ইসলাম ডেস্ক
হিজরি সনের চতুর্থ মাস রবিউস সানি। হাদিসে এই মাসের বিশেষ কোনো ফজিলত, নির্দিষ্ট কোনো আমল বা ইবাদতের কথা বর্ণিত হয়নি। কিন্তু ‘বারো চান্দের আমল’-জাতীয় কিছু কিতাবে রবিউস সানি মাসের ইবাদত হিসেবে কিছু নামাজ ও আমল আবিষ্কার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যেমন প্রচলিত আছে ‘রবিউস সানির নতুন চাঁদ দেখে যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর দুই রাকাত করে মোট ৮ রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে এবং প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহার সঙ্গে সুরা ইখলাস পাঠ করবে; তার জন্য বিশেষ ফজিলত রয়েছে।’ এমন অহরহ অগ্রহণযোগ্য কথা লোকমুখে প্রসিদ্ধ আছে। এসব বিষয়ে সতর্ক করে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ধর্মে নতুন কিছু সৃষ্টি করে, যা ইসলামে নেই, তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।’ (সহিহ বুখারি: ২৬৯৭)
তবে এর অর্থ এই নয় যে মুমিনের কাছে এই মাসের কোনো মূল্য নেই। বরং প্রতিটি মুহূর্ত যেমন আল্লাহর ইবাদতে ব্যয় করা উচিত, তেমনি এ মাসকেও সুন্নাহ অনুযায়ী আমলের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে সময়ের সঠিক ব্যবহার আমাদের জন্য দিকনির্দেশক। কারণ সময় মানুষের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। তাই কর্ম ও সাধনার মাধ্যমে এ সম্পদকে মর্যাদাপূর্ণ ও অর্থবহ করে তুলতে হয়। অন্যথায়, কালের ঘূর্ণাবর্তে পতিত হয়ে অপচয়ের দায়ভার বহন করতে হয়। তাই নবী করিম (সা.) সময়কে নেক আমলের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করতেন। প্রতি মাসের শুরু ও শেষে তিনি বিশেষ দোয়া, নামাজ ও রোজার মাধ্যমে কাটাতেন আর বলতেন—প্রকৃত জ্ঞানী সেই, যে সময়কে ইবাদত ও কল্যাণকর কাজে পূর্ণ করে জীবনকে অর্থবহ করে তোলে। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিসের পূর্বে মূল্যায়ন করো—যৌবনকে বার্ধক্যের পূর্বে, সুস্থতাকে অসুস্থতার পূর্বে, সচ্ছলতাকে দারিদ্র্যের পূর্বে, অবসরকে ব্যস্ততার পূর্বে, জীবনকে মৃত্যুর পূর্বে।’ (শুআবুল ইমান, বায়হাকি: ১০২৪৮)
আমাদের তাই উচিত রবিউস সানি মাসেও ইবাদতে মশগুল থাকা। কী কী আমল করতে হবে, এই প্রশ্নের উত্তর আমরা একটি হাদিসের মধ্যে খুঁজে পাই। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) তিনটি আমল কখনো পরিত্যাগ করেননি। সেগুলো হলো তাহাজ্জুদের নামাজ, প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজা এবং রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ।’ (সহিহ বুখারি: ১৯৭৫)। অন্য হাদিসে এসেছে, ‘তিনি প্রায়ই সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। কেননা, এই দিনগুলোতে বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। নবীজি (সা.) চেয়েছিলেন, তাঁর আমল যেন রোজার অবস্থায় আল্লাহর কাছে পৌঁছায়।’ (জামে তিরমিজি: ৭৪৭)
উল্লেখ্য, হাদিসের আলোকে রবিউস সানি মাসের প্রথম আমল প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা। দ্বিতীয় আমল আইয়ামে বিজের রোজা রাখা। তৃতীয় আমল প্রতিদিন তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা। পাশাপাশি কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকার, দরুদ শরিফ পাঠ, দান-সদকা ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করা।
রবিউস সানি মাস আমাদের নতুনভাবে ভাবতে শেখায়—জীবন ক্ষণস্থায়ী, সময় সীমিত, আর প্রতিটি দিনই পরকালের প্রস্তুতির সুযোগ। তাই আমাদের দায়িত্ব হলো অবাঞ্ছিত কুসংস্কার ও ভিত্তিহীন আমল থেকে দূরে থেকে নবীজি (সা.)-এর অনুসৃত ইবাদতের পথ অবলম্বন করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের রবিউস সানি মাসসহ প্রতিটি মাসকে সৎকর্মে সমৃদ্ধ করার শক্তি দিন।
লেখক: খতিব ও মুহাদ্দিস
হিজরি সনের চতুর্থ মাস রবিউস সানি। হাদিসে এই মাসের বিশেষ কোনো ফজিলত, নির্দিষ্ট কোনো আমল বা ইবাদতের কথা বর্ণিত হয়নি। কিন্তু ‘বারো চান্দের আমল’-জাতীয় কিছু কিতাবে রবিউস সানি মাসের ইবাদত হিসেবে কিছু নামাজ ও আমল আবিষ্কার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যেমন প্রচলিত আছে ‘রবিউস সানির নতুন চাঁদ দেখে যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর দুই রাকাত করে মোট ৮ রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে এবং প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহার সঙ্গে সুরা ইখলাস পাঠ করবে; তার জন্য বিশেষ ফজিলত রয়েছে।’ এমন অহরহ অগ্রহণযোগ্য কথা লোকমুখে প্রসিদ্ধ আছে। এসব বিষয়ে সতর্ক করে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ধর্মে নতুন কিছু সৃষ্টি করে, যা ইসলামে নেই, তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।’ (সহিহ বুখারি: ২৬৯৭)
তবে এর অর্থ এই নয় যে মুমিনের কাছে এই মাসের কোনো মূল্য নেই। বরং প্রতিটি মুহূর্ত যেমন আল্লাহর ইবাদতে ব্যয় করা উচিত, তেমনি এ মাসকেও সুন্নাহ অনুযায়ী আমলের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে সময়ের সঠিক ব্যবহার আমাদের জন্য দিকনির্দেশক। কারণ সময় মানুষের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। তাই কর্ম ও সাধনার মাধ্যমে এ সম্পদকে মর্যাদাপূর্ণ ও অর্থবহ করে তুলতে হয়। অন্যথায়, কালের ঘূর্ণাবর্তে পতিত হয়ে অপচয়ের দায়ভার বহন করতে হয়। তাই নবী করিম (সা.) সময়কে নেক আমলের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করতেন। প্রতি মাসের শুরু ও শেষে তিনি বিশেষ দোয়া, নামাজ ও রোজার মাধ্যমে কাটাতেন আর বলতেন—প্রকৃত জ্ঞানী সেই, যে সময়কে ইবাদত ও কল্যাণকর কাজে পূর্ণ করে জীবনকে অর্থবহ করে তোলে। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিসের পূর্বে মূল্যায়ন করো—যৌবনকে বার্ধক্যের পূর্বে, সুস্থতাকে অসুস্থতার পূর্বে, সচ্ছলতাকে দারিদ্র্যের পূর্বে, অবসরকে ব্যস্ততার পূর্বে, জীবনকে মৃত্যুর পূর্বে।’ (শুআবুল ইমান, বায়হাকি: ১০২৪৮)
আমাদের তাই উচিত রবিউস সানি মাসেও ইবাদতে মশগুল থাকা। কী কী আমল করতে হবে, এই প্রশ্নের উত্তর আমরা একটি হাদিসের মধ্যে খুঁজে পাই। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) তিনটি আমল কখনো পরিত্যাগ করেননি। সেগুলো হলো তাহাজ্জুদের নামাজ, প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজা এবং রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ।’ (সহিহ বুখারি: ১৯৭৫)। অন্য হাদিসে এসেছে, ‘তিনি প্রায়ই সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। কেননা, এই দিনগুলোতে বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। নবীজি (সা.) চেয়েছিলেন, তাঁর আমল যেন রোজার অবস্থায় আল্লাহর কাছে পৌঁছায়।’ (জামে তিরমিজি: ৭৪৭)
উল্লেখ্য, হাদিসের আলোকে রবিউস সানি মাসের প্রথম আমল প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা। দ্বিতীয় আমল আইয়ামে বিজের রোজা রাখা। তৃতীয় আমল প্রতিদিন তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা। পাশাপাশি কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকার, দরুদ শরিফ পাঠ, দান-সদকা ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করা।
রবিউস সানি মাস আমাদের নতুনভাবে ভাবতে শেখায়—জীবন ক্ষণস্থায়ী, সময় সীমিত, আর প্রতিটি দিনই পরকালের প্রস্তুতির সুযোগ। তাই আমাদের দায়িত্ব হলো অবাঞ্ছিত কুসংস্কার ও ভিত্তিহীন আমল থেকে দূরে থেকে নবীজি (সা.)-এর অনুসৃত ইবাদতের পথ অবলম্বন করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের রবিউস সানি মাসসহ প্রতিটি মাসকে সৎকর্মে সমৃদ্ধ করার শক্তি দিন।
লেখক: খতিব ও মুহাদ্দিস
ইসলামি পঞ্জিকায় রবিউস সানি মাসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, মাসের প্রথম জুমা মুসলিমদের জন্য আল্লাহর রহমত, নেক আমল ও ক্ষমা লাভের এক সুবর্ণ সুযোগ। জুমা নিজেই সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে ইসলামে বিশেষ মর্যাদা রাখে। এ দিনে আল্লাহর নৈকট্য লাভ, গুনাহ মাফ এবং নেক কাজের প্রতিশ্রুতি অনেক বেশি।
১ ঘণ্টা আগেইসলাম মানুষের জীবনের প্রতিটি অনুষঙ্গের দিকনির্দেশনা দেয়, যেখানে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার প্রতিও সমান গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। খেলাধুলাকে ইসলাম কেবল চিত্তবিনোদনের মাধ্যম হিসেবে নয়, বরং শরীরচর্চা, সুস্থ মন ও সামরিক প্রস্তুতির এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে দেখে। ইসলাম খেলাধুলার অনুমতি দিয়েছে...
১ ঘণ্টা আগেঅনেক সময় গরমের কারণে আমরা হাফ হাতা শার্ট, গেঞ্জি বা টি-শার্ট পরে নামাজ আদায় করি। কেউ কেউ আবার স্যান্ডো গেঞ্জি পরে নামাজ আদায় করে থাকেন, যেখানে কাঁধ খোলা থাকে। এই অবস্থায় নামাজ আদায় করলে তা কি শুদ্ধ হবে?
১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে চলছে ইসলামি বইমেলা-২০২৫। মেলায় আসছে নতুন নতুন বই। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতে আসছে পাঠকেরা। শিশু থেকে বৃদ্ধ—সব বয়সের মানুষ আসছে বইমেলায়। তারা নতুন-পুরোনো সব ধরনের বই নেড়েচেড়ে দেখছে। পছন্দের বই কিনতে ভুলছে না।
২ ঘণ্টা আগে