আদিয়াত উল্লাহ

মানব মননের সর্বোত্তম বিকাশ ও আল্লাহর সব হুকুম-আহকাম, আদেশ-নিষেধ পালনের মাধ্যমে মানবীয় দুর্বলতার ঊর্ধ্বে উঠে মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও আখিরাতে তাঁর দিদার লাভের নিমিত্তে আল্লাহ তাআলা যেসব নির্বাচিত ব্যক্তিকে তাঁর নবী ও রাসুল হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন, নবী করিম (সা.) তাঁদের মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ।
তাঁর জীবনের প্রতিটি দিক, কর্মপদ্ধতি ও ওহির আলোকে তাঁর জীবনাচরণ মানুষের জীবনে হেদায়াত ও অবারিত নুরের এক অনন্য উৎস। তিনি ও তাঁর আদর্শ সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহর এক অনন্য উপহার।
জীবনের সর্বক্ষেত্রে তাঁর আদর্শ অনুসরণ মুমিনদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এবং মানবজাতির ইহকালীন সফলতা ও পরকালীন মুক্তির একমাত্র পথ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মাঝে (তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি ও জীবনাচরণে) রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সুরা আহজাব: ২১)
কোরআনের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ছিল কোরআনের প্রতিটি আয়াত, আদেশ ও নিষেধের এক জীবন্ত ও অনন্য চিত্র। কোরআন যেন প্রতিটি হরফে হরফে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্রের মাধ্যমে যথার্থভাবে চিত্রিত হচ্ছিল। সাইয়িদা আয়েশা (রা.)-কে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কোরআনই ছিল তাঁর চরিত্র। কোরআনের রাগে তিনি রাগান্বিত হতেন এবং তার সন্তুষ্টিতে তিনি সন্তুষ্ট হতেন।’ (জামেউল ওয়াসাইল ফি শারহিশ শামাইল, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চরিত্রে যা এসেছে’ অধ্যায়)
সব প্রশংসনীয় গুণের পূর্ণতাদানকারী: রাসুলুল্লাহ (সা.) মানবচরিত্রের সব গুণের এক অনন্য আধার ছিলেন। তাঁর চরিত্র ছিল সব প্রকার গুণের এক উত্তম, অভূতপূর্ব, অনন্য ও চমৎকার সমন্বয়। তাঁর মাঝে ছিল না কোনো নিন্দনীয় অভ্যাস ও স্বভাব। তিনি ছিলেন সত্যবাদী, উত্তম আমানতদার, ওয়াদা রক্ষাকারী, আল্লাহর নেয়ামতের সর্বোত্তম শোকরকারী, লজ্জাশীল ও অনন্য ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেই ইরশাদ করেন, ‘আমি চরিত্রের সব উত্তম গুণের পূর্ণতা দানের জন্যই প্রেরিত হয়েছি।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৮৯৫২)
ছোটদের প্রতি দয়ার্দ্রতার অনন্য উদাহরণ: রাসুলুল্লাহ (সা.) ছোটদের প্রতি ছিলেন দয়ার এক অনন্য সাগর। তিনি ছোটদের আদর করার প্রতি গুরুত্বারোপ করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সে আমাদের মধ্যে গণ্য নয়, যে আমাদের ছোটদের প্রতি রহম করে না এবং বড়দের অধিকার আদায় করে না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯৪৩, জামে তিরমিজি: ১৯২০,২০৩২, মুসনাদে আহমাদ: ৬৭৩৩, আল আদাবুল মুফরাদ: ৩৫৪)
তিনি প্রায়শই ছোটদের নিয়ে আনন্দ করতেন, মজা করতেন, তাদের কাছে টেনে নিয়ে আদর করতেন, চুমু খেতেন, স্নেহের হাত বুলিয়ে দিতেন মাথার ওপর। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর নাতি হাসান (রা.)-কে চুমু খেলেন। আকরা ইবনে হাবিস (রা.) পাশে বসা ছিলেন। তিনি বললেন, ‘আমার ১০টা সন্তান। একজনকেও আমি কখনো চুমু দিইনি।’ নবী করিম (সা.) তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘নিশ্চয় যে দয়া করে না, তার প্রতি দয়া করা হবে না।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৯৯৭, সহিহ্ মুসলিম: ২৩১৮)
এতিম শিশুদের এক অনন্য আশ্রয় ছিলেন তিনি। মুতার যুদ্ধে জাফর (রা.) শহীদ হলে তাঁর শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে তাঁর বাড়িতে যান, তাঁর কাঁধে জাফর (রা.)-এর পরিবারের দায়িত্ব তুলে নেন এবং এতিম শিশুদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। জাফর (রা.)-এর বড় পুত্র আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘রাসুলে করিম (সা.) এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করলেন এবং আমাদের জন্য দোয়া করলেন—‘‘হে আল্লাহ, আপনি নিজেই জাফরের সন্তানদের অভিভাবক হয়ে যান।’’ (মুস্তাদরাকে হাকেম: ১৩৭৯)
পরিবার ও স্ত্রীদের সঙ্গে আচরণ: নিজ স্ত্রীগণ ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নবীজি (সা.)-এর আচরণ ছিল অনুপম, উত্তম ও সুন্দর। পরিবারের সদস্যদের সবার সঙ্গে উত্তম ও যথাযথ আচরণ করতেন তিনি। এ জন্য পরিবারের সব সদস্যের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল স্বাভাবিক, সুন্দর ও হৃদ্যতাপূর্ণ। নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে তার পরিবারের নিকট উত্তম। আর আমি আমার পরিবারের নিকট তোমাদের চেয়ে উত্তম।’ (জামে তিরমিজি: ৩৮৯৫, সুনানে দারেমি: ২২৬০, মিশকাতুল মাসাবিহ: ৩২৫২)। এখানে পরিবার বলতে স্ত্রীকে বোঝানো হয়েছে।
লেখক: শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মানব মননের সর্বোত্তম বিকাশ ও আল্লাহর সব হুকুম-আহকাম, আদেশ-নিষেধ পালনের মাধ্যমে মানবীয় দুর্বলতার ঊর্ধ্বে উঠে মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও আখিরাতে তাঁর দিদার লাভের নিমিত্তে আল্লাহ তাআলা যেসব নির্বাচিত ব্যক্তিকে তাঁর নবী ও রাসুল হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন, নবী করিম (সা.) তাঁদের মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ।
তাঁর জীবনের প্রতিটি দিক, কর্মপদ্ধতি ও ওহির আলোকে তাঁর জীবনাচরণ মানুষের জীবনে হেদায়াত ও অবারিত নুরের এক অনন্য উৎস। তিনি ও তাঁর আদর্শ সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহর এক অনন্য উপহার।
জীবনের সর্বক্ষেত্রে তাঁর আদর্শ অনুসরণ মুমিনদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এবং মানবজাতির ইহকালীন সফলতা ও পরকালীন মুক্তির একমাত্র পথ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মাঝে (তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি ও জীবনাচরণে) রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সুরা আহজাব: ২১)
কোরআনের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ছিল কোরআনের প্রতিটি আয়াত, আদেশ ও নিষেধের এক জীবন্ত ও অনন্য চিত্র। কোরআন যেন প্রতিটি হরফে হরফে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্রের মাধ্যমে যথার্থভাবে চিত্রিত হচ্ছিল। সাইয়িদা আয়েশা (রা.)-কে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কোরআনই ছিল তাঁর চরিত্র। কোরআনের রাগে তিনি রাগান্বিত হতেন এবং তার সন্তুষ্টিতে তিনি সন্তুষ্ট হতেন।’ (জামেউল ওয়াসাইল ফি শারহিশ শামাইল, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চরিত্রে যা এসেছে’ অধ্যায়)
সব প্রশংসনীয় গুণের পূর্ণতাদানকারী: রাসুলুল্লাহ (সা.) মানবচরিত্রের সব গুণের এক অনন্য আধার ছিলেন। তাঁর চরিত্র ছিল সব প্রকার গুণের এক উত্তম, অভূতপূর্ব, অনন্য ও চমৎকার সমন্বয়। তাঁর মাঝে ছিল না কোনো নিন্দনীয় অভ্যাস ও স্বভাব। তিনি ছিলেন সত্যবাদী, উত্তম আমানতদার, ওয়াদা রক্ষাকারী, আল্লাহর নেয়ামতের সর্বোত্তম শোকরকারী, লজ্জাশীল ও অনন্য ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেই ইরশাদ করেন, ‘আমি চরিত্রের সব উত্তম গুণের পূর্ণতা দানের জন্যই প্রেরিত হয়েছি।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৮৯৫২)
ছোটদের প্রতি দয়ার্দ্রতার অনন্য উদাহরণ: রাসুলুল্লাহ (সা.) ছোটদের প্রতি ছিলেন দয়ার এক অনন্য সাগর। তিনি ছোটদের আদর করার প্রতি গুরুত্বারোপ করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সে আমাদের মধ্যে গণ্য নয়, যে আমাদের ছোটদের প্রতি রহম করে না এবং বড়দের অধিকার আদায় করে না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯৪৩, জামে তিরমিজি: ১৯২০,২০৩২, মুসনাদে আহমাদ: ৬৭৩৩, আল আদাবুল মুফরাদ: ৩৫৪)
তিনি প্রায়শই ছোটদের নিয়ে আনন্দ করতেন, মজা করতেন, তাদের কাছে টেনে নিয়ে আদর করতেন, চুমু খেতেন, স্নেহের হাত বুলিয়ে দিতেন মাথার ওপর। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর নাতি হাসান (রা.)-কে চুমু খেলেন। আকরা ইবনে হাবিস (রা.) পাশে বসা ছিলেন। তিনি বললেন, ‘আমার ১০টা সন্তান। একজনকেও আমি কখনো চুমু দিইনি।’ নবী করিম (সা.) তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘নিশ্চয় যে দয়া করে না, তার প্রতি দয়া করা হবে না।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৯৯৭, সহিহ্ মুসলিম: ২৩১৮)
এতিম শিশুদের এক অনন্য আশ্রয় ছিলেন তিনি। মুতার যুদ্ধে জাফর (রা.) শহীদ হলে তাঁর শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে তাঁর বাড়িতে যান, তাঁর কাঁধে জাফর (রা.)-এর পরিবারের দায়িত্ব তুলে নেন এবং এতিম শিশুদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। জাফর (রা.)-এর বড় পুত্র আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘রাসুলে করিম (সা.) এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করলেন এবং আমাদের জন্য দোয়া করলেন—‘‘হে আল্লাহ, আপনি নিজেই জাফরের সন্তানদের অভিভাবক হয়ে যান।’’ (মুস্তাদরাকে হাকেম: ১৩৭৯)
পরিবার ও স্ত্রীদের সঙ্গে আচরণ: নিজ স্ত্রীগণ ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নবীজি (সা.)-এর আচরণ ছিল অনুপম, উত্তম ও সুন্দর। পরিবারের সদস্যদের সবার সঙ্গে উত্তম ও যথাযথ আচরণ করতেন তিনি। এ জন্য পরিবারের সব সদস্যের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল স্বাভাবিক, সুন্দর ও হৃদ্যতাপূর্ণ। নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে তার পরিবারের নিকট উত্তম। আর আমি আমার পরিবারের নিকট তোমাদের চেয়ে উত্তম।’ (জামে তিরমিজি: ৩৮৯৫, সুনানে দারেমি: ২২৬০, মিশকাতুল মাসাবিহ: ৩২৫২)। এখানে পরিবার বলতে স্ত্রীকে বোঝানো হয়েছে।
লেখক: শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আদিয়াত উল্লাহ

মানব মননের সর্বোত্তম বিকাশ ও আল্লাহর সব হুকুম-আহকাম, আদেশ-নিষেধ পালনের মাধ্যমে মানবীয় দুর্বলতার ঊর্ধ্বে উঠে মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও আখিরাতে তাঁর দিদার লাভের নিমিত্তে আল্লাহ তাআলা যেসব নির্বাচিত ব্যক্তিকে তাঁর নবী ও রাসুল হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন, নবী করিম (সা.) তাঁদের মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ।
তাঁর জীবনের প্রতিটি দিক, কর্মপদ্ধতি ও ওহির আলোকে তাঁর জীবনাচরণ মানুষের জীবনে হেদায়াত ও অবারিত নুরের এক অনন্য উৎস। তিনি ও তাঁর আদর্শ সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহর এক অনন্য উপহার।
জীবনের সর্বক্ষেত্রে তাঁর আদর্শ অনুসরণ মুমিনদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এবং মানবজাতির ইহকালীন সফলতা ও পরকালীন মুক্তির একমাত্র পথ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মাঝে (তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি ও জীবনাচরণে) রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সুরা আহজাব: ২১)
কোরআনের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ছিল কোরআনের প্রতিটি আয়াত, আদেশ ও নিষেধের এক জীবন্ত ও অনন্য চিত্র। কোরআন যেন প্রতিটি হরফে হরফে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্রের মাধ্যমে যথার্থভাবে চিত্রিত হচ্ছিল। সাইয়িদা আয়েশা (রা.)-কে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কোরআনই ছিল তাঁর চরিত্র। কোরআনের রাগে তিনি রাগান্বিত হতেন এবং তার সন্তুষ্টিতে তিনি সন্তুষ্ট হতেন।’ (জামেউল ওয়াসাইল ফি শারহিশ শামাইল, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চরিত্রে যা এসেছে’ অধ্যায়)
সব প্রশংসনীয় গুণের পূর্ণতাদানকারী: রাসুলুল্লাহ (সা.) মানবচরিত্রের সব গুণের এক অনন্য আধার ছিলেন। তাঁর চরিত্র ছিল সব প্রকার গুণের এক উত্তম, অভূতপূর্ব, অনন্য ও চমৎকার সমন্বয়। তাঁর মাঝে ছিল না কোনো নিন্দনীয় অভ্যাস ও স্বভাব। তিনি ছিলেন সত্যবাদী, উত্তম আমানতদার, ওয়াদা রক্ষাকারী, আল্লাহর নেয়ামতের সর্বোত্তম শোকরকারী, লজ্জাশীল ও অনন্য ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেই ইরশাদ করেন, ‘আমি চরিত্রের সব উত্তম গুণের পূর্ণতা দানের জন্যই প্রেরিত হয়েছি।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৮৯৫২)
ছোটদের প্রতি দয়ার্দ্রতার অনন্য উদাহরণ: রাসুলুল্লাহ (সা.) ছোটদের প্রতি ছিলেন দয়ার এক অনন্য সাগর। তিনি ছোটদের আদর করার প্রতি গুরুত্বারোপ করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সে আমাদের মধ্যে গণ্য নয়, যে আমাদের ছোটদের প্রতি রহম করে না এবং বড়দের অধিকার আদায় করে না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯৪৩, জামে তিরমিজি: ১৯২০,২০৩২, মুসনাদে আহমাদ: ৬৭৩৩, আল আদাবুল মুফরাদ: ৩৫৪)
তিনি প্রায়শই ছোটদের নিয়ে আনন্দ করতেন, মজা করতেন, তাদের কাছে টেনে নিয়ে আদর করতেন, চুমু খেতেন, স্নেহের হাত বুলিয়ে দিতেন মাথার ওপর। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর নাতি হাসান (রা.)-কে চুমু খেলেন। আকরা ইবনে হাবিস (রা.) পাশে বসা ছিলেন। তিনি বললেন, ‘আমার ১০টা সন্তান। একজনকেও আমি কখনো চুমু দিইনি।’ নবী করিম (সা.) তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘নিশ্চয় যে দয়া করে না, তার প্রতি দয়া করা হবে না।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৯৯৭, সহিহ্ মুসলিম: ২৩১৮)
এতিম শিশুদের এক অনন্য আশ্রয় ছিলেন তিনি। মুতার যুদ্ধে জাফর (রা.) শহীদ হলে তাঁর শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে তাঁর বাড়িতে যান, তাঁর কাঁধে জাফর (রা.)-এর পরিবারের দায়িত্ব তুলে নেন এবং এতিম শিশুদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। জাফর (রা.)-এর বড় পুত্র আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘রাসুলে করিম (সা.) এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করলেন এবং আমাদের জন্য দোয়া করলেন—‘‘হে আল্লাহ, আপনি নিজেই জাফরের সন্তানদের অভিভাবক হয়ে যান।’’ (মুস্তাদরাকে হাকেম: ১৩৭৯)
পরিবার ও স্ত্রীদের সঙ্গে আচরণ: নিজ স্ত্রীগণ ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নবীজি (সা.)-এর আচরণ ছিল অনুপম, উত্তম ও সুন্দর। পরিবারের সদস্যদের সবার সঙ্গে উত্তম ও যথাযথ আচরণ করতেন তিনি। এ জন্য পরিবারের সব সদস্যের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল স্বাভাবিক, সুন্দর ও হৃদ্যতাপূর্ণ। নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে তার পরিবারের নিকট উত্তম। আর আমি আমার পরিবারের নিকট তোমাদের চেয়ে উত্তম।’ (জামে তিরমিজি: ৩৮৯৫, সুনানে দারেমি: ২২৬০, মিশকাতুল মাসাবিহ: ৩২৫২)। এখানে পরিবার বলতে স্ত্রীকে বোঝানো হয়েছে।
লেখক: শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মানব মননের সর্বোত্তম বিকাশ ও আল্লাহর সব হুকুম-আহকাম, আদেশ-নিষেধ পালনের মাধ্যমে মানবীয় দুর্বলতার ঊর্ধ্বে উঠে মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও আখিরাতে তাঁর দিদার লাভের নিমিত্তে আল্লাহ তাআলা যেসব নির্বাচিত ব্যক্তিকে তাঁর নবী ও রাসুল হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন, নবী করিম (সা.) তাঁদের মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ।
তাঁর জীবনের প্রতিটি দিক, কর্মপদ্ধতি ও ওহির আলোকে তাঁর জীবনাচরণ মানুষের জীবনে হেদায়াত ও অবারিত নুরের এক অনন্য উৎস। তিনি ও তাঁর আদর্শ সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহর এক অনন্য উপহার।
জীবনের সর্বক্ষেত্রে তাঁর আদর্শ অনুসরণ মুমিনদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এবং মানবজাতির ইহকালীন সফলতা ও পরকালীন মুক্তির একমাত্র পথ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মাঝে (তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি ও জীবনাচরণে) রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সুরা আহজাব: ২১)
কোরআনের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ছিল কোরআনের প্রতিটি আয়াত, আদেশ ও নিষেধের এক জীবন্ত ও অনন্য চিত্র। কোরআন যেন প্রতিটি হরফে হরফে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্রের মাধ্যমে যথার্থভাবে চিত্রিত হচ্ছিল। সাইয়িদা আয়েশা (রা.)-কে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কোরআনই ছিল তাঁর চরিত্র। কোরআনের রাগে তিনি রাগান্বিত হতেন এবং তার সন্তুষ্টিতে তিনি সন্তুষ্ট হতেন।’ (জামেউল ওয়াসাইল ফি শারহিশ শামাইল, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চরিত্রে যা এসেছে’ অধ্যায়)
সব প্রশংসনীয় গুণের পূর্ণতাদানকারী: রাসুলুল্লাহ (সা.) মানবচরিত্রের সব গুণের এক অনন্য আধার ছিলেন। তাঁর চরিত্র ছিল সব প্রকার গুণের এক উত্তম, অভূতপূর্ব, অনন্য ও চমৎকার সমন্বয়। তাঁর মাঝে ছিল না কোনো নিন্দনীয় অভ্যাস ও স্বভাব। তিনি ছিলেন সত্যবাদী, উত্তম আমানতদার, ওয়াদা রক্ষাকারী, আল্লাহর নেয়ামতের সর্বোত্তম শোকরকারী, লজ্জাশীল ও অনন্য ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেই ইরশাদ করেন, ‘আমি চরিত্রের সব উত্তম গুণের পূর্ণতা দানের জন্যই প্রেরিত হয়েছি।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৮৯৫২)
ছোটদের প্রতি দয়ার্দ্রতার অনন্য উদাহরণ: রাসুলুল্লাহ (সা.) ছোটদের প্রতি ছিলেন দয়ার এক অনন্য সাগর। তিনি ছোটদের আদর করার প্রতি গুরুত্বারোপ করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সে আমাদের মধ্যে গণ্য নয়, যে আমাদের ছোটদের প্রতি রহম করে না এবং বড়দের অধিকার আদায় করে না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯৪৩, জামে তিরমিজি: ১৯২০,২০৩২, মুসনাদে আহমাদ: ৬৭৩৩, আল আদাবুল মুফরাদ: ৩৫৪)
তিনি প্রায়শই ছোটদের নিয়ে আনন্দ করতেন, মজা করতেন, তাদের কাছে টেনে নিয়ে আদর করতেন, চুমু খেতেন, স্নেহের হাত বুলিয়ে দিতেন মাথার ওপর। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর নাতি হাসান (রা.)-কে চুমু খেলেন। আকরা ইবনে হাবিস (রা.) পাশে বসা ছিলেন। তিনি বললেন, ‘আমার ১০টা সন্তান। একজনকেও আমি কখনো চুমু দিইনি।’ নবী করিম (সা.) তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘নিশ্চয় যে দয়া করে না, তার প্রতি দয়া করা হবে না।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৯৯৭, সহিহ্ মুসলিম: ২৩১৮)
এতিম শিশুদের এক অনন্য আশ্রয় ছিলেন তিনি। মুতার যুদ্ধে জাফর (রা.) শহীদ হলে তাঁর শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে তাঁর বাড়িতে যান, তাঁর কাঁধে জাফর (রা.)-এর পরিবারের দায়িত্ব তুলে নেন এবং এতিম শিশুদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। জাফর (রা.)-এর বড় পুত্র আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘রাসুলে করিম (সা.) এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করলেন এবং আমাদের জন্য দোয়া করলেন—‘‘হে আল্লাহ, আপনি নিজেই জাফরের সন্তানদের অভিভাবক হয়ে যান।’’ (মুস্তাদরাকে হাকেম: ১৩৭৯)
পরিবার ও স্ত্রীদের সঙ্গে আচরণ: নিজ স্ত্রীগণ ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নবীজি (সা.)-এর আচরণ ছিল অনুপম, উত্তম ও সুন্দর। পরিবারের সদস্যদের সবার সঙ্গে উত্তম ও যথাযথ আচরণ করতেন তিনি। এ জন্য পরিবারের সব সদস্যের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল স্বাভাবিক, সুন্দর ও হৃদ্যতাপূর্ণ। নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে তার পরিবারের নিকট উত্তম। আর আমি আমার পরিবারের নিকট তোমাদের চেয়ে উত্তম।’ (জামে তিরমিজি: ৩৮৯৫, সুনানে দারেমি: ২২৬০, মিশকাতুল মাসাবিহ: ৩২৫২)। এখানে পরিবার বলতে স্ত্রীকে বোঝানো হয়েছে।
লেখক: শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। মাসটির নাম শুনলেই মনে হয় প্রশান্ত এক সময়—শীতল আবহে আত্মশুদ্ধি, তাওবা আর নতুনভাবে ইমানের জাগরণ ঘটানোর উপযুক্ত সময়। এ মাসের প্রতিটি জুমা যেমন বরকত ও রহমতের দিন, তেমনি তৃতীয় জুমাটি যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসার এক অনন্য সুযোগ।
১৫ ঘণ্টা আগে
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব...
১৮ ঘণ্টা আগে
বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
১৯ ঘণ্টা আগে
দ্বীনি মাহফিল মুসলিম সমাজের আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানচর্চা ও ইমান জাগরণের অন্যতম মাধ্যম। এসব মাহফিলের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহভীতি অর্জন করে এবং জীবনকে কোরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালনার অনুপ্রেরণা পায়। তবে একটি দ্বীনি মাহফিল তখনই ফলপ্রসূ হয়, যখন এর বক্তা, শ্রোতা ও আয়োজক—সবাই নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন।
১৯ ঘণ্টা আগেডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। মাসটির নাম শুনলেই মনে হয় প্রশান্ত এক সময়—শীতল আবহে আত্মশুদ্ধি, তাওবা আর নতুনভাবে ইমানের জাগরণ ঘটানোর উপযুক্ত সময়। এ মাসের প্রতিটি জুমা যেমন বরকত ও রহমতের দিন, তেমনি তৃতীয় জুমাটি যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসার এক অনন্য সুযোগ।
পবিত্র কোরআনের এসেছে, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ত্বরান্বিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমা: ৯)
জুমা কেবল নামাজের দিন নয়—এটি মুসলমানদের ঐক্য, সংহতি ও আত্মসমালোচনার দিন। সমাজের সব শ্রেণির মানুষ এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে; কেউ ধনী, কেউ দরিদ্র—কিন্তু সবাই আল্লাহর বান্দা। এই দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সব পার্থিব বিভাজনকে ভুলে গিয়ে আল্লাহর সামনে এক হয়ে দাঁড়ানোই ইমানের সৌন্দর্য।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে গোসল করে, উত্তম পোশাক পরে, সুগন্ধি ব্যবহার করে এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনে, তার এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হয়।’ (সহিহ্ বুখারি: ৮৮৩; সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৭)। এই হাদিস শুধু বাহ্যিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা বলে না, বরং অভ্যন্তরীণ পরিশুদ্ধির প্রতীক। যেমন—পোশাক ধোয়া হয় ময়লা দূর করার জন্য, তেমনি আত্মাকে ধোয়া হয় তাওবা, ইস্তিগফার ও সৎকর্মের মাধ্যমে।
এই মাসের তৃতীয় জুমা তাই আমাদের মনে করিয়ে দেয়—একটি নতুন শুরু এখনো সম্ভব। যত গুনাহই হোক না কেন, আল্লাহর রহমতের দরজা সব সময় খোলা। এ জুমা আমাদের শেখায়—আল্লাহর দিকে ফিরে আসার জন্য কখনো দেরি করতে হয় না।
আসুন, এই জমাদিউল আউয়ালের তৃতীয় জুমাকে আমরা আত্মশুদ্ধি, তাওবা ও ইমান নবায়নের দিন হিসেবে গ্রহণ করি। আল্লাহ যেন আমাদের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে দেন, গুনাহ মাফ করেন, আর এই জুমাকে করে তোলেন আমাদের জীবনের মোড় ঘোরানোর দিন।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি

ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। মাসটির নাম শুনলেই মনে হয় প্রশান্ত এক সময়—শীতল আবহে আত্মশুদ্ধি, তাওবা আর নতুনভাবে ইমানের জাগরণ ঘটানোর উপযুক্ত সময়। এ মাসের প্রতিটি জুমা যেমন বরকত ও রহমতের দিন, তেমনি তৃতীয় জুমাটি যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসার এক অনন্য সুযোগ।
পবিত্র কোরআনের এসেছে, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ত্বরান্বিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমা: ৯)
জুমা কেবল নামাজের দিন নয়—এটি মুসলমানদের ঐক্য, সংহতি ও আত্মসমালোচনার দিন। সমাজের সব শ্রেণির মানুষ এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে; কেউ ধনী, কেউ দরিদ্র—কিন্তু সবাই আল্লাহর বান্দা। এই দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সব পার্থিব বিভাজনকে ভুলে গিয়ে আল্লাহর সামনে এক হয়ে দাঁড়ানোই ইমানের সৌন্দর্য।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে গোসল করে, উত্তম পোশাক পরে, সুগন্ধি ব্যবহার করে এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনে, তার এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হয়।’ (সহিহ্ বুখারি: ৮৮৩; সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৭)। এই হাদিস শুধু বাহ্যিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা বলে না, বরং অভ্যন্তরীণ পরিশুদ্ধির প্রতীক। যেমন—পোশাক ধোয়া হয় ময়লা দূর করার জন্য, তেমনি আত্মাকে ধোয়া হয় তাওবা, ইস্তিগফার ও সৎকর্মের মাধ্যমে।
এই মাসের তৃতীয় জুমা তাই আমাদের মনে করিয়ে দেয়—একটি নতুন শুরু এখনো সম্ভব। যত গুনাহই হোক না কেন, আল্লাহর রহমতের দরজা সব সময় খোলা। এ জুমা আমাদের শেখায়—আল্লাহর দিকে ফিরে আসার জন্য কখনো দেরি করতে হয় না।
আসুন, এই জমাদিউল আউয়ালের তৃতীয় জুমাকে আমরা আত্মশুদ্ধি, তাওবা ও ইমান নবায়নের দিন হিসেবে গ্রহণ করি। আল্লাহ যেন আমাদের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে দেন, গুনাহ মাফ করেন, আর এই জুমাকে করে তোলেন আমাদের জীবনের মোড় ঘোরানোর দিন।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি

মানব মননের সর্বোত্তম বিকাশ ও আল্লাহর সব হুকুম-আহকাম, আদেশ-নিষেধ পালনের মাধ্যমে মানবীয় দুর্বলতার ঊর্ধ্বে উঠে মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও আখিরাতে তাঁর দিদার লাভের নিমিত্তে আল্লাহ তাআলা যেসব নির্বাচিত ব্যক্তিকে তাঁর নবী ও রাসুল হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন...
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব...
১৮ ঘণ্টা আগে
বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
১৯ ঘণ্টা আগে
দ্বীনি মাহফিল মুসলিম সমাজের আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানচর্চা ও ইমান জাগরণের অন্যতম মাধ্যম। এসব মাহফিলের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহভীতি অর্জন করে এবং জীবনকে কোরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালনার অনুপ্রেরণা পায়। তবে একটি দ্বীনি মাহফিল তখনই ফলপ্রসূ হয়, যখন এর বক্তা, শ্রোতা ও আয়োজক—সবাই নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন।
১৯ ঘণ্টা আগেজাহিদ হাসান

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব এবং কার্যকর কূটনীতির এক অনন্য সমন্বয়, যা আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সামরিক কৌশল ও বিপ্লবী চেতনার জন্য আজও অনুকরণীয়।
নবীজি (সা.) শুধু ধর্ম সংস্কারক বা ধর্মপ্রচারকই ছিলেন না; তিনি ছিলেন তৎকালীন আরবের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়ক, ন্যায়পরায়ণ বিচারক, সফল সামরিক নেতা এবং দূরদর্শী কূটনীতিক। তিনি আরবের বিচ্ছিন্ন ও খণ্ড খণ্ড সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে এমন এক আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন, যা কেবল সপ্তম শতকেই নয়, আধুনিক যুগেও তা নজিরবিহীন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ, সামরিক নেতৃত্বে ছিলেন এক অকুতোভয় সেনাপতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন এক দূরদর্শী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।
মহানবী (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সূচনা হয়েছিল নবুওয়াত প্রাপ্তির বহু আগেই, তাঁর নৈতিক কর্তৃত্বের ভিত্তিতে। তাঁর নেতৃত্বের প্রথম নিদর্শন হিসেবে ফুটে ওঠে হিলফুল ফুজুল নামের একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। কিছু সামাজিক সংস্কারের লক্ষ্যে তিনি আরবের সচেতন যুবকদের নিয়ে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত আরব সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও অন্যায় অবিচার দূরীকরণই ছিল হিলফুল ফুজুলের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
রাসুল (সা.)-এর এই নৈতিক মূল্যবোধই তাঁকে সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা এনে দিয়েছিল। যেমন, কাবা ঘরের সংস্কারের সময় হাজরে আসওয়াদ স্থাপন নিয়ে কুরাইশ গোত্রগুলোর মধ্যে যখন চরম বিরোধ দেখা দেয় এবং রক্তপাতের আশঙ্কা তৈরি হয়, তখন তারা সর্বসম্মতভাবে তাঁকে বিচারক হিসেবে গ্রহণ করেছিল। তাঁর সিদ্ধান্তের ওপর কুরাইশরা শতভাগ আস্থা রেখেছিল। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে তিনি প্রাক্-নবুওয়াতি যুগ থেকেই একজন নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী এবং ন্যায় বিচারক হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর এই সর্বজনীন ন্যায়পরায়ণতার স্বীকৃতি পরবর্তী সময়ে মদিনায় ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক বৈধতার ভিত্তি স্থাপন করে।
৪০ বছর বয়সে রাসুল (সা.) নবুওয়াত প্রাপ্তির পর, মক্কায় গোপনে তাওহিদের দাওয়াত দিয়ে বিচ্ছিন্ন আরব সমাজকে আল্লাহর একত্ববাদের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ করতে থাকেন। পরে তিনি যখন প্রকাশ্যে তাওহিদের দাওয়াত দিতে শুরু করেন, তখন মক্কার পরিবেশ তাঁর ও তাঁর সাথিদের জন্য এক প্রতিকূল পরিবেশে রূপান্তরিত হয়। তাঁদের ওপর নেমে আসে অমানবিক অত্যাচার, যা পরে মুসলমানদের মদিনায় হিজরতের দিকে ধাবিত করে। হিজরত কেবল ধর্মীয় আশ্রয় গ্রহণ ছিল না, বরং এটি ছিল মক্কার গোত্রীয় ক্ষমতার বাইরে গিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রথম কৌশলগত পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়েই মুহাম্মদ (সা.) স্বাধীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে ওঠেন।
মদিনায় হিজরতের পর তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কাজ ছিল মদিনার সনদ প্রণয়ন, যা ইতিহাসের প্রথম লিখিত রাজনৈতিক চুক্তি ও প্রথম লিখিত সংবিধান হিসেবে পরিচিত। এই মদিনার সনদই ছিল মদিনায় স্বাধীন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি। ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে প্রণীত এই সনদ মদিনার মুসলমান, ইহুদি এবং পৌত্তলিকদের একত্র করে একটি সাধারণ জাতি গঠনে সহায়তা করেছিল। এই সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হলো একটি কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কর্তৃত্ব স্থাপন। এই সংবিধানের ভিত্তিতে ঘোষণা করা হয় যে মুহাম্মদ (সা.) হবেন নবগঠিত এই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান। এই ধারা মদিনার নবগঠিত রাষ্ট্রকাঠামো এবং ক্ষমতাকাঠামোর কেন্দ্রবিন্দুতে তাঁর অবস্থানকে আইনি বৈধতা দান করে।
মদিনা সনদে সব সম্প্রদায়কে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল, যেখানে কেউ কারও ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এমনকি ইহুদিদের মিত্ররাও সমান নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা ভোগ করার আইনি নিশ্চয়তা লাভ করে। এর মাধ্যমে ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে রাষ্ট্রীয় নাগরিকত্বের ধারণা প্রবর্তন করা হয়। মদিনা সনদের মাধ্যমে মদিনা রাষ্ট্রে এক যৌথ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। সনদের ধারা অনুযায়ী, কোনো গোত্র বহিঃশত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে চুক্তিবদ্ধ গোত্রগুলোর সম্মিলিত শক্তি দিয়ে শত্রু প্রতিহত করবে ও মদিনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং চুক্তিবদ্ধ সব গোত্র যুদ্ধের ব্যয়ভার গ্রহণ করবে।
রাসুল (সা.)-এর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা সব থেকে বেশি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বৈদেশিক নীতি, আন্তগোত্রীয় সম্পর্ক নির্ধারণের মধ্য দিয়ে। যেখানে তিনি সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি সহিষ্ণুতা দেখিয়েছেন এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে সম্মান করেছেন। তাঁর অন্যতম বৃহৎ কূটনৈতিক সাফল্য হলো হুদাইবিয়ার সন্ধি, যা পবিত্র কোরআনে ফাতহুম মুবিন নামে পরিচিত। এই সন্ধির মাধ্যমে মক্কার কুরাইশরা মদিনার রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। এই রাজনৈতিক স্বীকৃতি মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। এই সন্ধি রাসুল (সা.)-এর কূটনৈতিক প্রজ্ঞার এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত।
হুদাইবিয়ার সন্ধির পর যখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়, মুহাম্মদ (সা.) তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে পত্র দিয়ে ইসলামের বাণীকে বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছিলেন। যার কারণে ইসলাম আরবের গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে তাঁর সামরিক কৌশলগত নেতৃত্বের ফলাফল হিসেবে মক্কা বিজয় হলো এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। এই ক্ষমাশীল ব্যক্তিত্ব তাঁর রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সুউচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করে।
লেখক: শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব এবং কার্যকর কূটনীতির এক অনন্য সমন্বয়, যা আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সামরিক কৌশল ও বিপ্লবী চেতনার জন্য আজও অনুকরণীয়।
নবীজি (সা.) শুধু ধর্ম সংস্কারক বা ধর্মপ্রচারকই ছিলেন না; তিনি ছিলেন তৎকালীন আরবের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়ক, ন্যায়পরায়ণ বিচারক, সফল সামরিক নেতা এবং দূরদর্শী কূটনীতিক। তিনি আরবের বিচ্ছিন্ন ও খণ্ড খণ্ড সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে এমন এক আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন, যা কেবল সপ্তম শতকেই নয়, আধুনিক যুগেও তা নজিরবিহীন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ, সামরিক নেতৃত্বে ছিলেন এক অকুতোভয় সেনাপতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন এক দূরদর্শী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।
মহানবী (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সূচনা হয়েছিল নবুওয়াত প্রাপ্তির বহু আগেই, তাঁর নৈতিক কর্তৃত্বের ভিত্তিতে। তাঁর নেতৃত্বের প্রথম নিদর্শন হিসেবে ফুটে ওঠে হিলফুল ফুজুল নামের একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। কিছু সামাজিক সংস্কারের লক্ষ্যে তিনি আরবের সচেতন যুবকদের নিয়ে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত আরব সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও অন্যায় অবিচার দূরীকরণই ছিল হিলফুল ফুজুলের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
রাসুল (সা.)-এর এই নৈতিক মূল্যবোধই তাঁকে সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা এনে দিয়েছিল। যেমন, কাবা ঘরের সংস্কারের সময় হাজরে আসওয়াদ স্থাপন নিয়ে কুরাইশ গোত্রগুলোর মধ্যে যখন চরম বিরোধ দেখা দেয় এবং রক্তপাতের আশঙ্কা তৈরি হয়, তখন তারা সর্বসম্মতভাবে তাঁকে বিচারক হিসেবে গ্রহণ করেছিল। তাঁর সিদ্ধান্তের ওপর কুরাইশরা শতভাগ আস্থা রেখেছিল। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে তিনি প্রাক্-নবুওয়াতি যুগ থেকেই একজন নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী এবং ন্যায় বিচারক হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর এই সর্বজনীন ন্যায়পরায়ণতার স্বীকৃতি পরবর্তী সময়ে মদিনায় ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক বৈধতার ভিত্তি স্থাপন করে।
৪০ বছর বয়সে রাসুল (সা.) নবুওয়াত প্রাপ্তির পর, মক্কায় গোপনে তাওহিদের দাওয়াত দিয়ে বিচ্ছিন্ন আরব সমাজকে আল্লাহর একত্ববাদের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ করতে থাকেন। পরে তিনি যখন প্রকাশ্যে তাওহিদের দাওয়াত দিতে শুরু করেন, তখন মক্কার পরিবেশ তাঁর ও তাঁর সাথিদের জন্য এক প্রতিকূল পরিবেশে রূপান্তরিত হয়। তাঁদের ওপর নেমে আসে অমানবিক অত্যাচার, যা পরে মুসলমানদের মদিনায় হিজরতের দিকে ধাবিত করে। হিজরত কেবল ধর্মীয় আশ্রয় গ্রহণ ছিল না, বরং এটি ছিল মক্কার গোত্রীয় ক্ষমতার বাইরে গিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রথম কৌশলগত পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়েই মুহাম্মদ (সা.) স্বাধীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে ওঠেন।
মদিনায় হিজরতের পর তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কাজ ছিল মদিনার সনদ প্রণয়ন, যা ইতিহাসের প্রথম লিখিত রাজনৈতিক চুক্তি ও প্রথম লিখিত সংবিধান হিসেবে পরিচিত। এই মদিনার সনদই ছিল মদিনায় স্বাধীন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি। ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে প্রণীত এই সনদ মদিনার মুসলমান, ইহুদি এবং পৌত্তলিকদের একত্র করে একটি সাধারণ জাতি গঠনে সহায়তা করেছিল। এই সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হলো একটি কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কর্তৃত্ব স্থাপন। এই সংবিধানের ভিত্তিতে ঘোষণা করা হয় যে মুহাম্মদ (সা.) হবেন নবগঠিত এই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান। এই ধারা মদিনার নবগঠিত রাষ্ট্রকাঠামো এবং ক্ষমতাকাঠামোর কেন্দ্রবিন্দুতে তাঁর অবস্থানকে আইনি বৈধতা দান করে।
মদিনা সনদে সব সম্প্রদায়কে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল, যেখানে কেউ কারও ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এমনকি ইহুদিদের মিত্ররাও সমান নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা ভোগ করার আইনি নিশ্চয়তা লাভ করে। এর মাধ্যমে ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে রাষ্ট্রীয় নাগরিকত্বের ধারণা প্রবর্তন করা হয়। মদিনা সনদের মাধ্যমে মদিনা রাষ্ট্রে এক যৌথ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। সনদের ধারা অনুযায়ী, কোনো গোত্র বহিঃশত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে চুক্তিবদ্ধ গোত্রগুলোর সম্মিলিত শক্তি দিয়ে শত্রু প্রতিহত করবে ও মদিনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং চুক্তিবদ্ধ সব গোত্র যুদ্ধের ব্যয়ভার গ্রহণ করবে।
রাসুল (সা.)-এর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা সব থেকে বেশি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বৈদেশিক নীতি, আন্তগোত্রীয় সম্পর্ক নির্ধারণের মধ্য দিয়ে। যেখানে তিনি সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি সহিষ্ণুতা দেখিয়েছেন এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে সম্মান করেছেন। তাঁর অন্যতম বৃহৎ কূটনৈতিক সাফল্য হলো হুদাইবিয়ার সন্ধি, যা পবিত্র কোরআনে ফাতহুম মুবিন নামে পরিচিত। এই সন্ধির মাধ্যমে মক্কার কুরাইশরা মদিনার রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। এই রাজনৈতিক স্বীকৃতি মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। এই সন্ধি রাসুল (সা.)-এর কূটনৈতিক প্রজ্ঞার এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত।
হুদাইবিয়ার সন্ধির পর যখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়, মুহাম্মদ (সা.) তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে পত্র দিয়ে ইসলামের বাণীকে বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছিলেন। যার কারণে ইসলাম আরবের গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে তাঁর সামরিক কৌশলগত নেতৃত্বের ফলাফল হিসেবে মক্কা বিজয় হলো এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। এই ক্ষমাশীল ব্যক্তিত্ব তাঁর রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সুউচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করে।
লেখক: শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

মানব মননের সর্বোত্তম বিকাশ ও আল্লাহর সব হুকুম-আহকাম, আদেশ-নিষেধ পালনের মাধ্যমে মানবীয় দুর্বলতার ঊর্ধ্বে উঠে মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও আখিরাতে তাঁর দিদার লাভের নিমিত্তে আল্লাহ তাআলা যেসব নির্বাচিত ব্যক্তিকে তাঁর নবী ও রাসুল হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন...
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। মাসটির নাম শুনলেই মনে হয় প্রশান্ত এক সময়—শীতল আবহে আত্মশুদ্ধি, তাওবা আর নতুনভাবে ইমানের জাগরণ ঘটানোর উপযুক্ত সময়। এ মাসের প্রতিটি জুমা যেমন বরকত ও রহমতের দিন, তেমনি তৃতীয় জুমাটি যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসার এক অনন্য সুযোগ।
১৫ ঘণ্টা আগে
বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
১৯ ঘণ্টা আগে
দ্বীনি মাহফিল মুসলিম সমাজের আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানচর্চা ও ইমান জাগরণের অন্যতম মাধ্যম। এসব মাহফিলের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহভীতি অর্জন করে এবং জীবনকে কোরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালনার অনুপ্রেরণা পায়। তবে একটি দ্বীনি মাহফিল তখনই ফলপ্রসূ হয়, যখন এর বক্তা, শ্রোতা ও আয়োজক—সবাই নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন।
১৯ ঘণ্টা আগেমুফতি শাব্বির আহমদ

প্রশ্ন: বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
আসলাম শেখ, গোপালগঞ্জ।
উত্তর: আপনার প্রশ্নটি বর্তমান প্রযুক্তির যুগে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। জাকাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম এবং এর সঠিক হিসাব ও আদায় প্রতিটি সম্পদশালী মুসলমানের জন্য ফরজ। ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটরের ব্যবহার সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা নিচে তুলে ধরা হলো।
ইসলামে প্রযুক্তির ব্যবহার
ইসলাম একটি চির আধুনিক জীবনব্যবস্থা। নবী-রাসুলগণও তাঁদের যুগে দাওয়াত ও দ্বীন প্রচারে তৎকালীন প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করেছেন। সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে বর্তমান যুগেও কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন হচ্ছে ইসলামের প্রচার-প্রসার এবং ব্যক্তিগত ইবাদত পালনে সহায়তাকারী অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম।
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর এই আধুনিক প্রযুক্তিরই একটি ফসল। প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য যদি শরিয়তসম্মত হয়, তাহলে এর ব্যবহার নীতিগতভাবে সম্পূর্ণ জায়েজ ও অনুমোদিত।
জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহারের সঠিক বিধান
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা বৈধ হলেও, জাকাত একটি ফরজ ইবাদত হওয়ায় এর হিসাবে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। এই ক্যালকুলেটরগুলো ব্যবহারের সঠিক বিধান ও গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতার দিকগুলো নিম্নরূপ:
১. ডিজিটাল ক্যালকুলেটরকে জাকাতের হিসাবকার্যে সহায়তাকারী একটি যন্ত্র হিসেবে গণ্য করতে হবে। এটি কোনোভাবেই চূড়ান্ত নির্ভুল হিসাবের নিশ্চয়তা প্রদানকারী নয়। জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য সম্পদের নিসাব (সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা সমমূল্যের সম্পদ) এবং এক বছর অতিবাহিত হওয়া—এই শর্তগুলো সঠিকভাবে পূরণ হয়েছে কি না, তা ব্যবহারকারীকেই নিশ্চিত করতে হবে।
২. ক্যালকুলেটরের হিসাব সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে ব্যবহারকারী কর্তৃক সঠিকভাবে তথ্য দেওয়ার ওপর। যদি ভুল তথ্য দেওয়া হয় (যেমন নিসাব পরিমাণ অর্থ, বর্ধনশীল সম্পদ, ঋণ ইত্যাদি ভুলভাবে প্রবেশ করানো হয়), তাহলে ক্যালকুলেটর দ্বারা প্রাপ্ত জাকাতের পরিমাণও ভুল হবে। ভুল তথ্যের কারণে হিসাব ভুল হলে এর দায় সম্পূর্ণভাবে ব্যবহারকারীর ওপর বর্তাবে।
৩. জাকাতের হিসাব অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও সংবেদনশীল। বিভিন্ন ধরনের সম্পদ, ঋণ এবং ব্যবসায়িক লেনদেনের কারণে হিসাবের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই ডিজিটাল ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে জাকাতের একটি হিসাব নির্ণয় করার পর, সেটির যথার্থতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য একজন অভিজ্ঞ মুফতি সাহেব বা ইসলামি স্কলারের শরণাপন্ন হয়ে হিসাবটি যাচাই করে নেওয়া আবশ্যক। এটিই সতর্কতা ও ইবাদতের পূর্ণতা নিশ্চিত করার সর্বোত্তম পন্থা।
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ এবং এটি একটি সুবিধাজনক মাধ্যম। তবে এটি শুধু একটি সহায়ক সরঞ্জাম। জাকাতদাতার প্রধান দায়িত্ব হলো, নিজে সঠিকভাবে সব তথ্য দেওয়া এবং ফরজ ইবাদত নিশ্চিত করার জন্য প্রাপ্ত হিসাব একজন বিজ্ঞ আলেমের মাধ্যমে যাচাই করে নেওয়া। এতে প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণ করা হলো এবং একই সঙ্গে ইবাদতের সূক্ষ্মতা ও যথার্থতা নিশ্চিত করা গেল।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

প্রশ্ন: বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
আসলাম শেখ, গোপালগঞ্জ।
উত্তর: আপনার প্রশ্নটি বর্তমান প্রযুক্তির যুগে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। জাকাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম এবং এর সঠিক হিসাব ও আদায় প্রতিটি সম্পদশালী মুসলমানের জন্য ফরজ। ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটরের ব্যবহার সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা নিচে তুলে ধরা হলো।
ইসলামে প্রযুক্তির ব্যবহার
ইসলাম একটি চির আধুনিক জীবনব্যবস্থা। নবী-রাসুলগণও তাঁদের যুগে দাওয়াত ও দ্বীন প্রচারে তৎকালীন প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করেছেন। সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে বর্তমান যুগেও কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন হচ্ছে ইসলামের প্রচার-প্রসার এবং ব্যক্তিগত ইবাদত পালনে সহায়তাকারী অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম।
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর এই আধুনিক প্রযুক্তিরই একটি ফসল। প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য যদি শরিয়তসম্মত হয়, তাহলে এর ব্যবহার নীতিগতভাবে সম্পূর্ণ জায়েজ ও অনুমোদিত।
জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহারের সঠিক বিধান
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা বৈধ হলেও, জাকাত একটি ফরজ ইবাদত হওয়ায় এর হিসাবে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। এই ক্যালকুলেটরগুলো ব্যবহারের সঠিক বিধান ও গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতার দিকগুলো নিম্নরূপ:
১. ডিজিটাল ক্যালকুলেটরকে জাকাতের হিসাবকার্যে সহায়তাকারী একটি যন্ত্র হিসেবে গণ্য করতে হবে। এটি কোনোভাবেই চূড়ান্ত নির্ভুল হিসাবের নিশ্চয়তা প্রদানকারী নয়। জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য সম্পদের নিসাব (সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা সমমূল্যের সম্পদ) এবং এক বছর অতিবাহিত হওয়া—এই শর্তগুলো সঠিকভাবে পূরণ হয়েছে কি না, তা ব্যবহারকারীকেই নিশ্চিত করতে হবে।
২. ক্যালকুলেটরের হিসাব সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে ব্যবহারকারী কর্তৃক সঠিকভাবে তথ্য দেওয়ার ওপর। যদি ভুল তথ্য দেওয়া হয় (যেমন নিসাব পরিমাণ অর্থ, বর্ধনশীল সম্পদ, ঋণ ইত্যাদি ভুলভাবে প্রবেশ করানো হয়), তাহলে ক্যালকুলেটর দ্বারা প্রাপ্ত জাকাতের পরিমাণও ভুল হবে। ভুল তথ্যের কারণে হিসাব ভুল হলে এর দায় সম্পূর্ণভাবে ব্যবহারকারীর ওপর বর্তাবে।
৩. জাকাতের হিসাব অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও সংবেদনশীল। বিভিন্ন ধরনের সম্পদ, ঋণ এবং ব্যবসায়িক লেনদেনের কারণে হিসাবের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই ডিজিটাল ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে জাকাতের একটি হিসাব নির্ণয় করার পর, সেটির যথার্থতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য একজন অভিজ্ঞ মুফতি সাহেব বা ইসলামি স্কলারের শরণাপন্ন হয়ে হিসাবটি যাচাই করে নেওয়া আবশ্যক। এটিই সতর্কতা ও ইবাদতের পূর্ণতা নিশ্চিত করার সর্বোত্তম পন্থা।
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ এবং এটি একটি সুবিধাজনক মাধ্যম। তবে এটি শুধু একটি সহায়ক সরঞ্জাম। জাকাতদাতার প্রধান দায়িত্ব হলো, নিজে সঠিকভাবে সব তথ্য দেওয়া এবং ফরজ ইবাদত নিশ্চিত করার জন্য প্রাপ্ত হিসাব একজন বিজ্ঞ আলেমের মাধ্যমে যাচাই করে নেওয়া। এতে প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণ করা হলো এবং একই সঙ্গে ইবাদতের সূক্ষ্মতা ও যথার্থতা নিশ্চিত করা গেল।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

মানব মননের সর্বোত্তম বিকাশ ও আল্লাহর সব হুকুম-আহকাম, আদেশ-নিষেধ পালনের মাধ্যমে মানবীয় দুর্বলতার ঊর্ধ্বে উঠে মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও আখিরাতে তাঁর দিদার লাভের নিমিত্তে আল্লাহ তাআলা যেসব নির্বাচিত ব্যক্তিকে তাঁর নবী ও রাসুল হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন...
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। মাসটির নাম শুনলেই মনে হয় প্রশান্ত এক সময়—শীতল আবহে আত্মশুদ্ধি, তাওবা আর নতুনভাবে ইমানের জাগরণ ঘটানোর উপযুক্ত সময়। এ মাসের প্রতিটি জুমা যেমন বরকত ও রহমতের দিন, তেমনি তৃতীয় জুমাটি যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসার এক অনন্য সুযোগ।
১৫ ঘণ্টা আগে
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব...
১৮ ঘণ্টা আগে
দ্বীনি মাহফিল মুসলিম সমাজের আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানচর্চা ও ইমান জাগরণের অন্যতম মাধ্যম। এসব মাহফিলের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহভীতি অর্জন করে এবং জীবনকে কোরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালনার অনুপ্রেরণা পায়। তবে একটি দ্বীনি মাহফিল তখনই ফলপ্রসূ হয়, যখন এর বক্তা, শ্রোতা ও আয়োজক—সবাই নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন।
১৯ ঘণ্টা আগেফয়জুল্লাহ রিয়াদ

দ্বীনি মাহফিল মুসলিম সমাজের আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানচর্চা ও ইমান জাগরণের অন্যতম মাধ্যম। এসব মাহফিলের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহভীতি অর্জন করে এবং জীবনকে কোরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালনার অনুপ্রেরণা পায়। তবে একটি দ্বীনি মাহফিল তখনই ফলপ্রসূ হয়, যখন এর বক্তা, শ্রোতা ও আয়োজক—সবাই নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন।
বক্তার দায়িত্ব খালেস নিয়তে দ্বীনের দাওয়াত: একজন বক্তার দায়িত্ব হলো খালেস নিয়তে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে বয়ান করা। হৃদয়ে এ চিন্তা জাগরূক রাখা যে মাহফিল শুধু বক্তব্য দেওয়ার মঞ্চ নয়; বরং এটি দ্বীনের দাওয়াত ও ধর্মীয় জ্ঞান প্রচারের পবিত্র দায়িত্ব ও আমানত। বক্তাকে অবশ্যই কোরআন-হাদিসের আলোকে বক্তব্য উপস্থাপন করতে হবে। এর জন্য প্রচুর অধ্যয়ন ও গবেষণার মাধ্যমে পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরি। অন্যথায় মনগড়া কথা বলার আশঙ্কা তৈরি হয়, যা গুরুতর পাপের কারণ। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার নামে মিথ্যা বলে, সে যেন জাহান্নামে নিজের ঠিকানা বানিয়ে নেয়।’ (সহিহ বুখারি: ১০৭) একজন প্রকৃত বক্তা কখনোই মিথ্যা, অতিরঞ্জন বা লোকপ্রিয়তার জন্য ভিত্তিহীন ঘটনা বলতে পারেন না। বক্তাকে তাই হতে হবে সত্যনিষ্ঠ, বিনয়ী ও মননশীল। কণ্ঠের জোরে নয়, বরং কথার মাধুর্য, শক্তিশালী দলিল ও আন্তরিকতার গুণে তিনি মানুষকে প্রভাবিত করবেন।
শ্রোতার দায়িত্ব মনোযোগ ও আমলের নিয়ত: শ্রোতার দায়িত্ব হলো মনোযোগ, শ্রদ্ধাবোধ এবং আমলের নিয়তে বয়ান শোনা। বয়ানের সময় হট্টগোল, হাসাহাসি করা বা অন্যমনস্ক হওয়া অনুচিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কোরআন পাঠ করা হলে তোমরা মনোযোগ দিয়ে শোনো এবং চুপ করে থাকো, যাতে তোমরা রহমত লাভ করতে পারো।’ (সুরা আরাফ: ২০৪) এই আদেশ দ্বীনি বক্তব্য শোনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। শ্রোতারা যদি মনোযোগ না দেয় কিংবা আলোচনাকে জীবনে প্রয়োগ না করে, তবে ওয়াজ-মাহফিল শুধু আনুষ্ঠানিক আয়োজনে সীমাবদ্ধ থেকে যায়। তাই শ্রোতার উচিত বক্তার উপকারী কথাগুলো গ্রহণ করা এবং সেগুলো আমলে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা।
আয়োজকদের দায়িত্ব আন্তরিকতা ও শৃঙ্খলা: ওয়াজ-মাহফিলে আয়োজকদের দায়িত্বও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, মাহফিল আয়োজনের উদ্দেশ্য যেন বেশি লোকসমাগম, লৌকিকতা প্রদর্শন বা লোকদেখানোর জন্য না হয়। উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও দ্বীনের প্রচার। দ্বিতীয়ত, মাহফিলের পরিবেশ হবে শান্ত, শালীন ও বয়ান শোনার উপযোগী। তৃতীয়ত, বক্তা নির্বাচনের ক্ষেত্রে জ্ঞান, প্রজ্ঞা, চরিত্র ও দ্বীনদারিকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। একইভাবে ব্যয়, সাজসজ্জা ও মঞ্চ পরিচালনায় অপচয় বা অহংকার প্রদর্শন ইসলামের দৃষ্টিতে নিন্দনীয়।
আয়োজকদের আরও দায়িত্ব হলো সময়মতো মাহফিল শুরু ও শেষ করা, অধিক রাত পর্যন্ত মাহফিল না করা, এলাকার অসুস্থ, বৃদ্ধ ও শিশুদের যেন কষ্ট না হয় এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা, নারী-পুরুষের পর্দা বজায় রাখা এবং শ্রোতাদের জন্য আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা করা।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

দ্বীনি মাহফিল মুসলিম সমাজের আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানচর্চা ও ইমান জাগরণের অন্যতম মাধ্যম। এসব মাহফিলের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহভীতি অর্জন করে এবং জীবনকে কোরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালনার অনুপ্রেরণা পায়। তবে একটি দ্বীনি মাহফিল তখনই ফলপ্রসূ হয়, যখন এর বক্তা, শ্রোতা ও আয়োজক—সবাই নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন।
বক্তার দায়িত্ব খালেস নিয়তে দ্বীনের দাওয়াত: একজন বক্তার দায়িত্ব হলো খালেস নিয়তে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে বয়ান করা। হৃদয়ে এ চিন্তা জাগরূক রাখা যে মাহফিল শুধু বক্তব্য দেওয়ার মঞ্চ নয়; বরং এটি দ্বীনের দাওয়াত ও ধর্মীয় জ্ঞান প্রচারের পবিত্র দায়িত্ব ও আমানত। বক্তাকে অবশ্যই কোরআন-হাদিসের আলোকে বক্তব্য উপস্থাপন করতে হবে। এর জন্য প্রচুর অধ্যয়ন ও গবেষণার মাধ্যমে পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরি। অন্যথায় মনগড়া কথা বলার আশঙ্কা তৈরি হয়, যা গুরুতর পাপের কারণ। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার নামে মিথ্যা বলে, সে যেন জাহান্নামে নিজের ঠিকানা বানিয়ে নেয়।’ (সহিহ বুখারি: ১০৭) একজন প্রকৃত বক্তা কখনোই মিথ্যা, অতিরঞ্জন বা লোকপ্রিয়তার জন্য ভিত্তিহীন ঘটনা বলতে পারেন না। বক্তাকে তাই হতে হবে সত্যনিষ্ঠ, বিনয়ী ও মননশীল। কণ্ঠের জোরে নয়, বরং কথার মাধুর্য, শক্তিশালী দলিল ও আন্তরিকতার গুণে তিনি মানুষকে প্রভাবিত করবেন।
শ্রোতার দায়িত্ব মনোযোগ ও আমলের নিয়ত: শ্রোতার দায়িত্ব হলো মনোযোগ, শ্রদ্ধাবোধ এবং আমলের নিয়তে বয়ান শোনা। বয়ানের সময় হট্টগোল, হাসাহাসি করা বা অন্যমনস্ক হওয়া অনুচিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কোরআন পাঠ করা হলে তোমরা মনোযোগ দিয়ে শোনো এবং চুপ করে থাকো, যাতে তোমরা রহমত লাভ করতে পারো।’ (সুরা আরাফ: ২০৪) এই আদেশ দ্বীনি বক্তব্য শোনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। শ্রোতারা যদি মনোযোগ না দেয় কিংবা আলোচনাকে জীবনে প্রয়োগ না করে, তবে ওয়াজ-মাহফিল শুধু আনুষ্ঠানিক আয়োজনে সীমাবদ্ধ থেকে যায়। তাই শ্রোতার উচিত বক্তার উপকারী কথাগুলো গ্রহণ করা এবং সেগুলো আমলে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা।
আয়োজকদের দায়িত্ব আন্তরিকতা ও শৃঙ্খলা: ওয়াজ-মাহফিলে আয়োজকদের দায়িত্বও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, মাহফিল আয়োজনের উদ্দেশ্য যেন বেশি লোকসমাগম, লৌকিকতা প্রদর্শন বা লোকদেখানোর জন্য না হয়। উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও দ্বীনের প্রচার। দ্বিতীয়ত, মাহফিলের পরিবেশ হবে শান্ত, শালীন ও বয়ান শোনার উপযোগী। তৃতীয়ত, বক্তা নির্বাচনের ক্ষেত্রে জ্ঞান, প্রজ্ঞা, চরিত্র ও দ্বীনদারিকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। একইভাবে ব্যয়, সাজসজ্জা ও মঞ্চ পরিচালনায় অপচয় বা অহংকার প্রদর্শন ইসলামের দৃষ্টিতে নিন্দনীয়।
আয়োজকদের আরও দায়িত্ব হলো সময়মতো মাহফিল শুরু ও শেষ করা, অধিক রাত পর্যন্ত মাহফিল না করা, এলাকার অসুস্থ, বৃদ্ধ ও শিশুদের যেন কষ্ট না হয় এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা, নারী-পুরুষের পর্দা বজায় রাখা এবং শ্রোতাদের জন্য আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা করা।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

মানব মননের সর্বোত্তম বিকাশ ও আল্লাহর সব হুকুম-আহকাম, আদেশ-নিষেধ পালনের মাধ্যমে মানবীয় দুর্বলতার ঊর্ধ্বে উঠে মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও আখিরাতে তাঁর দিদার লাভের নিমিত্তে আল্লাহ তাআলা যেসব নির্বাচিত ব্যক্তিকে তাঁর নবী ও রাসুল হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন...
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। মাসটির নাম শুনলেই মনে হয় প্রশান্ত এক সময়—শীতল আবহে আত্মশুদ্ধি, তাওবা আর নতুনভাবে ইমানের জাগরণ ঘটানোর উপযুক্ত সময়। এ মাসের প্রতিটি জুমা যেমন বরকত ও রহমতের দিন, তেমনি তৃতীয় জুমাটি যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসার এক অনন্য সুযোগ।
১৫ ঘণ্টা আগে
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব...
১৮ ঘণ্টা আগে
বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
১৯ ঘণ্টা আগে