছে। তাছাড়া ক্ষণ গণনার কথা আমরা প্রায়ই বলি। একটু ক্ষণ জিরিয়ে নেওয়ার কথা আপনজনদের মুখ থেকে কে–না শুনেছেন! এই ক্ষণ আসলে ঘড়ির কাঁটায় কতটা সময়? ক্ষণ হলো পলকের চেয়ে বেশি—চার মিনিট।

‘একদিন এই দেখা হয়ে যাবে শেষ, পড়িবো নয়ন ’পরে অন্তিম নিমেষ’–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই লাইন কত–না শুনেছি। একটি সুন্দর গজলের প্রথম পঙ্‌ক্তি—‘এক নিমিষেই হবে তুমি লাশ’। ‘এক নিমিষেই সে চোখের আড়ালে চলে গেলো’—এমন কথাও আমরা প্রায়ই বলি বা শুনি। ‘নিমিষ’ ঘড়ি ধরে কতটা সময়, সেটা হয়তো অনেকের জানা নেই। ১৬ মিনিটে এক নিমিষ বা নিমেষ।

‘আমারে দু–দণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন’—কবিতার এই লাইন কত শুনেছি, কত বলেছি। আসলে বনলতা ঠিক কতটুকু সময় শান্তি দিয়েছিল, সেটা ঘড়ির মাপে কতজন বলতে পারবেন? দণ্ড হলো ২৪ মিনিট, তাহলে বনলতা দু–দণ্ড মানে ৪৮ মিনিট শান্তি দিয়েছিল। দণ্ড মানে কিন্তু আবার লাঠি এবং জরিমানাও হয়। অথচ দণ্ডায়মান হচ্ছে দাঁড়ানো। এক মুহূর্তেই সব ওলটপালট হয়ে গেল—এমন কথাও হরহামেশা আমরা বলি। তাহলে মুহূর্ত আসলে ঘড়ির কাঁটার কতটা সময়। মনে রাখতে হবে, দু–দণ্ডে হয় এক মুহূর্ত অর্থাৎ মুহূর্ত হলো ৪৮ মিনিট।

‘যদি কাটে প্রহর পাশে বসে, মনের দুটি কথা বলে ক্ষতি কি’—অথবা কাটে না প্রহর তোমায় বিনে—ভাবে গদগদ হয়ে এমন কথা কতজনই তো বলি। প্রহরের পরিমাপ কি সবার জানা আছে? প্রহর হলো তিন ঘণ্টা।

দিন–রাত মিলিয়ে ২৪ ঘণ্টা। তাই দিন–রাতকে আট প্রহর বলা হয়।

এই হাবিজাবি পড়তে আপনাদের কতটা ক্ষণ নষ্ট হলো! ক্ষমা করবেন দয়া করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত